Saturday, October 31, 2020

প্রেম করবার শাস্তি দিলো মা

হাই বন্ধুরা আমি কান্তা। ৯ম শ্রেণিতে পড়ার সময় একবার মা আমাকে ন‍্যাড়া করে দিয়েছিল। কেন? আজ তোমাদের সেই গল্প বলব। ক্লাস এইটে থাকতেই আমার টিউশন ক্লাসের একটা ছেলের সঙ্গে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়, ওর নাম ছিল ঋভু। তখন ছেলেটি অন‍্য স্কুলে পড়ত কিন্তু টিউশন পড়ত আমার স্কুলের ব‍্যাচের সঙ্গে। ক্লাস নাইনে উঠে ও আমাদের স্কুলে ভর্তি হলো এবং কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের বন্ধুত্ব প্রেমে রূপান্তরিত হয়। যেদিন ও আমাকে প্রপোজ করে সেদিন আমি এক্সেপ্ট করার পরপরই ও জোর করতে থাকে যে স্কুল ছুটির পর ও আমাকে বাড়ি অবধি দিয়ে আসবে। তো যেমন ভাবা তেমন কাজ। এভাবে কয়েকদিন ও আমাকে বাড়ি ড্রপ করে দিয়ে আসাতে আমার মায়ের সন্দেহ হলো; মা আমাকে জিজ্ঞেস করল ছেলেটা কে রে? কোথায় থাকে? আমি বললাম ক্লাসমেট কিন্তু কোথায় থাকে বললাম না। 


ঋভুর বাড়ি ছিল স্কুলের থেকে উত্তরে ১ কিলোমিটার দূরে আর আমার স্কুলের থেকে দক্ষিণে ১ কিলোমিটার দূরে। মানে পুরো বিপরীত দিকে। যা হোক আমার মা কয়েকদিন আমাকে নামিয়ে দিয়ে ঋভুর উল্টো দিকে সাইকেল ঘোরানোতেই আন্দাজ করতে পারলেন ঋভুর বাড়ি উল্টোদিকে কোথাও। আর আমার আরেক ছেলে ক্লাসমেট থেকে জিজ্ঞেস করে পুরো নিশ্চিত হলেন। এমনকি এটাও বুঝতে পারলেন আমার আর ওর মধ্যে কিছু একটা চলছে। 



একদিন স্কুল ছুটির পর আমি আর ঋভু চড়কের মেলায় গেলাম সেখানে ঘোরাঘুরির পর ও আমাকে আইসক্রিম কিনে দিলো; আমরা দুজনে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছিলাম তো হঠাৎ করে মা আর পাশের বাসার কাকী আমাদের দেখতে পেয়ে যান। যদিও তারা আমাদের দেখে কিছু বলেননি। ঋভু যদিও তাদের দেখতে পেয়ে আমার হাত ধরে টেনে এনে অন‍্য দিকে নিয়ে যায়, এমনকি বাসায় ফেরার পরও মা আমাকে এ নিয়ে কোনো বকাঝকা করেনি। অন‍্য আরেকদিন আমি ও ঋভু স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখতে বাজারের হলে গিয়েছিলাম এবং দুর্ভাগ্যবশত ঐদিনও আমার মা ও ছোট ভাই আমাদের হল থেকে বেরোনোর সময় হলের গেটের পাশে এসে পড়ে। এবার আমার মা চরম ক্ষেপে গেল কিন্তু সেদিন রাতেও আমায় কিছু বলল না। 



কিছুদিন পরের ঘটনা আমার স্কুলের এক বান্ধবী জিনিয়া ওর বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে পালিয়ে ওর বয়ফ্রেন্ডের ঠাকুরদার বাড়ি চলে গেল। যথারীতি পাঁচ কান ঘুরে এটাও আমার মায়ের কান অবধি পৌঁছাল। তারপরই আমার মা সিদ্ধান্ত নিলেন আমার ডানা ছাঁটতে হবে। অবশ্য ডানা না থাকায় আমার চুলই লক্ষ্যে পরিণত হলো। 



তো একদিন স্কুল যাবার আগে চান করে আমি নিজের চুল শুকোচ্ছি আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আঁচড়াচ্ছিলাম। নিজের চুলকে আমি যথেষ্ট যত্ন করতাম, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব‍্যয় করতাম চুলে শ‍্যাম্পু ও তেল দিয়ে আঁচড়াতে যদিও আমার মা এত সময় ড্রেসিং টেবিলের সামনে কাটানো মোটেও পছন্দ করত না। তো দেখলাম আমার ছোট ভাই যে কিনা আমার মাত্র দু বছরের ছোট এক দৃষ্টিতে আমার চুলের পানে তাকিয়ে আছে। আমি অবাক হয়ে ওকে জিজ্ঞেস করলাম এই এমন করে কি দেখিস??



ও আমার চুলের গোছা হাতে নিয়ে বলে- কিছু না রে দি, তোর চুল দেখি!! তোর চুল দেখলে মনে হয়, ‘চুল তার কবে কার বিদিশার নিশা’ এই বলে খিলখিল করে হেসে উঠল।



আমি ওর গাল টেনে ধরে বললাম চুপ কর তো, আমার চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে।। মাঝে মাঝে কি মন চায় জানিস? আহ্লাদী কণ্ঠে বলি।



ও বলল- কি মন চায় তোর?



আমি নিজের মাথার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলি- মন চায় বেল মাথা হয়ে যাই, আবার নতুন চুল গজাবে, তখন খুব সুন্দর চুল হবে। হি হি হি।


ও আমার চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে বিড়বিড় বলল- তথাস্তুঃ তোর মনোবাসনা পূর্ণ হোক। তারপরই আমি যাতে বুঝতে না পারি তাই বলে: কি সিল্কি চুল তোর!



আমি বলি- সিল্কি না ঘোড়ার ডিম, এই শোন না, আমাকে হাজার দেড়েক টাকা দিতে পারিস? আর আমার জমানো কিছু টাকা দিয়ে চুলগুলো রিবন্ডিং করবো।


ও মুহূর্তে মুখ কালো করে বলল- দুই হাজার তো দূরের কথা দুই টাকাও নাই। বাবা তো আমাকে টাকা দিতেই চায় না মা-ও এখন আর মাসিক হাতখরচ দিতে চায় না যা দেয় দৈনিক হিসাবে। 


সেদিন রবিবার। ক্লাস ছিল না। আমি কালো দেখে একটা কামিজ আর ডিপ ব্লু পাজামা পরে টিউশনির নাম করে ঋভুর সঙ্গে জাদুঘর দেখে বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি এসে দরজায় টোকা দেবার সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে মা আমাকে ঠাস করে একটা চড় মারল। আমি হকচকিয়ে বললাম কি করছ মা? মারছ কেন? 


- মার তো তোর উচিৎ পাওনা নয়। আয় তবে। 



এই বলে আমার হাত ধরে টেনে ছাদে নিয়ে চলল। আমার ভাই আগেই ছাদে দাঁড়িয়ে ছিল। ছাদে একটা জায়গায় প্লাস্টিকের চট ও তার উপর চৌকি ও পিঁড়ি পাতা ছিল আর দুটোর মাঝখানে কাঁচি ও রেজার। দেখে আমার আর কিছু বুঝতে বাকি থাকল না। মা আমাকে পিঁড়িতে বসিয়ে কাঁচি দিয়ে আমার চুল বাঁধা অবস্থাতেই কাটতে লাগল। আর আমার ভাই সেটা ভিডিয়ো করতে লাগল। আমার বেশ মজা লাগছিল কারণ এমনিতেই গ্রীষ্মকালে গরমে ঘামে আমার চুল ভিজে মাথা ব‍্যথা করত। তাছাড়া সারাদিন স্কুল-টিউশন-বাড়ি-বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে টো টো করে বেড়ানোতে আমার মাথার ঘাম ও রাস্তার ধুলোকণা মিলে মাথায় খুশকি হয়ে গেছিল আর ডগাচেরা তো ছিলই। তাই ন‍্যাড়া করলে আমার মাথাও ভারমুক্ত হবে আর নতুন ভালো চুলও হবে। আমি আমার ছোটভাইয়ের ফোনের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটলাম ও মিটিমিটি হেসে পরে কান্নার অভিনয় করতে লাগলাম। 


মায়ের যদিও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। মা আমাকে শাস্তি দেবার বাসনায় উদ্বেল হয়ে আছে। মা আস্তে আস্তে আমার মাথার চুলগুলো বাঁধা অবস্থায় সেগুলোর গোড়া মুঠোয় টেনে টেনে কাঁচি দিয়ে কাটতে লাগল। মোটামুটি ১৫ মিনিটেই আমার মাথা থেকে চুলের বোঝা নেমে গেল। হাল্কা হাল্কা বাতাস মাথার ত্বক ছুঁয়ে যাচ্ছে। তারপর আমার ভাইকে ইশারা করতেই ছাদের গাছে জল ঢালবার ঝাঁঝরি এগিয়ে দিলো। আমার মা তখন তা থেকে জল ঢেলেই আমার মাথা ভিজিয়ে দিয়ে ভালো করে রগড়াতে লাগলেন যাতে চুলের গোড়া অবধি ভিজে। 


এরপর বাবার দাঁড়ি কাটার ক্ষুরটা থেকে পুরনো ব্লেড বের করে নতুন ব্লেড ঢুকালেন। এবার খুব সাবধানে ক্ষুর টেনে টেনে অবশিষ্ট এলোমেলো অসমান করে কাটা চুলের সৎকার করতে লাগলেন। স্কর… ছর… ছর… শব্দে আমার মাথার তালু হতে মেরুদণ্ড শিহরিত হতে লাগল। বিকেলের রোদের মৃদু আঁচ আবার মুড়ানো মাথায় লাগছিল তবে হাল্কা বাতাসের ছোঁয়ায় সেটা বেশ সহনীয় ছিল। এভাবে আমার মা মাথার মাঝখান থেকে কপালের শেষের হেয়ারলাইন পর্যন্ত ঝটপট ক্ষুর দিয়ে কামিয়ে ফেললেন, এরপর ডানপাশে, বামপাশ এবং পিছনে কামালেন। সব ছোট ছোট দলাপাকানো চুল আমার ঘাড়ে, কোলে, কাঁধে ঝরে পড়তে লাগল। আমার মা আমার মাথার কামানো জায়গা ধরে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুড়াচ্ছিলেন। উন্মুক্ত ত্বকে মায়ের হাতের ছোঁয়ায় আমার বেশ লাগছিল। এরপর কামানো শেষে মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে কি যেন ভাবলেন তারপর ছোট ভাইকে বললেন বাথরুম থেকে যেন শ‍্যাম্পুর বোতলটা নিয়ে আসে। আমার শুনে বেশ ভাল লাগল। ও শ‍্যাম্পুর বোতল নিয়ে এলে মা আমার মাথায় আরেকটু জল দিয়ে, বোতলের মুখ খুলে অল্প খানিকটা শ‍্যাম্পু নিয়ে পুরো মাথায় মাখিয়ে দিলেন। তারপর আরেকবার মাথার পেছন থেকে মাঝখানে, কানের পেছন থেকে মাথার মাঝখানে ও উঠে গিয়ে পেছনে দাঁড়িয়ে মাথার সামনে থেকে মাঝ পর্যন্ত কামালেন। 


এবার আমার মাথা পুরো তকতকে টাক হয়ে গেছে। আমার মা পুরো মাথায় হাত বোলালেন। আমার ভাইও ভিডিয়ো থামিয়ে এগিয়ে এসে মাথায় হাত বোলায় ও একটা চাঁটি মারে। আমি ওর দিকে রাগী চেহারা করে ঘুরে তাকাতেই ও আমার ছবি তুলে হাসতে থাকে। আমাদের মা ওকে ধমকে দিয়ে আমাকে বলল যা চান করে আয়, আমি টেবিলে খাবার রেখে দিয়েছি; চান সেরে খেয়ে নিস। আমি চান করতে ঢুকে বেসিনের আয়নায় নিজের সদ‍্য মুড়ানো মাথা দেখতে লাগলাম, মাথায় বেশ কয়েকবার হাত বোলালাম। বেশ আনন্দ লাগছিল ও এরপর শাওয়ার ছেড়ে দিলাম আর তখনই এলো দুর্ভাবনা। কাল স্কুল গেলে কি হবে? 

পরদিন আমাকে স্কুলে যেতে হয়েছিল তবে আমার মা আমাকে ক‍্যাপ বা স্কার্ফ কিছুই পরতে দেয়নি। মা আমাকে খোলা মাথায় স্কুল যেতে বলেছিল। তবে আমি স্কুল যাবার পথে একটা সাদা ক‍্যাপ কিনে নিলাম। আমি স্কুলে যাবার পর আমার সহপাঠীরা আমার ক‍্যাপ খুলে ইয়ার্কি ঠাট্টা করতে লাগল এবং আমার মাথা ছুঁয়ে দেখছিল ও বারবার হাত বোলাচ্ছিল। আমার ঋভুর সামনে যেতে ভয় করছিল। যখন ঋভু আমাকে দেখল সে বিস্মিত ও বিব্রত হয়েছিল। আমি ওকে দেখে হাসলাম। ও তখন কিছু না বলে ঘুরে ওর বেঞ্চিতে গিয়ে বসল। আমি ওর এমনটা করায় ভীষণ দুঃখ পেলাম যে আমি ফার্স্ট পিরিয়ডের পর ওয়াশরুমে গিয়ে কাঁদলাম। টিফিন পিরিয়ডে অন‍্য দিনের মতো আমার কারো সঙ্গে বসে টিফিন করতে ইচ্ছা করল না তাই আমি আমার টিফিন বক্স হাতে সিঁড়ি বেয়ে উঠছিলাম এমন সময় হঠাৎ করে সুরেশ আমার হাত হ‍্যাঁচকা টান দিয়ে ল‍্যাবরেটরি রুমে টেনে বলে কি হয়েছিল? কেন এমনটা হলো আমায় বলো? আমি ওকে সব বলতে বলতে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললাম আর ও আমার ন‍্যাড়া মাথায় হাত বুলাতে থাকে। এরপর চোখ মুছিয়ে আমার ন‍্যাড়া মাথায় চুমু খেয়ে বলে কোনো ব‍্যাপার না; তোমাকে ন‍্যাড়া মাথাতেও দারুণ লাগে। 


এর দু হফতা পর গরমের ছুটি পড়ে যায় আর ঋভুঞও তখন আমাকে সাথে নিয়ে নাপিতের দোকানে ক্লিপার দিয়ে ন‍্যাড়া হয় যদিও ও ক্ষুর দিয়েই করাতো তবু আমি বলায় ক্লিপার দিয়েই করিয়েছিল।

Sunday, August 9, 2020

মা এলো নাপিতের দোকানে

৩২ বছর বয়সী বাসনা তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী নাপিতের দোকানে হুড়মুড়িয়ে ঢুকল। তার মধ‍্যপিঠ পর্যন্ত দীর্ঘ চুল সব আলুথালু, এবং সে আসার পূর্বে কাপড় বদলায়নি বরং তার বাসায় পরে থাকা ঘর্মাক্ত শাড়ি পরেই চলে এসেছে। 

ইতোমধ্যে তিন জন সেবাপ্রার্থীর সিরিয়াল দেখে যাদের মধ্যে তার ছেলেও একজন; সে অপেক্ষার জায়গায় একটি আসনে বসল। সে আসা মাত্রই সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠল কেননা সে আরামে বসার জন্য সমস্ত চুল সামনে এনেছিল, কিন্তু সে কোনও পাত্তা দেয়নি। তার চুল কুচকুচে কালো এবং ঘন ছিল কিন্তু চুলগুলো ছিল ড‍্যামেজ এবং ডগাটা কেমন গিটবাঁধা সুতার মত। 

সে একটু গা ছেড়ে বসে সামনে তাকিয়ে দেখল নাপিতরা কেমন গানের সুর গুণগুণিয়ে চেয়ারে বসা লোকগুলোর চুল বাজ করছে। সে চোখ সরিয়ে তার ছেলের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, সামনের সারিতে বসা, একই ধরণের হেয়ারস্টাইলের জন্য অপেক্ষমান। সে চোখ বন্ধ করল। 

যখন দিন শুরু হয়েছিল, সে কখনই ভাবেনি যে সে দুপুরে কোনও নাপিতের দোকানে যাবে, আসলে সে ২০ বছর বয়সে পার্লারে যাওয়া শুরু করার পরে আর কখনো এ মুখো হবার কথা ভাবেইনি। তবে আজকের দিনটা কিছুটা আলাদা। সকালে বাসনা চুলায় ভাত বসাতে যাচ্ছিল অন‍্যদিকে তার স্বামী বাজারে গিয়েছিল আনাজপাতি খরিদ করতে। ঠিক তখনই ঘটল এক দূর্ঘটনা। বাসনাদের বাসায় গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাসের চুলায় রান্না হয়। বাসনা যখন চুলা জ্বালাচ্ছিল তখনই হঠাৎ আগুনের হলকা উঠে বাসনা চোখের পলকে উল্টো দিকে ঘুরে যাওয়ায় আগুনের হলকা তার তেমন ক্ষতি করতে পারেনি কিন্তু এরপরই সে চামড়া পোড়ার মত একটা গন্ধ পায় আর নিচে তাকিয়ে দেখে বিণুনির থেকে কয়েকগাছি চুল পায়ের কাছে পড়ে রয়েছে তৎক্ষণাৎ বাসনা নিজের চুল সামনে এনে দেখে তার পিঠের চুলের বেশিরভাগেরই ডগা পুড়ে গেছে। তার স্বামী বাড়ি এসে তার হাল দেখে তাকে বলেছিল তার চুলের বেশ খানিকটা পুড়ে গেছে ডগাচেরা দেখা যাচ্ছে তাই সে যেন পোড়া ডগার উপরে কমপক্ষে ২ ইঞ্চি চুল ট্রিম করে নেয়, এতে বাসনা রাজি হয়েছিল। 

সবকিছু ঠিক ছিল, যতক্ষণ না তার স্বামী তাদের ছেলেকেও তার সঙ্গে গিয়ে চুল বাজ করানোর নির্দেশ দিলো। সে প্রথমে বাঁধ সাধলেও পরে মেনে নেয়। কয়েক মিনিট পরে, সে তার ছেলের পাশে বসে চুল কাটাবার জন্য অপেক্ষা করছে। 

দোকানে কাজ খুব দ্রুত হচ্ছিল। সে খেয়ালই করল না কখন তার ছেলে তার পাশ থেকে উঠে গিয়ে নাপিতের চেয়ারে বসল এবং তার চুল কাটা প্রায় অর্ধেক শেষ হয়ে গেল। অন্য নাপিত তার কাজ শেষ করতেই তার ডাক পড়ল। সে মন্থর গতিতে উঠে গিয়ে নাপিতের চেয়ারে বসল, এটি তার শরীরের মাপের তুলনায় বেশ বড়। 

নাপিত একজন মধ্যবয়স্ক পুরুষ, আলতো করে তার সমস্ত চুল একত্রে মুঠো করে উঁচুতে ধরলেন যখন তিনি একটি সাদা কাপড়ের গ্রীবাবন্ধনী তার গায়ে জড়িয়ে দেন। অনন্তর নিজের মুষ্টি আলগা করে চুলের মুঠি ছেড়ে দিলেন। এরপর একটি চিরুনি হাতে জিজ্ঞাসা করলেন, "কী করব ম‍্যাডাম?" 

