Monday, December 23, 2019

বিয়ের শর্তে চুল কাটার গল্প

প্রীতি একজন স্কুল শিক্ষিকা ছিল। সে সবসময় লম্বা চুল রাখত এবং তার চুল নিয়ে খুব গর্ববোধ করত। প্রতি সপ্তাহান্তে সে চুলে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার মাখিয়ে চুল ধৌত করে চুলে তেল দিয়ে সে তার চুলের যত্ন নিতো। তার বন্ধুরা এবং স্কুলের সহকর্মীরাও তার চুলের প্রশংসা করতেন।
তার এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান বন্ধুও ছিল যে একই স্কুলে ইংরেজির শিক্ষিকা ছিল; জেনিলিয়া, সে সর্বদা
 চুলে বয়কাট করে রাখতো। অনেক সময় এমনকি জেনিলিয়া প্রীতিকে তার চুলের জন্য প্রশংসা করতো এবং কিছু সময় মজা করার জন্য প্রীতিকে তার চুল কাটতে বলতো কিন্তু প্রীতি সবসময় বলতো সে তার চুল লম্বা রাখতেই পছন্দ করেছে এবং তারা এটা শুনে আমোদ পেতো।

যাই হোক প্রীতি একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল তাই তার পরিবারের আর্থিক সহায়তার জন্য তাকে চাকরি করতে হচ্ছিল; এখন সে বিবাহযোগ্যা হওয়ায় তার মা তার বিয়ের জন্য ভাল পাত্র সন্ধান করছিলেন কিন্তু পাচ্ছিলেন না। তারা খুব ঐতিহ্যবাহী পরিবার তাই বংশমর্যাদার মিলও প্রয়োজন ছিল এবং যদি তা ​​মিলেও যেত তবে পাত্রের পরিবার যৌতুক দাবি করতো। তাই প্রীতির পরিবার তার বিয়ের ব্যপারে এগুতে পারছিল না।

একদিন প্রীতির জন্য চৌধুরী পরিবার নামে সুপরিচিত এক ধনী পরিবারের পক্ষ থেকে একটি বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল এবং তার বিয়ের জন্য কোনো প্রকার যৌতুক দাবি করবেনা শর্ত দেয়। তাই প্রীতির বাবা পাত্রপক্ষকে প্রীতিকে দেখতে তাদের বাড়িতে আসার আমন্ত্রণ জানান। এবং উভয়পক্ষের সম্মতিতে একটি ছুটির দিন ধার্য করেন।

সেদিন প্রীতি খুব তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করল আর মা তার লম্বা চুলে খোঁপা বেঁধে দিলেন ও তাকে বললেন যে আজ খুব বড় ধনী পরিবার তোমাকে দেখতে আসছে; তাদের যদি তোমাকে দেখে পছন্দ হয় তাহলে বলতে হয় তুমি খুব ভাগ্যবতী।

তারপর ডোর বেল বেজে উঠল আর প্রীতিকে তার রুমে রেখে প্রীতির মা সামনের রুমে গিয়ে দরজা খুললেন এবং পাত্রের পরিবার ভিতরে প্রবেশ করল ও প্রীতির বাবা-মায়ের সাথে বিয়ের ব্যাপারে আলোচনা আরম্ভ করল। অতঃপর প্রীতির মা তাকে রান্নাঘর থেকে অতিথিদের জন্য চা-কফি এবং জলখাবার আনতে ডাকলেন। প্রীতির খুব লজ্জা করছিল এবং যথাসম্ভব সেই অভিব্যক্তি গোপন করে সে পাত্রপক্ষের সামনে টি-টেবিলের উপর ট্রে-তে করে চা-নাস্তা সার্ভ করে তার মায়ের পাশে সোফায় বসল। ধীরে ধীরে সে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলো যে মোট পাঁচ জন আগন্তুক তার সামনের সোফাগুলিতে বসা রয়েছেন। সবার মাঝখানে একজন হ্যান্ডসাম পুরুষ বসা ছিলেন যাকে সে তার হবু স্বামী বলে ধারণা করে এবং সে তার বাবা-মা, বড় ভাই এবং বৌদিকে নিয়ে এসেছিল; সে তার হবু বরের সাথে আসা স্ত্রীলোকদের মধ্যে অদ্ভুত কিছু লক্ষ্য করেছিল। তার হবু শাশুড়ি এবং তার হবু জা দুজনের চুলই ছেলেদের মত ছোট করে ছাঁটা। তবে তার লজ্জা কাটাতে পারছিল না বলে কিছু জিজ্ঞেস করল না। সবশেষে কথা পাকা করার পর প্রীতির হবু শ্বশুর তাকে জিজ্ঞেস করলেন, সে তাদের পারিবারিক ব্যবসায়ে যোগ দিতে আগ্রহী কিনা এবং কোম্পানির হিসাব বিভাগ পরিচালনা করতে রাজি কিনা? প্রীতি বলল সে রাজি আছে। ঠিক তখনি শাশুড়ি বলল, বেশ তবে আমাদের পক্ষ থেকে একটি শর্ত আছে- "যেহেতু আমরা কারখানার মালিক তাই আমাদের সর্বদা শ্রমিকদের থেকে আলাদা দেখানো উচিত এবং একবার যখন আমি আমার চুল ছোট করলাম তখন আমাদের ব্যবসায়ের বেশ উন্নতি ঘটল সেই তখন থেকে আমাদের পরিবার এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্যচিহ্ন বলে বিশ্বাস করে; সেজন্য আমার বড় ছেলের বৌও বিয়ের পরে চুল ছোট করে ফেলেছে। অতএব আমি মনে করি তোমারও বিয়ের আগে চুল কেটে ফেলা উচিৎ।" এই কথা শুনে প্রীতি অবাক হলেও মুখ ফুটে কিছু বলল না এবং বরের পরিবাররা তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল।

প্রীতি মা খুব খুশি ছিল তবে প্রীতি ছিল না কারণ চুল কাটার শর্ত মেনে নিতে তার আপত্তি ছিল। দুজনের মধ্যে কিছু তর্ক হলো। প্রীতিকে তার মা বলেছিল যে এতদিনে তার বিয়ের জন্য একটি উপযুক্ত প্রস্তাব এসেছে এবং পাকা কথাও হয়ে গেছে সুতরাং তার সব শর্ত মেনে নেওয়া উচিত। কিন্তু প্রীতি মন থেকে মানতে পারছিল না তাই প্রীতি তার মায়ের কাছ থেকে কিছুদিন সময় চাইলো তার সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য।

কিছুদিন পর প্রীতি যখন পায়ে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছিল তখন তার সামনে একটি বড় গাড়ি এসে থামল এবং গাড়ির জানালা দিয়ে মাথা বের করে একজন মহিলা তাকে নাম ধরে ডাকলেন। প্রথমে প্রীতি তাকে ঠিক চিনে উঠতে পারেনি তবে পরে সেই মহিলা তাকে তার পরিচয় খুলে বললে সে চিনতে পারে যে সে মহিলা হচ্ছে শায়লা, চৌধুরী পরিবারের বড় বৌ মানে তার হবু জা। সেদিন যখন প্রীতির শ্বশুর-শাশুড়ি তাকে দেখতে ও বিয়ের কথা পাকা করতে তার বাড়িতে এসেছিলেন সেদিন তিনিও গিয়েছিলেন। শায়লা প্রীতিকে তার গাড়ীতে উঠে বসতে বলল তবে প্রীতি প্রথমে না বললেও পরে তার অনুরোধ ফেলতে না পেরে গাড়ির ভিতরে ঢুকে বসলো। তারপর শায়লার ইশারাতে গাড়ি চলতে শুরু করলো। সে লক্ষ্য করলো তার একজন ড্রাইভার ছিল। শায়লা প্রীতিকে জিজ্ঞাসা করল- সে কোথায় যাচ্ছে? আর সে উত্তর দিলো স্কুলে বাচ্চাদের ক্লাস নিতে। শীঘ্রই তারা অন্তরঙ্গ কথোপকথন শুরু করে দিলো এবং শায়লা কথায় কথায় জানালো যে সে তার এই আরামদায়ক স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন নিয়ে খুব খুশি। সে এই মুহূর্তে তার ড্রাইভার সহ নিজের গাড়িতে চড়ে শপিং করতে যাচ্ছে।

তখন হঠাৎ শায়লা প্রীতিকে বলল শপিং মলের কাছে আমার পরিচিত বিউটি পার্লার আছে; আমি সেখানে যাচ্ছি আমার চুল ছাঁটাতে; চাইলে তুমিও আমার সাথে যেতে পারো। তাহলে আমি সেই বিউটিশিয়ানের সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেবো। প্রীতি কিছুটা রাগতস্বরে বলল ‘সে আগ্রহী নয়’। শায়লা বলল, ওকে 'নো প্রবলেম ডিয়ার’ এবং তাকে বলল যে বিয়ের আগে তারও প্রীতির মতই লম্বা চুল ছিল এবং চুল কাটার কথা শুনলে লজ্জা পেতো। কিন্তু বিয়ের পরে এখন সে তার জীবনের সমস্ত স্বাচ্ছন্দ্যে খুশী; তখন প্রীতি নিজের জীবন নিয়ে ভাবতে শুরু করল কিন্তু হঠাৎ তার স্কুলের দালান চোখে পড়লো। সে শায়লাকে গাড়ি থামাতে বলে ও শায়লা ড্রাইভারকে থামতে বলল এবং সে গাড়ি থেকে নেমে হাত নেড়ে শায়লাকে বিদায় জানালো। যখন সে তার স্কুলে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল তখন তার সহকর্মী বন্ধু জেনিলিয়াও সেখানে ছিল এবং সামনে এগিয়ে তার দু হাত নিজের হাতে নিয়ে মৃদু হেসে বলল, “ওয়াও, প্রীতি! ইউ আর সো লাকি। আজকাল তুমি গাড়িতে যাতায়াত করা শুরু করেছো।"

