Thursday, March 26, 2020

সেলুনে গিয়ে মায়ের চুল কাটানো (শেষ পর্ব)

মুহিত দেখল তার বহুদিনের লালিত আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে গিয়েও হচ্ছে না। সে তড়িঘড়ি বলল চল মা আমার এক পরিচিত সেলুন আছে ওখান থেকে চুল কাটিয়ে নিয়ো।
মিসেস নওশিন : ধুর ওরা কি মেয়েদের চুল কাটতে পারবে নাকি? বাদ দে। ফিরে চল। মুহিত নাছোড়বান্দা; সে বলল ধ্যাৎ মা কি যে বল না। চুল কাটা নিয়ে কথা। যে কাটতে জানে সে সবারটাই কাটতে পারে। তুমি চল তো এই বলে মুহিত তার মায়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে চলল। হরতালের দরুণ রাস্তায় যানবাহন তেমন ছিল না তবুও সৌভাগ্যক্রমে তারা একটা রিক্সা পেয়ে তাতে চড়ে বসল এবং ১০ মিনিটের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছলো। মিসেস নওশিন ভাড়া চুকিয়ে মুহিতের পিছু পিছু রোড ক্রস করে ওপারে অর্ধেক শাটার নামানো দোকানের বারান্দায় পা রাখলেন।

মুহিত শাটারে দু-তিনবার টোকা দিতেই একজন খোঁচা খোঁচা দাড়িগোঁফওয়ালা পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ভদ্রলোক শাটার তুলে হাসিমুখে বললেন এসো মুহিত বাবা ভেতরে এসো। মুহিত তার মা'র দিকে তাকিয়ে ইশারা করে ভেতরে আসতে বলল। মুহিত ঐ লোকটিকে জিজ্ঞেস করল দোকান কি আজ বন্ধ চাচা? চাচা উত্তর দেন- না বাবা দোকান তো খোলাই তবে সকাল থেকে কাস্টমার নাই আর কর্মচারীরাও হরতাল মাথায় করে আসে নাই। তো বাবা বলো কি সার্ভিস নেবা? মুহিত বলে আমি না চাচা আমার মা। চাচা খেয়াল করলেন মুহিতের পিছনে একজন মহিলা দাঁড়ানো। চাচা বলেন বসেন আপা বসেন। আজকে কি দুর্দিনে আপনি আসলেন। মুহিত তো দোকানে আসলেই আপনার কথা বলে। আজকে দেখা হইলো অথচ মেহমানদারি করতে পারতেছি না। মিসেস নওশিন হেসে উত্তর দেন ব্যাপার না। চাচা মুহিতকে জিজ্ঞেস করেন কি করাবেন তোমার মা? মুহিত বলল মাথার চুল ছাঁটাতে এসেছেন। চাচা মিসেস নওশিনকে চেয়ারে বসতে বললেন। মিসেস নওশিন মুহিতের কাছে হ্যান্ডব্যাগ দিয়ে চেয়ারে বসলেন। মুহিত তার মায়ের পিছনে আড়াআড়ি একটা চেয়ারে বসল যাতে চুল কাটা দেখবার সময় নাপিতের আড়াল না পড়ে। 

আর চাচা একটা পরিষ্কার গোলাপী রঙের কাপড় বের করে মিসেস নওশিনের গলায় বাঁধলেন। তারপর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললেন কতটুকু কাটব চুল? মিসেস নওশিন প্রথমে অস্ফুট স্বরে বললেন কাঁধ পর্যন্ত পরে মুখ তুলে আয়নার দিকে তাকিয়ে মুহিতকে জিজ্ঞেস করলেন কতটুকু কাটলে ঠিক হবে রে মুহিত? মুহিত বলল তুমি কতটুকু কাটাবে বললে? মিসেস নওশিন বলেন- কাঁধ পর্যন্ত কাটলেই তো চলবে, তোর কি মত? মুহিত বলল- উঁহু কাঁধ পর্যন্ত কাটলে একমাস না পেরোতেই আবার ট্রিম করার দরকার পড়বে। মুহিত চাচার দিকে তাকিয়ে বলল ঘাড় পর্যন্ত কাটেন চাচা, মিডিয়াম বয়কাট দেন, ইলেক্ট্রিক ট্রিমার আর ক্ষুর ব্যবহার করবেন না। 

