চাচা এবার বারান্দার মুখে দাঁড়িয়ে নাপিতকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলেন -- ‘‘এমন করে কাটবেন যাতে পিছনের চুল দিয়ে একটা ঝুঁটিও বাঁধতে না পারে। খালি মাথার তালুতে যেন বাচ্চা মেয়েদের মত একটা ছোট ঝুঁটি বা মাথার দুই কোণে ছোট দুইটা ঝুঁটি করার মত চুল থাকে। আর চুলের সিঁথি মাথার মাঝখান থেকে যেকোন একপাশে নিয়ে যাবেন। আর গাল আর ঘাড় কামিয়ে দেবেন।
- তারমানে একদম বেটাগো মত চুল কাটমু?
চাচা মাথা নেড়ে সায় দেন।
- শর্ট না মিডিয়াম?
চাচা শ উচ্চারণ করে পরে মিডিয়াম বলে লিভিং রুমে যান।
এদিকে চাচীর মুখের ওপর চুল ঝুলছে। ফোঁস করে নাক টানার শব্দ শুনে তিনি কাঁদছেন বোঝা যাচ্ছে। তিনি হয়ত ভাবছেন- চাচা কেন তার সঙ্গে এমনটা করছেন। এদিকে নাপিত তার এলোমেলো চুলগুলো সব পিছনে আনেন। চুলে বেশ কয়েকবার আঙ্গুল চালান তারপর পাটের ব্যাগ থেকে একটা চিরুনি বের করে চুল আঁচড়ান বেশ কয়েকবার। তারপর মাথার কাছাকাছি চুল মুঠো করে ধরে বারান্দার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা আমার কাছে একটা রাবার ব্যান্ড চান। আমি একদৌড়ে চাচীর বেডরুম থেকে কয়েকটা রাবার ব্যান্ড এনে নাপিতকে দিই। নাপিত এবার চাচীর চুল আরো কয়েকবার আঁচড়ে চারভাগ করে চারটি ঝুঁটি করলেন। মাথার তালুর সামনে থেকে কপালের ওপর ঝোলানো চুল একভাগে, মাথার দুপাশে ২ কানের সামনে ২ ভাগ, ২ কানের পিছনে পিঠ বেয়ে চলা সব চুল ১ ভাগ। এবার কাঁচি তুলে সবচাইতে লম্বা পনিটেল মানে পিছনের চুলে কাঁচি লাগিয়ে আস্তে আস্তে চেপে বসাতে লাগলেন। ১ মিনিট পরেই একটা ক্ষীণ ছিক শব্দে পনিটেল চাচীর মাথা থেকে আলগা হয়ে নাপিতের হাতে চলে আসে। এবারে ইলেক্ট্রিক ক্লিপারের চার্জার খুলে গার্ড লাগিয়ে ঘাড়ের যেখান থেকে পনিটেল কাটা হয়েছিল সেখানে ধরে উপরের দিকে কাটতে শুরু করেন। চাচীর মেছকির ওপর কাটা চুল ঝরঝর করে ঝরতে থাকে। মাথার পিছনটায় ভোঁ ভোঁ শব্দ করে ক্লিপারের ঘর্ষণে চাচী চমকে উঠেন। এবার কানের দুপাশে বাঁধা পনিটেল কাঁচিতে কেটে তারপর শুরু করেন কানের সামনে থেকে মাথার দুপাশের চুল ক্লিপিং করা। দুপাশের চুল ছোট করা হয়ে গেলে তিনি ট্রিমারের গার্ড খুলে চিপের আর ঘাড়ের যেখানে চুল গজানো শেষ সেখানটা একটু সরলরেখায় কেটে নিলেন। এখন চাচীর মাথার সব পাশের চুল ছোট খালি মাথার তালুতে একটা পনি বাদে। এবার উনি সেই মাথার তালুর পনির গোড়ায় কাঁচি ধরলেন কিন্তু চাচার নির্দেশ মনে করে রাবার ব্যান্ডটা ৩/৪ ইঞ্চি উপরে তুলে অতঃপর ব্যান্ডের নিচে কাঁচি দিয়ে