বিল্টু এতক্ষণ শুয়েছিল খাটের ওপর। এবার উঠেছে। পরমা বুঝতে পারছে বিল্টু বাথরুমে যাচ্ছে। বিল্টু বাথরুমে ঢুকতেই পরমা ঘরে ঢুকে চিরুনিটা হাতে তুলল তারপর চিরুনিটা ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রেখে বিছানায় বসে চোখে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল। প্রায় আধঘণ্টা পর বিল্টু বেরোলো বাথরুম থেকে। পরমা ডাকল
– “বিল্টু শোনো”
বিল্টু ঘরে ঢুকল। ওকে দেখে মনে হচ্ছে যেন খুব ক্লান্ত। বুঝতে কিছুই বাকী ছিল না পরমার। গম্ভীর গলায় আদেশ বেরোলো ওর মুখ থেকে,
– “এখানে বসো”
বিল্টু বসল। মুখ নিচের দিকে। পরমা অধৈর্য হয়ে উঠে দাঁড়াল। খোলা চুল টা জড়িয়ে নিলো। ঘাড়ের কাছে একটা বড়সড় রেশমের বলের মত ঝুলে রইল খোঁপাটা। পরমা বলতে শুরু করল,
– "কি চাও তুমি? তোমার কম্পিউটারে আমি দেখেছি। কি ওগুলো…" আরো বলতে যাচ্ছিল, বিল্টু কেঁদে ফেলল। পরমা এটা আশা করেনি। ঘাবড়ে গেল বিল্টুর কান্না দেখে। ওর খোলস টা যেন হঠাৎ উধাও হয়ে গেল বিল্টুর কান্না দেখে। ওর পাশে বসল পরমা। ওর গলা অনেক নরম হয়ে এসেছে। বিল্টুর মাথায় হাত বোলাতে লাগলো। বিল্টু এক ঝটকায় জড়িয়ে ধরল ওকে। অঝোরে কেঁদে চলেছে সে। পরমা এবার বলল,
– "কি চাই তোর? আমায় বল, কেন ওসব দেখিস তুই?”
বিল্টু এবার কথা বলল, ওর কান্না থেমেছে।
– “আমি জানি না মা। তোমার চুলটা দেখলেই আমার…"
পরমা কোনও কথা বলল না। শুধু বিল্টুর মাথায় হাত বোলাতে লাগলো। ও বুঝতে পেরেছে ওর কি করা উচিত। কিছুক্ষণ পর সব শান্ত হলে বিল্টুকে বলল এদিকে এসো। বিল্টু গেলে পরমা বলল সকালে তুমি যেই চুল আমার চিরুনি থেকে নিয়েছিলে ওটা এখনই দাও আমায়। বিল্টু ঘাবড়ে গিয়ে বলল আমি কিছু জানিনা তুমি কোন চুলের কথা বলছ। পরমা বলল তাহলে আমায় তোমার বাবাকে একটা ফোন করতে হবে মনে হয়। বিল্টু কাঁদতে কাঁদতে বলল না না দাঁড়াও দিচ্ছি বলে সে বাথরুমের দিকে যেতে গেল তো পরমা ধমক দিয়ে বলল ওদিকে না এখানে দাঁড়িয়ে যা করার কর। বিল্টু কোনো উপায় না পেয়ে পরমার সামনেই ধোনটা বের করে ওতে লেগে থাকা চুলগুলো ছাড়াতে লাগল। পরমা বলল এগুলো তুমি কি করেছ ছিঃ! ছিঃ!! বিল্টু লজ্জায় মাথা হেঁট করে ধোনের থেকে চুল বার করে পরমার হাতে দিলো। পরমা রেগে বলল তুমি এমন কেন করেছ? তুমি জানো চুলের ধারে তোমার নুনু কেটে গিয়ে রক্তপাত হতে পারত? বিল্টু চুপ করে রইলো। পরমা বলল অনেক হয়েছে আর না বিল্টুকে বলল তৈরি হয়ে নে। আমরা বেরুবো। বিল্টু জিজ্ঞেস করল, ‘কোথায়?’
