Friday, April 26, 2019

টাকলা ফ‍্যামিলি

লিখেছেন : © রাজভী রায়হান শোভন ( Razvi Rayhun Shovon )
আমার ক্লাস নাইনে পড়া ছোট বোনের মাথা ন্যাড়া করে দিতে হবে, আম্মা এসে আমার কাছে প্রস্তাব করলো।। এই কাজে নাকি আমার সাহায্য লাগবে।। আমি একটু ভড়কে গেলাম, বলে কি আম্মা!! এই বয়সেই আমার বোনের যে স্ট্যাইলে চলাফেরা, সে যদি শুনে আম্মা তার মাথা নাড়ু করে দিতে চায়, রাগ-টাগ করে বাসা থেকে চলেও যেতে পারে।।
আমি আম্মাকে কারণ জিজ্ঞেস করলাম- তুমি শান্তারে নাড়ু করতে চাও কেন? ও এখন বড় হইছে না? তোমার কি মাথা-টাথা ঠিক আছে আম্মা?

আম্মা কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে বলে- আমি তোরে পেটে ধরছি, না তুই আমারে পেটে ধরছিস?? আমার মাথা ঠিকি আছে।।

আমি আম্মার কথা শুনে, জিহ্বায় কামড় দিয়ে বললাম- এইটা তো শান্তারে শোনানের ডায়লগ, আমি তো আম্মা পোলা, মাইয়া মানুষ না- আমি কেম্নে পেটে বাচ্চা ধরুম!!

আম্মা আমার মাথার পিছনে চাটি মেরে বললো- ফাজিল পোলা, খবরদার আমার সাথে ফাইজলামী করবি না।। শুন, শান্তার বান্ধবী জুলির কাহিনী জানোস?

আমি আম্মার চাটি খেয়ে অস্ফুট কণ্ঠে বললাম- উহু, ব্যাথা পাইলাম তো।। জুলি জানি ক্যারা, কি করছে?

আম্মা আমার কাছে চেপে আসলো, আস্তে আস্তে বলছে- এই পিচ্চি মাইয়া কোন পোলার লগে জানি ভাইগা গেছে, প্রেম পিরিতি করতো এই বয়সেই।। জুলির আম্মা প্রথমে স্বীকার যায় নাই, এখন এই ঘটনা শান্তাগো স্কুলের সবাই জানে।।

আমি জুলির চেহারা মনে করতে পারছি না, মেয়েটা যে শান্তার খুব কাছের বান্ধবী তাও না।। তাহলে আম্মার এত চিন্তিত হবার কি আছে।। মহিলা মানুষ এসব গসিপ খুব পছন্দ করে।। আম্মার নিশ্চয় আমাদের পাশের বাসার আন্টিকে, চাকরীর সুবাদে চট্টগ্রাম থাকা আমাদের বাবাকে সহ মোটামোটি শ’ খানেক লোককে নিশ্চয় জানানো শেষ- যে জুলি নামের এক মেয়ে কারো সাথে ভেগে গেছে।। আম্মাকে নিয়ে আর পারলাম না।।

আমি আম্মাকে বললাম- জুলি জানি ক্যারা আম্মা, চিনতাছি না।। তা যাই হোক, শান্তা কই?

আম্মা জবাব দিলো- কোচিংয়ে, শুন বদ পোলা তোরে যেইটা কই, শান্তারে নাইড়া কইরা দিতে হবেই হবে।। বুঝাইয়া কইলে রাজী হবে না, যদিও এখন যে গরম পড়ছে, গরমের ছুঁতা দিয়া রাজী করানো যাইতে পারে, কিন্তু মনে হয় না পাত্তা দিবো আমার কথায়।। তুই কি বলিস?

আমি আম্মার চোখে চোখ রেখে বললাম- আমি আর কি বলমু, তুমি রান্না বান্না ফালাইয়া শান্তার পিছে লাগলা কেন? ওরে নাড়ু করার দরকার কি?

আম্মা এবার নির্লিপ্ত গলায় বলে- আমাগো শান্তার চেহারা তো মাশাল্লাহ্‌, তোর চেহারাও সুন্দর।। বলে আমার গায়ে থু থু ছিটাচ্ছে।। আমি মুখ বাড়িয়ে দিলাম, কারণ এই থু থু ছিটানোর সময় মুখ সরিয়ে নিলেও দুই চার ঘা চড় থাপ্পড় মারতে পারে আম্মা।। থু থু ছিটানো শেষ করে আম্মা আবার বলছে- নজর না লাগুক মানুষের।। শুন, শান্তার এখন উড়তি বয়স, মন আকডুম বাকডুম করবো, আর চারপাশে সবার এইসব কান্ড দেইখ্যা মাইয়া আমার কতদিন ভালো থাকবো আল্লাহ্‌ই জানে।। তাই নাইড়া কইরা দিলে, কেউ ওর দিকে তাকাইবোও না, আর শান্তাও প্রেম পিরিতি ডাইনে বামে ভাবার সময় পাইবো না।।

আমি মুগ্ধ চোখে আম্মার দিকে তাকিয়ে আছি, মহিলার বুদ্ধি বটে।। নানাভাই কি খাইয়ে এই জননীকে বড় করেছে কে জানে, বুদ্ধির জাহাজ না, পুরাই বুদ্ধির স্যাটেলাইট।।
আমি আম্মাকে বললাম- কিন্তু আম্মাজান, বিড়ালের গলায় ঘন্টা পড়াবে কে?

