বিদ্যা এবং নিত্যা দুজনেই যমজ বোন, উভয়েই দেখতে একই রকম। কখনো কখনো তাদের বাবা-মাও তাদের চেহারা চিনতে ভুল করেন। তাদের দুজনেরই জমকালো লম্বা চুল। দুজনই একই কলেজে ১ম বর্ষে পড়ে। সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হলে তাদের গ্রীষ্মকালীন অবকাশ আরম্ভ হয়। নিত্যা তার বড় বোন বিদ্যার থেকে তার চেহারা বিসদৃশ দেখাতে চায়। তাই সে ভাবছে সে পৃথক হতে কি করতে পারে? সে নিজের বোন এবং তার বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে, তারা সকলে চুল কাটানোর বুদ্ধি দেয়, অন্যথায় স্থায়ীভাবে চেহারা নিয়ে কিছুই করা যেতে পারে না। কিন্তু নিত্যা তার লম্বা চুল কাটতে চায় না, তবু সে তার বোনের থেকে অসদৃশ দেখাতে চায়, কারণ স্কুল এবং কলেজে তার গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তার প্রভাষক-প্রভাষিকারা নিত্যাকে সময় অসময়ে বকাঝকা করেছে, তারা ভেবেছিল সে বিদ্যা। কারণ নিত্যা পড়াশোনায় খুব ভালো, বিদ্যা গড়পড়তা।
তাই নিত্যা বিদ্যাকে তার চুল ছোট করানোর জন্য অনুরোধ করেছিল, কিন্তু বিদ্যা তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল। এছাড়াও সে বলে তুই যদি নিজেকে আমার থেকে আলাদা দেখাতে চাস তাহলে তোর চুল কাটা, আমাকে আমার চুল কাটার জন্য বলবি না। শেষাবধি নিত্যা তার চুল কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এছাড়াও সে তার বাবা-মাকে প্রথমে জানিয়েছিল যদিওবা তারা এটা মেনে নেয়নি। কিন্তু নিত্যা তার বাবা ও মা দুজনকেই বোঝানোর পর তারা তার চুল কাটার ব্যাপারে আজ্ঞা দেয়। কিন্তু তারা বলেন চুল কাটাবার আগে তিরুপতি বালাজীর নিকট তোমার চুল নিবেদন করো। নিত্যা এতে হতবাক হয়ে গেল; সে বলল আমি মাথা মুড়িয়ে ফেলতে চাই না। তারা বলল শেভ করবে না; তিরুমালায় তোমার চুল কাটবে এবং এখানে ফিরে এসে তুমি যে কোনো চুলের স্টাইল করতে চাও করাও; অন্যথায় আমরা তোমার চুল কাটানোতে অনুমতি দেব না। নিত্যা বলল ঠিক আছে।
তাই পরিবারের সবাই তিরুমালার উদ্দেশ্যে যাত্রারম্ভ করলেন। আর মাঝরাতে পৌঁছে ওনারা সরাসরি কল্যাণকাট্টায় গিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলেন। সকালে ওনারা কল্যাণকাট্টায় টন্সার হলে রওনা দেন। তার বাবা দুটি মুণ্ডনের টোকেন নিয়েছিলেন। নিত্যা সে সম্পর্কে প্রশ্ন করলে, তিনি ওদের মা এবং স্বীয় টন্সারের বিষয়ে বলেছিলেন। বিদ্যা আর নিত্যা উভয়েই অবাক হয়ে গেল তাদের মায়ের মুণ্ডনের কথাতে। অনন্তর তারা সারিতে দাঁড়ায়, সেই ক্ষণে নাপিত হেঁকেছিল যদি কেউ চুল কাটার জন্য দাঁড়ান তবে দয়া করে মস্তক মুণ্ডন শুরু করার আগে আপনার চুল কাটুন; তাই প্রথমে বিদ্যা গিয়ে নাপিতের সামনে বসে সে তার চুল কিছুটা কাটাল। এটা একটা ছাঁটার মত, তারপর নিত্যার পালা; সে নাপিতকে তার কাঁধ পর্যন্ত চুল কাটতে বলল। তাই উনি তার লম্বা চুল তার কাঁধ পর্যন্ত কেটে দিলেন। তার অর্ধেক চুল চলে গেছে। ছোট চুলে সে এখন নতুন লুকে। অতঃপর ওদের মা-বাবা ওনাদের মুণ্ডন করালেন। নিত্যার ছোট চুলের নতুন লুক সকলেরই ভালো লাগে।
এর পরদিন ওরা ওদের বাড়িতে আসে। এবং সে তার চুল কাটার জন্য পার্লারে গিয়েছিল। ১ ঘন্টা বাদে ও নতুন চিবুক দৈর্ঘ্যের বব কাট করিয়ে আসে। বিদ্যাও তার নতুন লুকের তারিফ করে। তাদের মাও প্রশংসা করে। সেদিন হতে সে তার চুল একই স্তরে বজায় রাখে। তার চুল কাটার পর সবার বিভ্রান্তি কেটে গেছে। প্রত্যেকেই লম্বা কেশবিশিষ্ট বিদ্যা এবং ছোট কেশবিশিষ্ট নিত্যাকে চিনতে পারত।
No comments:
Post a Comment