সে রাতে প্রীতি কি করবে তা নিয়ে ভাবতে থাকলো এবং অবশেষে সকালে তার মাকে জানালো যে সে চৌধুরী পরিবারের শর্ত মানতে রাজি আছে। প্রীতির মা হাসিমুখ করে তাকে বলল যে ছোট চুলেও তোমাকে দারুণ মানাবে।
তার শাশুড়ি বলেছিলেন যে, ‘বিয়ের আগেই তার চুল কাটাতে হবে’; প্রীতি তার বিয়ে পর্যন্ত লম্বা চুল রাখতে চেয়েছিল বলে তার খানিকটা মন খারাপ ছিল। তবে সে আর এ নিয়ে অমত করল না।
এর পরদিন সকালে শায়লা এসে প্রীতিকে বিউটি পার্লারে নিয়ে গেল। সেখানে সে বিউটিশিয়ানকে কানে কানে কিছু কথা বলল এবং প্রীতির সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিলো। বিউটিশিয়ান প্রীতির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে তাকে স্বাগত জানালো। এরপর তিনি প্রীতিকে চেয়ারে বসিয়ে লম্বা এক ফালি কাপড় দিয়ে তার সামনের আয়নাটা ঢেকে দিয়ে বললেন যে চুল কাটা শেষ হবার পরই প্রীতি আয়নায় নিজের মুখ দেখবে। প্রীতি নার্ভাস হয়ে শায়লার দিকে তাকালো আর এরই মধ্যে বিউটিশিয়ান তার চুলকে ঘাড়ের একটু নিচে পনিটেলে পরিণত করলেন এবং তাকে ঘাড় সোজা করতে বলে কাঁচি নিলেন। অতঃপর হঠাৎ প্রীতি তার ঘাড়ের পিছনে স্নিপ স্নিপ অনুভব করলো এবং দু'মিনিটের মধ্যে তার লম্বা চুলের গাছি বিউটিশিয়ানের হাতে চলে এলো। তখন তার চুল বব কাট হয়ে গেল। প্রীতি বিউটিশিয়ানকে জিজ্ঞেস করলো, তার চুল কাটা কি শেষ? বিউটিশিয়ান ও শায়লা দুজনেই হাসলো। এবং বিউটিশিয়ান মহিলাটি বলল এখনো আপনি বব কাট স্টাইলে আছেন তবে বয় কাট স্টাইল করা দরকার তাই এখন আমি আপনার চুল ধুয়ে নেবো। এই বলে প্রীতিকে ওয়াশ বেসিনের সামনে নিয়ে গেলেন এবং শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে চুল ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেললেন। এরপর আবার চুল স্তরে স্তরে সামনে পিছনে পাশ থেকে কাটতে লাগলেন। প্রীতি তার মাথার চারপাশে স্নিপ স্নিপ শব্দ শুনতে পাচ্ছিলো আর চিরুনির আঁচড় অনুভব করছিল; সেই সঙ্গে দেখে ছোট ছোট চুলের কুচি মেঝেতে ঝরে পড়ছে। কিছুক্ষণ পর বিউটিশিয়ান প্রীতিকে তার চুলের মধ্য দিয়ে নিজের আঙ্গুল চালাতে বললেন এবং চুলগুলো কতটা ছোট তা অনুভব করতে বললেন। প্রীতি বেশ নার্ভাস ফিল করছিল কিন্তু তবুও নিজের চুলে হাত ছোঁয়ালো ঠিক তখনি বিউটিশিয়ান আয়নায় উপর থেকে কাপড়টা সরিয়ে নিলেন আর প্রীতি নিজের চেহারা আয়নায় দেখতে পেল। প্রীতি বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে আয়নায় এটা সে নিজের চেহারা দেখছে। তার চেহারা পুরো বদলে গিয়েছে। সে এখন বয়কাট স্টাইলে আছে।  শায়লা তার কাঁধে হাত রেখে বলল- “ডোন্ট ওয়ারি ডিয়ার, ইউ উইল গেট অ্যাডজাস্টেড টু ইট।” এবার তারা বিউটি পার্লার ছেড়ে বেরিয়ে এলো এবং গাড়িতে বসতে বসতে শায়লা বলল যে এখন থেকে নিয়মিত ট্রিমিং করার জন্য দুজনেই একসাথে এখানে আসবে। তারপর তারা প্রথমে নিজের শ্বশুর বাড়িতে গেলো, যেখানে শাশুড়ি প্রীতিকে দেখে হাসিমুখ করে তার চুলের ছাঁট পছন্দ হওয়ার ইঙ্গিত দেন। এমনকি প্রীতির হবু স্বামীও তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসেন। তারপর শাশুড়ি তাকে উপহার স্বরূপ রত্নখচিত গয়না উপহার দিয়ে আশীর্বাদ করলেন।। প্রীতি উপহার পেয়ে বিস্মিত ও আনন্দিত হলো।

এরপরে প্রীতি স্কুলশিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে দিলো এবং যথারীতি বিয়ের পিঁড়িতে বসলো। বিয়ে হয়ে যাবার পর সে পারিবারিক ব্যবসায়ের অফিসে হেড একাউন্টস অফিসার হিসেবে যোগদান করে। এখন সে সর্বদা বয়কাট স্টাইলে চুল রাখে এবং আস্তে আস্তে আধুনিক জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছে; সাথে সাথে এও বুঝতে পেরেছে যে ছোট চুল সামলানো অনেক সোজা।

Wednesday, October 30, 2019

নাপিতের দোকানে একটি সুন্দর চুল কাটা উপভোগ করলাম

আপনি যদি একজন পুরুষ হন এবং ধনী না হন তবে নাপিতের দোকানে আপনার পালাটির জন্য অপেক্ষা করা একটি ক্লান্তিকর কাজ। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। রবিবার ছিল, ভিড়ের কারণে চুল কাটার জন্য ভাল দিন ছিল না তাই সন্ধ্যায় দেখার পরিকল্পনা করলাম। 

সন্ধ্যায়ও ব্যতিক্রম ছিল না, আমার নিয়মিত দোকানের উভয় নাপিতই ব্যস্ত ছিল, ছোট পুরানো দোকানে তিনজন লোক অপেক্ষা করছে। আমি যখন সংবাদপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে অপেক্ষা করছিলাম, একজন মহিলার ভিতরে পদার্পণের উদ্ভট কল্পনার কথা চিন্তা করছিলাম, তখন বয়স্ক নাপিত আমাকে বসতে টোকা দিলেন। আমি যখন উঠলাম, দরজা খুলে গেল, এবং তদ্বারা ২০-এর দশকের মাঝামাঝি একজন লোক একটি …. নিয়ে প্রবেশ করল। ….একজন নারী। প্রায় ২৫ বছর বয়সী এক নবযুবতী। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম এবং হতজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। লোকটি নাপিতের কাছে এসেছিল, এবং তারা কিছু আলোচনা করেছিল। আমি যখন আমার জ্ঞান ফিরে পেলাম, আমি কীভাবে আমার পালা এড়িয়ে যেতে হবে তা পরিকল্পনা করতে শুরু করি। আমি খুব বুঝতে পেরেছিলাম, এটা হচ্ছে মহিলাটি যার কেশকর্তন হতে যাচ্ছে। আমাকে কিছু পরিকল্পনা করতে হয়েছিল, আমি সুযোগটি মিস করতে পারি না। 

আমি ভাবছিলাম আর ভাবছিলাম যখন নাপিত আবার আমার কাঁধে টোকা দিয়ে প্রফুল্ল মুখে জিজ্ঞেস করল, "আপনি কি একটু অপেক্ষা করতে পারেন, যদি কিছু মনে না করেন, তারা তাড়াহুড়ো করছে এবং..." সে তার বাক্য শেষ করার আগেই আমি ইতিবাচক জবাব দিলাম। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, "দুজন নাকি একজন?" 

নাপিত অস্ফুট উত্তর দিল, “এক” এবং মেয়েটিকে বসতে ইশারা করল। ওয়েটিং এরিয়ায় বসলাম। লোকটি ধীরভাবে তাকে বড় নাপিত চেয়ারে নিয়ে গেল, এবং তারপরে আমার পাশে বসল। 

আমি আয়নায় মেয়েটির মুখ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। তার কালো চুলের ঘন বিনুনি সামনে ছিল, হলুদ সালোয়ার কামিজের উপর সাদা দোপাট্টায় ঢাকা তার ক্ষুদে বুনির উপর বিশ্রাম নিচ্ছিল। তার চোখ নিচের দিকে, তাই তার মাথাও। নাপিত পিছন থেকে এসে তাকে মৃদু ছোঁয়া দিয়ে সোজা বসিয়ে দিল। নাপিত মেয়েটির দিকে তাকিয়ে হাসল কিন্তু কোন উত্তর পেল না। সাদা কাপড়ের কেপটা নিয়ে একবার ঝাঁকিয়ে আলতো করে ওর গায়ের উপর রেখে ওর বিনুনিটা বের করে দিলো। তিনি একপাশে কেপ গেরো দিলেন। নাপিত বিনুনিটি পিছনের দিকে টেনে নিয়ে গেল এবং দিক নির্দেশনার জন্য লোকটির দিকে তাকাল। আমি দৈর্ঘ্য দেখে অবাক হয়েছিলাম। মেঝে থেকে কয়েক সেন্টিমিটার উপরে চেয়ারের নীচে বিনুনিটি ঝুলছিল। এটা খুব পুরু। নাপিত লোকটির সাথে কী কথোপকথন করেছিল তা আমি মিস করেছি। ঘুরতে ঘুরতেই দেখলাম লোকটা তার ঘাড় ধরে উপরে নিচে নাড়াচ্ছে। 