বাসনা জবাব দিল, "উম্ম… আমাকে ঠিক ওর মতো করে চুল কেটে দিন" নিজের ছেলের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে সে বলল। 

নাপিত তাজ্জব হয়ে বলল, "আপনি নিশ্চিত ম‍্যাডাম? সে গ্রীষ্মকালের জন্য চুলে তেল কম ছাঁট দিচ্ছে... এটা খুব ছোট চুলের স্টাইল আপনি জানেন। মহিলাদের সাথে এটা একদম যায় না ” বাসনা জবাব দিয়েছিল, "হ্যাঁ আমি পুরোপুরি নিশ্চিত ... আপনি কি বিশ্বাস করেন যে আমি কেবল আমার চুলের কারণে একজন মহিলা?" নাপিত তোতলিয়ে বলে, "না… তবে, মহিলারা লম্বা চুল রাখে সাধারণত…" বাসনা বলেছিল, "পুরুষরা যদি তেল কম ছাঁট দিতে পারে তবে আমিও পারি" 

নাপিত আর কথা বাড়ায়নি। তিনি একটি কাঁচি নিয়েছিলেন এবং তার চুলে শেষবারের মত চিরুনি দিয়েছিলেন। 

তার হাতের কাঁচিটি তার ঘাড়ে রেখে তিনি আলতো করে তার মাথাটি সামনের দিকে নুইয়ে দিলেন। কাচ্চাছ ... ছচ্চছ ... ছ্যাচ তার গুচ্ছবদ্ধ চুলে তার কাঁধ ঢাকা কাপড়ের ওপর দিয়ে গড়িয়ে মেঝেতে পড়তে শুরু করল। তিনি তার পিছনে ঝুলন্ত কেশর সম্পূর্ণ মাথা থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত কাটতে থাকে। বাসনা সমস্তটা অনুভব করল, কাঁচির ধাতব ফলক ও তার মাথার নির্ভারতা। 

বাসনা মাথা উপরে তুলল, তার চুল এখন কেবল ঘাড়ের দৈর্ঘ্যে। সে এটি স্পর্শ করার চেষ্টা করেছিলেন, তবে পারল না কারণ তার হাত কেপের ভিতরে ছিল। 

নাপিত তখন একটি ক্লিপার নিয়ে তার চার্জার প্লাগ ইন করেন। এবার তিনি আরেকটি চিরুনি নেন। তিনি তার মাথার চারপাশে তার চুল ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাকে একটি বব চুলের চেহারা দেয়। তারপরে কাঁচি দিয়ে তার লম্বা কেশগুচ্ছ কেটে ফেলা শুরু করেন। তিনি তার চুল মুঠি দিয়ে ও আঙ্গুল দিয়ে চিমটার মত করে ধরে কাটা চালিয়ে যেতে থাকেন। 


তিনি সামনে থেকে চুলের বড় অংশ মুঠ করে ধরে টান দিলেন। তার মাথা পিছনে বেঁকে গেল। তারপরে কাচ্চাছ ... ছাছ… ছছ। কোলে চুল পড়তেই বাসনা চোখ বন্ধ করল। খানিকটা তার মুখে লেগে আছে। 

তারপরে তিনি কাঁচিটি রেখে ক্লিপারটি তুললেন এবং ৩ নম্বর গার্ড লাগালেন যদিও তার ছেলের বেলায় কয়েকবার বলার পরও ১ নম্বর গার্ডে বাজ করা হয়েছে। সম্ভবত বাসনা একজন পূর্ণ যুবমহিলা হওয়ায় নাপিত তার চুল একেবারে ছোট করতে ইচ্ছা করলেন না। তিনি আস্তে আস্তে আলগোছে এটি তার মাথার সামনে স্পর্শ করে ব্রহ্মতালুর দিকে চালিয়ে দিলেন। তার কোলে চুল বৃষ্টির মত ঝরে পড়ল। তিনি ক্লিপার বাজ করা জায়গা থেকে পাশে সরিয়ে একইভাবে মাথার চাঁদির উপর চালালেন। 

এরপরে তিনি ডান দিকে চলে গেলেন এবং তার ডানদিকে কানের লতির কাছে ক্লিপার ধরে তা উপরের দিকে ঠেলে বাজ করলেন। বাম দিকেও তিনি একইভাবে কানের লতির কাছে ক্লিপার ধরে তা উপরের দিকে ঠেলে বাজ করেছিলেন। বাসনা এখন মাথায় শীতল বাতাস অনুভব করতে পারল। তার মাথার চাঁদি ও দুপাশে এখন কালো রঙের পরিবর্তে ধূসর দেখা যাচ্ছে। ক্লিপারটি যতবার তার মাথার উপরে ও পাশ দিয়ে ভোঁ শব্দে অতিক্রম করছিল সাথে সাথে মেঝেটি আরও ঢাকা পড়ছিল। 

কেবল তার পিছনে চুল বাকি ছিল। তার মাথা ধরে সামনের দিকে নিচু করে তিনি ক্লিপারের গার্ড খুলে ফেললেন ও তার পিছনের চুলগুলিকে আগাছা নিড়ানোর মত করে নির্দয়ভাবে কাটলেন। হঠাৎ ক্লিপার তার মাথার ত্বক ছোঁয়ায় বাসনার শরীর ক্লিপারের ভাইব্রেশনের সঙ্গে যেন শিরশিরিয়ে উঠল। তার মাথার ত্বক প্রায় উন্মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত শেষ বাকী চুলগুলি ক্লিপিং চলেছিল। নাপিতটি পুনরায় কাঁচি নিল ও তার পিছনে এবং পাশে হেয়ারলাইন তৈরি করতে শুরু করেন। 

তদানিং তিনি তার গ্রীবাসন্ধি ও চিপের উপর, কানের পাতার পিছনে জল স্প্রে করলেন এবং একটি ক্ষুর বের করলেন। তার সদ্য ক্লিপিং করা চুলের শেষ প্রান্তে রেজার রেখে তিনি তাকে নড়াচড়া করতে মানা করলেন। শ্চচচ ... ছচ্চচছ্চ। বাসনার কিছুটা বেদনার্ত তথাপি উত্তেজনাপূর্ণ অনুভূতি হল। শ্চচচ ... ছচ্চচছ্চ সে আবার তা অনুভব করল যখন শেষবারের মত তার ঘাড়ের গাঁইটে রেজার থেমেছিল। পেছনের কাজ শেষ হবার পর নাপিত তার মাথার দুপাশে ও কানের পাতার পিছনে কামিয়েছিলেন। 


নাপিতের ক্ষুরের কারসাজি শেষ হবার পরে, সে নিজেকে দেখবার জন্য মাথা তুলে। সে প্রথম ঝলকে নিজেকে চিনতে পারল না। তার ঝাঁকড়া চুল আর নেই। তার মাথার আয়তন আগের তুলনায় অনেক ছোট মনে হলো। সে তার ছেলেকে দেখতে তার পাশের চেয়ারটির দিকে তাকাল। বছর ৪০য়ের এক ব্যক্তি সেখানে বসা ছিলেন। 

নাপিত তার ঘাড়, গলা, মুখ ব্রাশ দিয়ে ঝেড়ে দেবার পরে আস্তে আস্তে জড়ানো কাপড় খুলল। তিনি আবার ড্রয়ার হাতড়ে ক্ষুরটি বের করে নিতে নিতে তাকে ইশারায় উঠতে মানা করলেন। তিনি এবার এসে ধীরে তার পেছনের দিকে স্পর্শ করে আলতো করে ধাক্কা দিয়ে তাকে সামনে ঝুঁকিয়ে তার ঘাড়ের উপর চিকন বাদামি চুল চেঁছে সাফ করে দিল যা তার শাড়ির আঁচলে চাপা পড়েছিল। 

বাসনা কিছুটা লজ্জা পেয়েছিল কিন্তু না করেনি। তারপরে সে চেয়ার থেকে উঠে তার চাঁছা জায়গাটি ছুঁয়ে দেখে। 

সে তাদের উভয়ের চুল কাটার মূল্য পরিশোধ করে এবং তারা একসাথে দোকান ছেড়ে বেরিয়ে আসে।

Monday, July 27, 2020

একটি মেয়ের গল্প

ছোটবেলায় কে জানি আমায় বলেছিল ..তোর দেখিস বিয়ে হবে না। নাকে এতো সর্দি আর চুল ছোট থাকলে বিয়ে হয় না। কোনো বৌয়ের নাকে সর্দি দেখেছিস? বৌয়েরা খোঁপা বাঁধে…তোর চুল কই ? এদিকে আমার নাক দিনরাত টইটম্বুর। সারা বছর নাক ঝড়ছে। স্নানের সময় শুধু একবার ফ্যেএএএৎ করতাম …ব্যাস, বাকী সময় নাকের জিনিস নাকেই রেখে দিতাম। ঠোঁট অব্দি গড়িয়ে আসতো আর নোনতা স্বাদ পেলেই হাত দিয়ে মুছে নিতাম। মায়েদের কেন যে এদিকে নজর ছিল না জানিনা। আর চুল তো জন্ম থেকেই চাইনিজ কাট। কানের লতি অব্দি চুল কাটা আর কপালের দিকটা যেন স্কেল বসিয়ে সমান করে কাটা। এটা বুঝি চাইনিজ কাট। মা চুল লম্বা করতেই দিতেন না। গ্রীষ্মের ছুটিতে ন্যাড়া আর শীত আসতে আসতে চাইনিজ।
বিয়ে হবে না শুনে দুঃখে মরে যেতে ইচ্ছে করছিল । বরাবরই মা হওয়ার বাসনা আমার। মায়েদের স্কুলে যেতে হয় না , সকাল সন্ধ্যে পড়তে বসতে হয়না, পরীক্ষা দিতে হয়না । একটু রাঁধো বাড়ো, ঘরদোর পরিষ্কার করো আর ঠাকুর দাও…এই তো মায়েদের কাজ। কি আরাম। স্কুল থেকে ফিরে দেখতাম মায়ের সব কাজ শেষ…সামনের বারান্দায় আরাম করে বসে চালটাল বাছছেন আর কাকিমাদের সাথে গল্প করছেন। আমাকে দেখেই মা উঠে পড়তেন আর আমার সবচেয়ে খারাপ লাগা কাজটা করতেন…ভাত বেড়ে দিতেন। খাওয়া দাওয়া আমার অসহ্য লাগতো। কিন্তু নিস্তার নেই …খেতে তোমাকে হবেই তিনবেলা। নিজে কিন্তু প্রায়ই রাতে খাচ্ছেন না..কিন্তু আমার বেলায় ওটি হবার জো নেই। ভাবতাম আমি যখন মা হবো তখন খাবই না…কোনদিনও খাবো না। কেউ বকার থাকবে না বা জোর করে খাইয়ে দেওয়ারও থাকবে না..কি মজা। কিন্তু মা টা হবো কি করে ? বিয়েই তো হবে না শুনলাম ।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতাম…বিশেষ করে নাক আর চুলটা। নাক ভর্তি দেখে খুব কষ্ট হতো…হে ভগবান, তুমি একি করলে ? এতো সর্দি দিলে কেন ? দেখো এখন আমার বিয়ে হবে না। কাঁধ উঁচু করে চুল টেনে সামনে আনার চেষ্টা করতাম। সে তো মগডালে উঠে বসে আছে। দুদিন বাদে বাদেই মেপে দেখতাম কতটা লম্বা হলো। যেই কে সেই। মনে দুঃখ নিয়ে পড়তে বসতাম। পড়ায় মনে নেই… খাতায় , টেবিলে , বইয়ে , দেওয়ালে শুধু একটা মেয়ের ছবি আঁকতাম ..শাড়ী পরা , মস্ত একটা খোঁপা আর কপালে টিপ। নিজেকে ওরকম দেখতে চাই কিন্তু মায়ের জ্বালায় সেটি হবার নয়।

তারপর থেকে রাস্তাঘাটে, স্কুলে, আত্মীয়দের বাড়ীতে গেলে আমি শুধু খেয়াল করি মহিলাদের নাক আর চুল। হ্যাঁ, ঠিকই তো…কারো তো নাকে ইয়ে নেই আর চুল কি সুন্দর লম্বা। হয় খোঁপা করে রেখেছে নয়তো বিনুনি। হা ইশ্বর !!! এ তুমি কি করলে ? বিয়েবাড়ীতে গিয়েও আমার ঐ একই কাজ। নতুন বৌ সেজেগুজে খাটে বসে আছে। বৌ সুন্দর না বান্দর সেদিকে আমার নজর নেই। খাটের সামনে গিয়ে নীচে বসে পড়তাম। নাকের ফুটোর দিকে নজর। নতুন বৌ কি ভাবতো কে জানে..আমাকে কাছে ডেকে নিত আর সেই ফাঁকে ওড়নার নীচে চুলটা কেমন দেখে নিতাম আর হতাশ হতাম।
পরের গ্রীষ্মের ছুটি আসতেই আমার বুক ধুকপুকু করতে লাগলো..কি জানি কোন রবিবারে নাপিত আসে আর আমার লম্বা চুলের স্বপ্নে ক্ষুর চালায়। এক একটা রবিবার আসে আর আমার টেনশন বাড়ে। রবিবারে তো সকাল হলেই পেট ব্যাথা করছে বলে আমি বিছানায় শুয়ে থাকতাম। তারপর একদিন সেই দুঃস্বপ্নের রাত এলো…মা বাবাকে বললেন..কাল নিতাই নাপিতকে খবর দিও তো। পড়ার টেবিলে বসে আমি শুনতে পেলাম। মনে হলো বেঁচে থেকে আর কি করবো..যার বিয়ে হবে না তার আর কি জীবন ? সারাজীবন পড়াশোনা করার চেয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া অনেক ভালো। তবে নিরুদ্দেশ হওয়ার আগে একটা শেষ চেষ্টা করবো। বাবার সাথে আলোচনা করবো। রাতে খাওয়ার পর মা যখন রান্নাঘর গোছাচ্ছেন তখন বাবাকে একা পেয়ে বললাম…বাবা , চুল আমি কাটবো না। বাবা বই পড়তে পড়তে বললেন ..কেটো না। আমি তো অবাক। এত সহজে আমার জিৎ হয়ে গেল !!!! লাফিয়ে বাবার কোলে উঠে বললাম…সত্যি ? হ্যাঁ সত্যি । আমার যে কি আনন্দ হলো কি বলবো। বাবার কানে কানে চুল না কাটার কারণটা বললাম। বাবা হো হো করে হেসে উঠলেন। ওওওওও এই কারণে তুমি চুল কাটবে না ? আর সর্দি র ব্যাপারে কি ভেবেছ ? বললাম ..একটা আইডিয়া বের করেছি..রুমাল দিয়ে নাকটা ঢেকে রাখবো…কেউ টের পাবে না।
সেদিন ঘুমিয়ে পড়লাম নিশ্চিন্তে । স্বপ্নও দেখলাম বোধহয় … বেনারসী পরে, বড় একটা খোঁপা বেঁধে নাকটা রুমাল দিয়ে ঢেকে আমি খাটে বসে আছি আর সবাই এসে আমাকে দেখছে আর উপহার দিচ্ছে । সকাল হলো । মা ঘুম থেকে ডেকে তুললেন । ওঠো, নিতাইদাদা এসেছে..চুল নখ কেটে সোজা স্নানে চলে যাও। আমি তো চমকে উঠলাম ..সেকি , বাবা তো বললেন কেটো না। তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে দৌড়ে বাবার পড়ার ঘরে গেলাম। বাবা নেই । বাবা তো এসময় বাজারে যান। এখন কি হবে ? নিতাইদা তো ছোট জলচৌকিতে বসে ক্ষুর শানানো শুরু করে দিয়েছে। আমি মরিয়া হয়ে রান্নাঘরে গিয়ে মাকে বললাম আমার পেট ব্যাথা করছে..পারছি না.. বলেই পেটে হাত দিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়লাম । মা রুটি বেলা বন্ধ করে হাত ধুয়ে চ্যাংদোলা করে আমায় নিয়ে নিতাইদার সামনে বসিয়ে দিলেন। আগে অ আ ক খ শেখো তারপর বিয়ের কথা ভাববে..বলে রান্নাঘরে চলে গেলেন। আমি পিঁড়িতে মাথা নিচু করে বসে আছি; আমার চুল আর আমার চোখের জল একসাথে মাটিতে পড়ে একাকার হয়ে গেল।
সেই আমার বিয়েও হলো..নাকের সর্দি যে কবে গায়েব হলো জানিনা..চুলও লম্বা হলো..মা ও হলাম কিন্তু টের পেলাম মা হওয়া কি যে জ্বালা। মায়ের কাজগুলো কি যে বাজে কাজ । রান্না থেকে রেহাই নেই, ঘরদোরের খেয়াল রাখা, ঘরে বাইরে কাজ করা, উফফ। সীমানার সেনাদের মতো মায়েরা পরিবারের অতন্দ্র প্রহরী …ওরে বাবা কি কঠিন কাজ । আর ভাবতাম মা হয়ে গেলে খাওয়া দাওয়াটা পুরো ছেড়ে দেবো। ওওও হরি …এখন ডাক্তার হাতে পায়ে ধরেও আমার খাওয়া কমাতে পারছে না।