আম্মা কুতকুত করে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো- বিড়াল, কিসের বিড়াল, তুই বিড়াল-টিড়াল বাসায় আনিস না।। খবরদার, থাপড়াইয়া দাঁত ফেলে দিবো।।

আমার মুখের হাসি হাসি ভাব মুহূর্তেই গায়েব, আম্মার প্রতি একটু আগে মুগ্ধতা ছিলো, তা এখন নিমেষেই শেষ, শুধু বললাম- বিড়াল না, বাদ দাও বুঝবা না।। কিন্তু আম্মা শুনো, শান্তা তো জীবনেও রাজী হবে না নাইড়া হইতে।। তাইলে কেম্নে কি করবা?

আম্মা আবার রাগান্বিত হয়ে তাকিয়ে বলে- কি বাদ দিমু বদ পোলা, যাই বলো খবরদার বিড়াল আনবি না বাসায়।।

আমি এবার মুখ দিয়ে বিরক্তিসূচক শব্দ বের করে বললাম- আচ্ছা মা আনমু না, কিন্তু তোমার মেয়ের চুল কাটার বুদ্ধি কি?

আম্মা কথা বলতে বলতে একটু পিছিয়ে গিয়েছিলো, আবার কাছে এসে বললো- সোজা বুদ্ধি, রাতে তুই গিয়ে কেচি দিয়ে ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং চুল কেটে দিয়ে আসবি।। সকালে আমি তোরে দুই একটা চড় থাপ্পড় দিমু শান্তার সামনে, তারপর ওকে বুঝ দিয়া নাইড়া কইরা দিমু ব্যাস।। তবে, শান্তার চুল গোঁড়া থেকে কাটবি, খুব খেয়াল কইরা।।

আমি তব্দা খেয়ে আছি, আম্মার প্ল্যান শুনে।। একটু থিতু হয়ে বললাম- কিন্তু এই কাজ তুমি করো, তোমরা তো একসাথেই ঘুমাও, হুদাই আমার করার দরকার কি?

আম্মা আবার আমার মাথার পিছনে চাটি মেরে বললো- ওরে বলদা শুন, আমি করতে গিয়ে ধরা খাইলে খবর আছে।। তুই করিস, শান্তা জিগাইলে বলবি গরমে বোনের উপকার করতে চুল কেটে দিছিস, আর আমি তো তোর সাথেই আছি, ঝামেলা হলে সামলে নিমু নে।। কেচি তোর রুমে রাইখ্যা যাই, রাতে খাবার পর ঘুমাইতে গেলে, তুই তালে থাকবি।। শান্তা ঘুমাইলেই তুই গিয়ে চুল কেটে দিবি, দেখিস জাগনা যেনো না পায়।। আর, আমি জেগেই থাকবো, সমস্যা নেই।।

আম্মার সাথে এই দূরভিসন্ধি শেষ করে, রাতের অপেক্ষায় রইলাম।।

……………...
বিকেলে শান্তা কোচিং থেকে বাসায় আসলো।। আমি আড়ালে আবডালে খালি মেয়েটার চুলের দিকে তাকিয়ে থাকি।। আর মনে মনে মিটি মিটি হাসি, আহা স্বাধের চুল, আজ রাতেই ঘ্যাচাং ফু করে দিবো।। শান্তা কিভাবে যেনো খেয়াল করলো, আমাকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করলো- ওই ভাইয়া!! কি দেখো বার বার এমনে তাকাইয়া??

আমি শান্তার মাথায় গাট্টা মেরে বললাম- কিছু না রে বুড়ি, তোর চুল দেখি!! তোর চুল দেখলে মনে হয়, চুল তার কবে কার বিদিশার নিশার, আমার শান্তার পান্তার জান্তার মান্তার………...

ঐ চুপ করো তো ভাইয়া, আমার চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে।। মাঝে মাঝে কি মন চায় জানো? আহ্লাদী কণ্ঠে বললো শান্তা।।

আমি বললাম- কি মন চায় তোর?