নাপিত তৎক্ষণাৎ কাজে নেমে পড়ল। তিনি ধীরে ধীরে বিনুনি ধরে থাকা রাবার ব্যান্ডটি বের করলেন এবং লোকটির কাছে দিলেন। এতে কিছু ছিন্ন চুল লেগে আছে। তার চুলে আঙ্গুল ঢুকিয়ে সে গিঁট সরাতে নিচের দিকে যেতে লাগল। তিনি এমন কঠোরভাবে গিঁটগুলি সরিয়ে ফেললেন, আমি দেখতে পাচ্ছিলাম, মেয়েটির মাথা প্রবলভাবে কাঁপছে এবং প্রতি রাউন্ডের সাথে পিছনের দিকে টানছে। নাপিত অবশেষে চিরুনিতে সরে গেল এবং মাথার ত্বক থেকে শেষ পর্যন্ত চিরুনি শুরু করল, তার চুল আরও জোরে টেনে ধরল। 

আমি দেখতে পাচ্ছিলাম মেয়েটি ব্যাথা পাচ্ছে, কারণ সে একবার বা দুবার গুঙিয়েছিল। লোকটি উঠে দাঁড়ালো এবং নাপিতকে আরো সতর্ক হতে বলল। নাপিত আশ্বাসভাবে মাথা নেড়ে তার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে লাগল, কিন্তু তা ব্যর্থ হল। সে ব্যথা অনুভব করতে থাকে। 

একবার তার চুল আঁচড়ানোর পর, নাপিত স্প্রেয়ারে চলে গেল, তার চুল কুয়াশাবৃত হলো, উপর থেকে তার চুল ভিজিয়ে দিল। সন্তুষ্ট হওয়ার আগেই সে প্রায় পুরো একটা বোতল খালি করে ফেলেছিল। তার চুল এতই ভিজে ছিল, সেখান থেকে জল ঝরছিল। তার চুলের নিচের জায়গাটা এখন ভিজে গেছে। 

নাপিত এখন কাঁচির দিকে চলে গেল। আমি আশা করছিলাম যে এটি তার মাঝপিঠ বা অন্য কিছু পর্যন্ত হবে, কিন্তু তিনি এটি তার কানের ঠিক নীচে রেখেছিলেন এবং কচ্‌চ্‌চ্‌চ্‌চ্‌চ্‌...চ্‌চ্‌চ্‌চ্। মেয়েটি কেঁপে কেঁপে উঠল যখন চুলের প্রথম গোছাটা নিচে পড়ে গেল, কিছু তার কোলে, অবশিষ্টাংশ নিচে। নাপিত কাঁচি দিয়ে কুচ কুচ করে কাটতে থাকল, লোকটি আস্তে আস্তে উঠে চেয়ারের কাছে গেল। কাহ্‌চ্‌চ্‌চ্‌চ্…..চ্‌চ্‌চ্‌চ্‌ আরও বেশি করে ওর বেণীটা কেটে গেল। নাপিত আবার চিরুনি দিয়ে আবার কচকচ্ছচ… তার লম্বা চুলগুলো এখন মেঝেতে। বিশাল এক পাঁজা। চুল চলে যাওয়ায় তার পিঠ এবং ঘাড়ের কিছুটা অংশ এখন উন্মুক্ত হয়ে গেছে। 

লোকটি আবার আমার সাথে বসল, নাপিত এখন চুল বিভাজন করছে। আমি নিজের কৌতূহল প্রতিরোধ করতে না পেরে লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম, "সে কি তোমার গার্লফ্রেন্ড?" 

পাট করার পর নাপিত তার চেয়ারের বাম পাশে চলে গেল। কাঁচি আর চিরুনি দিয়ে আরও বেশি করে কাটতে লাগল। চিরুনি দিয়ে চুল ধরে, কাঁচি দিয়ে কচ কচ। তিনি পাশ থেকে মাঝখানে চুল পাঠান, তার মাঝের বিভাজন ব্যাহত করে। যখন সে কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলতে থাকল, তার মাথার খুলি পাশে উন্মুক্ত হয়ে গেল। তিনি আশ্বস্ত হওয়ার পরে, তিনি চেয়ারটি ঘোরান, যাতে মেয়েটির মুখটি আমাদের দিকে ছিল এবং নাপিত এখন তার মাথার ডান দিকে কাঁচির পোঁচ মারতে পারে। 


লোকটি আমার প্রশ্নের উত্তর দিল, "সে আমার বোন" আমি আরও জিজ্ঞাসা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তার শক্তভাবে বন্ধ চোখ এবং বিভ্রান্ত মুখ আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। আমি তার দৃঢ়ভাবে বদ্ধ মুষ্টি দেখতে পাচ্ছিলাম। তার চুল ক্রমশ কমছে, কাটা চুলে কোল ভরে যাচ্ছে। আমি লোকটিকে জিজ্ঞাসা করার আগেই “কেন তার বোন চুল কাটছে? কেন সে একটি নাপিতের দোকানে চুল কাটাচ্ছে? কেন সে এত ছোট করছে?” আমাকে অন্য নাপিত ডেকেছিল, এবং আমি প্রত্যাখ্যান করতে ব্যর্থ হই। ধীর গতিতে, আমি অন্য চেয়ারের দিকে এগোতে লাগলাম, আমি দেখলাম নাপিত মেয়েটির চেয়ারটি ঘুরিয়ে এখন তার পিছনের দিকে চলে যাচ্ছে। নাপিত একই কৌশল অবলম্বন করে পিছনের চুল কাটতে, চিরুনি দিয়ে সংগ্রহ করে, কাঁচি দিয়ে ছাঁটতে থাকে। এরপর সে সামনে থেকে সব চুল পেছনে আঁচড়াতে থাকে এবং তার মাথার ওপরে ছেঁটে দেয়। চুল তার কোলের উপর, তার মুখ দিয়ে ঝরছে. তার মুখ অসংখ্য কাটা চুলে ঢাকা ছিল। তিনি তা করতে থাকেন এবং অবশেষে সামনে চলে যান। তিনি সামনের সমস্ত চুল আঁচড়ালেন। তার চুল এখনও তার চোখ ঢেকে যথেষ্ট লম্বা ছিল। তিনি আলতো করে তার চিবুক স্পর্শ করল, তার মাথাটা একটু তুলল এবং তার কপালের মাঝখানে তার চুল কাটতে লাগলেন। চুল ওর মুখে চুমু খেয়ে ওর কোলের দিকে এগিয়ে গেল। 

তারপরে তিনি কাঁচিটি ফেলে দিয়ে তার চুল আঁচড়ান, তাকে একটি স্মার্ট, কেতাদুরস্ত বয়কাট দিয়েছিলেন। কিন্তু তার কাজ করা হয়নি। মেয়েটি তখনও চোখ বন্ধ করে রেখেছিল, নাপিত একটি ড্রয়ার খুলে সোজা রেজার বের করে। নতুন ব্লেড ভরে, তিনি আবার তার স্প্রেয়ারটি বেছে নিলেন, তার পিছনে এবং পাশে ভিজিয়ে দিলেন। 

আলতো করে ওর মাথাটা সামনের দিকে ঠেলে পিছন থেকে চুল সরাতে লাগলো। আমি প্রতিফলনের মাধ্যমে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম, তিনি ঘাড়ের গাঁইট উন্মুক্ত করেছেন, সমস্ত সাদা এবং চকচকে। একইভাবে তিনি কানের দৈর্ঘ্য পর্যন্ত চুল অপসারণ করে পাশের জন্য করেছিলেন। 

নাপিত তারপর একটি প্রশস্ত ব্রাশ তুলে নেয় এবং তার গর্দান, মুখ এবং কান চুলমুক্ত করে দিতে শুরু করে। তারপর পাউডার লাগিয়ে আস্তে আস্তে কেপটা খুলে দিল। আমি অবিরাম মেয়েটিকে পর্যবেক্ষণ করছিলাম, তার প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমার নাপিত আমাকে সমর্থন করার মেজাজে ছিল না এবং ক্রমাগত আমাকে এতে বাধা দেয়। আমি সেই মুহূর্তটি মিস করেছি যখন সে তার চোখ খুলল। আমি তাকে ক্রমাগত আয়না দিয়ে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি। সে আস্তে করে উঠে চলে গেল, কারণ তার ভাই তার জন্য টাকা দিয়েছে। তখন সে তার কাটা চুলের দিকে তাকাতে থাকে যখন তার ভাই তার হাত ধরে তাকে নিয়ে যায়। 

আমি সেখানে বসে আমার চুলের কাজ শেষ করছি সেই সময়ে দেখলাম অন্য নাপিত কাটা চুলগুলো ঝাড়ু দিয়ে কোণার ডাস্টবিনের কাছে ফেলে দিচ্ছে। 

আমি তখনও বিভ্রান্ত ছিলাম যে সে বাস্তব নাকি আমার জন্য একটি কল্পনা ছিল?? 

