সেমিস্টার শেষে অনিক প্লান করে একটা আউটিং এর। সবাই যেয়ে নাচ গান করবে। হয়ত তখন সেই ফাঁকে শ্রেয়ার চুলগুলো একটু ছুয়ে দিতে পারবে সে। সবাইকে বললে রাজি হল। মিতার কাছ থেকে জানল যে শ্রেয়াও আসবে। মিতা কি ভাবছে কে জানে তাও বলল খোপা করে চুলের কাটা বেধে নীল রঙের টপস আর জিন্স পরিয়ে শ্রেয়াকে নিয়ে আসতে। একদিন শ্রেয়ার সাথে মেলামেশার জন্য বন্ধুমহল তাকে এক প্রকার গার্লফ্রেন্ডই বানিয়ে দিয়েছিল। সে যাই হোক অনিক আর আকাশ মিলে ঠিক করল মজা তো করবেই সাথে ধোঁয়াটোয়া গিলতে হবে, দুবোতল রামও নিল। ওদের প্লান ছিল প্রজেক্টরে সবাই মিলে পর্ণ দেখবে। কিন্তু মেয়েগুলা রাজি হবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয়।
পার্টিতে শ্রেয়া অনিকের কথা মতই এসেছে। মিতা তাকে ভালই বুঝাতে পেরেছে তাহলে। সবাই মিলে আড্ডা মজা করে সিগারেটের ধোঁয়া টেনে রাম মুখে ঢেলে নাচতে শুরু করেছে সবাই। নাচতে গিয়ে চুল খুলে গেল শ্রেয়ার। আলো আঁধারির মধ্যে অমন রত্নবৃষ্টি দেখে অনিক যেন বিদ্যুতের শক খেল। চুলগুলো পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে নিচে পড়ছে, শ্রেয়া মাথাটা পিছনে হেলিয়ে ঝাঁকিয়ে যেন পড়তে দিল চুলটাকে, পাছার মাঝ অবধি গিয়ে শেষ হল সেটা, এই ছ-সাত মাসে তাহলে আরো বেড়েছে! বুঝতে পারল অনিক ওর পক্ষে এটা না ধরে থাকা সম্ভব না। অবচেতন মনে গিয়ে কপালের চুলধরে কোমর অবধি চুলের নদীতে হাত ভাসিয়ে দিল। মিতা বলল "সামলে অনিক, বেশি খেয়ে ফেললি নাকি"। অনিক বলল "আরে ধুর, কি যা তা বলছিস, শ্রেয়ার চুল সুন্দর তাই একটু ধরলাম। কেন ধরলে কি কেস করে দিবি নাকি?" শ্রেয়া বলল "আমার চুল সুন্দরই আর এটা আমার বরের জন্য তাই অন্য কেউ হাত দিক তা আমি চাই না অনিক"
থতমত খেয়ে অনিক হাত ছেড়ে দিল। এতদিন ধরে চিনে আসা মেয়েটিকে অচেনা লাগছে। বন্ধুত্বের খাতিরে এর আগেও সে হাত ধরেছে, ঠেলা গুতা দিয়েছে, দু চারবার চুলেও হাত দিয়েছে। কিন্তু তাই বলে এভাবে রিজেক্ট! অনিক মেনে নিতে পারে না। দূর থেকে সে শুনল শ্রেয়া মিতাকে বলছে "অনিক ছেলে ভাল, বন্ধু হিসাবে হাত ধরাই যায় কিন্তু আমার চুল আমি কাউকে ধরতে দিব না।"
এত দেমাগ এই মেয়ের! সামান্য চুলের জন্য! এই চুল তাকে কি দিয়েছে! তার বন্ধুত্ব আজকে এভাবে নস্যাত হল সামান্য চুলের জন্য! কি এমন আহামরি হয়ে গেছে যে চুল ধরতে দিবে না! অনিক রাগে আর কিছু বলল না। মনে মনে বলতে লাগল ঐ চুল তার হাতের মুঠোয় চাই। পার্টি থমকে গেল ওখানেই।
শ্রেয়ার পরে একটু কেমন লাগল যে "এইভাবে বললাম ছেলেটাকে!" তারপরই ভাবল কেন সে এত চুলে হাত দিবে! এমনিতেই গায়ে হাত দেয় আবার চুলে এত হাত দেয়ার কি আছে সে কি তার গার্লফ্রেন্ড নাকি!! সে তার ওয়ারড্রবের আয়নার সামনে তার চুল আচড়াতে আচড়াতে ভাবছিল।