শান্তা নিজের মাথার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলে- মন চায় নাইড়া বেল্লু হয়ে যাই, আবার নতুন চুল গজাবে, তখন খুব সুন্দর চুল হবে।।

আমার হাসি হাসি মুখ থেমে গেলো, ঢোঁক গিললাম, মনে মনে ভাবলাম, যাক্‌ চুল কাটার পরে শান্তা তেমন উচ্চবাচ্য করবে না।। আমারও আর বাড়তি ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হবে না।। আম্মা এই অবেলায় রুমের মধ্যে ঘুমাচ্ছে, নইলে চুপি চুপি আম্মাকে বলে আসতাম, শান্তা নিজেই নাড়ু হতে চায়।। তাহলে আর রাতের মিশন করা লাগবে না।।

শান্তার চুলে আমি হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম- কি সিল্কি চুল তোর।।

শান্তা বলে- সিল্কি না ঘোড়ার ডিম, ওই ভাইয়া শুনো, আমারে দুই হাজার টাকা দিবা, আর আমার কিছু টাকা ভরে চুলগুলো রিবন্ডিং করমু।।

আমি আবার ঢোঁক গিললাম, তারপর বললাম- দুই হাজার তো দূরের কথা দুই টাকাও নাই।।

আমি মনে মনে বলছি, আইছে রিবন্ডিং!! বেটি তোর চুল তো আজকেই ঘ্যাচাং ফু, তুই আছিস রিবন্ডিং নিয়া।।

……………
রাত ১ টার মত বাজে।। আম্মু শান্তাকে নিয়ে ১২ টার দিকেই বিছানায় গেছে।। আমি আর এরমধ্যে ওই রুমে যাই নাই, নিজের রুমে বসে ফেসবুক চালাচ্ছিলাম।। ড্রয়ার থেকে আম্মুর রেখে দেয়া কেচি বের করলাম।। কি যে আছে কপালে কে জানে!!
এর আগে একবারের কথা মনে পড়লো, আমার মুখে এখনও অনেকগুলা খামচির দাগ আছে, সব শান্তার দেয়া।। এই জন্যে ক্লিন সেভ করলে আমাকে অদ্ভুত দেখায়, তাই খোঁচা খোঁচা দাড়ি রাখি সবসময়।।

মাস দুয়েক আগে, আমি দেখলাম শান্তা হাতের নখ বড় রাখা শুরু করছে।। কয়েকবার বললাম, নখ কেটে ফেল, আমি নিজে কেটে দিতে চাইলাম- না সে কিছুতেই নখ কাটতে দিবে না।। বরং সেই লম্বা লম্বা নখে বাহারি ডিস্কো নেইল পালিশ মেখে বেড়ায়।। আমি কি করলাম, রাতে গিয়ে ঘুমন্ত শান্তার নখগুলো কেচি দিয়ে মাঝখানে একটা করে ঘ্যাচাং দিয়ে আসলাম।।

কিন্তু সকালে দেখি আম্মু আর শান্তা দুইজন মিলে আমাকে পিটাচ্ছে।।

কারণ, হাতের নখ এভাবে ফেটে যাওয়াতে শান্তা ঘুমের মধ্যে শরীরের যে জায়গা চুলকিয়েছে, সে সব জায়গায় একদম লম্বা দাগ হয়ে গেছে, কিছু কিছু জায়গা বেশ কেটে রক্তও বেরিয়ে গেছে।। আমি আসলে কল্পনাও করি নাই এমন হতে পারে।। এই আকাম করে ঘুমিয়ে ছিলাম, দুইজন আমার রুমে এসে ইচ্ছামত ধুমাদ্ধুম মাইর।। তারপর শান্তা ওই কাটা কাটা নখ দিয়ে আমার মুখে আঁচড় কেটে দেয়।। সেই দাগগুলা এখনো জীবন্ত, আল্লাহ্‌ জানে আজ চুল কাটা নিয়ে আবার কি হয়।।

পা টিপে টিপে চোরের মত আম্মুর রুমের দিকে যাচ্ছি।। দরজা ভিড়ানো আছে, ধাক্কা না দিয়ে ওই ফাঁক দিয়েই শরীর গলিয়ে ভিতরে ঢুকলাম, লাইট নেভানো, বিছানার পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম।। অন্ধকারে চোখ সয়ে গেলে আস্তে আস্তে আম্মুকে ডাক দিলাম।। মর জ্বালা, আম্মুও দেখি ঘুমিয়ে গেছে।। ভাবলাম, থাক্‌ ঘুমেই থাকুক আমি আমার মিশন শেষ করে চলে যাই।।