Translated from HC&S stories

Tuesday, May 14, 2019

অপরাধ - অন্তিম পর্ব

শ্রেয়াকে পড়ে যেতে দেখল অনিক। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে কাছে নিয়ে গেল; তড়িঘড়ি করে ওকে গাড়িতে তুলল। অনিকের হাতে আছে আধা ঘন্টা। ৩০-৪৫ মিনিট ওষুধ কাজ করবে। নিয়ে আসল বাসায়। শ্রেয়াকে কাঁধে তুলে সন্তর্পণে ঘরে ঢুকল। স্মুথলি কাজ হয়ে যাওয়ায় আনন্দ হলো তার। ওর ঘরে নিয়ে গিয়ে চেয়ারে বসিয়ে দিল। হাত পা বেঁধে দিল চেয়ারের সাথে। বেণীটা ধরে চেয়ারের বাইরে নিয়ে ছেড়ে দিল। গরুর লেজের মত নিচের দিকে ব্যান্ড লাগিয়ে কিছু চুল উন্মুক্ত করেছিল শ্রেয়া। সেটা দেখেই একটা ঢোক গিলল অনিক। সব জিনিসপত্র নিয়ে আসল সে। রাখল টেবিলে। দুষ্ট বুদ্ধি খেলে যেন বিদ্যুৎ নেমে যাচ্ছে তার শরীর দিয়ে বার বার। সে দেখল তার চেয়ারে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে শ্রেয়া হাত পা বাঁধা অজ্ঞান অবস্থায়। পাছা সমান লম্বা বিনুনি চেয়ারের পিঠের বাইরে দিয়ে বেয়ে গেছে। অনিক তার ট্রাউজারের বাঁধন ঢিলা করল। বেণীটাকে ধরে ঢুকিয়ে দিল তার ট্রাউজারে। বেণীর ছোয়ায় যেন শক খেয়ে গেল সে। চোখ বন্ধ করে সে চুল দিয়ে তার দণ্ডের সাথে মাখাচ্ছে। মুহুর্তেই তার কক লাফিয়ে উঠল। বেণীর প্রতিটি খাঁজ যেন তার ধোনে পরম ছোয়া বুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। সে আস্তে আস্তে বেণীটা খুলতে লাগল। সম্পূর্ণ চুল খুলে অনিক তার সারা গায়ে মাখল। মাথাটা চুলে ডুবিয়ে চুলের গোড়ায় চুমু খেতে লাগল। যেন কাল চুলের সমুদ্রে স্নান করছে সে। ট্রাউজারের ভিতরে তখন চুলেধোনে মাখামাখি। যেন অাগ্নেয়গিরিতে কেউ লাভা জ্বাল দিচ্ছে। সমস্ত চুল দিয়ে সে তার নিজের বুক পেট তলপেট আর ধোনটিকে মাখিয়ে নিল। চুল দিয়ে দন্ডটাকে কয়েকবার ম্যাসেজ করল সে। এখনি আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত হবে। চুলগুলো বের করে আনল সে। একি! আর দশ মিনিট বাকি। সে আবার বেণী করে দিল চুলটা। 


বেণীটা ধরে ধোনের সঙ্গে পেচিয়ে দিল। আটকে থাকায় চুলে টান পড়ে শ্রেয়ার মাথাটা চেয়ারের পিঠের সাথে উচু হয়ে রইল। শ্রেয়ার মুখটা হা হয়ে আছে। অনিক শ্যাম্পু মেশানো পানি স্প্রে করে দিল চুলের গোড়াতে। বেণীটা আটকে থাকায় বার বার টান পড়ছে। অনিকের যেন সুখ আর ধরে না। পুরো চুলের গোড়া ভিজিয়ে এবার ক্ষুর হাতে নিল অনিক। ভাবল চালিয়ে দিবে নাকি কাচি দিয়ে বেণীটা কেটে নিবে! না তার সমস্ত চুলটাই চাই। তাই মাথার মাঝ বরাবর ক্ষুর বসিয়ে দিল সে। ভেজা চপচপে লম্বা পাছাসমান ধোনে আটকানো বেণীর চুলে সে ক্ষুর  চালাচ্ছে। প্রথমে কপাল থেকে একটা পোচ দিল সে। সাদা চাতাল বের হয়ে গেল শ্রেয়ার। এত গর্বের এত দিনের সেই সম্পদ অজ্ঞাতসারে হারাচ্ছে শ্রেয়া। কপাল থেকে একেবারে মাথার মাঝ বরাবর চুল উঠিয়ে দিল অনিক। গালে হাত দিয়ে অপরপাশের গাল শেভ করে দিল সে। পরে মাঝখান থেকে মাথার পিছনে চলে আসল। আটকে থাকায় কাধটা নিচু হয়ে আছে একটু উচু করতেই নিচের ধোনটা আকাশে উঠে গেল। সেই একটা বজ্র নেমে গেল শরীর বেয়ে। ক্ষুর দিয়ে চ্রাক চ্রাক চ্রাক চ্রাক চ্রাক করে চুলের গোড়াগুলা উঠিয়ে নিচ্ছিল অনিক। কাঁধটা শেভ করে দিতেই অর্ধন্যাড়া হয়ে গেল শ্রেয়া। শ্রেয়ার এত সাধের চুলের অর্ধেক মাথায় অর্ধেক অনিকের ধোনের সাথে ঝুলছে। অপরপাশে ক্ষুরের স্পর্শ দিল অনিক। আস্তে আস্তে উপরে মাথার সাথে চুলের টান কমতে লাগল আর নিচে বাঁধা ধোনের টানে চুল আলাদা হতে থাকল। এবার এপাশের গাল শেভ করে দিল অনিক। গাল বেয়ে মাথার মাঝখান পর্যন্ত একটা টান! চ্রাক চ্রাক চ্রাক.... বাকি শুধু পিছনের বাঁপাশের চুলগুলো। ক্ষৌরকর্ম চলতে থাকল। শেষে বা কাঁধের শেষ চুলটিকে কেটে নিয়ে আসল। পাছা সমান বেণী একটানে মাথা থেকে আলাদা হয়ে আছড়ে মাটিতে পড়ল আর ধোনের সাথে ঝুলতে থাকল। খাড়া টনটন করতে থাকা ধোনের সাথে শ্রেয়ার লম্বা বিনুনি ঝুলছে। আর ওদিকে চেয়ারে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে ন্যাড়া শ্রেয়া।


এবার ট্রাউজারটা খুলেই ফেলল অনিক। ঝুলছে চুল। ঐ অবস্থায় সে সারা মাথায় আবার ক্ষুর চালালো। একসময়ের চকচকে শাইন করা চুলের জায়গায় এখন চকচক করছে শ্রেয়ার ন্যাড়া মাথা। মাথা থেকে আলাদা হওয়া সেই চুলের সাথে নিজের ধোনটিকে আলিঙ্গন করিয়ে নিল অনিক। শ্রেয়ার ন্যাড়া মাথায় হাত বুলিয়ে বুক বুলিয়ে ধোনটাও বুলিয়ে দিল সে। শ্রেয়ার মাথা এখন সম্পূর্ণ সাদা চাতালের এক গোলক। সুন্দর ঢেউ খেলানো লম্বা স্ট্রেইট চুলের শ্রেয়া এখন ন্যাড়া। 


অবশেষে অনিক শ্রেয়াকে ন্যাড়া করে দিল। প্রচন্ড উত্তেজনায় মাতাল হয়ে আছে সে। ন্যাড়া মাথার শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে কাম অনুভব করল। ওর মাথায় হাত বুলাতে লাগল; একেবারে মসৃণ। শ্রেয়ার সামনের দিকে চলে আসল সে। বুকের সামনে ঝুলে থাকা স্তনগুলি জোরে জোরে চাপতে লাগল। পেটে চুমু খেল। এরপর সালোয়ারটা খুলে দিল সে। কাল ঘন বালে ঢেকে আছে সবটুকু। হাত দিয়ে স্পর্শ করল ওটা। নরম মখমলের মত অনুভব করল সে। আঙুল দিয়ে টানতে থাকল বালগুলো। যেন গুদ ভরা বালের জঙ্গলে শিকারী বাঘ দৌড়চ্ছে। বালের ভিতর আঙুল চালিয়ে মুষ্ঠি দিয়ে ধরা যাচ্ছে। সে কাঁচি নিয়ে বালগুলো কাটতে লাগল। আমাজন জঙ্গলের ভিতর দিয় আস্তে আস্তে পানামা খাল উঁকি দিচ্ছে। কালো প্রলেপ সরে গিয়ে সাদা লাল চামড়া দেখা যাচ্ছে। কাচি দিয়ে সাইজ করে শেভিং ক্রিম লাগিয়ে ক্ষুর দিয়ে চাঁছতে লাগল সে। লাল সাদা চামড়া বের হয়ে আসছে প্রতি ক্ষৌরলেহনে। আর কালো বাল খসে খসে পড়ছে। পাছাটা উচু করে ওখানেও চেছে দিল সে। সুন্দর নরম গোলাপী উর্বর উপত্যকার মত, মাঝে সরু খাদ। যেখানে কোন কাল আগাছা নেই। 


শ্রেয়া কেমন যেন নড়ে উঠল। জ্ঞান ফিরে আসছে তার। অনিক দ্রুত তার লন্ড থেকে বেণীর গিঁট খুলে বেণীটা টেবিলে রাখল। শ্রেয়ার মাথা ভাল করে পানি দিয়ে ধুয়ে দিল যাতে চুল বা তার আঙুলের ছাপ না থাকে। গ্লাভস পরে টাওয়েল নিয়ে মুছে দিল মাথাটা। শ্রেয়ার ওড়নাটা মাথায় মুড়িয়ে দিল। গুদের জায়গাটা গ্লাভস হাতেই ভাল করে পরিষ্কার করে মুছে দিল। চটপট পোশাক ঠিক করে ওর বাঁধন খুলে কাঁধে চড়িয়ে গাড়িতে নিয়ে বসাল। ৪৫ মিনিটে কাজ শেষ। গাড়ি করে নিয়ে যেখান থেকে নিয়ে এসেছিল সেখানে সাবধানে শুইয়ে রেখে গেল। 


খুব মাথাধরা নিয়ে ঘুমটা ভাঙল শ্রেয়ার। একি সে বিছানায় কি করে এল! সে জাগতেই মিতা দৌড়ে এসে কাঁদতে কাঁদতে শ্রেয়াকে জড়িয়ে ধরল। শ্রেয়া বলল "কি হয়েছে রে, মাথাটা অনেক ধরে আছে, হালকা লাগছে মাথাটা। আসার সময় কিসে কামড় দিল পরে আর কিছু মনে নেই।" মিতা বলে "কে করল তোর এই সর্বনাশ রে শ্রেয়া! কিভাবে কি হল" মাথায় হাত পড়ল শ্রেয়ার। তার চুল!!? কোথায় তার সোনার চুল? এত সাধের এত দিনের তিলে তিলে যত্নে আদরে গড়া চুল কই? এ তো পুরোই বেল। চিৎকার করে কেঁদে উঠল শ্রেয়া! আয়নায় নিজেকে চিনতে পারছিল না। তার কোমর ছাড়ানো লম্বা চুলের জায়গায় মস্ত সাদা ন্যাড়া মাথা! কান্নার বাঁধ ভেঙে একটা কথাও বলতে পারছে না সে। এত বড় অপরাধ কে করল তার সাথে! 


