রিকশা থেকে নেমে লিফট এর ৫ চেপে পার্লারে ঢুকলাম। ভিড় আছে ভালোই।
আচ্ছা, এখন তো সামনে ঈদ নাই তাহলে এতো ভিড় কেন কি জানি!
-এক্সকিউজমি ম্যাম,কি করবেন?
-চুল কাটব।
-কি কাট?
-একদম ফেলে দিব।
-বয় কাট?
-না, একদম ফেলে দিব সব চুল।
রিসিপশনের মেয়ে টা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রিসিপ্ট কেটে দিয়ে দিল।
দশ পনেরো মিনিট পরে আমার সময় এলো।
যে মেয়েটি চুল কাটছে, সে বারবার জিজ্ঞেস করছে আমার কি কোনো অসুখ আছে নাকি এভাবে এতো সুন্দর সব চুল কেন কাটছি। আমি শুধু মুচকি হেসে বলছি, একদম মাথা মুড়িয়ে দাও আপু।
চুল কাটা শেষে মাথায় কোনোভাবে হিজাব বেধে বাসায় চলে এলাম।
বাসায় ঢুকতেই মা বকা দিচ্ছে কেন আজ এই সময় বাইরে গেলাম। তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে ড্রেসিংটেবিল এর সামনে দাঁড়িয়ে হিজাব খুলে একটা ছবি তুললাম। ছবিটা হোয়াটসএ্যাপ এ শুভ্র কে পাঠিয়ে দিলাম। শুভ্র সিন করে হাসির ইমোজি দিলো আর বলল- এখন আর কেউ বিয়ে করবে না তোমায়, নিশ্চিন্তে ঘুমাও।
গোসল করে বের হয়ে মাথায় হাল্কা ওরনা দিয়ে ডাইনিং রুমে যেতেই মা চিৎকার দিয়ে উঠলো- এ কি করেছিস নীরা!? আজ তোকে রাতে দেখতে আসবে ছেলেপক্ষ, আর তুই এ কি করলি? কেন করলি এমন?
কি হলো, কথা বলছিস না কেন?
খুব গরম লাগছিল মা তাই ফেলে দিলাম সব চুল।
চুল বড় হতে অনেকদিন লাগছে,৬মাস হলো এখনো ছোট চুল।
বিয়ে ভেঙে যেতে লাগলো একের পর এক।
এর ভিতর শুভ্রের চাকরী হয়ে গেলো,আর এক মাস পর জয়েনিং।
খুব খুশি লাগছিল,আমাদের ৪ বছরের সম্পর্ক অবশেষে বুঝি বিয়েতে রূপ নেবে।
দিনক্ষণ ঠিক করে শুভ্রের মা বাবা আমায় দেখতে এলো, ওর মা আমার চুল দেখে একদম বেঁকে বসল।
উনি নাকি স্বপ্নে দেখেছেন এই বংশে এক ছোটো চুলের বউ আসবে যে এই সম্পূর্ণ পরিবার কে নষ্ট করে দিবে।
উনি এখন কোনোভাবেই আমাকে মেনে নিতে রাজি না।
শুভ্র আমায় বললো,কিছু মাস অপেক্ষা করে চুল একটু বড় করতে।
আরো ৬ মাস চলে গেলো, চুল বড় হলো কিছুটা।
কিন্তু শুভ্রের মা কোনোভাবেই আমাকে ঘরের বউ করবেন না।
শুভ্রও নাছোড়বান্দা, আমাকে ছাড়া সে বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে আরো আগেই।
অবশেষে শুভ্র আমায় কাজী অফিসে বিয়ে করে ঘরে নিয়ে গেলো, তার মা আমায় বরণও করলো না।
আমি নতুন পরিবেশে কোনোভাবে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। ধীরে ধীরে আমার শ্বাশুড়ি আরো ভয়ংকর রূপ নিতে লাগলেন।
আমি কখনো চুলার আঁচ কমিয়ে ভাত, তরকারি কিছু বসিয়ে গেলে উনি জোড়ে বাড়িয়ে দিয়ে পুড়ে ফেলতেন, তারপর সারা বাসা চিল্লাচিল্লি করতেন বউ অলক্ষ্মী। ছোট চুলের বউ।
একদিন অনেক বৃষ্টি,কোনো কাপড় শুকাচ্ছিল না তাই আমি চুলার উপর দড়ি বেঁধে শুভ্রের একটা প্যান্ট শুকাতে দিয়েছিলাম।
দুপুরে একটু ঘুমাতেই পোড়া গন্ধে ঘুম ভাঙল, সারা ঘরে ধোঁয়া আর ধোঁয়া।
রান্নাঘর এ আগুন লেগেছে,সেই ধোঁয়া রুমে চলে এসেছে।
এভাবে নানানভাবে উনি আমার পিছু লাগলেন অলক্ষ্মী প্রমাণ করতে।
মাঝে মাঝে খুব কান্না পায়,লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদি।
কিন্তু দিন শেষে ক্লান্ত শুভ্র যখন মুখে একরাস হাসি নিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে নীরু বলে ডাকে তখন সব কষ্ট ভুলে যাই।
কখনো বা বেলী ফুলের মালা,কখনো কাঠ গোলাপ,সাদা গোলাপ,লাল গোলাপ নিয়ে এসে আমার ছোটো চুলে পড়িয়ে দেয় তখন আমার নিজেকে সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হয়, ভুলে যাই অলক্ষ্মী নাম টা।
আচ্ছা, এখন তো সামনে ঈদ নাই তাহলে এতো ভিড় কেন কি জানি!