আস্তে আস্তে বিছানার কাছে গেলাম, আমি যে পাশে গেলাম এই পাশে আম্মু শুয়ে আছে, আর তারপর বিছানার ভিতরের দিকে শান্তা।। সমস্যা হলো, শান্তার দিকের অংশের খাট দেয়ালের সাথে চাপানো, তাই আম্মুকে ডিঙ্গিয়ে গিয়ে শান্তার চুলে হামলা করতে হবে।। সমস্যা নাই, আম্মু জাগনা পেলেও তো কিছু হবে না।।

আমি খুব সন্তর্পণে আস্তে আস্তে আম্মুর মাথার উপর দিয়ে, শূন্যে শরীর সামনের দিকে বেঁকিয়ে নিয়ে এক হাত দিয়ে শান্তার চুল ধরলাম।। অন্য হাতে কেচি রেখে, আস্তে আস্তে কেটে দিচ্ছি।। ইস্‌ চুল কাটতে যে এত মজা লাগবে কে জানতো।। একদম ইচ্ছামত কেটে কুটে তামা তামা করে দিলাম।। কিছুক্ষণ কাটার পর আম্মু বা শান্তা কারো মধ্যে কোন নড়াচড়া নেই, তাই দেখে আমার সাহস আরো বেড়ে গেলো।। এবার আরামসে চুল কেটে, সুন্দর করে রুমে চলে আসলাম।।

ল্যাপটপে কিছুক্ষণ ইউটিউব ঘেঁটে, বিছানায় গা এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।।

……………
সকালে আচমকা কোন কিছুর আঘাতে ঘুম ভেঙে গেলো।। ঘুমের জড়তা কাটলো, আম্মু আর শান্তার অগ্নিমূর্তির সাথে অদ্ভুত চেহারা দেখে।। আমার দুই গাল মা মেয়ে মনে হয় কিনে নিয়েছে, শান্তা ডান গালে চড় মারে, আম্মু বাম গালে।। ঘটনা কি!! আমি ধরফর করে উঠে বসলাম।।
সর্বনাশ আম্মুর চুলের এই অবস্থা কেন, শান্তার চুলের অবস্থা তো আরও খারাপ!!

মানে কি, আমি কি তবে রাতে অন্ধকারে দুইজনের চুলই কেটে তামা, লোহা, কাসা, পিতল, বোঞ্জ করে দিয়েছি।।

মাইর কারে কয়, আমি দুই হাত মাথার উপর তুলে শিল্ট তৈরি করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম মাইর ঠেকাতে।।

তখন দেখি ঘ্যাচাং একটা শব্দ হইলো।। শান্তা কই থেকে কেচি এনে আমার চুলের উপর চালিয়ে দিয়েছে।। হাত দিলাম দেখি একগাছা চুল আমার হাতে চলে এলো।।

এবার আমি মাথা তুলে তাকালাম।। শান্তা শক্ত করে ডাকিনী দলের সর্দানীর মত আমার দুই হাত চেপে ধরলো, কেচিটা আম্মু তার আগেই নিজের হাতে তুলে নিয়েছে।। আম্মু এবার নিজেই দিলো আমার চুলে ঘ্যাচাং।। বুঝতেছি, আমি সেই লেজ কাটা বানরের মত হয়ে গেছি, এরা আমাকেও বেল্লু করার ব্যবস্থা করবে।।

আমরা এখন মা, বোন সবাই মিলে বেল্লু ফ্যামেলি।। গরমে বেশ শান্তিতেই আছি।। আফসোস, আব্বা চট্টগ্রাম থাকে, যদিও বেচারার মাথায় আগেই তেল চকচকে টাক, শুধু চান্দির সাইড দিয়ে কয়েক গাছি চুল আছে।। এটা না থাকলে আমরা হয়ে যেতাম কমপ্লিট টাকলু ফ্যামেলি।।

আসলে শান্তা আর আম্মার চুল এমন ভাবে ঘুমের মধ্যে জড়িয়ে ছিলো, আমি কাটতে গিয়ে দুজনের চুলই কেটে ফেলেছি।। যদিও আম্মার চুলের গোড়ার দিকে ঠিকই ছিলো, বব কাট দিয়েই আপাতত সামলে নেয়া যেতো।। কিন্তু, শান্তার নাড়ু হওয়া ছাড়া উপায় ছিলো না।। তবে শান্তার অগ্নি চেহারা দেখে আম্মুও নাড়ু হয়ে গেছে।। আর আমি তো আমিই!! শান্তা আর আম্মু কি সুন্দর মাথায় কালো কাপড় বেঁধে, হিজাবে নিজের মাথা ঢেকে বের হয়।। আমি বেচারা ক্যাপ কিনে নিয়েছি, তাও ভালো এখন কেউ ক্ষেপায় না- নাইড়া মাথা চার আনা, চাবি দিলে ঘুরে না।।