সম্পূর্ণ বেণীকে শ্যাম্পু পানিতে ধুয়ে নিজের কাছে রেখেছে অনিক। ঘটনার পর নিজের চোখে শ্রেয়ার কান্না দেখেছে। ক্লাসের প্রাণবন্ত মেয়ের চুপচাপ হয়ে যাওয়া দেখেছে। টাক মাথা নিয়ে বন্ধুদের ঠাট্টা মশকরা দেখেছে। কিন্তু তাতে তার কি! সে শ্রেয়ার পাশে থেকে সান্ত্বনা দিয়েছে। কেউ জানতে পারে নি সেই বেণীটা অনিকের হাতের পরশ পায় প্রতিদিন। প্রতিদিন সেই বেণীর জায়গা হয় অনিকের ট্রাউজারের মধ্যে। 

(সমাপ্ত)

Friday, May 10, 2019

অপরাধ-৩

সেমিস্টার শেষে অনিক প্লান করে একটা আউটিং এর। সবাই যেয়ে নাচ গান করবে। হয়ত তখন সেই ফাঁকে শ্রেয়ার চুলগুলো একটু ছুয়ে দিতে পারবে সে। সবাইকে বললে রাজি হল। মিতার কাছ থেকে জানল যে শ্রেয়াও আসবে। মিতা কি ভাবছে কে জানে তাও বলল খোপা করে চুলের কাটা বেধে নীল রঙের টপস আর জিন্স পরিয়ে শ্রেয়াকে নিয়ে আসতে। একদিন শ্রেয়ার সাথে মেলামেশার জন্য বন্ধুমহল তাকে এক প্রকার গার্লফ্রেন্ডই বানিয়ে দিয়েছিল। সে যাই হোক অনিক আর আকাশ মিলে ঠিক করল মজা তো করবেই সাথে ধোঁয়াটোয়া গিলতে হবে, দুবোতল রামও নিল। ওদের প্লান ছিল প্রজেক্টরে সবাই মিলে পর্ণ দেখবে। কিন্তু মেয়েগুলা রাজি হবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয়।

পার্টিতে শ্রেয়া অনিকের কথা মতই এসেছে। মিতা তাকে ভালই বুঝাতে পেরেছে তাহলে। সবাই মিলে আড্ডা মজা করে সিগারেটের ধোঁয়া টেনে রাম মুখে ঢেলে নাচতে শুরু করেছে সবাই। নাচতে গিয়ে চুল খুলে গেল শ্রেয়ার। আলো আঁধারির মধ্যে অমন রত্নবৃষ্টি দেখে অনিক যেন বিদ্যুতের শক খেল। চুলগুলো পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে নিচে পড়ছে, শ্রেয়া মাথাটা পিছনে হেলিয়ে ঝাঁকিয়ে যেন পড়তে দিল চুলটাকে, পাছার মাঝ অবধি গিয়ে শেষ হল সেটা, এই ছ-সাত মাসে তাহলে আরো বেড়েছে! বুঝতে পারল অনিক ওর পক্ষে এটা না ধরে থাকা সম্ভব না। অবচেতন মনে গিয়ে কপালের চুলধরে কোমর অবধি চুলের নদীতে হাত ভাসিয়ে দিল। মিতা বলল "সামলে অনিক, বেশি খেয়ে ফেললি নাকি"। অনিক বলল "আরে ধুর, কি যা তা বলছিস, শ্রেয়ার চুল সুন্দর তাই একটু ধরলাম। কেন ধরলে কি কেস করে দিবি নাকি?" শ্রেয়া বলল "আমার চুল সুন্দরই আর এটা আমার বরের জন্য তাই অন্য কেউ হাত দিক তা আমি চাই না অনিক" 


থতমত খেয়ে অনিক হাত ছেড়ে দিল। এতদিন ধরে চিনে আসা মেয়েটিকে অচেনা লাগছে। বন্ধুত্বের খাতিরে এর আগেও সে হাত ধরেছে, ঠেলা গুতা দিয়েছে, দু চারবার চুলেও হাত দিয়েছে। কিন্তু তাই বলে এভাবে রিজেক্ট! অনিক মেনে নিতে পারে না। দূর থেকে সে শুনল শ্রেয়া মিতাকে বলছে "অনিক ছেলে ভাল, বন্ধু হিসাবে হাত ধরাই যায় কিন্তু আমার চুল আমি কাউকে ধরতে দিব না।" 


এত দেমাগ এই মেয়ের! সামান্য চুলের জন্য! এই চুল তাকে কি দিয়েছে! তার বন্ধুত্ব আজকে এভাবে নস্যাত হল সামান্য চুলের জন্য! কি এমন আহামরি হয়ে গেছে যে চুল ধরতে দিবে না! অনিক রাগে আর কিছু বলল না। মনে মনে বলতে লাগল ঐ চুল তার হাতের মুঠোয় চাই। পার্টি থমকে গেল ওখানেই।

শ্রেয়ার পরে একটু কেমন লাগল যে "এইভাবে বললাম ছেলেটাকে!" তারপরই ভাবল কেন সে এত চুলে হাত দিবে! এমনিতেই গায়ে হাত দেয় আবার চুলে এত হাত দেয়ার কি আছে সে কি তার গার্লফ্রেন্ড নাকি!! সে তার ওয়ারড্রবের আয়নার সামনে তার চুল আচড়াতে আচড়াতে ভাবছিল। 



সাধের চুলগুলো সে আয়নায় দেখছিল। মাঝখানে সিঁথি করে চুলগুলো সামনে নিয়ে দেখছিল। কামিজের সামনের বোতাম খুলে দিল সে। এত ঘন মোটা চুল তার বুকের স্তন দুটি ঢাকতে যেন কোন কাপড়ের দরকার হয় না। স্তন পেরিয়ে পেটের সামনে নিয়ে আসল চুলগুলো। সে যে চেয়ারটিতে বসে ছিল সেই চেয়ার ছুঁই ছুঁই চুল। যেন তার সামনের ভগাংকুরকেও ঢেকে দিবে চুলগুলো। নিজের চুলের প্রতি নিজেরই একটা টান অনুভব করল শ্রেয়া। শোবার সময় মিতা তাকে আয়নার সামনে শ্রেয়াকে দেখে বলে উঠল "কিরে কি করছিস?" তড়িঘড়ি করে কাপড় ঠিক করে চুলগুলো পেছনে ঠেলে খোঁপা করে শুয়ে পড়ল।

শ্রেয়া খেয়াল করল অনিক তার সাথে আগের মত কথা বলছে না। সে কয়েকবার গেল অনিকের কাছে কিন্তু সে পাত্তা না দেয়ার ভান করছে। মনে মনে একটু খুশিই হল শ্রেয়া। যাক ভালই হলো। তবুও সে চেষ্টা করল সার্কেলে সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার। পড়াশোনা বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় ভালই কাটছিল তার।

শুধু অনিকের মনে একটা খচখচানি ছিল। যে করে হোক শ্রেয়ার চুলগুলো আমার চাই। যেভাবে হোক ঐ লম্বা চুলের একটা পরিনতি আমার হাতেই হবে। 


অনিক সুযোগ খুজতে লাগল কিভাবে কি করা যায়, ভাবতে লাগল...
বন্ধুদের বলবে! না বন্ধুদের বললে ওকেই খারাপ ভাববে; শ্রেয়াকে তো কিছু বলা যাবে না, সে কিছুতেই ওর চুল দিবে না। গোপনে করতে হবে। কিভাবে কাউকে না বুঝতে দিয়ে করা যায় সেটাই বের করতে হবে। মিতাকে বলে শ্রেয়াকে এক জায়গায় নিয়ে যেয়ে জোর করে... না, শ্রেয়া আর মিতা দুজনই জেনে যাবে। আকাশকে বলে শ্রেয়াকে ডেকে আনা যায় কিনা! না, ডেকে আনলেও লাস্ট লোকেশন জেনে যাবে। এমনভাবে কাজটা করতে হবে যাতে কেউ জানতে না পারে। শ্রেয়াও বুঝতে না পারে। একটা প্লান তো বের করতেই হবে।

জীববিদ্যার ছাত্র হওয়ায় সে অজ্ঞানের ওষুধ সম্পর্কে একটু জ্ঞান তার আছে। কোনটা দিলে ওর ক্ষতিও হবে না, সময়ও পাওয়া যাবে, তাড়াতাড়ি অজ্ঞান হবে সেটা ঠিক করে করতে হবে। ওকে খাইয়ে দিলে কেমন হয়? চা এর সাথে! বা কাউকে দিয়ে মেশানো খাবার খাইয়ে! দেয়া যাবে না, অনিক খাইয়েছে; সন্দেহ হবে। কাপড়ে দিয়ে নাকে শুকিয়ে! যদি ধরে ফেলে! শিরায় দিয়ে! এটা তো না ই কারণ এটা কে করবে! অনিক একটা পিস্তল কিনল। একটা সিরিঞ্জ নিয়ে প্লাস্টিকের বডিতে নেগেটিভ প্রেসারে প্রোপোফল নিয়ে ভরল সে। এরকম কয়েকটা অ্যাম্পুল বানাল। সাইজে বড় হয়ে গেছে। আরও ছোট করতে হবে যাতে টের না পায়। ৩ সে.মি দৈর্ঘ্যের একটা প্লাস্টিকের বডিতে ভরল এবার। সূক্ষ্ম সুঁই ভরে দিল। ছোট রিভলবারের মত নিয়ে আসল। কম্পেনসেটর লাগিয়ে নিল যাতে ফায়ার করলে শব্দ না হয়। সামনে একটা পর্দায় রিভলবারে অ্যাম্পুল লোড করে শুট করল। নেগেটিভ প্রেসার থাকায় ভিতরের তরল পর্দাতে ছড়িয়ে পড়ল। ইউরেকা!!! অনিকের স্বপ্ন এখন সত্যি হওয়ার পথে।