[২২ জানুয়ারি, ২০১৮ সনে খেলাঘরওয়েবে বিজয়া পুরকায়স্থের লেখা]

বয়ফ্রেন্ডের আব্দার রক্ষায় ভাইকে দিয়ে ন‍্যাড়া করালো বোন

আমার নাম তৌফিক। আমি আমার আব্বু ও আপুর সঙ্গে একটা মফস্বল শহরে ফ্ল্যাটে থাকি। আমার বয়স যখন ৫ বছর তখন আমার আম্মু আমার আব্বুর থেকে তালাক নিয়ে আমাদের ছেড়ে চলে যান। এরপর অনেকের অনুরোধ সত্ত্বেও আব্বু আবার বিয়ে করেননি। আসলে আব্বু আমাদের দুই ভাইবোনকে ভীষণ ভালোবাসেন তো তাই। আমার আব্বু একটা গার্মেন্টসের মালিকের অংশীদার। তাই আব্বু ম‍্যাক্সিমাম নিজের বিজনেস নিয়ে ব‍্যস্ত থাকে। এবার আসি আমার আপুর ব‍্যাপারে। আপু আমার থেকে প্রায় ৬ বছরের বড়। আপু বেশ স্বাস্থ্য সচেতন। মিডিয়াম হাইট আর খুব চিকন বা মোটাও না। আপুর পিঠ ছাপানো এক মাথা চুল আছে। আর আমি মনে মনে সেই চুলের পাগল। আমি আপুকে চুল ছাড়া কল্পনাই করতে পারি না। তবুও আমার মনে সুপ্ত ইচ্ছা আপুর চুল নিয়ে খেলব, গন্ধ নিব। কিন্তু কখনো করার সাহস হয়নি। তো যা বলছিলাম আপু একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে এমবিএ পড়ছে। আপু খুব ফ‍্যাশন সচেতন। সবসময় ট্রেন্ডিভাবে চলাফেরা করে। আপুর এক বয়ফ্রেন্ড আছে নাম রামিন। রামিন ভাই খুব সোজা সরল আর মিশুক লোক। আমাকে খুবই ভালোবাসে। যাই হোক কোভিড-১৯ এর কারণে আপুর ভার্সিটি বন্ধ সাথে আমার কলেজও বন্ধ। তো আমরা পুরো ফ‍্যামিলি এখন বাসাতেই থাকি বেশিরভাগ সময় যদিও আব্বুর ব‍্যবসা চাঙ্গা রাখতে অফিসে দৌড়াতে হয়। তো এবার মূল ঘটনায় আসি– আপু বাসায় থাকলে ম‍্যাক্সিমাম মোবাইল, ল‍্যাপটপ সামনে নিয়ে বসে থাকে কেবল রান্না, খাওয়া, গোসলের সময় বাদে। তো একদিন আপু দুপুরে গোসল সেরে আমাকে খেতে ডেকে নিজেও খেতে বসলো। বসার পর আপু খেতে খেতে হঠাৎ বলল আচ্ছা তৌফিক আমাকে আমার চুল ছাড়া কেমন দেখাবে? আমি শুনে থতমত খেয়ে আপুর দিকে তাকিয়ে বললাম কেন আপু তুমি তোমার চুল কি করবে?
আপু : আহঃ বল না।
আমি : (একটু ভেবে নিয়ে) খারাপ দেখাবে না। কিন্তু তুমি কি করতে চাচ্ছ বলো তো?
আপু : সত‍্যি বলছিস আমাকে খারাপ দেখাবে না?
আমি : হ‍্যাঁ সত‍্যি
আপু : বলছি শোন তবে, তোর রামিন ভাইয়া বলছে- সে আমার টাক মাথার ছবি দেখতে চায়।
আমি : রামিন ভাইয়ের হঠাৎ এই খেয়াল হইলো কেন? এখন তুমি কি নাড়ু হইতে চাও? নাড়ু মাথার ছবি দিতে তো নাড়ু হওয়ার দরকার নাই। অনেক এ‍্যাপসে তোমার ছবি ইনপুট করলে নাড়ু মাথার ছবি দেখাবে।
আপু : না ও সিরিয়াসলি বলছে ভিডিও কলে আমার নাড়ু মাথার ছবি দেখবে।
আমি : ও এখন এই আব্দার পূরণ করতেই হবে?
আপু : হ‍্যাঁ, ও তো কখনো আমার কাছে কিছুই চায় নাই। এই বার কিছু বলছে। আহ্লাদ পূর্ণ করে দেই।
(কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে খাওয়া শেষ করে দুজনেই দুজনের থালা গ্লাস ধুয়ে উঠিয়ে রাখলাম।)
আমি : কিন্তু আপু তুমি নাড়ু হবে কেমনে? আব্বু মাইন্ড করবে না?
আপু : ঐসব আমি দেখে নিবো।
আমি : নাড়ু কোথায় হবা? কবে হবা? পার্লার তো এখন বেশিরভাগ সময় বন্ধ পড়ে থাকে। বিয়ে, গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে গিয়ে বসে থাকে ওরা। এছাড়া তো বাইরে দেখাই যায় না।
আপু : কেন তুই করে দিবি। কালকেই হবো বলছি রামিনরে।
আমি : আমি কেমনে করব! আমি পারব না।
আপু : এহঃ বদমাইশ। তুমি যে ফোনে কিসব নাপিতের কাজকারবার দেখো আমার জানা আছে। তুই মানা করলে আমি আব্বুকে তোর সব দুষ্কর্মের কথা বলে দিব‌।
আমি : (একটু ভেবে নিয়ে) আচ্ছা ঠিক আছে। তো কখন নাড়ু হবা বলছিলা?
আপু : আজকে রাতে ফাইনাল করে বলব তোকে। বিকালে দোকানে যেয়ে নতুন ব্লেড কিনে আনিস। কেমন?
আমি : ওকে।
(যার যার রুমে গিয়ে দরজা চাপিয়ে দিয়ে নিজের নিজের মত ব‍্যস্ত হয়ে গেলাম)
রাতে আব্বু বাসায় আসলে সবাই একসঙ্গে খেতে বসলাম। আব্বু খেতে খেতে বললেন শোনো আমি আগামী তিনদিন কাজের জন্য তোমাদের আঙ্কেলের বাড়িতে থাকব বাসায় আসব না। তোমরা সাবধানে মিলেমিশে থাইকো। আমি আপুর দিকে তাকালে আপুকে অনেক নিশ্চিন্ত মনে হলো। এরপর খেয়ে উঠে যখন আব্বু টিভি দেখছিল তখন আব্বুর বিছানা করে দেওয়ার নাম করে আপু আমাকে ডেকে বলল কাল সকাল ১০টার সময় ন‍্যাড়া করব। তুই মাথায় রাখিস। আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। 


আমি নিজের ঘরে ঘুমাতে চলে এলাম। কিন্তু কেন যেন ঘুম এলো না। আমি আধো ঘুমে স্বপ্ন দেখলাম ব্লেডের টানে আপুর চুল মাথার ত্বক থেকে খসে খসে পড়ছে। আর আপুর চুলভরা কালো মাথা সাদা হয়ে যাচ্ছে। তারপর দেখলাম আপুর চুলের মুঠি আমার হাতের মুঠোয় আর আপু নিজেকে আয়নায় ন‍্যাড়া অবস্থায় দেখছে। দেখে আমার বেশ ভালো লাগল। ইচ্ছা করল আপুর ন‍্যাড়া মাথায় একটা চুমু খাই।
এভাবে বিছানায় গড়াগড়ি করতে করতে কখন ঘুমিয়ে গেছি মনে নাই। ঘুম থেকে উঠে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি ৮:২৩ বেজে গেছে। আর এদিকে রুটিন অনুযায়ী আমার সেদিন সকালে চা বানানোর কথা। আমি তড়িঘড়ি উঠে ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখি ওখানে টি-টেবিলে এক কাপ চা আর নাস্তা রাখা আর আপু বসে ফোন টিপছে। আমাকে দেখে বলল গতরাতে ঘুমিয়েছিলি কয়টায়? আমি উত্তর না দিয়ে ব্রাশ হাতে নিয়ে বেসিনে গিয়ে ব্রাশ করলাম। তারপর আপুকে বললাম স‍্যরি দেরি হয়ে গেছে। আপু বলল সমস্যা নাই। খালি আমার দেরি হইলেই কথা শুনাতি। আমি চুপ করে আপুর ডান পাশের সোফায় বসে নাস্তা খেয়ে ফেললাম। আপু আমাকে বলল মনে আছে আর সোয়া এক ঘণ্টা পর। আমি ফোনের দিকে তাকিয়ে বললাম হ‍্যাঁ। নাশতা খেয়ে কিছু হোমটাস্ক করে এক ঘণ্টা পর আমি আপুর রুমে নক করে ডাক দিলাম। আপু বলল আমার অনলাইন ক্লাস চলছে আধাঘণ্টা ওয়েট কর। আমি গিয়ে ব্লেড, ডাবল এজড সেফটি রেজর, সাবান, শ‍্যাম্পু এগুলো জড়ো করতে লাগলাম। আধা ঘণ্টা পর আপু রুম থেকে বেরিয়ে আমাকে ডাকল। আমি আওয়াজ দিয়ে বললাম বাথরুমে এসো। আপু বলল বাথরুমে কেন? আমি বলি প্রথমে চুলে শ্যাম্পু লাগিয়ে পরিষ্কার করে নিই। আপু সম্মতি দিয়ে নিচে রাখা টুলে বসে পড়ল। আপু আপুর মাথা নিচু করে পানি ঢেলে চুল ভিজিয়ে প্রথমে ভালো মত কয়েকবার ম‍্যাসাজ করলাম তারপর শ‍্যাম্পুর বোতল থেকে শ‍্যাম্পু আপুর মাথার তালুতে ঢেলে আবার ম‍্যাসাজ করলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আবার আপুর মাথায় পানি ঢেলে ধুয়ে দিলাম। এরপর চুল শুকিয়ে গেলে দেখলাম মাথার ত্বকে কোনও ধুলো নেই। অতঃপর আপুকে বললাম এবার আব্বুর রুমে চলো। সেখানে আয়নার সামনে আব্বুর বিছানার র‍্যাক্সিন শীট বিছিয়ে তার উপর চেয়ার রেখে তাতে আপুকে বসালাম। অতঃপর আপুর চুল আবার স্প্রেয়ার দিয়ে ভিজিয়ে আঁচড়ালাম যাতে চুল মসৃণ হয়। চুল আগাগোড়া আঁচড়ানো হলে তার চুলে একটা হালকা ঢিল দেয়া পনি বাঁধলাম। তারপরে রেজরটিতে ব্লেড ভরে আপুর কপালের সামনে ধরলাম তারপর আলতো করে পিছন দিকে ব্লেড এগিয়ে আনলাম। সবকিছু ভালোই চলছিল কিন্তু আমি ভুলে আপুর চুল আঁচড়ানোর বিপরীতে (পেছন‌ থেকে সামনে) রেজর টান দিলাম আর আপুর মাথার একদিকে সামান্য কেটে যায়। আপু উঃ করে হালকা আওয়াজ করে বলল এই তুই কি করতেছিস? তোকে আমার মাথা ন‍্যাড়া করতে বলছি মাথার চামড়া তুলে ফেলতে বলি নাই। আমি স‍্যরি বলে আস্তে আস্তে চুল আঁচড়ানোর দিক অনুসারে চুলের গোড়ায় রেজর চালাই। চুলগুলো গোল গোল দলা পাকিয়ে আপুর ঘাড় আর কাঁধ বেয়ে নিচে পড়তে থাকে। এভাবে পুরোটা কামানো হলে আপুকে বললাম মাথা ছুঁয়ে দেখতে। আপু মাথা উঠিয়ে আয়নায় তাকিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল খসখসে যেন না থাকে এমন কর। আমি আপুর মনের ভাব বুঝতে পেরে আপুর মাথায় আমার শেভিং ক্রিম লাগালাম তারপর আরেকবার সামনে থেকে পিছনে রেজর চালিয়ে পরিষ্কার চকচকে টাক করে ফেললাম। আবার আপুকে বললাম এবার ছুঁয়ে দেখো কেমন হয়েছে? আপু আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের মাথায় আবার হাত দিয়ে হাসিমুখে বলল এবার একদম মনমাফিক হয়েছে। আমি বললাম একটু বসো আমি এন্টিসেপটিক নিয়ে আসি। আপু বললো থাক গোসল করে এলে তারপর লাগিয়ে দিস। আমি বললাম তাহলে গোসল করে এসো। আমি এগুলো গুছিয়ে নিতে পারব। আপু থ‍্যাঙ্কস বলে দৌড়ে তোয়ালে হাতে নিয়ে গোসল করতে ঢুকল। আমি এই ফাঁকে আপুর কামানো চুল ধরে দেখলাম তা শুকিয়ে গেছে। আমি দৌড়ে কিচেন থেকে একটা পলিথিন ব্যাগ খুঁজে এনে চুলগুলো সেই ব‍্যাগে পুরে আমার ঘরে এনে রেখে দিলাম।

Saturday, July 25, 2020

ঘন, লম্বা চুল কেটে ন্যাড়া হল কিশোরী! অবাক সিদ্ধান্ত, তবু মুগ্ধ সবাই

গয়না, সাজসজ্জা, পোশাকের প্রতি মেয়েদের যদি দুর্বলতা থাকে, সেই তালিকায় উপরের দিকেই থাকবে তাঁদের চুল। কারণ, ঘন, লম্বা চুলই মেয়েদের অন্যতম ‘অলঙ্কার’। আর টিনএজার বা যুবতী হলে তো কথাই নেই।
চুল চুরি হওয়ায় সম্প্রতি হয়রান হয়েছেন হরিয়ানার মহিলারা। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের খবর অনুযায়ী, রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরী নিজেই নিজের চুল কেটে ফেলেছে। তাও একটু-আধটু নয়, একেবারে ২৮ ইঞ্চি লম্বা ঘন লম্বা চুল। যার ফলে, ওই কিশোরীর মাথা এখন পুরোপুরি ন্যাড়া।
কিন্তু কেন এমন পদক্ষেপ নিল ওই কিশোরী? না, কোনও ঘটনার প্রতিবাদে এমন পদক্ষেপ নেয়নি সে। আসলে নিজের মাথার চুল এক ক্যানসার আক্রান্ত মহিলাকে দান করতে চায় জিয়া মেহতা নামে ওই কিশোরী।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী জিয়া আইআইটি কোটায় সুযোগ পাওয়ার চেষ্টা করছেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুম্বইয়ের বাসিন্দা এক ক্যানসার আক্রান্ত মহিলার কথা জানতে পারে সে। কেমোথেরাপি নেওয়ার ফলে ওই মহিলার মাথার সব চুল পড়ে গিয়েছিল। জিয়া জানতে পারে, চুল হারিয়ে ওই মহিলা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। হীনমন্যতাতেও ভুগছেন তিনি।
জিয়ার কথায়, ক্যানসার আক্রান্ত ওই মহিলার দুর্দশা তাঁর মনে ছুঁয়ে যায়। সেই কারণেই মহিলার মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিল সে। 
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। নেট ঘেঁটে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ওই মহিলাকে নিজের চুল দান করার বন্দোবস্ত করে জিয়া। ইতিমধ্যেই নিজের চুলও কেটে ফেলেছে সে। আমির খান অভিনীত ‘দঙ্গল’ ছবি থেকেও অনুপ্রেরণা পেয়েছে জিয়া। কারণ, সেই ছবিতে দেখানো হয়েছিল, কুস্তি লড়ার জন্য নিজেদের চুল কেটে ফেলেছে আমিরের দুই কুস্তিগীর মেয়ে।
কিন্তু, চুল কাটার পরে পরিচিতরা কী প্রতিক্রিয়া দেন, তা নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিল জিয়া। যদিও, প্রথমে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেও চুল কাটার আসল কারণ জানার পরে জিয়াকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে তার সহপাঠীরা। জিয়ার কথায়, দেশের জন্য যে কোনওভাবে অবদান রাখতে চায় সে। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখা জিয়ার জাতীয় পতাকার তিনটি রংই প্রিয়। তাঁর ইচ্ছা, মৃত্যুর পরে তার দেহ তেরঙ্গায় ঢাকা থাকবে। 
ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নির্দেশিকা মেনে নিজের চুল ওই ক্যানসার আক্রান্ত মহিলার ব্যবহারের জন্য ক্যুরিয়রের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়েছেন জিয়া। এখন তার একটাই অপেক্ষা জিয়ার। যাঁর জন্য নিজের প্রিয় চুল কেটে ফেললেন, সেই মানুষটির হাসিমুখ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেখতে চায় সে। 
(২০১৭ সালের ৮ই আগস্টে এবেলা.ইনে প্রকাশিত)