…………
আব্বা একটু আগে চট্টগ্রাম থেকে বাসায় আসলো, এসে আমাদের দেখে বেচারার চেহারা দেখার মত হয়েছে।। উনি ব্যাগ থেকে একে একে জিনিস বের করছেন, সানসিল্ক শ্যাম্পুর বড় টিউব, ডাব কন্ডিশনার, একটা হেয়ার ড্রায়ার, হেয়ার স্ট্রেইটনার মানে এইগুলা সে এইবার চট্টগ্রাম থেকে আমাদের জন্যে নিয়ে এসেছে।। বুঝলাম না অন্যসময় জামা কাপড় বা অন্যকিছু আনে, এইবার এইগুলা আনার মানে কি।। উনাকে যদিও জানানো হয় নাই, উনার বউ, ছেলে, মেয়ে সব সিবাজির মত টাকলা বস সেজে বসে আছে।।
আম্মু চুলের যত্নের এইসব প্রসাধনী দেখে সোজা ক্ষুর নিয়ে এলো।। আমাদের নাড়ু হবার উদ্দেশ্যে এই ক্ষুর কেনা হয়েছিলো।। এসেই আব্বাকে বলে- এই যে শুভনের বাপ, বাথরুমে চলেন।। কি মনে করে এবার শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এইসব আনলেন।। আপনের টাক্কু মাথাটাই এখন চেঁচে দিবো।।

বাপজান মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন- চলো কি আর করার।।

উই আর নাউ, ফুল অফ টাক্কু ফ্যামেলি।। 


ফেসবুকে আমাদের চারজনের মাথা এক করে উপর থেকে তোলা একখানা ছবি পোস্ট করেছিলাম।। আর ক্যাপশনে লিখে দিয়েছিলাম-
আমরা কুত্তামারা গরমের চোটে অফিসিয়ালি পরিবারের সবাই নাড়ু হয়ে গেছি।। চাইলে আপনিও হতে পারেন, গরমের শান্তি।। আমাদের বাসায় যেই আসবে, তাকেই বাধ্যতামূলক নাড়ু করে দেয়া হবে।।

ছোট মামা এই মাসে টাংগাইল থেকে আমাদের বাসায় আসার কথা ব্যবসায়ের কাজে।। সে প্রতিমাসে এসে আমাদের বাসায় এক দুইদিন থাকেন।। এই মাসে কল করে মামা জানালো, আপাতত আসবে না।।

অথচ আম্মা গোপনে গোপনে খবর পাইছে, সে ঢাকা এসে কোন এক আবাসিক হোটেলে থাকতেছে।। আম্মার রাগ দেখে কে, ছোট ভাই নাড়ু হবার ভয়ে আবাসিক হোটেলে থাকতাছে, আম্মা ঘোষণা দিছে, এইবার পাথরাইল মানে আমার নানু বাড়ি সে ক্ষুর নিয়েই যাবে, ছোট ভাইকে পরিবারসহ নাড়ু করাই হবে তার একমাত্র লক্ষ্য।।

এদিকে আমার বিয়ে পিছিয়ে গেলো, এখন নাকি বউ ঘরে তুললে তাকেও নাড়ু করে দিবে আম্মা।। অথচ আগামী মাসে আমার বিয়ের পাকা কথা হবার কথা ছিলো।। কিন্তু ওই বাড়ি থেকে যেই আসবে তাকেই নাড়ু করে দেয়া হবে।।

ও হ্যাঁ, অনেকদিন ধরে বন্ধুদের এত্তগুলা মিস করতেছি, ওরা কতদিন আমার বাসায় আসে না।। কেউ আসবি নাকি রে- সোনার চান পিতলা ঘুঘুরা??

………...
সমাপ্ত!!

