কণিকার মাথা ন্যাড়া করে দিচ্ছে নাপিত। সে কাঁদছে না আসলে সে তার মাথার চুল কামানোর দরুন খুশি। সে ছোট চুলের মেয়ে নয় তার লম্বা চুল ছিল এবং সে দক্ষিণ ভারতের কেরালার অধিবাসী। কণিকা হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে ওঠে। তার চুলে স্পর্শ করে দেখে মাথায় আছে কি নেই। ওগুলা সেখানেই আছে দেখে ও সন্তুষ্ট হয়, ততক্ষণে সে সময় দেখে এখন সকাল ৬টা বাজে। এরপর সে তার পড়াশোনা শুরু করে। এই স্বপ্ন এই নিয়ে সপ্তাহে ৩ বার দেখল। কিন্তু এর পিছনের কারণ সে জানে না। সে একটি বেসরকারি কলেজে বি.ই.-তে ২য় বর্ষে পড়ছে। তার সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হয়েছে, সেজন্য সে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু মাথা কামানোর স্বপ্নে তার নিদ্রা কিছুটা বিঘ্নিত হয়।
অতএব সে তার মায়ের সাথে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যায়, উনি অবাক হয়ে গেলেন তবুও বললেন, কোনো সমস্যা নেই, এটা আরও ১ বা ২ দিন বাদে বন্ধ হয়ে যাবে। তাতে সেও আশ্বস্ত হয়েছিল, কিন্তু পরের দিন একই সময়ে স্বপ্নটা চোখে ভাসে, সে আবার ভোর ৬টায় ঘুম থেকে জেগে উঠে। সে এক ধন্দে পড়ে যায়। সে যে কোনো মনোবিদকে দিয়ে চেক করাতে চায়। ও আবার তার মায়ের সাথে কথা বলেছে, তার বাবাও সেখানে ছিলেন। সুতরাং উনি বললেন একবার পরীক্ষা শেষ হলে মনোচিকিৎসকের কাছে গিয়ে চেক করাবেন, স্বপ্নটা যদি এসময়ের মধ্যে থেমে যায় তাহলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে না। কিন্তু স্বপ্ন আসতে থাকে প্রতিদিন ঠিক একই সময়ে।
এই হেতু ও আর ওর বাবা সেমিস্টার ছুটিতে হাসপাতালে গিয়েছিল। সে তার স্বপ্নের কথা চিকিৎসকের কাছে জানায়। উনি সব শুনেছিলেন এবং তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আপনি শেষবার কখন মাথা কামিয়েছেন। কণিকা উত্তর দিলো এটা তার শৈশবে প্রায় ৮ বছর বয়সে। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন যে কোনো মন্দিরে কী আপনার কোন মূলতুবি ব্রত আছে? সে বলল না, কিন্তু তিনি আবার একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেন দয়া করে কিছুক্ষণ চিন্তা করুন এবং আমাকে বলুন। সে কিছুক্ষণ ভাবল এবং না বলল। চিকিৎসক বলেন, এসব বড় সমস্যা নয়, এই স্বপ্ন কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তাই এটা নিয়ে চিন্তা করবেন না। সে চিকিৎসকের উত্তরে সন্তুষ্ট হয়।
তারা বাড়িতে ফিরে গেল, সে তার মাকে সব খুলে বলল, অতঃপর ওর মা বললেন, আমাদের পারিবারিক মন্দিরে তোমার একটি মূলতুবি ব্রত আছে, আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি যদি তুমি টেন্থ স্ট্যান্ডার্ডে ভালো নম্বর পাও তাহলে তুমি আমাদের মন্দিরে মাথা ন্যাড়া করবে। তুমি ১০তে ভাল স্কোর পেয়েছিলে পরন্তু ততদিনে আমাদের পরিবারে তোমার কাকা মারা গিয়েছিল তাই আমি তোমার মাথা মুড়ানো স্থগিত করেছি এবং পরবর্তীতে আমি ভুলেও গেছি। কণিকা হতভম্ব হয়ে বলল তাহলে আমরা কি করতে পারি, ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে দেখো উনি এ বিষয়ে কি মত দেন। পরের দিন ও এবং তার বাবা পুনর্বার হাসপাতালে যায় এবং এই বিষয় জানালে তিনি বলেন, আপনার যদি কোনও অপালিত ব্রত থাকে তবে আপনি করতে পারেন। কণিকা জিজ্ঞেস করল আমার ক্ষৌরির পরও যদি স্বপ্নটা দেখি তবে আমরা কি করতে পারি? চিকিৎসক বলেন, আগে মন্নত শেষ করে কিছুদিন পরীক্ষা করে দেখুন এমনটি চলতে থাকে কিনা তার পর না হয় সিদ্ধান্ত দেবো।