-এক্সকিউজমি ম্যাম,কি করবেন?
-চুল কাটব।
-কি কাট?
-একদম ফেলে দিব।
-বয় কাট?
-না, একদম ফেলে দিব সব চুল।
রিসিপশনের মেয়ে টা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রিসিপ্ট কেটে দিয়ে দিল।
দশ পনেরো মিনিট পরে আমার সময় এলো।
যে মেয়েটি চুল কাটছে, সে বারবার জিজ্ঞেস করছে আমার কি কোনো অসুখ আছে নাকি এভাবে এতো সুন্দর সব চুল কেন কাটছি। আমি শুধু মুচকি হেসে বলছি, একদম মাথা মুড়িয়ে দাও আপু।
চুল কাটা শেষে মাথায় কোনোভাবে হিজাব বেধে বাসায় চলে এলাম।
বাসায় ঢুকতেই মা বকা দিচ্ছে কেন আজ এই সময় বাইরে গেলাম। তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে ড্রেসিংটেবিল এর সামনে দাঁড়িয়ে হিজাব খুলে একটা ছবি তুললাম। ছবিটা হোয়াটসএ্যাপ এ শুভ্র কে পাঠিয়ে দিলাম। শুভ্র সিন করে হাসির ইমোজি দিলো আর বলল- এখন আর কেউ বিয়ে করবে না তোমায়, নিশ্চিন্তে ঘুমাও।
গোসল করে বের হয়ে মাথায় হাল্কা ওরনা দিয়ে ডাইনিং রুমে যেতেই মা চিৎকার দিয়ে উঠলো- এ কি করেছিস নীরা!? আজ তোকে রাতে দেখতে আসবে ছেলেপক্ষ, আর তুই এ কি করলি? কেন করলি এমন?
কি হলো, কথা বলছিস না কেন?
খুব গরম লাগছিল মা তাই ফেলে দিলাম সব চুল।
চুল বড় হতে অনেকদিন লাগছে,৬মাস হলো এখনো ছোট চুল।
বিয়ে ভেঙে যেতে লাগলো একের পর এক।
এর ভিতর শুভ্রের চাকরী হয়ে গেলো,আর এক মাস পর জয়েনিং।
খুব খুশি লাগছিল,আমাদের ৪ বছরের সম্পর্ক অবশেষে বুঝি বিয়েতে রূপ নেবে।
দিনক্ষণ ঠিক করে শুভ্রের মা বাবা আমায় দেখতে এলো, ওর মা আমার চুল দেখে একদম বেঁকে বসল।
উনি নাকি স্বপ্নে দেখেছেন এই বংশে এক ছোটো চুলের বউ আসবে যে এই সম্পূর্ণ পরিবার কে নষ্ট করে দিবে।
উনি এখন কোনোভাবেই আমাকে মেনে নিতে রাজি না।
শুভ্র আমায় বললো,কিছু মাস অপেক্ষা করে চুল একটু বড় করতে।
আরো ৬ মাস চলে গেলো, চুল বড় হলো কিছুটা।
কিন্তু শুভ্রের মা কোনোভাবেই আমাকে ঘরের বউ করবেন না।
শুভ্রও নাছোড়বান্দা, আমাকে ছাড়া সে বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে আরো আগেই।
অবশেষে শুভ্র আমায় কাজী অফিসে বিয়ে করে ঘরে নিয়ে গেলো, তার মা আমায় বরণও করলো না।
আমি নতুন পরিবেশে কোনোভাবে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। ধীরে ধীরে আমার শ্বাশুড়ি আরো ভয়ংকর রূপ নিতে লাগলেন।
আমি কখনো চুলার আঁচ কমিয়ে ভাত, তরকারি কিছু বসিয়ে গেলে উনি জোড়ে বাড়িয়ে দিয়ে পুড়ে ফেলতেন, তারপর সারা বাসা চিল্লাচিল্লি করতেন বউ অলক্ষ্মী। ছোট চুলের বউ।
একদিন অনেক বৃষ্টি,কোনো কাপড় শুকাচ্ছিল না তাই আমি চুলার উপর দড়ি বেঁধে শুভ্রের একটা প্যান্ট শুকাতে দিয়েছিলাম।
দুপুরে একটু ঘুমাতেই পোড়া গন্ধে ঘুম ভাঙল, সারা ঘরে ধোঁয়া আর ধোঁয়া।
রান্নাঘর এ আগুন লেগেছে,সেই ধোঁয়া রুমে চলে এসেছে।
এভাবে নানানভাবে উনি আমার পিছু লাগলেন অলক্ষ্মী প্রমাণ করতে।
মাঝে মাঝে খুব কান্না পায়,লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদি।
কিন্তু দিন শেষে ক্লান্ত শুভ্র যখন মুখে একরাস হাসি নিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে নীরু বলে ডাকে তখন সব কষ্ট ভুলে যাই।
কখনো বা বেলী ফুলের মালা,কখনো কাঠ গোলাপ,সাদা গোলাপ,লাল গোলাপ নিয়ে এসে আমার ছোটো চুলে পড়িয়ে দেয় তখন আমার নিজেকে সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হয়, ভুলে যাই অলক্ষ্মী নাম টা।