Wednesday, April 17, 2019

ভালবাসা নাকি অভিশাপ

ছােটো থেকেই রিয়ার বড় চুলের খুব শখ ছিল -ঠিক মায়ের মতাে। মা যখন কোমর ছাপানো চুলের বিনুনি বাঁধত, রিয়ার খুব ইচ্ছা হতাে তারও অমন চুল হবে। কিন্তু স্কুলে লম্বা চুল নিষেধ থাকায় প্রতি দু'মাস অন্তর মা ওর চুল কেটে দিত।
যেদিন চুল কাটা হতাে সেদিন রিয়া সারাদিন কান্নাকাটি করেই কাটাত। মা-বাবা অনেক বুঝিয়ে, আদর করে, গল্প বলে খাবার খাওয়াত। বাবা মেয়েদের মন ভােলাতে বেড়াতে নিয়ে যেত। এখন সেসব ছেলেমানুষির কথা মনে পড়লে রিয়ার হাসি পায়।
কলেজে ওঠার পর চুল লম্বা করার ছাড়প মিলেছিল। ঘন কালো এক আকাশ চুল নিয়ে রিয়া কলেজ যেত। সেই চুল যেমন অনেক মেয়ের মনে হিংসার উদ্রেক করত, তেমনি বহু ছেলের বুকে দোলাও লাগাত। 
বিকাশ একদিন আর থাকতে না পেরে প্রেম নিবেদন করে বসল রিয়াকে। কলেজে সেটা তাদের দ্বিতীয় বর্ষ। দিনটা আজও মনে আছে রিয়ার - পয়লা বৈশাখ ছিল সেদিন। মায়ের লাল পেড়ে ঢাকাই পরেছিল রিয়া, লম্বা চুল বিনুনি বেঁধে একটা গােলাপ লাগিয়েছিল।
বিকাশের কথায় রিয়া হেসে বলেছিল - "বিয়ের পর যদি চুল কেটে ফেলি, তখন কি করবি?”
বিকাশ একটুও না ভেবে ফাজলামো মিশিয়ে বলেছিল - তোকে ধরে রেখে দেব আর চুল বেড়ে ওঠার অপেক্ষা করব।
সেদিনের ফাজলামি গভীর অনুরাগে পরিণত হয়েছিল তৃতীয় বর্ষের শেষে এসে, যখন দুজনের রাস্তা আলাদা হয়ে গেল।
- "কখনো চুল কাটিসনা রিয়া। যখনই তুই চুল কাটবি, মনে করবি আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে যাচ্ছে। 
"আবার ফাজলামো করছিস! ভাল করে মন দিয়ে MBA করে আয়।”
"তুই কখনও আমাকে seriously নিলি না রিয়া। একদিন এর মর্ম বুঝবি।” ছদ্ম অভিমানে বলেছিল বিকাশ।
এতদিন বাদে রিয়া ভাবে, সত্যি কি সবটাই মিথ্যে ছিল!? কিছুই কি ছিল না বিকাশের মনে? আর রিয়ার মনে?
"ম্যাডাম, এরপর আপনি আসুন!” পার্লারের মহিলার গলার আওয়াজে বাস্তবে ফিরে আসে রিয়া।
ধীর পায়ে চেয়ারে গিয়ে বসল। সামনে বিশাল একটা আয়না, যেটা দিয়ে পিছনের আয়না দেখা যাচ্ছে - আর দেখা যাচ্ছে রিয়ার মেঘের মতাে চুল.… 
বিয়ের পর সন্দীপ বলতাে - প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস...তােমার চুলে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ
"যা:, রবিঠাকুরকে বিকৃত কোরাে না…!”
- বিকৃত কোথায় করলাম...এটাকে ধার করা বলে!" ফিচেল হাসি হেসেছিল সন্দীপ। 
ইতিহাসে মাস্টার্স করে একটা স্কুলে চাকরী নিয়েছিল রিয়া। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রিয়াকে পছন্দ করেন তার ভাইপাের জন্য। সন্দীপ software engineer, দেখতে-শুনতে ভালােই, বেশ মােটা অঙ্কের টাকা হাতে আসে মাস গেলে। উপরোন্ত সদ্য আমেরিকা থেকে ফিরেছে। রিয়া বা রিয়ার মা-বাবার আপত্তি করার কোনো কারণ তাে ছিলোই না, বরং মেয়ের জন্য এমন সােনার টুকরাে ছেলে পেয়ে তারা আর দ্বিতীয়বার ভাবেননি। এক মাসের মধ্যে বিয়ে হয়ে যায় রিয়া আর সন্দীপের।
নতুন সংসারে বেশ ভলােই মন বসছিল রিয়ার। বাড়িতে রিয়া, সন্দীপ, সন্দীপের মা আর কাজের মহিলা কমলা। রিয়া স্কুল সামলে টুকটাক রান্না শিখছিল শাশুড়ির কাছে। একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখল সন্দীপ ফিরে এসেছে, খুব টেনশনে। 
- কি হয়েছে সন্দীপ?
- এইতো তুমি এসে গেছ। ফোন ধরছিলে না কেন? কতবার ফোন করছি!

রিয়ার মনে পড়ল, ক্লাস নিতে যাওয়ার আগে ফোনটা silent করেছিল। তারপর বেরোনোর তাড়াহুড়ােতে আর ঠিক করা হয়নি।
- “যাকগে...আমার বস আসছেন। বিয়েতে আসতে পারেননি, তাই আজ সন্ধ্যায় তােমার সাথে দেখা করতে আসবেন।dinner করে যাবেন। উনি আবার বাঙালী রান্না খেতে ভালোবাসেন।” 
-"ও..আমি এখুনি মায়ের সাথে কথা বলছি...কি কি বানানাে যায় দেখি।”