– 'আমি চুল কেটে ফেলব, তুই আমায় নিয়ে যাবি।'
বিল্টু চমকে উঠল একটু। ও নিজেও অনেকবার মাকে কল্পনা করেছে, গলায় সাদা কেপ জড়ানো, মায়ের চোখে জল পড়ছে, তবুও ও থামছে না নিজের হাতে কেটে ফেলছে মায়ের চুল। একদম ছোট বয়কাট। টিভিতে যে মেয়েটা খবর পরে ঠিক তার মত। ওর আজ যেন একটু সাহস হল। বলল
– ‘মা, তোমার চুল যদি আমি কাটি? প্লিজ না বলো না। আমি কথা দিচ্ছি আর ওসব আমি দেখব না। মন দিয়ে পড়াশোনা করব।'
পরমা এবার হাসল। বুঝল সমস্যা এখন সমাধানের পথে। এতদিন নিজেকে দিদিমণি ভেবে এসেছে। আজ প্রথম মা ভাবতে ভাল লাগছে নিজেকে। ছেলের জন্যে এটুকু করতে পারবেনা সে? বলল ঠিক আছে। বিল্টুকে এত খুশি দেখেনি সে কোনোদিন। বিল্টুকে বলল, 'বল আমি কি করব। কোথায় বসব? বরং তোর ঘরে চল।’
বিল্টু অবাক, আজ কি সে স্বপ্ন দেখছে? তারাতারি সব ব্যবস্থা করতে লাগলো সে। নিজের ঘর পরিস্কার করে ঘরের মাঝে একটা টুল রাখল সে। একটা সাদা কাপড় জোগাড় করলো চুল কাটার সময় মায়ের গায়ে জড়ানোর জন্য। বাবার শেভিং কিট কাঁচি চিরুনি সব জড়ো করল টুলটার কাছে।
পরমা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছিল চুলের গোছা সামনে নিয়ে। নিজেকে আজ বড় কুৎসিত লাগছে তার। কি করতে চলেছে সে কিছুই জানে না। সোমবার যখন কলেজ যাবে তাকে দেখে লোকে হাসবে। কিন্তু কোনো উপায় নেই তার। ওর মুখ চোখ দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোন অজানা শত্রু তার সর্বস্ব লুট করে নিতে চলেছে। যেন সর্বসমক্ষে উলঙ্গ করে দেয়া হবে আর একটু পরেই। না, সব চুল সে কিছুতেই কাটবে না। খুব জোর চার আঙ্গুল, আট আঙ্গুল, আচ্ছা বেশ খুব বেশি হলে কোমর অব্দি। তার বেশি না। সে তখনও জানে না, বিল্টু ঠিক তখনই ট্রিমারটা চালিয়ে টেস্ট করছে তার জন্যে।কবিতা আর তাকিয়ে থাকতে পারল না আয়নায়, চুলটা তুলে খোঁপা করে নিলো। আরও মিনিট দশ কাটল। চমক ভাঙল বিল্টুর ডাকে, 'মা, এসো।'
পরমা গিয়ে ঢুকল বিল্টুর ঘরে। বিল্টু মাকে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলো যাতে কেউ ওদের বিরক্ত না করে। পরমাকে দেখে মনে হচ্ছিল না যে সে স্বেচ্ছায় মেনে নিচ্ছে এই ব্যবস্থা। যেন ওকে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল এমন একটি ঘরে যেখান থেকে সে যখন বেরোবে ততক্ষণে তার মান সম্মান শরীরের আচ্ছাদনটুকু লুট করে নেবে কেউ। তবুও ওকে ঢুকতেই হবে ওই ঘরে। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই ওর। বিল্টু ওকে হাত ধরে নিয়ে গিয়ে টুলটাতে বসিয়ে দিলো। পরমার শরীরে যেন প্রাণ নেই। বিল্টু সাদা কাপড়খানা জড়িয়ে দিচ্ছে ওর গলায়। তারপর হাত পড়ল ওর খোঁপায়। কবিতার শরীরে শিহরণ খেলে গেল। বিল্টুর শরীরও স্থির নেই। মায়ের নরম চুলের খোঁপায় হাত দিয়ে ওর বুক উত্তেজনায় কাঁপতে শুরু করেছে। ওর পক্ষে মাথা ঠিক রাখা অসম্ভব হয়ে উঠল। এতদিন যা সে স্বপ্নে দেখে এসেছে আজ তা বাস্তবে পেয়ে সে সব ভুলে গেল। সে ভুলে গেল একটু আগে কি ঘটেছে। খালি তার মনে হতে লাগলো এতদিন যে সকল মডেলদের সে কম্পিউটারে দেখে এসেছে তাদেরই কেউ একজন তার সামনে বসে আছে এবং তাকে নিয়ে সে যা খুশি করতে পারে। সে পাগলের মত খেলা করতে লাগল মায়ের চুল নিয়ে। প্রথমে খোঁপাটা দু’হাতে নেড়েচেড়ে দুহাতে টিপে শেষে নাক ডুবিয়ে গন্ধ শুঁকতে লাগল। পরমা বুঝতে পারল না বিল্টু কেন এমন করছে। কিন্তু তার খালি মনে হতে লাগল বিল্টু এখন যা চাইছে তা না পাওয়া অব্দি ওর মন শান্ত হবে না। তাকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে গেলে সে যা চাইছে তাই দিতে হবে। নতুবা সে তলিয়ে যাবে এক অন্ধকার জগতে। তাই সে চুপচাপ বসে রইল। আর নিজেকে পুরোপুরি বিল্টুর হাতে ছেড়ে দিল। বিল্টুর তখন মাথার ঠিক নেই। ততক্ষণে খোঁপাটা খুলে ফেলেছে সে।ঘন কালো মখমলের মত নরম কালো চুল মেঝে অবধি ঝুলে রয়েছে, ঢেকে ফেলেছে পরমার গোটা দেহ। আর বিল্টু দুহাতে নিয়ে খেলছে, গায়ে মাখছে সেই পশম। হঠাৎ বিল্টুর মনে হল এই চুল তো মা কেটেই ফেলবে খানিক বাদে।
চলবে…
No comments:
Post a Comment