হাই বন্ধুরা আমি কান্তা। ৯ম শ্রেণিতে পড়ার সময় একবার মা আমাকে ন্যাড়া করে দিয়েছিল। কেন? আজ তোমাদের সেই গল্প বলব। ক্লাস এইটে থাকতেই আমার টিউশন ক্লাসের একটা ছেলের সঙ্গে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়, ওর নাম ছিল ঋভু। তখন ছেলেটি অন্য স্কুলে পড়ত কিন্তু টিউশন পড়ত আমার স্কুলের ব্যাচের সঙ্গে। ক্লাস নাইনে উঠে ও আমাদের স্কুলে ভর্তি হলো এবং কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের বন্ধুত্ব প্রেমে রূপান্তরিত হয়। যেদিন ও আমাকে প্রপোজ করে সেদিন আমি এক্সেপ্ট করার পরপরই ও জোর করতে থাকে যে স্কুল ছুটির পর ও আমাকে বাড়ি অবধি দিয়ে আসবে। তো যেমন ভাবা তেমন কাজ। এভাবে কয়েকদিন ও আমাকে বাড়ি ড্রপ করে দিয়ে আসাতে আমার মায়ের সন্দেহ হলো; মা আমাকে জিজ্ঞেস করল ছেলেটা কে রে? কোথায় থাকে? আমি বললাম ক্লাসমেট কিন্তু কোথায় থাকে বললাম না।
ঋভুর বাড়ি ছিল স্কুলের থেকে উত্তরে ১ কিলোমিটার দূরে আর আমার স্কুলের থেকে দক্ষিণে ১ কিলোমিটার দূরে। মানে পুরো বিপরীত দিকে। যা হোক আমার মা কয়েকদিন আমাকে নামিয়ে দিয়ে ঋভুর উল্টো দিকে সাইকেল ঘোরানোতেই আন্দাজ করতে পারলেন ঋভুর বাড়ি উল্টোদিকে কোথাও। আর আমার আরেক ছেলে ক্লাসমেট থেকে জিজ্ঞেস করে পুরো নিশ্চিত হলেন। এমনকি এটাও বুঝতে পারলেন আমার আর ওর মধ্যে কিছু একটা চলছে।
একদিন স্কুল ছুটির পর আমি আর ঋভু চড়কের মেলায় গেলাম সেখানে ঘোরাঘুরির পর ও আমাকে আইসক্রিম কিনে দিলো; আমরা দুজনে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছিলাম তো হঠাৎ করে মা আর পাশের বাসার কাকী আমাদের দেখতে পেয়ে যান। যদিও তারা আমাদের দেখে কিছু বলেননি। ঋভু যদিও তাদের দেখতে পেয়ে আমার হাত ধরে টেনে এনে অন্য দিকে নিয়ে যায়, এমনকি বাসায় ফেরার পরও মা আমাকে এ নিয়ে কোনো বকাঝকা করেনি। অন্য আরেকদিন আমি ও ঋভু স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখতে বাজারের হলে গিয়েছিলাম এবং দুর্ভাগ্যবশত ঐদিনও আমার মা ও ছোট ভাই আমাদের হল থেকে বেরোনোর সময় হলের গেটের পাশে এসে পড়ে। এবার আমার মা চরম ক্ষেপে গেল কিন্তু সেদিন রাতেও আমায় কিছু বলল না।
কিছুদিন পরের ঘটনা আমার স্কুলের এক বান্ধবী জিনিয়া ওর বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে পালিয়ে ওর বয়ফ্রেন্ডের ঠাকুরদার বাড়ি চলে গেল। যথারীতি পাঁচ কান ঘুরে এটাও আমার মায়ের কান অবধি পৌঁছাল। তারপরই আমার মা সিদ্ধান্ত নিলেন আমার ডানা ছাঁটতে হবে। অবশ্য ডানা না থাকায় আমার চুলই লক্ষ্যে পরিণত হলো।
তো একদিন স্কুল যাবার আগে চান করে আমি নিজের চুল শুকোচ্ছি আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আঁচড়াচ্ছিলাম। নিজের চুলকে আমি যথেষ্ট যত্ন করতাম, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করতাম চুলে শ্যাম্পু ও তেল দিয়ে আঁচড়াতে যদিও আমার মা এত সময় ড্রেসিং টেবিলের সামনে কাটানো মোটেও পছন্দ করত না। তো দেখলাম আমার ছোট ভাই যে কিনা আমার মাত্র দু বছরের ছোট এক দৃষ্টিতে আমার চুলের পানে তাকিয়ে আছে। আমি অবাক হয়ে ওকে জিজ্ঞেস করলাম এই এমন করে কি দেখিস??