সাধের চুলগুলো সে আয়নায় দেখছিল। মাঝখানে সিঁথি করে চুলগুলো সামনে নিয়ে দেখছিল। কামিজের সামনের বোতাম খুলে দিল সে। এত ঘন মোটা চুল তার বুকের স্তন দুটি ঢাকতে যেন কোন কাপড়ের দরকার হয় না। স্তন পেরিয়ে পেটের সামনে নিয়ে আসল চুলগুলো। সে যে চেয়ারটিতে বসে ছিল সেই চেয়ার ছুঁই ছুঁই চুল। যেন তার সামনের ভগাংকুরকেও ঢেকে দিবে চুলগুলো। নিজের চুলের প্রতি নিজেরই একটা টান অনুভব করল শ্রেয়া। শোবার সময় মিতা তাকে আয়নার সামনে শ্রেয়াকে দেখে বলে উঠল "কিরে কি করছিস?" তড়িঘড়ি করে কাপড় ঠিক করে চুলগুলো পেছনে ঠেলে খোঁপা করে শুয়ে পড়ল।
শ্রেয়া খেয়াল করল অনিক তার সাথে আগের মত কথা বলছে না। সে কয়েকবার গেল অনিকের কাছে কিন্তু সে পাত্তা না দেয়ার ভান করছে। মনে মনে একটু খুশিই হল শ্রেয়া। যাক ভালই হলো। তবুও সে চেষ্টা করল সার্কেলে সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার। পড়াশোনা বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় ভালই কাটছিল তার।
শুধু অনিকের মনে একটা খচখচানি ছিল। যে করে হোক শ্রেয়ার চুলগুলো আমার চাই। যেভাবে হোক ঐ লম্বা চুলের একটা পরিনতি আমার হাতেই হবে।
অনিক সুযোগ খুজতে লাগল কিভাবে কি করা যায়, ভাবতে লাগল...
বন্ধুদের বলবে! না বন্ধুদের বললে ওকেই খারাপ ভাববে; শ্রেয়াকে তো কিছু বলা যাবে না, সে কিছুতেই ওর চুল দিবে না। গোপনে করতে হবে। কিভাবে কাউকে না বুঝতে দিয়ে করা যায় সেটাই বের করতে হবে। মিতাকে বলে শ্রেয়াকে এক জায়গায় নিয়ে যেয়ে জোর করে... না, শ্রেয়া আর মিতা দুজনই জেনে যাবে। আকাশকে বলে শ্রেয়াকে ডেকে আনা যায় কিনা! না, ডেকে আনলেও লাস্ট লোকেশন জেনে যাবে। এমনভাবে কাজটা করতে হবে যাতে কেউ জানতে না পারে। শ্রেয়াও বুঝতে না পারে। একটা প্লান তো বের করতেই হবে।
জীববিদ্যার ছাত্র হওয়ায় সে অজ্ঞানের ওষুধ সম্পর্কে একটু জ্ঞান তার আছে। কোনটা দিলে ওর ক্ষতিও হবে না, সময়ও পাওয়া যাবে, তাড়াতাড়ি অজ্ঞান হবে সেটা ঠিক করে করতে হবে। ওকে খাইয়ে দিলে কেমন হয়? চা এর সাথে! বা কাউকে দিয়ে মেশানো খাবার খাইয়ে! দেয়া যাবে না, অনিক খাইয়েছে; সন্দেহ হবে। কাপড়ে দিয়ে নাকে শুকিয়ে! যদি ধরে ফেলে! শিরায় দিয়ে! এটা তো না ই কারণ এটা কে করবে! অনিক একটা পিস্তল কিনল। একটা সিরিঞ্জ নিয়ে প্লাস্টিকের বডিতে নেগেটিভ প্রেসারে প্রোপোফল নিয়ে ভরল সে। এরকম কয়েকটা অ্যাম্পুল বানাল। সাইজে বড় হয়ে গেছে। আরও ছোট করতে হবে যাতে টের না পায়। ৩ সে.মি দৈর্ঘ্যের একটা প্লাস্টিকের বডিতে ভরল এবার। সূক্ষ্ম সুঁই ভরে দিল। ছোট রিভলবারের মত নিয়ে আসল। কম্পেনসেটর লাগিয়ে নিল যাতে ফায়ার করলে শব্দ না হয়। সামনে একটা পর্দায় রিভলবারে অ্যাম্পুল লোড করে শুট করল। নেগেটিভ প্রেসার থাকায় ভিতরের তরল পর্দাতে ছড়িয়ে পড়ল। ইউরেকা!!! অনিকের স্বপ্ন এখন সত্যি হওয়ার পথে।