কাটলেন। এরপর আমাকে ডেকে একটা বোতল বাড়িয়ে দিলেন পানি আনতে। এনে দিলে বোতলের মুখে স্প্রেয়ার লাগিয়ে তা দিয়ে সারা মাথায় পানি স্প্রে করে প্রথমেই মাথার তালুর চুল কিছু ছোট করলেন তারপর মাথার ডানপাশে নতুন সিঁথি কেটে মাঝখানের সিঁথি মিলিয়ে দিলেন। তারপর কপালের সামনের চুলের বামপাশ ডানপাশ অপেক্ষা খানিকটা ছোট করে দিলেন। তারপর ক্ষুর আর নতুন ব্লেড বের করে অর্ধেক ভেঙে ক্ষুরে লাগিয়ে কানের পিছনে, কানের লতির সমান্তরালে আর ঘাড় কামিয়ে দিলেন। সব শেষে মাথার চারপাশে ও ওপরে আরেকবার কাঁচি চালিয়ে লুক মানানসই করে নিলেন। অতঃপর চাচীকে সুন্দর করে মাথা আঁচড়ে, পাউডার কেস বের করে স্পঞ্জ দিয়ে পাউডার লাগালেন ও সেটা দিয়ে চাচীর মুখ ও কাঁধের ওপরকার চুল ঝেড়ে ফেললেন। তারপর চাচী উঠে নিজের মাথার চারপাশে হাত দেয় এবং পিছনে ফিরে দেখে তার সব চুল ফ্লোরে পড়ে আছে। চাচী কোনো কথা না বলে বাথরুমে গোসল করতে ঢুকলেন।
চাচা এদিকে নাপিতের পাওনা মিটিয়ে দিলেন। ইতিমধ্যে চাচী যে গোসল সেরে বেরিয়ে নিজের স্পেশাল রুমে গিয়ে দরজা আটকালেন আর খুললেন না। চাচা কিছুটা ভয় পেলেন তবে তিনি জানতেন চাচী ওভাররিএ্যাক্ট করবে না। এদিকে সন্ধ্যায় বুয়া এসে তো বেডরুম আর ব্যালকনি ঝাড়ু দিতে গিয়ে চুলের ঢিবি দেখে অবাক। অবশ্য চাচী এর মধ্যে একবার রুম থেকে বেরোলে চাচীকে দেখেও সে তাজ্জব হলো। রাতের খাবার খাওয়ার সময়ও চাচী কোনো কথা বললেন না। তবে রাতে চাচার সঙ্গে এক বিছানাতেই ঘুমালেন। টানা ৩ দিন চাচী আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। সবশেষে ৪ দিন পর সকালে চাচী আমাকে বলল- জানিস নাফি তোর চাচ্চু আসলে আমার চুল কাটিয়ে ভালো করেছে; আগে তো গোসলের পর চুল ভালো ভাবে মোছা আর শুকানোর জন্য সময় লাগত এখন আর লাগছে না, তার পর কিভাবে চুল বাঁধলে লুক ঠিক থাকবে সে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে তৈরি হতে হত। এখন তো এক আঁচড়েই রেডি, সময় কম লাগছে, চুলের মধ্যে আর জট পড়ে না। সেদিন তোর এক আন্টি বলল : আমাকে নাকি আগের থেকে অনেকটা ইয়ং লাগে। আসলে আমিও অনেক দিন যাবৎ ভাবছিলাম চুল ছোট করে ফেলি কিন্তু ভালো দেখাবে কি না সেটা ভেবে আর করা হয়নি। তোর চাচ্চুর জেদে যাক সেটা ট্রাই করা হলো। আমি বললাম : তাহলে তুমি কি চুল এবার থেকে ছোট রাখবে? চাচী বলেন : তোর চাচ্চু তো প্রথম রাতেই বলেছিল এখন থেকে এভাবেই রাখতে। তোর কয়েকজন আন্টিও বলেছে এমনই রাখতে। আমিও তাই ভাবছি; তোর চাচ্চু বললে বড় হতে দেব নাহলে ৩ মাস বাদে কেটে ফেলব।