পরদিন নাপিতের দোকানে গিয়ে ক্ষুর কিনল, ব্লেড, ওয়াটার স্প্রেয়ার, ধারালো কাঁচি, দড়ি নিয়ে আসল। এখন শুধু অপেক্ষা সুযোগের। প্রতিদিনকার মত সে ক্লাসে যায়, শ্রেয়াকে দেখে, তার চুলের দিকে তাকিয়ে থাকে, আসন্ন চুল তার হাতে পাওয়া ভাবতে ভাবতে তার পুংদণ্ড খাড়া হয়ে যায়। আর তর সইছে না তার।

জুলাইয়ের শেষের দিকে মি. আর মিসেস রায় অফিসিয়াল কাজে দুজনেই বাড়ির বাইরে চলে গেলেন। আর অনিকদের সেমিস্টারে এখন তেমন পড়া হচ্ছে না। এটা সুযোগ। টিউশনিতে যাওয়ার সময় শ্রেয়াকে ধরতে হবে। গাড়ি নিয়ে লেডিস হোস্টেলের অদূরে পার্ক করল অনিক। সন্ধ্যা ৬টা বাজতে যাচ্ছে। ৬টায় টিউশনি শেষ করে শ্রেয়া হলে ফেরে। হলের কাছের রাস্তাটা জনমানবহীন থাকে। তার উপর ভর সন্ধ্যাবেলায় কাকপক্ষীও ঘরে ফেরে। পাশের এক নির্জনে অনিক হুডি পরে অপেক্ষা করছে। গরমে নেয়ে গেলেও এটুকু তো স্যাক্রিফাইস করতেই হবে।
আসছে! শ্রেয়া আসছে। হেঁটে হেঁটে রাস্তার পাড় ধরে চলছে সে। দুটো রিকশা গেল দুই মেয়েকে নামিয়ে দিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। ওদিকে শ্রেয়া কাছাকাছি চলে আসছে। যায় না কেন এটা!! কি মুশকিল। শ্রেয়া অনিককে ক্রস করবে এমন সময় রিকশাটা গেল। কিছুদূর এগিয়ে গেছে শ্রেয়া; অনিককে লক্ষ্য করে নি। অনিক পিছু নিল। আশ পাশ দেখে নিল; না কেউ নেই। রিভলবার বের করল। শ্রেয়ার পিঠ বরাবর মারতে হবে বুলেটের বদলে রাখা বিশেষ কায়দায় ঢোকানো অ্যাম্পুল। কিন্তু বেণী করেছে শ্রেয়া; এত লম্বা চুল ভেদ করে পিঠের মাঝে যেয়ে সুঁই বিধবে না। একটু পাশ বরাবর মারতে হবে তাহলে যাতে মাংসে যেয়ে বিধে। বেশিক্ষণ পিছু নিল না অনিক একটু কাছে যেতেই শুট করল। শ্রেয়ার পিঠের এক পাশে গিয়ে বিঁধল। ব্যস, কাজ শেষ। আর ২০ সেকেন্ড ওষুধটা কাজ করে যাবে।

মুহুর্তে ব্যথা পেয়ে উঠল শ্রেয়া। ভাবল কিসে কামড়েছে। সে আহত পিঠ থেকে একটা প্লাস্টিকের শিশির মত পেল। চোখে ঘোলা দেখছে সে। মাথা ভার হয়ে আসছে। দুনিয়া উল্টে যাচ্ছে মনে হয়। এখনই পড়ে যাবে। আশপাশে কাউকে দেখতে পেল না তবে কিছু দূরে কালোমত কেউ যেন দাঁড়িয়ে আছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মূর্ছা গেল শ্রেয়া। 


(চলবে…)


Wednesday, May 8, 2019

অপরাধ-২

ওরা চারজন মোটামুটি প্রথম দিন থেকেই একটা সার্কেলের মত। তবে সেদিন মিতার ক্লাসমেট শ্রেয়া মেয়েটাকে দেখে অনিকের কেমন যেন অন্যরকম  লাগে। মফস্বলের মেয়ে চিকন চাকন ফর্সা চেহারার সাথে সুন্দর লম্বা কোমর অব্ধি চুল। অনিকের আগে থেকেই মেয়েদের চুলের প্রতি বিশেষ এক আকর্ষণ আছে। শ্রেয়াকে দেখেই প্রথম চোখটা চুলের দিকেই গেছিল। 


যখন ছোট ছিল অনিক তখন থেকেই মেয়েদের লম্বা চুল দেখতে পছন্দ করত। ছেলে বলে লম্বা চুল রাখতে পারে না তাতে যে তার কি আফসোস! স্কুলে ক্লাসে লম্বা চুল রাখার জন্য তো একবার স্যার তাকে পিটিয়েছিল। তখন তার মনে হত মেয়েদের লম্বা চুল রাখার জন্য স্যাররা কেন তাদের পিটায় না!! বাবাও তাকে বকত লম্বা চুল রাখলে। কিন্তু মেয়েদের দেখলে খুব ইচ্ছে করে কানের উপর দিয়ে বেয়ে যাওয়া চুল আঙুল দিয়ে কানের ভাজে গুজে দিতে। লম্বা চুলের সিথি যখন বাঁ পাশ থেকে ডান পাশে নিয়ে আনে কোথায় যেন এক বিদ্যুৎ খেলে যায় তার শরীরে। আর কারোর বাতাসে উড়তে থাকা ঢেউ খেলানো চুল তো পাগল করে দেয় তাকে। তার মা যখন আয়নার সামনে চুল আচড়াত তখন অপলক চেয়ে থাকত তার দিকে। একবার ক্লাস ফাইভে থাকতে তার কাজিন অপলা দিদির পাশে বসিয়ে গাড়িতে করে গ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অনিককে। অপলার চুলগুলো বাতাসে উড়ে অনিকের মুখে পড়ছিল। খুব উপভোগ করেছিল সে। বাধা দেয় নি। মুখের ভিতরে চুল ঢুকে গেলেও কিছু বলে নি। সেবার হাতের কাছে কাচি পাওয়ায় দিদির একগাছি চুল ধরে গোড়া থেকে কেটে দিয়েছিল সে। চুলগুলো কেটে নাকের কাছে ধরতেই যেন অপার্থিব এক আনন্দ পেয়েছিল। তাতে অবশ্য ক্ষতি বৈ কোন লাভ হয়নি। বরং খাবলা করে কেটে দেয়ায় নাপিত পিঠ পরিমাণ চুলকে বয়কাট করেও কোনভাবে সাইজ না করতে পেরে অপলাদিকে ন্যাড়াই করে দিয়েছিল। তাতে নাপিতের ডবল লাভ হল; কেননা চুল কাটার অপরাধে মি রায় অনিককেও জোর করে ন্যাড়া করে দিয়েছিলেন। সেই থেকে অপলাদি তার কাছে ঘেঁষে নি। তারপরে মাধ্যমিকের সময় কাজের যে মেয়ে ছিল তাকে একবার ঘুমের সময় ব্লেড দিয়ে মাথার মাঝ বরাবর সুন্দর করে চেঁছে দিয়েছিল অনিক। সেবার তাকে আবার ন্যাড়া করা হয়নি যদিও কিন্তু অনেক বকাঝকার পর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল তার বাবা। পরে বন্ধুর বাড়ি গিয়ে মিসেস রায় অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়িতে এনেছিল অনিককে। তারপর থেকে লম্বা চুলের মেইড রাখেনি তারা।


অবশ্য অনিক এখন বড় হয়েছে। তারপরও সেই অভ্যাস আজও যায়নি। মেয়েদের চুলে যে কি মাদকতা থাকতে পারে অনিক সেটা বুঝে নিয়েছিল। প্রতিনিয়ত ফেসবুকে হেয়ার ফেটিশের গল্প পড়ে, তিরুমালার মহিলাদের ন্যাড়া হওয়ার ভিডিও দেখে, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে মেয়েদের ন্যাড়া মাথা আর কেটে ফেলা চুল দেখে যেন এক অন্য রকম আনন্দ পেত সে।


নতুন কলেজে অনেক মেয়েরাই পড়তে এসেছে। অনিক মেয়েদের দেখত, তবে চেহারা নয় চুল। প্রথম চোখটা যেত চুলের দিকে। লম্বা চুলের মেয়ে হলে তো কথাই নেই যেন চাঁদ পেয়ে গেছে সে। তবে এখনকার মেয়েরা বেশি ঢঙ করতে গিয়ে চুল কাটে যেটা তার বিরক্ত লাগে। তার সার্কেলের মেয়েরাও এমন ভ্যারাইটির। মিতার চুল পিঠের মাঝ বরাবর; কোঁকড়া, বেধে পনিটেইল করলে উপর থেকে চুল উঠে থাকে। সিমলার চুল ভাল ; স্ট্রেইট তবে ববকাট। তবে শ্রেয়ার চুল অসাধারণ; মনে হয় যেন এক সাগর চুল দিয়ে মাথাটাকে মুড়িয়ে রেখেছে। এত সুন্দর শাইনি, সিল্কি, স্ট্রেইট, জমকালো চুল তাকে যেন এক নতুন মাদকতায় আকর্ষণ করে। সেদিনই সে চুল ধরার লোভ সইতে না পেরে শ্রেয়ার বেণীটা ধরে বলেই ফেলেছিল "কিরে এই দড়িটা কোত্থেকে বয়ে আনলি"। 



ধরার সাথে সাথে একটা বিদ্যুৎ চট করে শিরদাড়া বেয়ে নেমে গেছিল তার। 


হোস্টেল জীবন আর নতুন পড়াশোনা নিয়ে ভালই চলছিল শ্রেয়ার। কলেজের পড়াশোনা তার কাছে ভালই লাগে। পড়ার ফাকে আড্ডা, বন্ধুদের সাথে শপিং, মুভিতে যাওয়া, বিকেলে নদীর পাড়ে ওরা পাঁচটা মিলে আকাশের গানের আসরো মাদকতায় হারানো আর মেয়েরা মিলে অনাগত বয়ফ্রেন্ড নিয়ে আলোচনা যেন রঙিন করে দিয়েছিল দিনগুলো।