ও আমার চুলের গোছা হাতে নিয়ে বলে- কিছু না রে দি, তোর চুল দেখি!! তোর চুল দেখলে মনে হয়, ‘চুল তার কবে কার বিদিশার নিশা’ এই বলে খিলখিল করে হেসে উঠল।
আমি ওর গাল টেনে ধরে বললাম চুপ কর তো, আমার চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে।। মাঝে মাঝে কি মন চায় জানিস? আহ্লাদী কণ্ঠে বলি।
ও বলল- কি মন চায় তোর?
আমি নিজের মাথার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলি- মন চায় বেল মাথা হয়ে যাই, আবার নতুন চুল গজাবে, তখন খুব সুন্দর চুল হবে। হি হি হি।
ও আমার চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে বিড়বিড় বলল- তথাস্তুঃ তোর মনোবাসনা পূর্ণ হোক। তারপরই আমি যাতে বুঝতে না পারি তাই বলে: কি সিল্কি চুল তোর!
আমি বলি- সিল্কি না ঘোড়ার ডিম, এই শোন না, আমাকে হাজার দেড়েক টাকা দিতে পারিস? আর আমার জমানো কিছু টাকা দিয়ে চুলগুলো রিবন্ডিং করবো।
ও মুহূর্তে মুখ কালো করে বলল- দুই হাজার তো দূরের কথা দুই টাকাও নাই। বাবা তো আমাকে টাকা দিতেই চায় না মা-ও এখন আর মাসিক হাতখরচ দিতে চায় না যা দেয় দৈনিক হিসাবে।
সেদিন রবিবার। ক্লাস ছিল না। আমি কালো দেখে একটা কামিজ আর ডিপ ব্লু পাজামা পরে টিউশনির নাম করে ঋভুর সঙ্গে জাদুঘর দেখে বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি এসে দরজায় টোকা দেবার সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে মা আমাকে ঠাস করে একটা চড় মারল। আমি হকচকিয়ে বললাম কি করছ মা? মারছ কেন?
- মার তো তোর উচিৎ পাওনা নয়। আয় তবে।
এই বলে আমার হাত ধরে টেনে ছাদে নিয়ে চলল। আমার ভাই আগেই ছাদে দাঁড়িয়ে ছিল। ছাদে একটা জায়গায় প্লাস্টিকের চট ও তার উপর চৌকি ও পিঁড়ি পাতা ছিল আর দুটোর মাঝখানে কাঁচি ও রেজার। দেখে আমার আর কিছু বুঝতে বাকি থাকল না। মা আমাকে পিঁড়িতে বসিয়ে কাঁচি দিয়ে আমার চুল বাঁধা অবস্থাতেই কাটতে লাগল। আর আমার ভাই সেটা ভিডিয়ো করতে লাগল। আমার বেশ মজা লাগছিল কারণ এমনিতেই গ্রীষ্মকালে গরমে ঘামে আমার চুল ভিজে মাথা ব্যথা করত। তাছাড়া সারাদিন স্কুল-টিউশন-বাড়ি-বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে টো টো করে বেড়ানোতে আমার মাথার ঘাম ও রাস্তার ধুলোকণা মিলে মাথায় খুশকি হয়ে গেছিল আর ডগাচেরা তো ছিলই। তাই ন্যাড়া করলে আমার মাথাও ভারমুক্ত হবে আর নতুন ভালো চুলও হবে। আমি আমার ছোটভাইয়ের ফোনের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটলাম ও মিটিমিটি হেসে পরে কান্নার অভিনয় করতে লাগলাম।
মায়ের যদিও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। মা আমাকে শাস্তি দেবার বাসনায় উদ্বেল হয়ে আছে। মা আস্তে আস্তে আমার মাথার চুলগুলো বাঁধা অবস্থায় সেগুলোর গোড়া মুঠোয় টেনে টেনে কাঁচি দিয়ে কাটতে লাগল। মোটামুটি ১৫ মিনিটেই আমার মাথা থেকে চুলের বোঝা নেমে গেল। হাল্কা হাল্কা বাতাস মাথার ত্বক ছুঁয়ে যাচ্ছে। তারপর আমার ভাইকে ইশারা করতেই ছাদের গাছে জল ঢালবার ঝাঁঝরি এগিয়ে দিলো। আমার মা তখন তা থেকে জল ঢেলেই আমার মাথা ভিজিয়ে দিয়ে ভালো করে রগড়াতে লাগলেন যাতে চুলের গোড়া অবধি ভিজে।