Wednesday, July 22, 2020

ক্যানসার-আক্রান্তদের চুল দান করে শিরোনামে আট বছরের তিতির, ওরফে ঋষিকা

ঠিক কী কী করলে পিঠ ছাপানো এক ঢাল রেশম কোমল চুলের মালকিন হওয়া যাবে, তা নিয়ে বহু টিপস নিশ্চয়ই আপনারা এতদিনে জেনে ফেলেছেন! এবার আপনাদের জন্য রইল একটা অন্য গল্প। যে গল্পের নায়িকা স্বেচ্ছায় নিজের একমাথা ঝলমলে কালো চুল কেটে সম্পূর্ণ নেড়া হয়ে যায়। তাতেই তার ভীষণ আনন্দ!
অবাক লাগছে শুনে? কিন্তু এটা কোনও রূপকথার গল্প নয়, একদম সত্যি ঘটনা! আর এই গল্পের নায়িকার নাম ঋষিকা, ওরফে তিতির। বয়স মাত্র আট বছর। রায়গঞ্জের সারদা বিদ্যাপীঠের ক্লাস টু-র ছাত্রী তিতির নিজের একমাথা কালো চুল কেটে নেড়া হয়ে গেছে কারণ সে জানে তার লম্বা লম্বা চুল হাসি ফোটাবে ক্যানসার-আক্রান্ত আরও ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মুখে। তার কেটে ফেলা চুল দিয়ে তৈরি হবে পরচুলা যা ব্যবহার করতে পারবে সেই সব ছেলেমেয়েরা। আর সেজন্যই লম্বা চুলগুলো ভীষণ প্রিয় হওয়া সত্ত্বেও তা কেটে নেড়া হয়ে যেতে দ্বিতীয়বার ভাবেনি আট বছরের ছোট্ট মেয়েটা! 

তিতিরকে উৎসাহ জুগিয়েছেন তার বাবা কৌশিক চক্রবর্তী। রায়গঞ্জের বাসিন্দা কৌশিক নিজেও একাধিক সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কৌশিক জানালেন, মাস তিনেক আগে তিতিরকে ক্যানসার-আক্রান্ত ছেলেমেয়েদের চুল দান করার প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন তিনি। একবার বলাতেই রাজি হয়ে গিয়েছিল সে। ‘‘তিতিরকে বলেছিলাম, তোর চুল আবার বড়ো হয়ে যাবে, ওদের তো হবে না! তুই চুল দিবি ওদের? শুনেই ও এক কথায় রাজি হয়ে গেল!’’
চুল দান করার কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। কৌশিক জানাচ্ছেন, অন্তত ১২ ইঞ্চি লম্বা হতে হবে চুল। চুলে রং করাও চলবে না, স্বাভাবিক রং থাকতে হবে। রাবারব্যান্ড দিয়ে চুলের দু’ প্রান্ত আটকে কাঁচি দিয়ে কাটার পর প্লাস্টিকের জ়িপলক ব্যাগে ভরে পাঠিয়ে দিতে হবে নির্দিষ্ট ঠিকানায়। তবেই সে চুল দিয়ে তৈরি হবে পরচুলা, মুখে হাসি ফিরে পাবেন বহু ক্যানসার-আক্রান্ত মানুষ। 
আর যার চুল দিয়ে তৈরি হতে চলেছে এমনই অনেক উইগ, সেই তিতির ওরফে ঋষিকা কী বলছে? সুন্দর, লম্বা চুল কেটে ফেলার পরে একটু একটু দুঃখ হলেও সে দুঃখকে বিশেষ পাত্তা দিচ্ছে না ছোট্ট তিতির। বলছে, ‘‘আমার চুল তো আবার বড়ো হয়ে যাবে। চুল বড়ো হলে আবার চুল দেব! স্কুলের বন্ধুদেরও বলব চুল দিতে!’’ 

(ফেমিনায় ২০১৯ সালের ৫ই জুলাইয়ে লিখেছিলেন মনীষা দাশগুপ্ত)

Thursday, July 9, 2020

৬ ফুট লম্বা চুল, গিনেস বুকে নাম তুলল বাস্তবের ‘রাপুনজেল’ নীলাংশী

‘চুল তার কবেকার বিদিশার নিশা।’ বহুকাল আগে লিখেছিলেন জীবনানন্দ দাশ। কিন্তু আজও সেই সৌন্দর্য বঙ্গহৃদয়ে অমলিন। কেশবতী কন্যার সৌন্দর্য এই আধুনিক যুগেই হিল্লোল তোলে পুরুষ হৃদয়ে। শুধু বাংলা কেন? লম্বা কালো চুলের আকর্ষণ বাংলা ও ভারতের সীমান্ত ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে বিদেশেও। তাই তো রাপুনজেল এত হিট। তবে এই রাপুনজেল কিন্তু শুধু রূপকথার পাতায় নেই। বাস্তবেও রয়েছে। আর রয়েছে এই ভারতেই। গুজরাটে থাকে সে। নাম নীলাংশী প্যাটেল।

নীলাংশীর বয়স ১৭ বছর। তাঁর চুলের দৈর্ঘ্য ১৯০ সেন্টিমিটার, অর্থাৎ ৬ ফুট ২.৮ ইঞ্চি। বাস্তবের রাপুনজেল বলতে যা বোঝায়, নীলাংশী ঠিক তাই। এই চুলের জন্যই গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে সে। রেকর্ড অনুযায়ী, টিনএজারদের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা চুলের অধিকারী নীলাংশী। কিন্তু হঠাৎ এভাবে চুল বাড়ানোর ইচ্ছা হল কেন তার? এর পিছনে রয়েছে এক চুল কাটার গল্প। সে জানিয়েছে, “আমার যখন ছ’বছর বয়স তখন একটি পার্লারে চুল কাটতে গিয়ে খুবই খারাপ অভিজ্ঞতা হয়৷ পার্লারের কর্মীরা অত্যন্ত বাজে ভাবে আমার চুল কেটে দিয়েছিলেন৷ হেয়ারকাট নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলাম। এরপর থেকেই প্রতিজ্ঞা করি আর চুল কাটব না৷ গত দশ বছর ধরে সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করে চলেছি৷ চুল কাটিনি৷”


তবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে এর আগেও নাম উঠেছিল নীলাংশীর। বছর দুই আগে লম্বা চুলের কারণেই সে রেকর্ড করেছিল। তখন তার চুলের দৈর্ঘ্য ছিল ১৭০.৫ সেন্টিমিটার। তখনই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়ছিল, এভাবে চুল বাড়াতে সমস্যা হয়নি? নীলাংশী বলেছিল, “আপনাদের মতোই অন্যান্যরাও ভাবে এত লম্বা চুলের জন্য আমার নিশ্চয়ই অনেক সমস্যা হবে৷ কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, আমার কোনও সমস্যাই হয় না। এই লম্বা চুল নিয়ে আমি খেলাধুলো করি এবং অন্যান্য কাজও করি। এই চুল আমার লাকি চার্ম বলতে পারেন।” লম্বা চুলে কী কী স্টাইল করেন? নীলাংশী জানান, “স্টাইল করতে আমার ভালই লাগে৷ এই চুলেই আমি লম্বা বিনুনি করি বা উঁচু করে খোঁপা বাঁধি। আমার পক্ষে আরামদায়ক হয়।”

[সংবাদ প্রতিদিন, ২০-০১-২০২০]

Sunday, June 28, 2020

শিশুর খাবার কিনতে নিজের চুল বিক্রি করে দিলেন মা

এলাকায় নতুন হওয়ার কারণে কারও সহায়তা পাননি বলে জানান ওই নারী


দুইদিন ধরে ঘরে কোনো খাবার নেই। ত্রাণের জন্য ঘুরেছেন অনেকের দরজায়। নিজের ক্ষুধা হয়ত সহ্য করা যায়, কিন্তু আঠারো মাসের শিশুর কান্না যেন মায়ের বুকে শেলের মতো ধাক্কা দেয়। তাই হকারের (চুল ক্রেতা) কাছে মাথার চুল বিক্রি করে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন এক নারী।

ঢাকার সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায় বসবাসরত ওই নারী সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে এমনটিই জানান।

সাথী বেগম নামে ওই নারী কাজের সন্ধানে ময়মনসিংহ থেকে মাস চারেক আগে রাজধানীর মিরপুর ও তার কিছুদিন পর সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায় আসেন।

সাথী বলেন, কয়েকদিন ধরে দুই সন্তানকে নিয়ে না খেয়ে থেকে ত্রাণের জন্য দৌড়াদৌড়ি করেছি। কেউ কোনো সহায়তা করেনি। সম্প্রতি বাড়ি ফেরার পথে পরিচয় হয় এক হকারের (চুল ক্রেতা) সঙ্গে। সে চুল দেখে তিন-চারশ' টাকা দেওয়ার বললেও ১৮০ টাকা দিয়ে চলে যায়।

তিনি বলেন, এলাকায় নতুন হওয়ার কারণে তিনি কারও সহায়তাও পাননি।

সাথীর স্বামী মানিক পেশায় দিনমজুর, তিনি নিজেও বাসা-বাড়িতে কাজ করেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে দু'জনেই বেকার হয়ে পড়েছেন। হকারের কাছ থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে বাচ্চার জন্য সামান্য পরিমাণ দুধ ও এক কেজি চাল কিনেছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাভার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এমন হয়ে থাকলে তা অত্যন্ত দুখঃজনক। খুব দ্রুত ওই পরিবারকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

কথা বলা হলে সাভার পৌর মেয়র আব্দুল গনি জানান, তিনি পৌর এলাকার অনেক হতদরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। তবে বাচ্চার খাবারের জন্য কেউ চুল বিক্রি করেছেন, এমনটা তার জানা নেই।

{ঢাকা ট্রিবিউনে ২১ এপ্রিল, ২০২০ থেকে সংগৃহীত}

Wednesday, June 24, 2020

ভালোবাসার প্রবঞ্চনায় চুল কেটে ফেলা

আমার নাম রেহনুমা। বয়স ২৪। আজ আমাদের ৩য় বিবাহ বার্ষিকী। 
অবশ্য এবারই প্রথম বিবাহবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে। কারন আমার স্বামীর মুড যে হঠাৎ চেঞ্জ হওয়া শুরু করেছে। আমার চুল কাঁধ পর্যন্ত পৌঁছানোর পর থেকেই আমাকে ছাড়া আর কিছু বুঝেনা।
তবে বিয়ের প্রথম প্রথম আমাকে একদমই ভালোবাসতনা। না জানি আগের মত হাঁটুর নিচ অব্দি চুল হলে কি অবস্থা হবে!
হ্যাঁ ঠিক পড়েছেন আমার হাঁটুর নিচ অব্দি চুল ছিল সেই গল্পই আপনাদের উদ্দেশ্যে লিখতে যাচ্ছি।
ছোটবেলায় আমাকে চুল বড় করতে দিতনা। প্রতি মাসেই সেলুনে নিয়ে যেত চুল ছাঁটাতে। মা বলতো রেহনুমার চুল এত দ্রুত বাড়ে প্রতি মাসে সেলুনে নিতে নিতে বিরক্ত হয়ে যাই।
সেলুনের নাপিত আংকেল আমার চুল ছাঁটাতে গেলেই বলত অনেক সিল্কি, শাইনি আর ঘন চুল। বলতো চুল লম্বা রাখলে একদম আকাশের পরীর মত লাগবে! তখনকার সেই ছোট চুলই কেমন জানি ন্যাচারালি রাউন্ড শেপ হয়ে এবং সুন্দর ভাবে কার্ল হয়ে থাকত।
চুল বড় রাখার পারমিশন পাই ক্লাস সিক্সের পর হতে। ক্লাস নাইন-টেনে পড়তে ততদিনে কোমড়ের নিচ পর্যন্ত চুল।
সবাই চুল দেখে বলত এত সুন্দর চুল আমি নিশ্চই কোন পার্লারে গিয়ে এমন চুল বানাইছি। অনেকে ত আবার নকল চুল বলত।
মাথাভরা এত ঘন লম্বা চুল বেধে রাখাও খুব কষ্টকর ছিল কারন চুল এত সিল্কি। আমার মা আমার চুল দেখলেই কেন জানি সহ্য করতে পারতনা। ভাবত আমি পড়ালেখা বাদ দিয়ে নাকি সারাক্ষণ চুল নিয়ে পড়ে থাকি। মা বলতেন– দেখবি একদিন তোর এত চুল সব ঝরে পড়ে যাবে।
আত্মীয়-মেহমান যখন আমার চুলের প্রশংসা করত তখন মা বাবা বলতো আমার চুলের পিছে নাকি অনেক টাকা খরচ হয়। অথচ অনেক টাকা দূরে থাক আমাকে নিয়মিত ২ টাকার শ‍্যাম্পু কিনবার টাকাও দিতনা। তাই গায়ে মাখাবার সাবান দিয়ে কখনো বা কাপড় কাচার সাবান দিয়ে কাজ চালাতে হত। মায়ের উকুনওলা পুরাতন চিরুনি ব‍্যবহার করতে হত।
তবে এত কিছুর পরও আমি আমার নিজের চুল অনেক ভালবাসতাম। কারণ এত সুন্দর স্টাইল হয়ে থাকতো চুল আয়নার সামনে নিজের চুল ছুড়ে মারতাম আর ভাবতাম নিজের ভালবাসার মানুষকে ছোঁয়াচ্ছি।
এত ঘন ছিল বিছানায় ছড়িয়ে রাখলে বিছানার অনেকখানি যায়গা ভরে যেত।
আম্মুর দাঁতভাঙা চিরুনি দিয়ে চুল আচড়ালে অনেক জট লাগতো তাও চুল পড়তনা এত মজবুত চুল।
এত সিল্কি, কোমল, মোলায়েম ছিল যে বারবার খালি মুখমন্ডলে ডলতাম আর চুমু দিতাম। জড়িয়ে ধরে থাকতাম।
যখন ইন্টারে পড়ি ততদিনে হাঁটুর নিচ অব্দি লম্বা হয়েছে। অনেকগুলো ক্লিপ ও কাঠি দিয়ে অনেক কষ্ট করে খোপা বেঁধে স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে ক্লাসে যেতাম। কিন্তু খোঁপা অনেক বড় বুঝা যেত।
ক্লাসে বান্ধবীরা চুল খুলতে বললেও খুলতে চাইতাম না। (গার্লস কলেজ সেহেতু ছেলে ছিলনা ক্লাসে তবুও) কিন্তু বান্ধবীদের অনেক আবদারে খোঁপা খোলার পর উন্মুক্ত চুলে আমাকে দেখে সবাই অভিভূত।
আমার কিছু বান্ধবীদের চুলও অনেক সুন্দর কিন্তু তারা বলে আমার চুল নাকি ক্লাসে সবচেয়ে সুন্দর। কেউ কেউ বলল— এত লম্বা চুল দিয়ে কি করবি আমারে তোর থেকে অর্ধেক কেটে দে প্লিজ দোস্ত! পরচুলা বানিয়ে পড়ব।
তখন নকীব নামের এক ছেলেকে ভালবেসে ফেলেছি। কিন্তু বলতে পারতাম না লজ্জায়। আর তাছাড়া আমার চেহারা যেমন তেমন কিন্তু শরীর একটু মোটাসোটা। পরে একবার কয়জন বান্ধবী আমাকে ঠেলে দিয়ে ওর সাথে ধাক্কা দেয়ার মাধ্যমে প্রথম আলাপ হলো।
প্রথম প্রথম ও আমাকে তেমন পাত্তা দিতনা আবার ঐ টাইমে আবার মাছেল নামে আরেক ছেলে আমাকে পছন্দ করত আর আমার ক্লাসমেট বান্ধবীদের বলে আমি নাকি অনেক সুইট দেখতে। আমি ওকে এড়িয়ে যাওয়ায় একবার হাতও কাটছিল, বান্ধবীদের সামনে দুঃখে কেঁদেও ফেলছিল। কিন্তু আমি পাত্তা দিতাম না কিন্তু এখন বুঝি তার এই আবেগ মিথ্যা ছিল না। কিন্তু তখন আমার একমাত্র ভালবাসা ছিল শুধু নকীব।
পরে আস্তে আস্তে রিলেশন হয় নকীবের সঙ্গে। ছবি নিতে চাইত প্রথমে দিতে চাইতাম না। পরে ব্রেক-আপ করবে বলাতে দিতাম। এভাবে ভালই চলছিল।
এরপর কয়েক মাস পর থেকে আমার সাথে হতাত ব্রেক-আপ করতে চাচ্ছে। অনেক রাগারাগি খারাপ ভাষায় গালাগালি। আমার মাঝে কোন দোষ পেল সেটা জানতে চাইলাম; বললাম কি জন্য ব্রেক-আপ করতে চাচ্ছ? লাস্টে অনেক আবোলতাবোল কথা শেষে বলে আমার চুল বেশি লম্বা।
বান্ধবীদের বলাতে তারা বুদ্ধি দিল আমার জন্মদিন সেলিব্রেট করার জন্য কাছেই পার্কে যাব যেখানে নকীব প্রতিদিন সকালে গিয়ে আড্ডা দেয়। সেখানে গিয়ে হিজাব খুলে পরে মাথার সব ক্লিপ আর খোপার কাঠি খুলে আমার চুল নিয়ে খেলা করতে লাগলাম সব বান্ধবীরা দৌড়াদৌড়ি খুনসুটি একজন আরেকজনকে ধাক্কা দিতে থাকলাম।
ছেলে মেয়ে সবাই দেখি হা করে তাকিয়ে আছে। পার্কের বেঞ্চ দখল করা প্রেমিকরা তাদের প্রেমিকাকে ভুলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর বয়স্ক হাওয়া খেতে আসা লোকরা বিরক্তির দৃষ্টিতে দেখছে।
সবচেয়ে ভালো লাগল যখন দেখি নকীবও হাবাগোবার মত তাকিয়ে আছে। আমার কাছে আসলো। আমতা আমতা করে কি জানি বলতে চাচ্ছে। ও বলার জন্য মুখ হা করতেই এক পিস কেক ওর মুখে দিয়ে বললাম কি বলতে চাও বলে ফেল। তুমি তো ব্রেকআপ করতে চাইছিলা।
ও মুখস্থ বলে ফেলল- হ্যাঁ তা তো করবই তোমাকে আর ভালো লাগেনা "
আমিও সঙ্গে সঙ্গে আবেগে বলে ফেলি— প্লিজ আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। সব কিছু ছাড়তে পারব কিন্তু তোমাকে না।
সে বললো ‘সত্যি সবকিছু ছাড়তে পারবে?’ আমি কোনো দ্বিধা না রেখে হ্যাঁ বললাম। –'তাহলে তোমার চুল সব কেটে ফেলতে পারবে?' 