চাচা : মাথার চারপাশের চুল ১.৫ ইঞ্চি আর মাথার তালুতে ২ ইঞ্চি আর কপালের সামনে ২.৫ ইঞ্চি লম্বা রেখে কাটলাম তবে। মিসেস নওশিন মাথা নেড়ে সায় দিলেন। তারপর চাচা বাটি থেকে পানি নিয়ে মাথায় ছেটাতে লাগলেন আর মাথা ম্যাসেজ করতে লাগলেন। মাথার চুল ভালো মত ভিজে গেলে কোঁকড়া চুল আঁচড়ে সোজা করলেন। এরপর চুল একটু আলগা মুঠি করে ধরে রবার ব্যান্ড দিয়ে ঘাড়ের পিছনে হাল্কা ঢিলা দিয়ে পনিটেল বাঁধলেন। এরপর রবার ব্যান্ডের ঠিক উপরে কাঁচি দিয়ে পনিটেল কাটলেন। পনিটেল কাটা হলে সেটা নিয়ে মিসেস নওশিনের কোলে দিলেন। মিসেস নওশিন তার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া চুল হাত দিয়ে ধরে দেখলেন। তারপর ঘাড় ধরে নুইয়ে দিয়ে মাথার পিছনের চুল কাটতে লাগলেন। ৫ মিনিটের মধ্যে মাথার পিছনের চুল কাটা শেষ করলেন। তারপর ডানে-বাঁয়ে কাত করে মাথার দুপাশের চুল কাটলেন। সবশেষে মাথার তালু ও সামনে কপালের ওপরের চুল কাটলেন। তারপর ভালো করে একনজর দেখে নিয়ে বললেন উঠেন আপা চুল কাটা‌ ফিনিশ। মিসেস নওশিন আয়নার দিকে তাকিয়ে একবার দেখলেন। ১ ঘণ্টা আগের নিজের চেহারার সঙ্গে আয়নায় দৃশ্যমান চেহারার মিল খুঁজে পেলেন না। কেপ খোলার পর মিসেস নওশিন উঠে দাঁড়িয়ে শরীর থেকে গুড়ো চুল ঝাড়লেন। তারপর মুহিতকে ডেকে হ্যান্ডব্যাগে হাত ঢুকিয়ে বললেন কত দেবো? চাচা বললেন আরে রাখেন মুহিত বাবা আমার ছেলের মত। আজকে এই অবেলায় আপনি আমার এখানে আসলেন। একটু মেহমানদারিও করতে পারলাম না। টাকা লাগবে না আপনি বাড়িতে যান। মিসেস নওশিন আর মুহিত তবুও জোর করতে লাগলেন। শেষে মাত্র ৫০ টাকা নিতে রাজি হলেন চাচা। আর বললেন সময় পেলে আমার বাড়িতে আসবেন আপা। মিসেস নওশিন ও মুহিত সেলুন থেকে বেরিয়ে রিক্সা না দেখে হেঁটেই বাড়ি ফিরল। পরদিন মিসেস নওশিন কলেজে গেলে সবাই তার নতুন হেয়ারস্টাইল দেখে আশ্চর্য হলো। তার কলিগেরা বলল আপনার বয়স যেন ১০ বছর কমে গেছে। মিসেস নওশিন সবার এই প্রশংসা উপভোগ করলেন। তিনি ঠিক করলেন এখন থেকে তিনি আর চুল বাড়াবেন না। মিসেস নওশিন এখন ৩ মাস অন্তর তার চুল কাঁধ ছুঁই ছুঁই করলেই চুল কাটিয়ে ফেলেন।

3 comments:

R S said...

R S said...

Too good !! Aroo golpo porar opekhai !!

Bondhu ba maa meye...golpo likun Jodi hoi!!

bnhairfetish said...

Kichu idea diye help korun.

গ্রামীণ নাপিত~আনন্দ (শেষার্ধ)

"আহা…ঠিক আছে…" তিনি বললেন যখন আমি তার বাক্সের দিকে অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে তাকালাম তার কাছে কোন ধরনের রেজার আছে তা দেখতে। সৌভাগ্যবশত ...