সেমিস্টার পরীক্ষা শেষে বাড়ি যাওয়া, বাবা মা দাদা আর ছোট বোনের সংসারে সেই মেজদিদি হয়ে থাকাটাও সে এখনও উপভোগ করে। দাদা বিকম করে সরকারি চাকরি খুজছে। বাবার বয়স হয়েছে প্রাইভেট ফার্মে ম্যানেজার হয়েও পদোন্নতি বেশিদূর হয়নি। মা গৃহিণী। তাই এতদিনে দুটো টিউশনি করে নিজের হাতখরচ চালিয়ে নিত। তবুও পরীক্ষা বা যে কোন প্রয়োজনে বাবা টাকা দিয়ে দিত অকপটে।


কলেজের মেয়েদের দেখে একটু ফ্যাশন শিখেছে সে। সে এখন জিন্স পরে, টপস পরে। বিকিনি পরে মেয়েরা মিলে নাচানাচি করে। একবার বন্ধুদের পার্টিতে গিয়ে নেচেছে সে। কিন্তু চুল তার আগের মতই আছে। কোমর বেয়ে পশ্চাৎদেশের মাঝ বরাবর হয়ে গেছে ছয় মাসেই। সেবার পার্টিতে সবাই মিলে গান করেছিল আকাশের সাথে। গিয়েছিল শহর থেকে দূরে এক পুরোনো বাঙলোতে। বার বি কিউ, গিটার, সাউন্ডবক্স নিয়ে মেতে উঠছিল উদ্দাম আনন্দে। ছেলেরা একটু নেশাকেতা করছিল সিগারেট আর রাম নিয়ে। সিমলাও যে ধোঁয়া নিতে পারে তা জানা ছিল না কারও। তবে শ্রেয়া এগুলো ছুঁয়ে দেখে নি। তবে নাচতে গিয়ে খোঁপা করে কাঁটা দিয়ে বাঁধা চুলগুলো খুলে গিয়েছিল তার। এত সুন্দর চুল দেখে সবাই থমকে গিয়ে যেন শ্রেয়াকেই দেখছিল।


শ্রেয়া খেয়াল করল অনিক খুব গা ঘেঁষতে চাইছে। এমনিতে ছেলেটা ভাল। খুব মিশুক, পরোপকারী, ব্রিলিয়ান্ট এক ছাত্র কিন্তু প্রথম দিনেই চুলের বেণী খপ করে ধরায় শ্রেয়া কেন যেন দূরে দূরে থাকে। তারপর অবশ্য অনিকের সাথে মিশতে মিশতে ক্লোজ হয়ে গেছে। যদিও অন্য ডিপার্টমেন্টের তবু ভাল বন্ধুত্ব তাদের। অনিক এসে তার চুলে হাত বুলিয়ে দিল। মিতা বলল "সামলে অনিক, বেশি খেয়ে ফেললি নাকি"। অনিক বলল "আরে ধুর, কি যা তা বলছিস, শ্রেয়ার চুল সুন্দর তাই একটু ধরলাম। কেন ধরলে কি কেস করে দিবি নাকি?" শ্রেয়া বলল "আমার চুল সুন্দরই আর এটা আমার বরের জন্য তাই অন্য কেউ হাত দিক তা আমি চাই না অনিক" 


থতমত খেয়ে অনিক হাত ছেড়ে দিল। কিন্তু শ্রেয়ার মনে হল অনিক ওর চুলের দিকেই বারবার তাকাচ্ছে। সে নাচ বাদ দিয়ে সাইডে গিয়ে চুলে ক্লিপ পরিয়ে দিল। মিতা এসে জোর করল " কিরে আপসেট!! আরে অনিক এমনই তুই তো জানিসই, এতদিন মিশেছিস।" 


"হ্যাঁ আমি জানি, অনিক ছেলে ভাল, বন্ধু হিসাবে হাত ধরাই যায় কিন্তু আমার চুল আমি কাউকে ধরতে দিব না।" 


শ্রেয়ার অনেক যত্নে গড়া এই চুল। সবার আকর্ষণের মধ্যমণি, ওর রূপের প্রধান উপকরণ, ওর অ্যাটেনশন, ওর ভাললাগা হচ্ছে ঢেউ খেলানো পিঠ বেয়ে বয়ে চলা চুলের এই সমুদ্র। এটা তার সম্পদ। 


দিন দিন শ্রেয়ার প্রতি দুর্বল হতে লাগল অনিক। তার এখন চিন্তা ভাবনায় শুধুই শ্রেয়া। কলেজের শুরু থেকে শ্রেয়াকে দেখার পর থেকে ওকে ভাল লাগে, বলা যায় চুলের জন্যই। ওই চুলের জন্যই ভাব জমানোর চেষ্টা করে সে। কল্পনায় শুধু শ্রেয়ার চুলগুলো হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, হাত নিয়ে সারা গায়ে মাখছে, খেলা করছে চুল নিয়ে, গোড়া থেকে ক্ষুর দিয়ে চেঁছে সাদা চাতাল বের করে দিচ্ছে এসবই চিন্তা করে সে। যদি কখনও চুলগুলো হাতে পায় তাহলে সে সেগুলো নিজের করে নিবে। ইউটিউবের চাইনিজ মেয়েগুলোর মত সুন্দর মসৃণ চুল যখন তার সামনে দিয়ে ঘোরে তখন সে কিছুতেই না তাকিয়ে থাকতে পারে না। 


(চলবে…)

Sunday, May 5, 2019

অপরাধ-১

কলেজ ক্যাম্পাসে পা রাখতেই কেমন যেন কান্না পেয়ে গেল শ্রেয়ার। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে চরাই উতরাই পার হয়ে কলেজে ভর্তি হওয়াটা ছিল তার জন্য স্বপ্নের মত। যেবার বাবাকে সাথে নিয়ে কলেজ ভর্তির ফর্ম নিতে আসল তখন তার বাবা তাকে বলেছিল "মা, আজ তোর স্বপ্ন পূরণের দিন। ভাল করে মন দিয়ে পড়াশোনা করবি। যাতে তোর গরীব বাপ মার মত জীবনে সব সময় কষ্টে কাটাতে না হয়।" 


বাবার কথাগুলো মনে পড়তে থাকল শ্রেয়ার প্রতিটি পদে পদে। উচ্চ মাধ্যমিকে লেটার মার্কস পেয়ে কলেজে ভর্তির সুযোগ যেন সোনার মুকুট ছিল তার কাছে। এত এত ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্টদের মাঝে বসে নামকরা কলেজে পদার্থবিদ্যার সারথী হতে যাচ্ছে সে। 

প্রথম দিনেই পরিচয় হল মিতা, অনিক, সিমলা, আকাশের সাথে। তারা এখানকার লোকাল; যদিও বিভিন্ন স্কুল কলেজে পড়া ছেলেমেয়ে। 


প্রথমদিনে কোথায় ক্লাস, কেমন স্যার ইত্যাদি নিয়ে ঘোর হতে লাগল তার।

তবে সে একটা জিনিস খেয়াল করল, সবাই অনেক মডার্ণ টাইপের। মেয়েরা জিন্স টপস পরে আসছে, ববকাট লেয়ার কাটের চুল। তাদের তুলনায় শ্রেয়ার নিজেকে গেয়ো মনে হল। সালোয়ার কামিজ পরা কোমর অবধি বেয়ে চলা লম্বা চুলের সুকেশিনী সে। বেণী করে ক্লাসে গিয়ে এমন কোন মানুষ নেই যে তাকে তার চুল নিয়ে কিছু বলে নি। অনিক তো বেণীটা ধরে বলেই ফেলল, "কিরে এই দড়িটা কোত্থেকে বয়ে আনলি" । শ্রেয়া বুঝল এখানে সবাই অনেক ফ্রি। 



সে বলে " আমার খুব প্রিয় এটা, দড়ি বলিস আর যাই বলিস এমন র‍্যাপাঞ্জেল পাবি নাকি"! 

সঙ্গে সঙ্গে হো হো করে হেসে উঠল বন্ধুরা। 


বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে অনিক। একমাত্র ছেলে হওয়ায় পাড়ার বন্ধু ছাড়া তেমন মেলামেশার কেউ ছিল না। বাবা মা দুজনেই চাকরি করেন। সেই সুবাদে নিজের বাড়ি যেন নিজের জগৎ তার। ছোটবেলা থেকে দেখে রাখার জন্য বাবার এক পিসতুতো বোন ছিলেন। যদিও সেই পিসিমা গত হয়েছেন তা সেই মাধ্যমিকের আগেই। ততদিনে ছেলে বড় হওয়ায় নিজের মত থাকতে দেন মি আর মিসেস রায়।


উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় থেকেই জীববিদ্যার প্রতি আলাদা ঝোক ছিল অনিকের। কলেজে গ্রাজুয়েশন করতে এই বিষয়কেই বেছে নিল সে। পড়াশোনা খুব করত তা নয়; তবে নার্ড টাইপের ছিল সে। মুভি, গেমস, কমিকস নিয়েই বেশি পড়ে থাকত। তাছাড়া বন্ধুরা অনেকেই অন্য দিকে চলে গেছে যেমন কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং, কেউ মেডিকেল, কেউ আর্মিতে। তবে অনিক আগে থেকেই বেসিক সাবজেক্টে পড়তে চাইত। 