আমি কিছুক্ষণ নীরবে থেকে ভাবার পর বললাম হ্যাঁ পারব। তৎক্ষণাৎ রওনা দিলাম  সেলুনের দিকে। বান্ধবীরা আমার পিছু পিছু আসছিল আর সমানে বলেই যাচ্ছিল ‘‘প্লিজ রে এমন পাগলামি করিস না!"
সেলুনে প্রথমে হেয়ার ওয়াশ করা হল। তারপর রাবার ব্যান্ড দিয়ে ঝুটি বানানো হল কাটার জন্য। অনেক মোটা ঝুটি তাই কাটতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই খোলা চুলেই একে একে চুল কাটছিল আর বাইরে দাঁড়ানো বান্ধবীদের কেউ কেউ কান্না শুরু করে দিয়েছিল।
আমার এত দিনের যত্ন, এতদিনের ভালবাসা সব আস্তে আস্তে মাথা থেকে আলাদা হয়ে ফ্লোরে পড়ছিল ভেবে কষ্টে বুকের ভেতরটা খানখান হয়ে যাচ্ছিল।
চুল সব কাটা হয়ার পর আর কান্না ধরে রাখতে পারিনি। বান্ধবীদের কেউ কেউ আর থাকতে না পেরে পার্লারের ভিতরে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে আরম্ভ করল আর বলল তুই এমনটা কেন করছিস। ওদের কান্না দেখে আমার চোখও বাঁধ মানল না।
এরপর নিজেকে সামলে নিয়ে ওদের সরিয়ে দিয়ে বললাম ইলেক্ট্রিক রেজর দিয়ে চুল ন্যাড়া করতে।
নাপিত নিচে পড়ে থাকা সিল্কি চুলের গোছা কুড়িয়ে আমার হাতে দিল।
আমি আর দেরি করিনি। নিজের শত ভালবাসার চুলগুলো নিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে যাই কিন্তু পারলাম না তাই আমার এক বান্ধবী যে অনেক দিন আগে আমার চুল দিয়ে পরচুলা বানিয়ে পরবার বায়না করেছিল ওকে গিয়ে দিয়ে আসলাম। ও আমার হাত থেকে চুল  নিতে গিয়ে হতবাক হয়ে গেল। এবার আমার আশা ছিল এই স্যাক্রিফাইসের পুরষ্কার হিসাবে আমি নকীবের মন পাব।
পরে যখন নকীবের সাথে একাকী দেখা করে আমি হিজাব খুলে দেখাই নিজের ন্যাড়া মাথা। সে হাসতে হাসতে বলে “এই তো এইবার সেই লাগছে।” আমি জিগ্গেস করলাম ‘এখন থেকে ত তাহলে তুমি আর ব্রেকআপ করবে না।'
সে এবার হাসতে হাসতে বলল– "আমি কখন বললাম চুল কাটলে আমি আর ব্রেকআপ করবনা? আমি শুধু দেখতে চাইছিলাম তুমি আমার জন্য কত কি করতে পারো।”
‘'আর এই ভালবাসার আমার কোন দরকার নাই কারন এমন মেয়ে আমার পিছে আরো পাঁচ ছয়টা ঘুরে। তোমারে দেয়ার মত সময় আমার নাই” এইটা শুনবার পর কান্নায় বুক ভেঙ্গে পড়ে!
পরে জানতে পারি ও এইরকম অনেক মেয়ের সাথেই রিলেশন চালায় আর কয়দিন পর ব্রেকআপ করে ফেলে। এমনকি কারো কারো সঙ্গে ফিজিক্যাল রিলেশন করেছে। আমার শরীরের বাঁক এতটা সুন্দর না সেকারণে ও আমার সঙ্গে ফিজিক্যাল রিলেশনে যেতে চায়নি। এক্ষেত্রে বলা যায় আমি তুলনামূলক ভাগ‍্যবতী।
আমি আর এই কষ্ট ধরে রাখতে পারছিলামনা। আম্মু আব্বুকে তাই বিয়ের সম্বন্ধ খুঁজতে বলে দিই। উনারা ইন্টার পাশের পরপরই বিয়ে ঠিক করে বিয়ে করিয়ে দেয়।
পাত্র বয়স প্রায় আমার দ্বিগুণ, মাথায় টাক। একটা নামীদামী বেসরকারি ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তাই এই লোভনীয় অফার আর হাতছাড়া হয়নি।

প্রথম প্রথম স্বামী ভালো না বাসলেও যখন থেকে চুল বড় হওয়া শুরু হয়েছে পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে।
জানিনা নকীব এখন কি করছে হয়ত আরেক মেয়ের জীবন নিয়ে খেলছে। আমার কোন জানার ইচ্ছা নেই আমি শুধু এই নিষ্ঠুর অতীতকে ভুলে ভবিষ্যৎকে আঁকড়ে ধরে বাচতে চাই। 

[সংগৃহীত ও ঈষৎ পরিমার্জিত]

চুলের জন্য ভালোবাসা

দাদুর গ্রামে বেড়াতে এসেছি আমার দাদুর প্রায় ১০০ বছরের পুরানো বাংলো দেখার জন্য। সেখানে আমার পরদাদার বড় ভাই (আমারও পরদাদা) এর পার্সোনাল রুমে ঢুকলাম।
সেখানে কিছু জিনিস পত্র পেলাম যেগুলার মধ্যে আমার চোখ গেলো একটা সিন্দুকের দিকে।

সেই সিন্দুকের ভিতর দেখলাম প্রায় সাড়ে ৫ ফুট লম্বা খুব মোটা চুলের বেণী। খুব সুন্দর চুলের কালার, শাইনি আর ধরে এত কোমল লাগছিল মন চাচ্ছিল ধরে চুমু খাই, মুখের সাথে ধরি আর চুলের গন্ধ নিই।

কিন্তু তা করলাম না কারন সিন্দুকে প্রচুর ময়লা জমে ছিল মনে হয় ১০০ বছর ধরে পরিষ্কার করা হয়নি কিন্তু চুলের বেণীটা পরিষ্কারের পর দেখা গেল ১০০ বছরেও তার ঔজ্জ্বল্য, লাবণ্য একটুও ক্ষয় হয়নি।

আর পেলাম একটা ডায়রি আমার পরদাদার। এখানে হয়ত থাকতে পারে এই বেণীর রহস্য। যাক পরিষ্কার করে পড়া শুরু করলাম যেভাবে লেখা…

২৪ জানুয়ারি, ১৯১৬
আমার নাম সুব্রত গুহ বয়স ৩০। আমি এখন কোলকাতায় খুব ভাল একটা চাকরি (তখনকার ইংরেজ আমলে) করি তাই মা বাবা তোড়জোড় করছে বিয়ে করাতে।
সাহেবদের সাথে কাজ করার সুবাদে আমি যেকোন যুবতীকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারি তবে আমার অনেক দিনের স্বপ্ন এক বিধবাকে বিয়ে করব। বিধবার হারানো সংসার ফিরিয়ে দিব।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে বিধবা সম্বন্ধ পাওয়াও দুষ্কর হয়ে দাড়িয়েছে। মা দাদা-বৌদিরা বলছে এ জেদ বাদ দিতে। কিন্তু আমি ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করলাম আর অবশেষে পাওয়াও গেল।

২৮ বছরের মহিলা তার প্রায় ১১ বছরের ছেলেও আছে। মহিলা গায়ের রঙ তামাটে, কিছুটা স্থূল গড়ন, চেহারাও মায়াহীন কেমন যেন রাগী রাগী ভাব। তবে একটা জিনিস আমার চোখে পড়লো তার অনেক বড় খোঁপা। পুরো মাথা শাড়ির আচলে ঢাকা কিন্তু দেখে বুঝা যাচ্ছিল খোঁপা খুব বড়।

মহিলার নাকি দ্বিতীয় বিয়েতে একেবারেই ইচ্ছে নেই কিন্তু পরিবার জোর করছে খুব। ইনি তার স্বামীকে খুব ভালবাসতেন তার মৃত স্বামীকে ছাড়া আর কাউকে তার জায়গায় আসতে দিবেন না।

২০ আগস্ট, ১৯১৬
যাক বিয়ের পর আজ আমাদের ফুলশয্যা। তবে আমার সদ‍্যবিবাহিত স্ত্রী এতে রাজি নন তিনি নাকি আলাদা ঘরে একা ঘুমাবেন।
তার ঘরে গেলাম দেখি তাকে খোলা চুলে। প্রায় হাঁটুর নিচ পর্যন্ত এত সুন্দর চুল কখনো কল্পনাও করতে পারিনি। পাহাড়ি ঝর্ণার মত এত সুন্দর ভাবে ঢেউ খেলানো, এত ঘন ঝলমলে।
সে হঠাৎ আমায় দেখে ঘাবড়ে গেল। দেয়ালে তার হাঁটু অব্দি রেশমি চুলের পিঠ ঠেকালো যেন আমি দেখতে না পাই। তার সামনের চুলগুলো কেনো জানি এমন ভাবে বাকানো তার চেহারাটা অপরূপা লাগছে।
সে প্রতিনিয়ত মুখমণ্ডল থেকে চুল সরাচ্ছে আর রাগে লাল হয়ে বলছে “বের হন তাড়াতাড়ি এই ঘর থেকে নাহলে কিন্তু আমি লোকজন ডাকব, এক্ষুনি যান আমি আপনার কোন ক্ষতি করে ফেলব, শেষে একটা কাঁচের গেলাস ভেঙ্গে নিজের গলায় ধরে বলে নিজেকে শেষ করে ফেলব।"

সে এত রাগছে আর গালিগালাজ করছে তবুও তার সামনের চুলের জন্য তাকে এত সুন্দরী লাগছে যে মন চাচ্ছে জড়িয়ে ধরে চুমু খাই কিন্তু সে বিরক্ত হচ্ছে ভেবে চলে আসলাম।
রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে দ্রাম করে দরজা লাগিয়ে দিলো। আজ বুঝতে পারছি নারীর আসল সৌন্দর্য তার চুলে। না হলে যেই মহিলাকে দেখতে আহামরি সুন্দর না তাকে আজ খোলা চুলে দেখে আমি অদ্ভুত আকর্ষণ অনুভব করছি।

২১ আগস্ট,১৯১৬
সেদিনের কথা আর ভুলতে পারছিনা। তার এত সুন্দর দেখতে পা অব্দি লম্বা ঘন রেশমি খোলা চুল। তার সামনের চুলের জন্য তার চেহারা কিভাবে। কিভাবে চুল খুললেই এক নারির চেহারা পুরো পরিবর্তন হয়ে যায়। কিভাবে চুল খুললেই এক সুদর্শনা অপ্সরা তে পরিনত হয়ে যায়। এমন জাদুকরী চুল তার।
তার ১১ বছরের ছেলের থেকে জানতে পারি তার বাবার খুব প্রিয় ছিল তার মার চুল তাই চুল কাটেনি। কিন্তু তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে চুল একেবারেই যত্ন নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আঁচড়ায়না, তেলও দেয়না। গোসলের সময় মাথা ভেজায় না যেন চুল না ভিজে। খোঁপা খুলতে সচরাচর দেখা যায়না। বিভিন্ন ভাবে অবহেলা করে যেন চুলের লাবণ্য শেষ হয়ে যায় আর কোন পুরুষ যেন তার চুল দেখে পাগল না হয়ে যায়।

আমি তো পাগল হয়ে গেছি। আর প্রায় ১০ বছর ধরে অযত্নের পরও এত সুন্দর চুল ভেবেই আরো পাগল হই। না জানি প্রথম স্বামীর সময় কত লাবণ্যময়ী ছিল তাহার কেশ। তার ছেলেও নাকি তার মায়ের চুলের পাগল। তার মাকে খোলা চুলে দেখলেই চুলে চুমু খায় আর মুখমন্ডলে নিয়ে মাখে। এসব কখনো পুরান লাগেনা তার কাছে।

২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯১৯
প্রায় ৩ বছর হয়ে গেলো আজো তার সাথে একটা রাত ও কাটানো হয়নি। সেই প্রথম যে তাকে খোলা চুলে দেখা আর এত বছর ধরে তার চুলের দেখা পাইনা। সব সময় মাথা আচলে ঢেকে রাখে। তার উপর প্রতিনিয়ত নানান খারাপ ব্যবহার করে সবার সাথে। সংসারের সব কাজ হয় আমার মা, বৌদিদের অথবা আমাকে করতে হচ্ছে। কাল তো সে আমার মায়ের গায়ে হাত তুলেছে! কেউ আমার মাকে কিছু বললে আমি সহ্য করতে পারিনা তার উপর গায়ে হাত তুলল! তবুও তার প্রতি আমার ভালবাসা কেন?
সে সেদিন বললো, "যতদিন আমাকে ঘরের বউ করে রাখবেন এসব সহ্য করে যেতে হবে!"