পরদিন নাপিতের দোকানে গিয়ে ক্ষুর কিনল, ব্লেড, ওয়াটার স্প্রেয়ার, ধারালো কাঁচি, দড়ি নিয়ে আসল। এখন শুধু অপেক্ষা সুযোগের। প্রতিদিনকার মত সে ক্লাসে যায়, শ্রেয়াকে দেখে, তার চুলের দিকে তাকিয়ে থাকে, আসন্ন চুল তার হাতে পাওয়া ভাবতে ভাবতে তার পুংদণ্ড খাড়া হয়ে যায়। আর তর সইছে না তার।
জুলাইয়ের শেষের দিকে মি. আর মিসেস রায় অফিসিয়াল কাজে দুজনেই বাড়ির বাইরে চলে গেলেন। আর অনিকদের সেমিস্টারে এখন তেমন পড়া হচ্ছে না। এটা সুযোগ। টিউশনিতে যাওয়ার সময় শ্রেয়াকে ধরতে হবে। গাড়ি নিয়ে লেডিস হোস্টেলের অদূরে পার্ক করল অনিক। সন্ধ্যা ৬টা বাজতে যাচ্ছে। ৬টায় টিউশনি শেষ করে শ্রেয়া হলে ফেরে। হলের কাছের রাস্তাটা জনমানবহীন থাকে। তার উপর ভর সন্ধ্যাবেলায় কাকপক্ষীও ঘরে ফেরে। পাশের এক নির্জনে অনিক হুডি পরে অপেক্ষা করছে। গরমে নেয়ে গেলেও এটুকু তো স্যাক্রিফাইস করতেই হবে।
আসছে! শ্রেয়া আসছে। হেঁটে হেঁটে রাস্তার পাড় ধরে চলছে সে। দুটো রিকশা গেল দুই মেয়েকে নামিয়ে দিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। ওদিকে শ্রেয়া কাছাকাছি চলে আসছে। যায় না কেন এটা!! কি মুশকিল। শ্রেয়া অনিককে ক্রস করবে এমন সময় রিকশাটা গেল। কিছুদূর এগিয়ে গেছে শ্রেয়া; অনিককে লক্ষ্য করে নি। অনিক পিছু নিল। আশ পাশ দেখে নিল; না কেউ নেই। রিভলবার বের করল। শ্রেয়ার পিঠ বরাবর মারতে হবে বুলেটের বদলে রাখা বিশেষ কায়দায় ঢোকানো অ্যাম্পুল। কিন্তু বেণী করেছে শ্রেয়া; এত লম্বা চুল ভেদ করে পিঠের মাঝে যেয়ে সুঁই বিধবে না। একটু পাশ বরাবর মারতে হবে তাহলে যাতে মাংসে যেয়ে বিধে। বেশিক্ষণ পিছু নিল না অনিক একটু কাছে যেতেই শুট করল। শ্রেয়ার পিঠের এক পাশে গিয়ে বিঁধল। ব্যস, কাজ শেষ। আর ২০ সেকেন্ড ওষুধটা কাজ করে যাবে।
মুহুর্তে ব্যথা পেয়ে উঠল শ্রেয়া। ভাবল কিসে কামড়েছে। সে আহত পিঠ থেকে একটা প্লাস্টিকের শিশির মত পেল। চোখে ঘোলা দেখছে সে। মাথা ভার হয়ে আসছে। দুনিয়া উল্টে যাচ্ছে মনে হয়। এখনই পড়ে যাবে। আশপাশে কাউকে দেখতে পেল না তবে কিছু দূরে কালোমত কেউ যেন দাঁড়িয়ে আছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মূর্ছা গেল শ্রেয়া।
(চলবে…)
2 comments:
এটা কি আপনার নিজের লেখা??
না, ফেসবুক গ্রুপ থেকে সংগৃহীত।
Post a Comment