Friday, July 3, 2015

কুচ বরণ মেয়ে তার মেঘ বরণ চুল (অন্তিম খণ্ড)

লিখেছেন : সন্ধ্যা প্রদীপ
জান্নাতের মন খারাপ। ভীষণ ভীষণ খারাপ। বাসা থেকে জরুরী তলব করেছে যাওয়ার জন্য। কোন ছেলেপক্ষ নাকি তাকে পছন্দ করেছে। দুপক্ষের কথা চলছে। সব ঠিক থাকলে তাকে আংটি পড়িয়ে এনগেজমেন্ট করে যাবে। জান্নাত আগে থেকেই জানত তাকে এভাবেই হুট করে যে কারো গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হবে কিন্ত সে যদি শুধু আর আটটা মাস সময় পেত তাহলেই ফাইনাল পরীক্ষাটা দিয়ে ফেলতে পারত। সে ভেবে পায় না কোন ছেলেপক্ষ তার ছোট চুল দেখেও বিয়েতে রাজি হয়ে গেল। সে ভাবে আর একবার ন্যাড়া করে ফেলবে কিন্ত বোঝে এতে আর কোনো লাভ হবে না।

বাসায় গিয়ে জান্নাত বোঝে বিয়েটা এবার আর ঠেকানো যাবে না। বাসার সবাই রাজি এমনকি ছোট চাচুমনিও বিয়ের পক্ষে। ছেলে নাকি ভাল সরকারি চাকরি করে এছাড়া দেখতেও সুদর্শন। সে যাই হোক একমাত্র সেই বিমর্ষ মনে বসে থাকে আর দোয়া করে যেন ছেলেটি একটু উদার মনের হয়। সে যেন জান্নাতকে পড়ালেখা শেষ করতে দেয়। পরদিন ছেলেপক্ষের সামনে সে কলের পুতুলের মত নির্জীব হয়ে বসে থাকে। একহাত ঘোমটার নিচ দিয়ে সে কারো দিকে তাকিয়েও দেখে না। শুধু তার ভীষন কান্না পেতে থাকে। এর মাঝে একজন মুরুব্বি তার হাতে আংটি পড়িয়ে দেয়। কথা হয় একবছর পরে বিয়ে হবে।একথা শুনে সে ভীষন অবাক হলেও হাফ ছেড়ে বাঁচে।

আলাপ করার জন্য যখন ছেলে ও মেয়েকে আলাদা ঘরে বসান হয় তখন প্রথমেই ছেলেটি তার বিশাল ঘোমটা সরিয়ে জিজ্ঞাসা করে, সেদিন ডিনারে আসনি কেন? আমি পুরোটা সময় তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি। জান্নাতের মনে তখন বহুমুখী আবেগের প্লাবন। আনন্দ অশ্রুটুকু দেখতে দেবেনা বলেই সে মুখ তুলে তাকাতে পারেনা।

আজ জান্নাতের শেষ পরীক্ষা। সে আর নিতু হাত ধরাধরি করে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে আসে। জান্নাতের ঘন চুলের ঝর্না এখন কাঁধ ছুঁয়ে পিঠে এসে পড়ে। একবছর অনেক সময়। আর ছয় মাস পর জান্নাতের বিয়ে। ছয়মাসে এই চুলের ঝর্ণা কোমর ছাড়িয়ে যাবে। জান্নাতের মনের সেই ছোট্ট মোহের চারাটি এখন অনেক বড় হয়েছে, জান্নাত জানে একদিন তা আরো বিস্তৃত হয়ে আকাশ ছোঁবে আর কোনো একসময় মহাকাশ। 



{গল্পটা ২০১৫ সালের ৩রা জুলাই রাত ৮ঃ৫১ মিনিটে সামহোয়্যারইন ব্লগে তিনটি খণ্ডই একযোগে এই নামেই প্রকাশিত হয়। ওখান থেকেই গল্পটা সংগ্রহ করে ৩টি খণ্ড আলাদা আলাদা পোস্ট করলাম।}

No comments:

গ্রামীণ নাপিত~আনন্দ (শেষার্ধ)

"আহা…ঠিক আছে…" তিনি বললেন যখন আমি তার বাক্সের দিকে অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে তাকালাম তার কাছে কোন ধরনের রেজার আছে তা দেখতে। সৌভাগ্যবশত ...