২০ সেপ্টেম্বর,১৯২০
নাহ! আর পারা যাচ্ছেনা। এভাবে আর কতদিন পারা যায়। আমরা গেলাম ডিভোর্স নিতে কোর্টে।
অফিসার বললো অমুক অমুক জায়গায় সাইন করতে এরপর বলল বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করতে।

আমরা বসে আছি হঠাৎ হালকা বাতাস আসল; আমার বউ এর কিছু চুল বাতাসে উড়ছিল আর খেলা করছিল। আমার দেখে আবার প্রেম জেগে উঠলো মনে। কিছুক্ষন পর মাথা থেকে শাড়ির আচল সরে গেলো। তার এত সুন্দর খোপা দেখে আমি আবার যেন পাগল হয়ে গেলাম হারানো সেই অতীত অনুভুতিতে।

তার কাছে গিয়ে বললাম “শুনছো, ডিভোর্সটা না নিলে হয়না"। সে কিছুক্ষণ আমতা আমতা করার পর বলল– মাথা থেকে ভূত এখনও যায়নি? আমি বললাম একটু বুঝার চেষ্টা করো আমি তোমার ওই চুলের পাগল! যেদিন থেকে তোমাকে খোলা চুলে দেখেছি। তুমি এখন থেকে যত খুশি আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করো তবুও আমাকে ছেড়ে চলে যেয়োনা আমি তোমায় ছাড়া বাঁচবো না।

সে কিছুক্ষণ ভাবার পর বলল: চলুন আমার সঙ্গে। আমাকে নিয়ে গেল কলকাতা শহরের বাইরের এক নাপিত বাড়িতে। সেখানে গিয়ে নাপিতবৌ বলে হাঁক পাড়তেই একজন মহিলা বেরিয়ে এসে; আ লো গিন্নিমা বলে গড় করে প্রণাম ঠুকে বলল আহা কদ্দিন পর পায়ের ধুলো দিতে এলেন? নাপিত বৌয়ের মাথায়ও একটা বড় সুন্দর দেখতে খোঁপা। গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা চিকন গড়ন চেহারা সুন্দর। আমাদের দুজনকে প্রণাম শেষে ঘরের ভিতর থেকে দুটো জলচৌকি এনে আমাদের বসতে বলল। বলল গিন্নিমা-বাবুমশাই আপনারা বসুন। আমি কিছু ফলারের যোগাড়জন্তর করি। কিন্তু আমার স্ত্রী বলেন— বসতে আসিনিরে ক্ষেমী। ক্ষেমী কিছুটা অবাক হয়ে উত্তর দেয়: এতদিন পর আমাদের ভিটায় এলেন একটু বসুন; সেবা করার সুযোগ দিন। আমার স্ত্রী এবার বলল- যে সেবা তোর পেশা তাই নিতে এসেছি। সে এর মানে বুঝল, আমিও বুঝলাম তবু মুখ ফুটে কিছু বললাম না। আমার স্ত্রী আমাকে সরে বসতে বলল আর নাপিতবৌ আমার স্ত্রীর ঘন চুলের থেকে অনেকগুলো চুলের কাঁটা সরিয়ে আর বিশাল সেই খোপাটি থেকে কাঠের চিরুনি সরিয়ে তার চুল খুলল।
তাকে আবার খোলা চুলে দেখে মন চাচ্ছে জড়িয়ে ধরি। আশেপাশে হঠাৎ চোখ পড়লে দেখি কটা ছোট ছোট ছেলেমেয়ে একটু দূরে দাঁড়ানো। সবাই হা করে তার চুলের দিকে তাকিয়ে দেখছে।
–তাহলে এদ্দিন বাদে আপনি চুল কাটবেন। কিন্তু আপনি না আবার বিয়ে কল্লেন। শ্বশুরঘরের নোকে কি বলবে? এত সুন্দর চুল কেটে ফেলবেন। কতটা কাটবেন?
–আমার সব চুল কেটে উনাকে দিয়ে দে।
–কি বলছেন গো গিন্নিমা! সবটা কাটবেন? এমন নির্দয় হলেন কি করে?
–আমি বললাম না সব চুল কেটে ফেলতে। এক বার বললে কানে যায় না? তোকে যা করতে বলি তাই কর।
ক্ষেমী একদৌড়ে ঘরে ঢুকে পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে শ‍্যামা নামের আরেকজন মহিলাকে ডাকল। তারা যখন আবার আমাদের সামনে এলো তখন তাদের হাতে একখানা ময়লা চাদর, একজোড়া কাঁচি আর চিরুনি, একখানা ক্ষুর আর আরো কি যেন ছিল।
কিছুক্ষণ রাশি রাশি চুল আঁচড়ে অতঃপর বড় একটা কাঁচি দিয়ে একে একে সব চুল কেটে ফেলতে থাকলো আর আমার মনে হলো আমার হৃদপিণ্ডেও কে যেন ছুরি কাঁচি চালাচ্ছিল। তার ঘন চুলগুলি এমন ভাবে ঢেউ খেলছিল যেন কাঁচির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছে। মাথা ভরা চুল ক্ষেমী আর শ‍্যামা পালা করে কাটছিল।

সবশেষে পড়ে রইল এক বিশাল রেশমি ঝলমলে চুলের সমুদ্র। ওরা দুইজনে মিলে সেসব চুল সংগ্রহ করে বেণী বেঁধে আমার হাতে দিলো। কষ্ট ও হচ্ছে আবার এত কোমল চুল হাতে নিতে পেরে মন উতলা লাগছে।

সে এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল:- এখন তো আর কোন ভালবাসা অবশিষ্ট নেই আমার জন্য? এবার দয়া করে আমার জীবন থেকে চলে যান। আমার পাগল করা সেই চুল আপনাকে দিয়ে দিয়েছি। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। আজ তাকে চুল কাটানোর পরও কেন যেন মায়াবী অপরূপা লাগছে কিন্তু তাকে আটকানোর কোনো অধিকারই আমার আর নেই। পুরুষের মত ছোট করা চুল সে ঘোমটা তুলে ঢেকে নিলো। আমিও সেই বেণীটা ক্ষেমীদের দেয়া একটা থলেতে পুরে তার পিছু পিছু বেরিয়ে নাপিতবাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম।

ডায়েরিতে এইটুকুই লেখা। এরপর আমি যতদূর জানি পরদাদার বড় ভাই অবিবাহিতই থেকে যান এবং বাকী জীবন তার প্রাক্তন স্ত্রীর চুলের ভালবাসায় কাটিয়ে দেন।

আমি আরেকবার আমার পরদাদীর সেই বেণীর দিকে তাকালাম। প্রায় শত বছর শরীর থেকে আলাদা হয়ে থাকার পরও অর্থাৎ শরীরের পুষ্টি উপাদান না পাওয়ার পর তার উপর এত বছর বদ্ধ ট্রাঙ্কে অযত্নে ময়লার মধ্যে থাকার পর এখনো এত লাবণ্যময়ী সেই চুল। না জানি তার মাথায় থাকলে আর তিনি এতদিন বেঁচে থাকলে কেমন দেখতে লাগত ভেবে আমিও যেন পাগল হয়ে যাই। অবশ্য মনে পড়ল এতদিন বেঁচে থাকলে তিনি বুড়ি হওয়াতে তার এই চুলগুলি সাদা হয়ে যেত নিশ্চয়। ভাল হয়েছে উনি এগুলো কেটে ফেলেছিলেন।

পাগল হয়ে তার সেই মোটা বেণী খুলতেই এত সুন্দর ঝলমলে ঘন মেঘের মত ঢেউ খেলানো চুল দিয়ে যেন পুরো বিছানা ভরে যাওয়ার মত অবস্থা। নিজে আর তর সইতে পারি না পরদাদীর চুলগুলো হাতে নিয়ে সারা শরীরে জড়িয়ে ধরে চুমু খাই। এখনও এত সুগন্ধ। পরে অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়ে এগুলো আবার গুছিয়ে যত্ন করে একটা রিবন দিয়ে বেঁধে আমার ব‍্যাগে রাখলাম। এখন এটা আমার সঙ্গে নিয়ে যাব।

[সংগৃহীত ও ঈষৎ পরিমার্জিত]

Tuesday, June 23, 2020

এই চুল সৌভাগ্য নাকি শাপ

সেলুনে লাইনে বসে আছি। নিজের অতীত স্মৃতিগুলো মনে ভাসছে।
ছোটবেলা থেকেই আমার অনেক লম্বা ঘন চুল ছিল প্রায় হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছাত। চুল আঁচড়াতে হত দুইটা খোঁপা করে একটা খোঁপা খুললেই পুরো শরীর ঢেকে যেত। আমার মায়ের খুব পছন্দের ছিল আমার চুল তাই রোজ মাথায় তেল দিত আর বলতো “তোর চুলগুলো এত সুন্দর একদম মেঘের মত এত কোমল মায়াবী"। আমার চুল দেখতেও অনেক সুন্দর ছিল চুল খুলা থাকলে মুখমন্ডল দুপাশ ঢেকে যেত। নাইন টেন ইন্টারে পড়া আপুরা বলত “তোর এত সুন্দর চুল গুলা কেটে আমাকে দিয়ে দে আমি পরচুলা বানিয়ে পড়ব এই বয়সে এত বড় চুল দিয়ে কি করবি।”
‘আচ্ছা তাহলে অন্তত অর্ধেক কেটে দে তাও চলবে'। কিন্তু মা মানা করত 'কোনদিন চুল কাটবিনা!’
শৈশব কেটেছে গ্রামেই। মাঠে ভাই-বোনদের সাথে খেলতাম। তারা কেন জানি অন্যরকম ভাবে দেখতো। মাঝে মাঝেই খোপা খুলে যেত আর রফিক বলতো 'এইভাবে তোকে একদম ডাইনির মত লাগে' তাই ওরা আমার চুল নিয়ে নানাভাবে খেলতো মাঠের মাটিতে রেখে চুলের উপর লাফালাফি করত নানা ভাবে ময়লা করত টানাটানি করত। মা তাই রাগ করত আবার খুশিও হত এত কিছুর পরও চুল ড্যামেজ হয়না।
স্কুলে যে বয়সে আমার বান্ধবীদের প্রায় সবার ছোট চুল কারো কারো সর্বোচ্চ পিঠ পর্যন্ত পৌছায় সেই বয়সে আমার প্রায় পা পর্যন্ত চুল। তাই মা শক্ত করে খোপা বেধে দিত ক্লিপ দিয়ে আর মাথায় পিন লাগাতে হত বিভিন্ন স্থানে। আমি স্কার্ফ দিয়ে মাথা পুরা ঢেকে রাখতাম তাও সবার কৌতুহল জাগতো কারন খোপা এত বড় হত। একদিন বান্ধবীদের অনেক জোরাজুরিতে স্কার্ফ খুলতে বাধ্য হলাম তারা বলল এত সুন্দর খোপা এত সুন্দর চুলের কালার রোদের আলোয় যেন ঝলমল করছে তাই আমাকে বাধ্য করলো খোপা খুলতে। এরপর থেকে আমার চুল সবার মধ্যমনি। সবাই চুলে চুমু খেতে মুখের সাথে ঘষতে লাগলো বলে এত কোমল চুল না ছুঁয়ে থাকা যায়না।
জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার দিন পরীক্ষক স্কার্ফের ভিতরে এত ফোলা দেখে জিজ্ঞাসা করল স্কার্ফের ভিতরে নকল নাকি? সেটা দেখবার জন্য অন‍্য রুমে নিয়ে আসে; এরপর চুল খুলে পুরুষ পরীক্ষক সমস্ত চুলে চুমু দিতে লাগল, পরে সারা শরীর জড়িয়ে ধরে মুখে চুমু দিতে লাগল তার মুখ আমার চুলের ভিতর ডুবিয়ে রাখল বলে এত সুন্দর চুল কখনো কল্পনা করেনি। আমার এত খারাপ লাগছিল কষ্টের কথা মা বাবাকে বলাতে তারা চুল ন্যাড়া করে দিলো। ইন্টারের এক বড় আপু আফসোস করে বললো 'এত সুন্দর চুল ডাস্টবিনে ফেলে না দিয়ে আমাকে দিতি’
ক্লাস টেনে পড়ার সময় চুল আবার হাটুর নিচ পর্যন্ত এখন। এই চুলের জন্য বান্ধবিদের কারো কাছে ঈর্ষার পাত্রী তো কেউ কেউ আমার চুলের পাগল। বারবার আমার খোপ খুলতে চায় যা আমার ভালো লাগেনা।
তখন হোম টিউটরের প্রেমে পড়ে যাই যদিও আমি গায়েগতরের দিক থেকে দেখতে তেমন সুন্দর না। গায়ের রং শ্যামলা কিছুটা মোটা গড়নের। বান্ধবীরা বলত খোলা চুলে তোকে দেখলে এমনিই প্রেমে পড়ে যাবে। কিন্তু আমার ইচ্ছা করত না এমন করতে। সেই রফিক স্যার আমাকে একদম পাত্তা দিতনা কথায় কথায় পড়া না পাড়লেই রাগতো পানিশমেন্ট দিতো তাই একদিন উপায় না পেয়ে খোলা চুলে পড়তে বসলাম। স্যার এর চোখ সরাতে পারছেনা সেইদিন খুব ভাল ব্যাবহার করলো। পানিশমেন্ট দিতে চাইলে লম্বা চুল তার দিকে মারতাম শরিরে ছোয়াতাম সে বললো "দে-দেখো এ-এসব কিন্তু ঠিক হচ্ছেনা"। তখন থেকে পড়াতে এসে শুধু আমার খোঁপা খুলতে চাইত। গোসল করে আসার পর আমার চুলের গন্ধ দিতে চাচ্ছে আমি গামছা দিয়ে চুলের ঝাপ্টা মারলাম। 

এবার আচমকা স‍্যারের মোহভঙ্গ হল। ‘'নাহ্ এসব ঠিক হচ্ছেনা। আমি এসব কি করছি ছাত্রীর সঙ্গে!’' আমি তোমার চুল সব কেটে ফেলব এক্ষুনি বড় একটা কাঁচি আনো।
তার মন জয়ের জন্য আমি যেকোন কিছু করতে পারতাম। তাই যেমন বলা তেমনি করা। প্রায় দু'হাত চুল ধরল কাটবার জন্য। আমি বললাম আরো বেশি করে কাটেন। অনেকখানি কাটার পর অনেকট লম্বা তাই স্যার কে বললাম আপনার প্রাণে যতখানি চায় কাটেন। স্যারের হাত কাঁপা শুরু করল। তারপর থেকে স্যার আমার চুলের পাগল।
তবে বাবা মা এত আহ্লাদ পছন্দ করেনি। ইন্টার পাশের পর বিয়ে দিয়ে দেয়। তখন চুল আবার আমার চুল হাঁটু ছুঁই ছুঁই।
হঠাৎ আওয়াজ এলো "ম্যাম আপনার সিরিয়াল এসেছে চলুন" চোখ ঘোরাতেই দেখি সেলুনের এক কর্মী। চেয়ারে গিয়ে বসলাম। নাপিত খোঁপার পেন্সিল আর মাথার পিন গুলো খুলার পর বেরিয়ে আসলো এক মেঘ চুল। চেয়ার আর উচু করা যাচ্ছেনা বলে নাপিত।
আমার কি কপাল! আমার মত সুকেশার কপালে জুটল কিনা এমন এক স্বামী যে লম্বা চুল ঘৃণা করে। বিয়ের পর আমার মাথা ভরা চুল দেখার পর রাগে আগুন। কিন্তু শাশুড়ি ও মায়ের মত লম্বা চুল কেটে ছোট করতে একদম মানা। এদিকে শ‍ শ্যালিকা আমাকে দেখতেই পারেনা বলে: “দেখব কতদিন তোমার এই চুল থাকে।"
আমার স্বামী সবসময় হয়ত ইচ্ছে করেই ডেট ওভার হওয়া শ‍্যাম্পু, তেল আনতো আমার জন্য। আমি এগুলো হাসিমুখে ব‍্যবহার করতাম। আলাদা বাসা নেয়ার পর থেকে আরও অনেক কিছু শুরু হয়। যেমন ময়লা কাপড়ের পরিবর্তে আমার লম্বা চুল দিয়ে ঘর মুছাতো। এত জোড়ে টান দিয়ে মোচড়াতো যে খুব ব্যাথা হত আর বলত ‘যতদিন তোর এই চুল থাকবে ততদিন তোর প্রতি আমার কোন ভালবাসা নাই।’ শাশুড়ি কেবলই বলে "সমস্যা নেই একদিন তোর চুলে পাগল হয়ে যাবে আমার ছেলে দেখিস।"
যাক এসবের মাধ্যমে একবার চুল পড়া শুরু হলে আর এই সৌন্দর্য থাকবেনা তখন মা শাশুড়ি কে মানাতে পারব চুল কাটতে। কিন্তু আমার কি কপাল। এত কিছুর পর ও একটা চুলও পড়েনা। চুলের শাইন আর লাবণ্য একটুও কমেনা। কেন যে এমন চুল নিয়ে জন্মালাম।
৭ বছর পর, আজও সে আগের মতই ডেট এক্সপায়ার্ড শ‍্যাম্পু আর চুল দিয়ে ঘর মোছা জারি আছে। অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক চলে তার। আজও সন্তানের মুখ দেখলাম না। তবে এখন অনেক চুল পড়া শুরু হয়েছে। চুলে আর আগের লাবণ্য নেই। তবে এখন কি মানাতে পারবো তাদের।
বাবার বাড়ি যাবার পর মা এসেছি দেখেই আগে আমার খোঁপা খুলে দেখলেন— বাহ! এখনো কি সুন্দর আমার মেয়ের চুল। আমার মুখে হতাশার ছাপ দেখে হয়ত মায়ের মুখের হাসিও ম্লান হয়ে গেল।
তার পরের দিন স্বামী মদ্যপ অবস্থায় বাসায় এসে আমার মোটা বেণী দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে বলছিল:– দেখি তোর এই চুল আজকে কিভাবে থাকে! আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল আর চোখ দিয়ে পানি বেয়ে পড়ছিল।
নাহ! এসব আর কতকাল সহ্য করব! ভেবে ভেবে রান্নাঘরে কাঁদছিলাম তখন চোখ গেল চুলায় ফুটন্ত গরম পানির দিকে। তাকিয়ে রইলাম সেদিকে। এরপর খোপার কলম আর পিন গুলো খুললাম আর সমস্ত চুল ফুটন্ত পানিতে ডুবালাম আর ভাবতে থাকলাম সেই দিনগুলির কথা। সেই মাঠে একসঙ্গে খেলা, জুনিয়র বৃত্তি পরিক্ষার পরীক্ষকের সেই নোংরামি সব স্মৃতিগুলি ফুটন্ত পানিতে ভেসে আসছিল তাই চেয়েই থাকলাম সেই দিকে।
ম্যাডাম কতটুকু কাটব? আপনার চুল মারাত্মক ড্যামেজড কিন্তু চুলের ঘনত্ব, লেংথ, শাইন সবকিছুই সুন্দর। আমি বললাম- কাটতে থাকুন যতক্ষণ না এই সব চুল শেষ হয়ে যায় এই সব কস্টের মূল শেষ হয়ে যায়! "
–ওকে ম্যাম তাহলে আপনাকে বয়কাট দেই কারন মাথার কাছের চুলগুলো একটুও ড্যামেজ হয়নি; খুব সুন্দর দেখতে।
বয়কাট দেয়ার পর কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম এরপর মাটিতে পড়ে থাকা চুলের সমুদ্রের দিকে তাকালাম। তারপর হঠাৎ আয়নার দিকে তাকিয়ে বললাম ‘‘এবার মাথা পুরো ন্যাড়া করে দিন আর মেডিসিন দিয়ে দিন যেন আর চুল না গজায়।’’