সন্ধ্যা হতেই মি.শমিত গুপ্তা হাজির হলেন নিজের স্ত্রীকে নিয়ে। সন্ধ্যেটা ভালােই কাটল। মি. গুপ্তা রান্নার পাশাপাশি রিয়ার চুলের খুব প্রশংসা করলেন। এত সুন্দর চুল উনি নাকি কারোর দেখেননি। রিয়া সেদিন চুলটা খুলে রেখে একপাশে একগুচ্ছ রঙ্গন ফুল লাগিয়েছিল। একবার তাে মজা করে শমিত গুপ্তা বলেই ফেললেন, "সন্দীপ যদি রাজি থাকে তিনি বৌ পাল্টাপাল্টি করবেন।" রিয়া আরক্ত মুখে সন্দীপের দিকে তাকিয়েছিল - সন্দীপ খুব নির্বিকারভাবে বসের সাথে হাসছিল।

সেদিন রাতেই ঘটনাটা ঘটল। রিয়া কাজ সেরে আয়নার সামনে বসে চুল বাঁধছিল। সন্দীপ ঘরে ঢুকল - মদ্যপ অবস্থায়। বসকে সঙ্গ দিতে আজ একটু বেশী খেয়ে ফেলেছে। রিয়া কিছু বলেনি, কারণ ও জানে সন্দীপ খুব সংযত। এরকম আগেও এক-দুবার হয়েছে এবং সন্দীপ সােজা শুয়ে পড়েছে, রিয়াকে একটুও বিরক্ত না করে। কিন্তু যেদিন বিয়াকে অবাক করে দিয়ে অন্য এক সন্দীপ বেরিয়ে এসেছিল - “চুলের খুব বাহার হয়েছে না? দেখনদারি শুধু...আজ তােকে দেখাব ঐ চুল কি করে থাকে তোর!”

খুব নােংরা ভাষায় কথা বলছিল সন্দীপ আর তারপর রিয়ার চুল ধরে টেনে মাটিতে আছড়ে ফেলে দিয়েছিল ওকে। রিয়া চিৎকার করতে পারেনি - প্রচন্ড বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিল। এরপর থেকে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকে, যখনই কেউ রিয়ার চুলের সুখ্যাতি করে। অথচ অন্য সময় সন্দীপ একদম অন্য মানুষ। দুবার ক্ষমাও চেয়েছে। রিয়ার কাছে। রিয়া বাড়িতে জানাবে জানাবে করেও কিছু বলতে পারেনি। শাশুড়ি সব জেনে বুঝেও চুপ করে থাকতেন। একদিন রিয়াকে ডেকে কিছু পূজোর ফুল দিয়ে বলেন:

- ‘আমি দীপের জন্য পূজো দিয়েছি; এই ফুলটা ওর বালিশের তলায় রেখাে, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ একটু থেমে বললেন, 'আমি সবটা জানি...কিন্তু কি জানাে মা, সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে।' 
রিয়া শাশুড়ির কথার তাৎপর্য বুঝতে পারেনা, এটাও বুঝতে পারে না এখানে রিয়ার কি দোষ! এরমধ্যেই রিয়ার গর্ভে আসে সন্দীপের সন্তান। সবাই খুব খুশী হয় এই সংবাদে। সন্দীপ নিজের আনন্দ ধরে রাখতে পারে না - চলো, কোথাও ঘুরে আসি। এইসময় মন ভালো থাকা খুব দরকার।

রিয়া একটু হলেও আশ্বস্ত হয়, হয়তো সন্তানের আগমন সন্দীপকে বদলে দেবে। বেশ ভালোই কাটছিল পুরীতে দিনগুলো। এক সপ্তাহ ছুটি নিয়ে গেলেও রিয়ার অনুরােধে আরও দুদিন থেকে যায় ওরা। সেদিনও সূর্যোদয় দেখে ফিরছিল…সন্দীপের হাত রিয়ার কোমরে জড়ানাে... দুজনেই দুজনের শরীরের ওম দিচ্ছিল…হঠাৎ

"আরে রিয়া না!! হ্যাঁ রিয়াই তো....” 
বিকাশকে প্রথমে চিনতে পারেনি রিয়া। চাপদাড়ি আর রিমলেস চশমায় একদম অন্যরকম লাগছিল ওকে।

- '‘ম্যাডাম, চুলটা শ্যাম্পু করতে হবে। প্লিজ একটু wash basin-এ আসুন।’'

ঘাড়ে তােয়ালে জড়িয়ে মাথা নামিয়ে দেয় রিয়া। ঠান্ডা জলের স্রোত ভিজিয়ে দিতে থাকে রিয়ার মনের মেঘ।