এরপর বাবার দাঁড়ি কাটার ক্ষুরটা থেকে পুরনো ব্লেড বের করে নতুন ব্লেড ঢুকালেন। এবার খুব সাবধানে ক্ষুর টেনে টেনে অবশিষ্ট এলোমেলো অসমান করে কাটা চুলের সৎকার করতে লাগলেন। স্কর… ছর… ছর… শব্দে আমার মাথার তালু হতে মেরুদণ্ড শিহরিত হতে লাগল। বিকেলের রোদের মৃদু আঁচ আবার মুড়ানো মাথায় লাগছিল তবে হাল্কা বাতাসের ছোঁয়ায় সেটা বেশ সহনীয় ছিল। এভাবে আমার মা মাথার মাঝখান থেকে কপালের শেষের হেয়ারলাইন পর্যন্ত ঝটপট ক্ষুর দিয়ে কামিয়ে ফেললেন, এরপর ডানপাশে, বামপাশ এবং পিছনে কামালেন। সব ছোট ছোট দলাপাকানো চুল আমার ঘাড়ে, কোলে, কাঁধে ঝরে পড়তে লাগল। আমার মা আমার মাথার কামানো জায়গা ধরে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুড়াচ্ছিলেন। উন্মুক্ত ত্বকে মায়ের হাতের ছোঁয়ায় আমার বেশ লাগছিল। এরপর কামানো শেষে মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে কি যেন ভাবলেন তারপর ছোট ভাইকে বললেন বাথরুম থেকে যেন শ্যাম্পুর বোতলটা নিয়ে আসে। আমার শুনে বেশ ভাল লাগল। ও শ্যাম্পুর বোতল নিয়ে এলে মা আমার মাথায় আরেকটু জল দিয়ে, বোতলের মুখ খুলে অল্প খানিকটা শ্যাম্পু নিয়ে পুরো মাথায় মাখিয়ে দিলেন। তারপর আরেকবার মাথার পেছন থেকে মাঝখানে, কানের পেছন থেকে মাথার মাঝখানে ও উঠে গিয়ে পেছনে দাঁড়িয়ে মাথার সামনে থেকে মাঝ পর্যন্ত কামালেন।
এবার আমার মাথা পুরো তকতকে টাক হয়ে গেছে। আমার মা পুরো মাথায় হাত বোলালেন। আমার ভাইও ভিডিয়ো থামিয়ে এগিয়ে এসে মাথায় হাত বোলায় ও একটা চাঁটি মারে। আমি ওর দিকে রাগী চেহারা করে ঘুরে তাকাতেই ও আমার ছবি তুলে হাসতে থাকে। আমাদের মা ওকে ধমকে দিয়ে আমাকে বলল যা চান করে আয়, আমি টেবিলে খাবার রেখে দিয়েছি; চান সেরে খেয়ে নিস। আমি চান করতে ঢুকে বেসিনের আয়নায় নিজের সদ্য মুড়ানো মাথা দেখতে লাগলাম, মাথায় বেশ কয়েকবার হাত বোলালাম। বেশ আনন্দ লাগছিল ও এরপর শাওয়ার ছেড়ে দিলাম আর তখনই এলো দুর্ভাবনা। কাল স্কুল গেলে কি হবে?
পরদিন আমাকে স্কুলে যেতে হয়েছিল তবে আমার মা আমাকে ক্যাপ বা স্কার্ফ কিছুই পরতে দেয়নি। মা আমাকে খোলা মাথায় স্কুল যেতে বলেছিল। তবে আমি স্কুল যাবার পথে একটা সাদা ক্যাপ কিনে নিলাম। আমি স্কুলে যাবার পর আমার সহপাঠীরা আমার ক্যাপ খুলে ইয়ার্কি ঠাট্টা করতে লাগল এবং আমার মাথা ছুঁয়ে দেখছিল ও বারবার হাত বোলাচ্ছিল। আমার ঋভুর সামনে যেতে ভয় করছিল। যখন ঋভু আমাকে দেখল সে বিস্মিত ও বিব্রত হয়েছিল। আমি ওকে দেখে হাসলাম। ও তখন কিছু না বলে ঘুরে ওর বেঞ্চিতে গিয়ে বসল। আমি ওর এমনটা করায় ভীষণ দুঃখ পেলাম যে আমি ফার্স্ট পিরিয়ডের পর ওয়াশরুমে গিয়ে কাঁদলাম। টিফিন পিরিয়ডে অন্য দিনের মতো আমার কারো সঙ্গে বসে টিফিন করতে ইচ্ছা করল না তাই আমি আমার টিফিন বক্স হাতে সিঁড়ি বেয়ে উঠছিলাম এমন সময় হঠাৎ করে সুরেশ আমার হাত হ্যাঁচকা টান দিয়ে ল্যাবরেটরি রুমে টেনে বলে কি হয়েছিল? কেন এমনটা হলো আমায় বলো? আমি ওকে সব বলতে বলতে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললাম আর ও আমার ন্যাড়া মাথায় হাত বুলাতে থাকে। এরপর চোখ মুছিয়ে আমার ন্যাড়া মাথায় চুমু খেয়ে বলে কোনো ব্যাপার না; তোমাকে ন্যাড়া মাথাতেও দারুণ লাগে।
এর দু হফতা পর গরমের ছুটি পড়ে যায় আর ঋভুঞও তখন আমাকে সাথে নিয়ে নাপিতের দোকানে ক্লিপার দিয়ে ন্যাড়া হয় যদিও ও ক্ষুর দিয়েই করাতো তবু আমি বলায় ক্লিপার দিয়েই করিয়েছিল।