আজ হয়ত বড় আপুরা নেই যে বলবে চুলগুলি ফেলে না দিয়ে তাদের দিয়ে দিতে। আজ হয়ত সেই স্যারও নেই যে এই চুল কাটতে দেখে মায়া লাগবে। 

[সংগৃহীত]

Monday, May 18, 2020

এক স্ত্রীর আত্মকথন

রিকশা থেকে নেমে লিফট এর ৫ চেপে পার্লারে ঢুকলাম। ভিড় আছে ভালোই।
আচ্ছা, এখন তো সামনে ঈদ নাই তাহলে এতো ভিড় কেন কি জানি!
-এক্সকিউজমি ম্যাম,কি করবেন?
-চুল কাটব।
-কি কাট?
-একদম ফেলে দিব।
-বয় কাট?
-না, একদম ফেলে দিব সব চুল।
রিসিপশনের মেয়ে টা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রিসিপ্ট কেটে দিয়ে দিল।
দশ পনেরো মিনিট পরে আমার সময় এলো।
যে মেয়েটি চুল কাটছে, সে বারবার জিজ্ঞেস করছে আমার কি কোনো অসুখ আছে নাকি এভাবে এতো সুন্দর সব চুল কেন কাটছি। আমি শুধু মুচকি হেসে বলছি, একদম মাথা মুড়িয়ে দাও আপু।
চুল কাটা শেষে মাথায় কোনোভাবে হিজাব বেধে বাসায় চলে এলাম।
বাসায় ঢুকতেই মা বকা দিচ্ছে কেন আজ এই সময় বাইরে গেলাম। তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে ড্রেসিংটেবিল এর সামনে দাঁড়িয়ে হিজাব খুলে একটা ছবি তুললাম। ছবিটা হোয়াটসএ‌্যাপ এ শুভ্র কে পাঠিয়ে দিলাম। শুভ্র সিন করে হাসির ইমোজি দিলো আর বলল- এখন আর কেউ বিয়ে করবে না তোমায়, নিশ্চিন্তে ঘুমাও।
গোসল করে বের হয়ে মাথায় হাল্কা ওরনা দিয়ে ডাইনিং রুমে যেতেই মা চিৎকার দিয়ে উঠলো- এ কি করেছিস নীরা!? আজ তোকে রাতে দেখতে আসবে ছেলেপক্ষ, আর তুই এ কি করলি? কেন করলি এমন?
কি হলো, কথা বলছিস না কেন?
খুব গরম লাগছিল মা তাই ফেলে দিলাম সব চুল।
চুল বড় হতে অনেকদিন লাগছে,৬মাস হলো এখনো ছোট চুল।
বিয়ে ভেঙে যেতে লাগলো একের পর এক।
এর ভিতর শুভ্রের চাকরী হয়ে গেলো,আর এক মাস পর জয়েনিং।
খুব খুশি লাগছিল,আমাদের ৪ বছরের সম্পর্ক অবশেষে বুঝি বিয়েতে রূপ নেবে।
দিনক্ষণ ঠিক করে শুভ্রের মা বাবা আমায় দেখতে এলো, ওর মা আমার চুল দেখে একদম বেঁকে বসল।
উনি নাকি স্বপ্নে দেখেছেন এই বংশে এক ছোটো চুলের বউ আসবে যে এই সম্পূর্ণ পরিবার কে নষ্ট করে দিবে।
উনি এখন কোনোভাবেই আমাকে মেনে নিতে রাজি না।
শুভ্র আমায় বললো,কিছু মাস অপেক্ষা করে চুল একটু বড় করতে।
আরো ৬ মাস চলে গেলো, চুল বড় হলো কিছুটা।
কিন্তু শুভ্রের মা কোনোভাবেই আমাকে ঘরের বউ করবেন না।
শুভ্রও নাছোড়বান্দা, আমাকে ছাড়া সে বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে আরো আগেই।
অবশেষে শুভ্র আমায় কাজী অফিসে বিয়ে করে ঘরে নিয়ে গেলো, তার মা আমায় বরণও করলো না।
আমি নতুন পরিবেশে কোনোভাবে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। ধীরে ধীরে আমার শ্বাশুড়ি আরো ভয়ংকর রূপ নিতে লাগলেন।
আমি কখনো চুলার আঁচ কমিয়ে ভাত, তরকারি কিছু বসিয়ে গেলে উনি জোড়ে বাড়িয়ে দিয়ে পুড়ে ফেলতেন, তারপর সারা বাসা চিল্লাচিল্লি করতেন বউ অলক্ষ্মী। ছোট চুলের বউ।
একদিন অনেক বৃষ্টি,কোনো কাপড় শুকাচ্ছিল না তাই আমি চুলার উপর দড়ি বেঁধে শুভ্রের একটা প্যান্ট শুকাতে দিয়েছিলাম।
দুপুরে একটু ঘুমাতেই পোড়া গন্ধে ঘুম ভাঙল, সারা ঘরে ধোঁয়া আর ধোঁয়া।
রান্নাঘর এ আগুন লেগেছে,সেই ধোঁয়া রুমে চলে এসেছে।
এভাবে নানানভাবে উনি আমার পিছু লাগলেন অলক্ষ্মী প্রমাণ করতে।
মাঝে মাঝে খুব কান্না পায়,লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদি।
কিন্তু দিন শেষে ক্লান্ত শুভ্র যখন মুখে একরাস হাসি নিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে নীরু বলে ডাকে তখন সব কষ্ট ভুলে যাই।
কখনো বা বেলী ফুলের মালা,কখনো কাঠ গোলাপ,সাদা গোলাপ,লাল গোলাপ নিয়ে এসে আমার ছোটো চুলে পড়িয়ে দেয় তখন আমার নিজেকে সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হয়, ভুলে যাই অলক্ষ্মী নাম টা।


Tuesday, April 14, 2020

চাচার জেদে চাচীর হেয়ারস্টাইল চেঞ্জ (শেষ পর্ব)

চাচা এবার বারান্দার মুখে দাঁড়িয়ে নাপিতকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলেন -- ‘‘এমন করে কাটবেন যাতে পিছনের চুল দিয়ে একটা ঝুঁটিও বাঁধতে না পারে। খালি মাথার তালুতে যেন বাচ্চা মেয়েদের মত একটা ছোট ঝুঁটি বা মাথার দুই কোণে ছোট দুইটা ঝুঁটি করার মত চুল থাকে। আর চুলের সিঁথি মাথার মাঝখান থেকে যেকোন একপাশে নিয়ে যাবেন। আর গাল আর ঘাড় কামিয়ে দেবেন। 

- তারমানে একদম বেটাগো মত চুল কাটমু?
চাচা মাথা নেড়ে সায় দেন।
- শর্ট না মিডিয়াম?
চাচা শ উচ্চারণ করে পরে মিডিয়াম বলে লিভিং রুমে যান।

এদিকে চাচীর মুখের ওপর চুল ঝুলছে। ফোঁস করে নাক টানার শব্দ শুনে তিনি কাঁদছেন বোঝা যাচ্ছে। তিনি হয়ত ভাবছেন- চাচা কেন তার সঙ্গে এমনটা করছেন। এদিকে নাপিত তার এলোমেলো চুলগুলো সব পিছনে আনেন। চুলে বেশ কয়েকবার আঙ্গুল চালান তারপর পাটের ব্যাগ থেকে একটা চিরুনি বের করে চুল আঁচড়ান বেশ কয়েকবার। তারপর মাথার কাছাকাছি চুল মুঠো করে ধরে বারান্দার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা আমার কাছে একটা রাবার ব্যান্ড চান। আমি একদৌড়ে চাচীর বেডরুম থেকে কয়েকটা রাবার ব্যান্ড এনে নাপিতকে দিই। নাপিত এবার চাচীর চুল আরো কয়েকবার আঁচড়ে চারভাগ করে চারটি ঝুঁটি করলেন। মাথার তালুর সামনে থেকে কপালের ওপর ঝোলানো চুল একভাগে, মাথার দুপাশে ২ কানের সামনে ২ ভাগ, ২ কানের পিছনে পিঠ বেয়ে চলা সব চুল ১ ভাগ। এবার কাঁচি তুলে সবচাইতে লম্বা পনিটেল মানে পিছনের চুলে কাঁচি লাগিয়ে আস্তে আস্তে চেপে বসাতে লাগলেন। ১ মিনিট পরেই একটা ক্ষীণ ছিক শব্দে পনিটেল চাচীর মাথা থেকে আলগা হয়ে নাপিতের হাতে চলে আসে। এবারে ইলেক্ট্রিক ক্লিপারের চার্জার খুলে গার্ড লাগিয়ে ঘাড়ের যেখান থেকে পনিটেল কাটা হয়েছিল সেখানে ধরে উপরের দিকে কাটতে শুরু করেন। চাচীর মেছকির ওপর কাটা চুল ঝরঝর করে ঝরতে থাকে। মাথার পিছনটায় ভোঁ ভোঁ শব্দ করে ক্লিপারের ঘর্ষণে চাচী চমকে উঠেন। এবার কানের দুপাশে বাঁধা পনিটেল কাঁচিতে কেটে তারপর শুরু করেন কানের সামনে থেকে মাথার দুপাশের চুল ক্লিপিং করা। দুপাশের চুল ছোট করা হয়ে গেলে তিনি ট্রিমারের গার্ড খুলে চিপের আর ঘাড়ের যেখানে চুল গজানো শেষ সেখানটা একটু সরলরেখায় কেটে নিলেন। এখন চাচীর মাথার সব পাশের চুল ছোট খালি মাথার তালুতে একটা পনি বাদে। এবার উনি সেই মাথার তালুর পনির গোড়ায় কাঁচি ধরলেন কিন্তু চাচার নির্দেশ মনে করে রাবার ব্যান্ডটা ৩/৪ ইঞ্চি উপরে তুলে অতঃপর ব্যান্ডের নিচে কাঁচি দিয়ে কাটলেন। এরপর আমাকে ডেকে একটা বোতল বাড়িয়ে দিলেন পানি আনতে। এনে দিলে বোতলের মুখে স্প্রেয়ার লাগিয়ে তা দিয়ে সারা মাথায় পানি স্প্রে করে প্রথমেই মাথার তালুর চুল কিছু ছোট করলেন তারপর মাথার ডানপাশে নতুন সিঁথি কেটে মাঝখানের সিঁথি মিলিয়ে দিলেন। তারপর কপালের সামনের চুলের বামপাশ ডানপাশ অপেক্ষা খানিকটা ছোট করে দিলেন। তারপর ক্ষুর আর নতুন ব্লেড বের করে অর্ধেক ভেঙে ক্ষুরে লাগিয়ে কানের পিছনে, কানের লতির সমান্তরালে আর ঘাড় কামিয়ে দিলেন। সব শেষে মাথার চারপাশে ও ওপরে আরেকবার কাঁচি চালিয়ে লুক মানানসই করে নিলেন। অতঃপর চাচীকে সুন্দর করে মাথা আঁচড়ে, পাউডার কেস বের করে স্পঞ্জ দিয়ে পাউডার লাগালেন ও সেটা দিয়ে চাচীর মুখ ও কাঁধের ওপরকার চুল ঝেড়ে ফেললেন। তারপর চাচী উঠে নিজের মাথার চারপাশে হাত দেয় এবং পিছনে ফিরে দেখে তার সব চুল ফ্লোরে পড়ে আছে। চাচী কোনো কথা না বলে বাথরুমে গোসল করতে ঢুকলেন।

চাচা এদিকে নাপিতের পাওনা মিটিয়ে দিলেন। ইতিমধ্যে চাচী যে গোসল সেরে বেরিয়ে নিজের স্পেশাল রুমে গিয়ে দরজা আটকালেন আর খুললেন না। চাচা কিছুটা ভয় পেলেন তবে তিনি জানতেন চাচী ওভাররিএ্যাক্ট করবে না। এদিকে সন্ধ্যায় বুয়া এসে তো বেডরুম আর ব্যালকনি ঝাড়ু দিতে গিয়ে চুলের ঢিবি দেখে অবাক। অবশ্য চাচী এর মধ্যে একবার রুম থেকে বেরোলে চাচীকে দেখেও সে তাজ্জব হলো। রাতের খাবার খাওয়ার সময়ও চাচী কোনো কথা বললেন না। তবে রাতে চাচার সঙ্গে এক বিছানাতেই ঘুমালেন। টানা ৩ দিন চাচী আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। সবশেষে ৪ দিন পর সকালে চাচী আমাকে বলল- জানিস নাফি তোর চাচ্চু আসলে আমার চুল কাটিয়ে ভালো করেছে; আগে তো গোসলের পর চুল ভালো ভাবে মোছা আর শুকানোর জন্য সময় লাগত এখন আর লাগছে না, তার পর কিভাবে চুল বাঁধলে লুক ঠিক থাকবে সে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে তৈরি হতে হত। এখন তো এক আঁচড়েই রেডি, সময় কম লাগছে, চুলের মধ্যে আর জট পড়ে না। সেদিন তোর এক আন্টি বলল : আমাকে নাকি আগের থেকে অনেকটা ইয়ং লাগে। আসলে আমিও অনেক দিন যাবৎ ভাবছিলাম চুল ছোট করে ফেলি কিন্তু ভালো দেখাবে কি না সেটা ভেবে আর করা হয়নি। তোর চাচ্চুর জেদে যাক সেটা ট্রাই করা হলো। আমি বললাম : তাহলে তুমি কি চুল এবার থেকে ছোট রাখবে? চাচী বলেন : তোর চাচ্চু তো প্রথম রাতেই বলেছিল এখন থেকে এভাবেই রাখতে। তোর কয়েকজন আন্টিও বলেছে এমনই রাখতে। আমিও তাই ভাবছি; তোর চাচ্চু বললে বড় হতে দেব নাহলে ৩ মাস বাদে কেটে ফেলব। 


চাচার জেদে চাচীর হেয়ারস্টাইল চেঞ্জ (১ম পর্ব)

আমি নাফি। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩য় বর্ষের ছাত্র। জন্মের পরপরই মা মারা যাওয়ায়, বাবা বিবাগী হয়ে আমাকে চাচা-চাচীর হাতে তুলে দিয়ে নিরুদ্দেশ হন। নিঃসন্তান চাচা-চাচীই আমাকে পিতৃমাতৃস্নেহে এত বড় করেছে। এবার আসল কথায় আসি। আমার একটি লুকানো অভিলাষ বা ফেটিশ আছে। আমার ফেটিশ হচ্ছে মেয়েদের চুল নিয়ে। এ পর্যন্ত আমি কয়েকজন মেয়ে বন্ধুর চুল কাটা স্বচক্ষে দেখে নিজের ফেটিশ সন্তুষ্টি করেছি কিন্তু আমার মনোবাঞ্ছা হলো আমাকে মাতৃস্নেহ দেওয়া চাচীকে ছোট চুলে দেখা। চাচীর সোজা রেশমি চুল বর্তমানে প্রায় কোমর পর্যন্ত। এককালে প্রায় হাঁটু পর্যন্ত লম্বা ছিল কিন্তু বয়স বাড়তে বাড়তে চুলের দৈর্ঘ্য হ্রাস পায়। তাছাড়া চাচীও এমনিতে সাজগোঁজ পছন্দ মহিলা। গত কয়েক বছর ধরে উনি ২ মাস অন্তর হাই ক্লাস দামী পার্লারে গিয়ে চুলের আগা ট্রিম করান ও স্টাইল করিয়ে আসেন। এর মাঝে অনেক বার ইনিয়ে বিনিয়ে চাচীকে চুল কাটবার প্রস্তাব দিলেও চাচী রাজি হননি বরাবর এড়িয়ে গেছেন। তবে ঘটনাচক্রে একদিন আমার মনোষ্কাম পূর্ণ হয়। আজ সে গল্পই বলব।