"চলো সন্দীপদা, সমুদ্রে গা-টা ভিজিয়ে আসি।

দেখা হওয়ার পর থেকেই বিকাশ ওদের সঙ্গী। সন্দীপ শুধু জেনেছে ওরা একসাথে কলেজে পড়ত। এতদিন বাদে বিকাশকে দেখে রিয়াও কলেজের দিনে ফিরে গেছিল। 
- "আমিও যাব।" রিয়ার আদুরে আবদার সন্দীপ ফেলতে পারে না। রিয়া খোঁপা বাঁধা চুলটা খুলে দেয়। পুরাে জলে না নেমে বসে পড়ে...সমুদ্র এসে ভেজাতে থাকে রিয়ার চুল।

- “চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ’পর
হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, এতদিন কোথায় ছিলেন? 
পাখির নীড়ের মতাে চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।

বিকাশের মুখে জীবনানন্দ শুনে রিয়া এবং সন্দীপ দুজনেই অবাক। পরিস্থিতি হালকা করে রিয়া নিজেই বলে উঠলাে -

- "ফাজলামো করা এবার বন্ধ কর।” সবাই হেসে ওঠে একসাথে।

কিন্তু সন্দীপ যে এটা এত সহজে মেনে নেয়নি সেটা বাড়ি ফিরে বুঝতে পারে রিয়া। আকন্ঠ মদ্য পান করে এসেছিল সেদিন। রিয়ার লম্বা, মােটা বেণীটা গলায় পেঁচিয়ে ধরেছিল সর্বশক্তি দিয়ে ততক্ষণ, যতক্ষণ না রিয়া অজ্ঞান হয়ে নেতিয়ে পড়েছিল।

জ্ঞান এসেছিল হাসপাতালের ঠান্ডা ঘরে, আর তখনই অনুভব করে পেটে অসহ্য ব্যথা। পাশে মা আর শাশুড়ি দাঁড়িয়ে - দুজনের চোখেই জল। 
- "ম্যাডাম, শুধু ট্রিম করব? নাকি length একটু ছােট করবেন?
- “ছােটো করব...”
দুদিন বাদে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে রিয়া। সন্দীপ হাসপাতালে যায়নি। রিয়া যেদিন ফেরে, সেদিনও অনেক সকালে অফিস বেরিয়ে গেছিল। মাঝরাতে ফিরে ড্রয়িং রুমেই শুয়েছিল, রিয়ার ঘরে ঢােকেনি। সপ্তাহ খানেক পরে রিয়া কিছুটা সুস্থ বোধ করে...সন্দীপ ঘরে আসে - আমাকে ক্ষমা করাে রিয়া...আআআমি কিছু ভেবে...মানে.. আমি তাে বাচ্চা চেয়েছিলাম... কিন্তু ক্কি কি যে হলো...”
রিয়া মুখ ফিরিয়ে থাকে, জানলা দিয়ে রাস্তা দেখতে থাকে...
-"ম্যাডাম, আর কাটব?” 
-“হ‍্যাঁ" 
-"ম্যাম, এত সুন্দর চুল...সামনেটা layers কেটে নিতে পারেন
- "আপনাকে বললাম তো ছোট করে কাটতে
কাঁচি চলতে থাকে- রিয়ার চুলের সাথে মনেও। পার্লারের মেয়েটি অবিশ্বাস ভরা চোখ নিয়ে রিয়াকে দেখে "আরও ছােট করব ম্যাডাম?”
কোমর ছাপানাে চুল কাঁধে এসে দাঁড়িয়েছে।
- “আরও ছােট!” রিয়ার দৃষ্টি স্থির আয়নার দিকে।
আবার কাঁচি চলে। কাঁধের চুল ঘাড় অবধি। কাঁচি থামিয়ে রিয়ার দিকে তাকায় মেয়েটি “আরও ছােট!" রিয়ার দৃপ্ত কণ্ঠে পার্লারে থাকা বাকিরাও ঘুরে দেখে। মালিক ভদ্রমহিলা এগিয়ে আসেন “are you sure ma'am?” 
রিয়া মাথা ঝাঁকায়।
"ছােট করে দিন...যতটা ছােট করা যায়...ও যেন আর চুল ধরতে না পারে...আমার বাচ্চাকে কেড়ে নিতে না পারে…" ডুকরে কেঁদে ওঠে রিয়া....! 

কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
কবিতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জীবনানন্দ দাশ।
গল্প অনুপ্রেরণা- টেলিভিশনে দেখা বিজ্ঞাপন। 

[মমস্প্রেসোতে ২০১৯ সালের ১৭ই এপ্রিলে একই শিরোনামে পাবলিশ করা সংগৃহীত গল্প। লেখিকা রিতা সিনহা]

গ্রামীণ নাপিত~আনন্দ (শেষার্ধ)

"আহা…ঠিক আছে…" তিনি বললেন যখন আমি তার বাক্সের দিকে অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে তাকালাম তার কাছে কোন ধরনের রেজার আছে তা দেখতে। সৌভাগ্যবশত ...