এজন্য ওদের পরিবার ওদের পরিবারের দেবস্থানের উদ্দেশ্যে তাদের যাত্রা শুরু করে। তারা তাদের আত্মীয়দেরও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়। কারণ প্রতি বছর তাদের পরিবারের সবাই মন্দিরে পুজো করতে যায় আর কেউ না কেউ মাথা কামিয়ে নেয়। এবার কণিকার পালা। পরের দিন সকালে তারা মন্দিরে পৌঁছায় তাদের পরিবারের সদস্যরাও অন্য শহর থেকে এসেছেন। প্রায় ২০ জন পুজোয় এসেছিলেন। তারপর সবাই তাদের স্বাস্থ্য এবং পরিবার সম্পর্কে আড্ডা দিলো। কিছুকাল পর কণিকার মা তার মেয়ের মাথা ন্যাড়া করার কথা বললেন। তারা সকলেই খুশি ছিল। ততক্ষণে নাপিত এসেছে, সুতরাং কণিকা গিয়ে নাপিতের সামনে বসে, তার পরিবারের সদস্যরা অধীর আগ্রহে তার কামানো দেখতে থাকে। এই নাপিত তার শৈশবে তার মাথা কামিয়েছে, তাই তিনি তার মুখের কথা মনে রেখেছিলেন, এবং উনি তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন এবং সে বলল সে ভালো আছে, তারপর উনি চুল কাটার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন, সে বলল মাথা মুণ্ডাব, তারপর তিনি তার চুল থেকে রাবার ব্যান্ডটি সরিয়ে দিলেন, এবং উনি তার লম্বা চুল দেখেন এবং বললেন তোমার চুলগুলা খুব ঘন এবং লম্বা তা তুমি সত্যিই শেভ করতে চাও, সে বলল হ্যাঁ, তারপর তিনি হেসে বললেন তোমার মনে জোর আছে। কণিকা হাসল, তারপর ওর মাথায় জল ঢেলে ওর মাথাটা ঠিকমতো মালিশ করলেন। তার লম্বা চুল সম্পূর্ণ ভিজে গেছে, তারপর উনি রেজার নিয়ে একটি নতুন হাফ ব্লেড লাগিয়ে তার মাথার মাঝখানে কামানো শুরু করলেন সে খুব লজ্জা পাচ্ছে কারণ আশেপাশে তার পরিবারের সকল সদস্য তার ন্যাড়া করানো দেখছে। তার চুল তার কোলে পড়েছে, সে তার মাথার মুণ্ডন নিয়ে কিছুটা চিন্তিত, কিন্তু তার কোন উপায় নেই, সে চিন্তা করছে কিভাবে তার বন্ধুদের এবং প্রতিবেশীর সাথে টাক চেহারায় মুখোমুখি হবে, ততক্ষণে তার মাথার অর্ধেক টাক হয়ে গেছে। তারপর নাপিত তার মাথার উভয় পাশ কামালেন। পরের 5 মিনিটে সে সম্পূর্ণ টাক হয়ে গেছে, কিন্তু নাপিত আবার ক্ষুর টেনে তার মাথা মসৃণভাবে কামালো। তারপর বলল তোমার মাথা মুড়োনো নিষ্পন্ন হয়েছে। সে আয়নায় তার টাক চেহারা দেখে, কিন্তু সে নিজেকে চিনতে পারছে না। সে তার মাথা স্পর্শ করে এবং তার মুণ্ডিত মাথায় নখাঘাতে ঘ্যাঁষঘ্যাঁষ করে চুলকে দেখে। তারপর সে তার শুচিস্নানের জন্য চলে গেল। তার মা তাকে কুয়োর কাছে নিয়ে আসে এবং তার মাথায় জল ঢেলে সেই জল দিয়ে তার মাথা ধুয়ে দেয়। উনি বললেন তোমাকে সুন্দরী লাগছে কণিকা, সে হাসল। তার স্নানের পরে ওর মা ওর কেশশূন্য মাথায় চন্দন লাগানোর সময় সে একটি হলুদ শাড়ি পরেছে। তখন সে খালি পুজোর যজমানি করে। ২ থেকে ৩ ঘন্টা পরে সবাই জায়গা ছেড়ে চলে যায় এবং কণিকা ও তার পরিবার চেন্নাই পৌঁছে যায়। তার মাথা মুণ্ডানোর পরে তার স্বপ্ন বন্ধ হয়ে যায়, সে এতে খুব স্বস্তি পেয়েছিল।
No comments:
Post a Comment