আমার চাচা ব্যবসায়ী মানুষ। ঠিকাদারি ব্যবসা করেছেন বহুদিন যাবৎ। তারপর নামলেন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়। মূলত চাচার অক্ষমতার জন্যই তারা সন্তানবঞ্চিত। চাচা অবশ্য চেয়েছিলেন চাচী যেন অন্যত্র নতুন করে সংসার পাতেন কিন্তু চাচীই ওনার সঙ্গে থেকে যান। যাই হোক একদিন চাচা আমিসহ একটা জমি দেখে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ তিনি মাঝরাস্তায় গাড়ি থামিয়ে রাস্তার বামপাশে তাকিয়ে আমাকে বললেন: ‘দেখত ওটা তোর চাচী না?’ আমি তাকিয়ে দেখলাম, চাচী একটা লোকের সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলছে। আমি চাচাকে জিজ্ঞেস করি ‘বেরিয়ে দেখবে?' চাচা না বলে গাড়ি চালানো শুরু করেন। চাচা অবশ্য চাচীর কাছে কখনো তার দৈনন্দিন জীবন নিয়ে কিছু জানতে চান না। আরেকদিনও চাচা বাড়ি এসে আমাকে বললেন: আজকেও না তোর চাচীকে দেখেছি একটা হোটেলে সেই লোকের সঙ্গে বসে কফি খাচ্ছে। আমি শুনেও না শুনার ভান করে থাকলাম। আমার মনে হলো চাচা খুব হতাশার মধ্যে আছেন। অন্য আরেকদিন মাসের ১ম দিনে চাচা বাসায় বসে ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্টস চেক করছিলেন। তিনি স্টেটমেন্টে দেখেন চাচী পার্লারে প্রচুর টাকা ব্যয় করছেন। তিনি ডায়মন্ড উম্যান সেলুন নামের একটি সেলুনে ৳১৫০০০০ খরচ করেছেন। বলা বাহুল্য এর মধ্যে চাচা এক ঠগের পাল্লায় পড়ে বেশ কিছু টাকা গচ্চা দিয়েছেন। তার ব্যবসায়ের বেশ খানিকটা লোকসান হয়েছে এছাড়াও চাচীকে পরপর দুবার এক আগন্তুকের সাথে দেখে চাচার মন বিতৃষ্ণ ছিল। আর এখন চাচীর এই বিপুল পরিমাণ টাকা পার্লারে ওড়ানো দেখে চাচার মেজাজ বিগড়ে যায়।

চাচা চাচীকে ডাকতেই চাচী বেডরুমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে মাথার ওপর মস্ত খোঁপা নিয়ে উঠে আসেন। চাচা তার বের হবার মতলব বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করল- কোথাও যাচ্ছ? চাচী উত্তর দেন- পার্লার যাচ্ছি চুলের আগা ট্রিম করাতে।
চাচা : কোথায়?
চাচী : ডায়মন্ড উম্যান সেলুন।
চাচা : কোথাও যাবে না তুমি। অনেক দিন ধরে দেখছি তুমি পার্লারে গিয়ে বেহিসাবি খরচা করছ। এটা অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে। আমি আর সহ্য করব না।
চাচী : কিন্তু আমার চুল ট্রিম করা দরকার।
চাচা : তাহলে অন্য কোনো পার্লারে গিয়ে সস্তায় করাও।
চাচী : (বিরক্ত হয়ে) আশ্চর্য! আমি কোথায় যাব সেটা কি এখন তুমি ঠিক করে দিবে?
চাচা : (ক্ষিপ্ত স্বরে) বেশ আমি তবে তোমার জন্য অন্য ব্যবস্থা করছি।
চাচা আমার রুমের দরজা একটু খুলে মাথা ঢুকিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন তোর কোনো কাজ না থাকলে আমার সঙ্গে বেরোবি? চাচার চড়া গলা শুনে আমি আর দেরি না করে একটা শার্ট পরে চাচার সঙ্গে গাড়ি করে বের হলাম। একই সময়ে চাচীও অন্য গাড়িতে ড্রাইভার নিয়ে পার্লারের দিকে গেলেন।

চাচার সঙ্গে একটা দালানের কন্সট্রাকশন তদারকি তারপর সেখান থেকে ঘুরে চাচার অফিসে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে কিছু টুকটাক কাজ সেরে আবার চাচা আমিসহ গাড়িতে বের হলো। আমি অবাক হচ্ছিলাম চাচা কেন আজ আমাকে সঙ্গে নিয়ে এলো। গাড়ি চালাতে চালাতেই চাচা আসল কথাটা পাড়লেন। আমাকে চমকে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন: “এই শহরে সস্তা নাপিতের দোকান চেনা আছে?” আমি বলি ঠিক চেনা নেই তবে গলির ভেতর আছে জানি। চাচা আমাকে গাড়ি চালিয়ে সেখানে নিয়ে যেতে বলল। আমিও আর কিছু জানতে না চেয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে সেই গলির দিকে চললাম। তারপর গলির মুখে গাড়ি রেখে আমরা দুজন হেঁটে গলির ভেতর ঢুকে নাপিতের দোকান খুঁজতে লাগলাম। কিছু লোককে জিজ্ঞেসের পর পাশাপাশি কয়েকটা নাপিতের দোকান তালাবদ্ধ অবস্থায় খুঁজে পেলাম। তারপর আরেকটু সামনে এগিয়ে একটি দোকান খোলা পেলাম সেখানে চাচার বয়সী একজন লোক টিভি দেখছিলেন। দোকানে পা রাখতেই লোকটি রিমোট ছেড়ে দাঁড়িয়ে বলল: কি করাবেন? চাচা বলল- এখানে না, সাথে চলেন। তারপর লোকটা কাঁচি, চিরুনি সমস্ত কিছু একটা পাটের ব্যাগে সঙ্গে নিয়ে দোকানে তালা মেরে বেরিয়ে এলেন। তারপর তাকে নিয়ে আমরা গাড়ি করে বাসায় যখন এলাম তখন বিকাল ৪:৩০।

চাচা রুমে ঢুকেই ওনাকে ফ্ল্যাটের পিছনের বারান্দায় ১টি টুলে বসিয়ে সামনে নিচু আরেকটি টুল রেখে চাচীকে ডাকলেন। চাচী তখন বেডরুমে শুয়ে একটা ম্যাগাজিন পড়ছিলেন। চাচী সাড়া দিলে বেডরুমে গিয়ে চাচীকে বললেন বারান্দায় চলো।
চাচী : কেন? বারান্দায় কি হবে?
চাচা : তোমার যাতে আর চুল ট্রিম করাতে না হয় তার ব্যবস্থা করেছি।
চাচী : (রেগে গিয়ে) কি যা তা বলছ? মাথা ঠিক আছে?
চাচা এবার চাচীর হাত ধরে টানতে থাকেন। চাচীও প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয় কিছু। আমি এদিকে সেই নাপিতকে ফ্লাস্ক থেকে গরম চা আর বিস্কুট খেতে দিই। নাপিত তার পাটের ব্যাগ থেকে চিরুনি, কাঁচি বের করে ও ইলেক্ট্রিক ক্লিপার চার্জে দেয়। আমার মনে বেশ খুশি লাগছিল ভেবে আমার মনের আশা আজ চাচার উছিলায় পূর্ণ হবে। শেষমেশ চাচী চাচার সঙ্গে পেরে উঠলেন না। চাচীর হাত ধরে চাচা বেডরুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় আসতে দেখলাম চাচীর চুল এক পাশে ১২/১৩ ইঞ্চি কাটা আর চাচার হাতে একখানা কাঁচি বিকালের রোদে চকচক করছে। তারপর চাচীকে ঐ নাপিত লোকটার সামনে বসিয়ে দিয়ে চাচা ন্যা... বলতে গেলেই আমি চাচাকে টেনে একপাশে এনে বলি; করছটা কি চাচ্চু? প্রায়ই তোমরা দুজনে একসঙ্গে পার্টিতে যাও, নিজেদের বাসাতেও পার্টি হয়। ওখানে চাচী ন্যাড়া মাথায় কি করে যাবে? এছাড়া বাসায় প্রায়ই তোমার বন্ধুরা আসে আবার চাচীর বান্ধবী, পাড়া পড়শি ঘনঘন বিকেলে এসে বসে আড্ডা দিয়ে যায়। এসব লোকদের সামনে চাচী কি ন্যাড়া মাথায় যেতে পারবে? আর ভুলে গেলে সামনে তোমাদের কুড়িতম বিবাহবার্ষিকীর পার্টি করবে বাসায়। এসব শুনে চাচার রাগ পড়ল। তিনি মাথা ঠাণ্ডা করে জিজ্ঞেস করলেন; তবে তুই-ই বল কি করা উচিৎ? আমি বলি: চাচীর চুল এক্কেবারে ছোট করে দিতে বল। চুল ছোট করলে চাচীর পার্লার যাওয়া বন্ধ হবে শিওর। চাচ্চুর মুখ দেখে বুঝলাম প্রস্তাব চাচার মনে ধরেছে। 

(চলবে...)

Wednesday, April 8, 2020

যে ৭টি কারণে চুল ছোট রাখাটাই সবদিক দিয়ে ‘ভালো’

আজকালকার আধুনিকারা অনেকেই চুল ছোট রাখতেই ভালোবাসেন। হ্যাঁ, লম্বা চুলের আবেদন অস্বীকারের কোন উপায় নেই। তবে ছোট চুলের স্টাইলিশ আকর্ষণটাও কিন্তু অনেক। হাজার রকমের হেয়ার কাট বেরিয়েছে, আজকাল, অনেক নারীই সেসব দিয়ে পাল্টে ফেলতে ভালোবাসেন নিজের লুক। ফলে বলাই বাহুল্য যে ছোট চুলটাকেই নিজের স্টাইল বানিয়ে ফেলেন। চলুন, আজ জেনে নিই কেন এই ছোট চুলের ফ্যাশন আসলে আপনার জন্য ভালো!

১) কর্মজীবী নারীদের জন্য ছোট চুল একটা আশীর্বাদ। চুলের যত্নে কিংবা চুল সজ্জায় সময় দিতে হয় না বলে বাড়তি সময়টা দিতে পারেন নিজের কাজে ও জীবনে। কতটা যে আরাম হয়, সেটা কেবল নারীরাই জানেন।

২) সকালে যাদের খুব তাড়াহুড়ায় অফিস, ক্লাস বা বাচ্চাদের স্কুলে যেতে হয় তাঁদের জন্যও ছোট চুল খুবই আরামের। সময় নিয়ে আঁচড়ানোর বা বাঁধার কোন প্রয়োজন নেই। একটু চিরুনি বুলিয়ে নিলেই আপনি তৈরি।


৩) চুল ছোট থাকলে চুল পড়ে কম। ছোট চুল চিরুনির সাথে ভাঙে না, জট পড়ে ছেঁড়ে না, ছোট চুলে পুষ্টির সরবরাহটাও বেশিই মেলে। সব মিলিয়ে চুল থাকে ঝলমলে ও সুন্দর।

৪) একটা জিনিস ভুলে যাবেন না, ছোট চুলে কিন্তু আপনাকে বেশ তরুণী দেখায়। কষ্ট করে বয়স লুকাবার আয়োজন করার চাইতে ছোট চুলের স্টাইল ধরে ফেলুন।, এমনিতেই তরুণী দেখাবে।

৫) ছোট চুলের পেছনে যে কোন হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টের খরচই অনেক কমে যায়।

৬) স্টাইলিশ করে চুল ছোট করে কাটলে না চাইতেও আপনাকে দেখায় সুপার স্মার্ট। লম্বা চুল ঠিক মত মেইনটেইন করতে না পারলে আপনার লুক নষ্ট হতে বিন্দুমাত্র সময় লাগে না।

৭) ছোট চুলের বলতে গেলে কোন পার্লার খরচ নেই। আপনি চুলে রঙ করান বা হেয়ার ট্রিটমেন্ট নিন, ছোট চুলের কারণে কিন্তু খরচ কমে যায় অনেকটাই।

(বিউটি মান্ত্রা অবলম্বনে)

Tuesday, March 31, 2020

নারীরা চুল ছোট করলে যেসব কথা শুনতে হয়

মেয়ে মানেই যেন লম্বা চুল, কাজল টানা চোখ আর লাজুক হাসি। মেয়েদের এমন চেহারাই যেন ঠিক করে দিয়েছে সমাজ। ছোট চুলে আবার স্টাইল হয় নাকি? ওরা আবার মেয়ে নাকি? ছোট চুল মানেই তো টম বয়। ছোট চুলের মেয়েদের আজও শুনতে হয় নানা হাস্যকর মন্তব্য। জেনে নিন তেমনই কিছু।

১. একি! চুলের কী হল?

২. কী ছোট চুল তোমার!


৩. আমি এত ছোট করে কাটতেই পারবো না চুল।

৪. তোমাকে কিন্তু বড় চুলে খুব সুন্দর লাগবে।


৫. আমাকে এত ছোট করে কাটলে পুরো ছেলেদের মতো লাগবে।

৬. লম্বা চুলের যা ঝক্কি তুমি আর কী বুঝবে!


৭. একটু লম্বা চুল না হলে শাড়ি পরলে মানাবে কী করে?

৮. এই চুল নিয়েই বিয়ে করবে?


৯. তোমাকে ছেলেদের মতো দেখাচ্ছে!

১০. ছেলেদের মতো চুল কেটেছো কেন?

[সংগৃহীত]

Monday, March 30, 2020

ছোট চুল রাখার উপকারিতা

১. সময় সাশ্রয়
ছোট চুলে ঝামেলা কম। ছোট চুল রাখার উপকারিতা হল সময় সাশ্রয়। ব্যস্তময় জীবনে চুলের যত্ন নেওয়া একটু মুশকিল হয়ে ওঠে। বড় চুল ঠিকমতো খেয়াল রাখা হয় না যার ফলে চুল অকালে ঝরে পড়ে। তাই কর্মরত মহিলাদের জন্য ছোট চুল রাখা একটি সুবিধা সময় সাশ্রয়। ছোট চুল খুব সহজেই আঁচড়ানো যায় আর সময়ও কম লাগে।

২. অর্থ সাশ্রয়
লম্বা চুল পরিপাটি ও ভালো রাখার জন্য বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করতে হয়, যা খানিকটা ব্যয়বহুল। আপনি চুল ছোট করে ফেললে আপনার চুলের পিছনে খরচ হওয়া প্রসাধনী কেনার বাড়তি টাকা বাঁচাতে পারেন।

৩. গরমকালে ছোট চুলের উপকারিতা
গরম কালে ছোট চুল রাখার একটা সুবিধা আছে ভেবে দেখেছেন কখনো? গরমে ছোট চুল রাখলে গরম কম লাগে। এছাড়াও গরমে ধুলো বালি, দূষণের হাত থেকে চুল রক্ষা করা সম্ভব হয়। তাই বুঝতেই পারছেন গরমকালে চুল সুরক্ষিত রাখার সহজ বিকল্প ছোট চুল।

৪. ছোট চুলের রক্ষণাবেক্ষণ
ছোট চুল রক্ষণাবেক্ষণ করতে সুবিধাজনক। বিশেষ করে অফিসের কর্মরত মহিলাদের সময়ের অভাবে বড় চুল পরিষ্কার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই তাদের জন্য ছোট চুল রাখা ভালো বিকল্প। কারণ ছোট চুল রাখলে ওয়াশ করা সম্ভব এবং তাড়াতাড়ি শুকিয়ে নেওয়া যায়। তাই আপনি যদি অফিসে কাজ করেন এবং একইরকম সমস্যার মুখোমুখি হন, তাহলে চুল ছোট রাখতে পারেন।

৫. ধুলোবালির হাত থেকে রেহাই মেলে
বড় চুল রাখলে রাস্তার ধুলোবালিতে চুল নষ্ট হয়ে যায়। চুলের মারাত্মক ক্ষতি হয়, চুল পড়তে শুরু করে এবং খুব তাড়াতাড়ি ড্রাই হয়ে যায়। তাই এইসব ঝামেলা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ ছোট চুল। তাই চুল ভালো রাখতে হলে মাঝে মাঝে চুল কেটে ছোট করে নিন।

৬. রোগ মুক্ত থাকা
লম্বা চুলের যত্ন না নেওয়া হলে অনেক রোগ হতে পারে। বিশেষ করে মাথাব্যথা ও বিভিন্ন চর্ম রোগ হতে পারে। এ ছাড়া চুল শরীর থেকে অনেক পুষ্টি শোষণ করে। তার মানে এ নয় ছোট চুলে যত্ন নিতে হয় না। একটু কম লাগে আর কি!

[সংগৃহীত]

গ্রামীণ নাপিত~আনন্দ (শেষার্ধ)

"আহা…ঠিক আছে…" তিনি বললেন যখন আমি তার বাক্সের দিকে অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে তাকালাম তার কাছে কোন ধরনের রেজার আছে তা দেখতে। সৌভাগ্যবশত ...