তাই কলেজে পুরোনো স্কুল কলেজের বন্ধুদের তেমন কেউ ছিল না। তবে ছোটবেলার বান্ধবী মিতা একই কলেজে ভর্তি হয়। মিতা ছিল গার্লস স্কুলে আর অনিক বয়েজে তবু একই পাড়ার আর একই ক্লাসের হওয়ায় চেনাজানা ছিল। তবে নতুন কলেজে একইসাথে হওয়ায় বন্ধুত্বটা যেন নতুন মাত্রা পেল। আর অনিকের নতুন রুমমেট আকাশ। শহুরে ছেলে কম্পিউটার আর গিটার নিয়ে যার দিন কেটে যায়। মিতা পদার্থবিদ্যায় চান্স পাওয়ায় একসাথে তেমন থাকা হয় না অনিকের, যতটা না ক্লাসমেট সিমলা থাকে কাছে। প্রথমদিনেই যেমন পরিচয় তার সাথে; নতুন কলেজে আসা, কি বই পড়তে হবে, কোন স্যার কেমন, ফিউচার প্লান হাবিজাবি।


ওরা চারজন মোটামুটি প্রথম দিন থেকেই একটা সার্কেলের মত। তবে সেদিন মিতার ক্লাসমেট শ্রেয়া মেয়েটাকে দেখে অনিকের কেমন যেন অন্যরকম  লাগে। শহুরে মেয়ে চিকন চাকন ফর্সা চেহারার সাথে সুন্দর লম্বা কোমর অব্ধি চুল। অনিকের আগে থেকেই মেয়েদের চুলের প্রতি বিশেষ এক আকর্ষণ আছে। শ্রেয়াকে দেখেই প্রথম চোখটা চুলের দিকেই গেছিল। সে তখন থেকেই চাইত শ্রেয়ার চুলটা কিভাবে সে কাছে পেতে পারে। 


প্রথম দিন ক্লাস শেষে হোস্টেলে উঠতে একটু বেগ পেতে হল। বাবা এসে সব কিছু কিনে টিনে দিলেও সব গোছগাছ একারই করতে হল শ্রেয়ার। নতুন রুম সাথে নতুন রুমমেট সাথে আরেক নতুন সংসার। বেড ফেলেছে জানালার কাছে। সাথে পড়ার টেবিল, একটা আলনা আরেকটা ছোট ওয়ারড্রব। পাশেই উঠেছে মিতা। শুরু থেকেই যেন আপন বোন পেয়ে গেছে মিতাকে। আরেক রুমমেট তিশা। তিনজনে ভাল করে গুছিয়ে নিল নতুন রুম। ফার্স্ট ইয়ারেই এমন রুম পাওয়া ভাগ্যের যদি না ফাইনাল ইয়ারের নেত্রী দিদির সাথে মিতার যোগাযোগ না থাকত। অবশ্য সেই আপুর কাছেই প্রাইভেট পড়ে চান্স মিলেছে মিতার। 


নতুন রুম গুছিয়ে ধুলো ময়লায় একশা হয়ে টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিল শ্রেয়া। ভাবছিল স্নান করা দরকার। হোস্টেলে পাবলিক বাথরুম যেয়ে সিরিয়াল দিয়ে আসল সে। বেণীটা খুলতে খুলতে তেল দিতে গেল রুমে। খোলা চুলে দেখে মিতা তাকে জড়িয়ে বলল "বাহ, শ্রেয়া এত সুন্দর চুল তোর, কিভাবে বানালি বল না।" শ্রেয়া বলে "আর কই সুন্দর, আমার চুল মায়ের মত, ছোটবেলা থেকেই লম্বা চুলে অভ্যস্ত করে দিয়েছে মা। মা-ই কেয়ার নিত বেশি চুলে। নিয়ম করে নারিকেল তেল, মেথির তেল, অ্যালোভেরা, ডিম দিয়ে বসিয়ে রাখত। বলত, এগুলা নিয়মিত করলে চুল সুন্দর হয়।" মিতা বলে  "আসলেই তোর চুল অনেক সুন্দর রে। কি সুন্দর সিল্কি, স্ট্রেইট, ঢেউ খেলানো, যত্ন করিস বলেই এত লম্বা হয়েছে।" প্রশ্ন করল "কাটিস নি কখনো?" 


"কেটেছি তো, ছোটবেলায় ঘাড়ের নিচ পর্যন্ত রাখতাম। মা আমাকে দুই বছর অন্তর অন্তর ন্যাড়া করে দিত। ক্লাস সেভেনে যখন পড়ি তখন মা ন্যাড়া করার সময় বলেছিলাম মা বড় হয়ে যাচ্ছি, আর কত এভাবে চুলগুলো কেটে দিবে!! মা বলেছিল এতে তোর চুল বাড়বে। ঠিক আছে এরপর আর করব না আমার মেয়েটা তো বড় হচ্ছে।" "এরপর আর কাটিনি। কাটিনি বলতে ডগা ছেঁটেছিলাম কিন্তু চুল তখন থেকেই বাড়ন্ত।" 


মিতা বলল "ভাল করেছিস। এখন তোর চুল কত মোটা, বেণী করলে কত মোটা দেখায়। স্ক্রু গজ দিয়ে তোর চুল কত মোটা মাপব। আর খোঁপা করে রাখলে তো আস্ত একটা ফুটবল।" বলেই হাসতে থাকল তারা। "মাঝে মাঝে একটু খেলতে দিস তোর চুল নিয়ে।” 


শ্রেয়া বলে "খেলবিই তো, আমার দাদা তো কিছু হলেই ওরে ছুটকি বলে চুলেই টান দেয়, মায়ের যত্ন আর দাদার টানাটানিতেই লম্বা হয়ে গেছে চুল।" 


"তোর চুলও সুন্দর"। মিতা বলে  "না রে, দেখ না কেমন চিট্টি হয়ে আছে, যত্ন করি শ্যাম্পু দেই নিয়মিত কিন্তু তাও দেখ কেমন আঁকাবাঁকা হয়ে থাকে। তাই লেংথ বেশি করি না যদি চুল পড়ে যায়।" 


শ্রেয়া চুলে নারিকেল তেল দেয়। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এপাশ ওপাশ করে, পিছনের চুলগুলা সামনে এনে হাতের কোমল ছোঁয়াতে চুলগুলোকে বুলিয়ে দিচ্ছে পরম যত্নে। তেলের আভায় চকচক করছে যেন মাথা ভর্তি ব্লাক ডায়মন্ড। খোঁপা করে নিল। যেন ছোটখাট একটা বল বসিয়ে নিল মাথায়। স্নানে গিয়ে শ্যাম্পু দিবে সে। 

(চলবে…)

Friday, April 26, 2019

টাকলা ফ‍্যামিলি

লিখেছেন : © রাজভী রায়হান শোভন ( Razvi Rayhun Shovon )
আমার ক্লাস নাইনে পড়া ছোট বোনের মাথা ন্যাড়া করে দিতে হবে, আম্মা এসে আমার কাছে প্রস্তাব করলো।। এই কাজে নাকি আমার সাহায্য লাগবে।। আমি একটু ভড়কে গেলাম, বলে কি আম্মা!! এই বয়সেই আমার বোনের যে স্ট্যাইলে চলাফেরা, সে যদি শুনে আম্মা তার মাথা নাড়ু করে দিতে চায়, রাগ-টাগ করে বাসা থেকে চলেও যেতে পারে।।
আমি আম্মাকে কারণ জিজ্ঞেস করলাম- তুমি শান্তারে নাড়ু করতে চাও কেন? ও এখন বড় হইছে না? তোমার কি মাথা-টাথা ঠিক আছে আম্মা?

আম্মা কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে বলে- আমি তোরে পেটে ধরছি, না তুই আমারে পেটে ধরছিস?? আমার মাথা ঠিকি আছে।।

আমি আম্মার কথা শুনে, জিহ্বায় কামড় দিয়ে বললাম- এইটা তো শান্তারে শোনানের ডায়লগ, আমি তো আম্মা পোলা, মাইয়া মানুষ না- আমি কেম্নে পেটে বাচ্চা ধরুম!!

আম্মা আমার মাথার পিছনে চাটি মেরে বললো- ফাজিল পোলা, খবরদার আমার সাথে ফাইজলামী করবি না।। শুন, শান্তার বান্ধবী জুলির কাহিনী জানোস?

আমি আম্মার চাটি খেয়ে অস্ফুট কণ্ঠে বললাম- উহু, ব্যাথা পাইলাম তো।। জুলি জানি ক্যারা, কি করছে?

আম্মা আমার কাছে চেপে আসলো, আস্তে আস্তে বলছে- এই পিচ্চি মাইয়া কোন পোলার লগে জানি ভাইগা গেছে, প্রেম পিরিতি করতো এই বয়সেই।। জুলির আম্মা প্রথমে স্বীকার যায় নাই, এখন এই ঘটনা শান্তাগো স্কুলের সবাই জানে।।

আমি জুলির চেহারা মনে করতে পারছি না, মেয়েটা যে শান্তার খুব কাছের বান্ধবী তাও না।। তাহলে আম্মার এত চিন্তিত হবার কি আছে।। মহিলা মানুষ এসব গসিপ খুব পছন্দ করে।। আম্মার নিশ্চয় আমাদের পাশের বাসার আন্টিকে, চাকরীর সুবাদে চট্টগ্রাম থাকা আমাদের বাবাকে সহ মোটামোটি শ’ খানেক লোককে নিশ্চয় জানানো শেষ- যে জুলি নামের এক মেয়ে কারো সাথে ভেগে গেছে।। আম্মাকে নিয়ে আর পারলাম না।।

আমি আম্মাকে বললাম- জুলি জানি ক্যারা আম্মা, চিনতাছি না।। তা যাই হোক, শান্তা কই?

আম্মা জবাব দিলো- কোচিংয়ে, শুন বদ পোলা তোরে যেইটা কই, শান্তারে নাইড়া কইরা দিতে হবেই হবে।। বুঝাইয়া কইলে রাজী হবে না, যদিও এখন যে গরম পড়ছে, গরমের ছুঁতা দিয়া রাজী করানো যাইতে পারে, কিন্তু মনে হয় না পাত্তা দিবো আমার কথায়।। তুই কি বলিস?

আমি আম্মার চোখে চোখ রেখে বললাম- আমি আর কি বলমু, তুমি রান্না বান্না ফালাইয়া শান্তার পিছে লাগলা কেন? ওরে নাড়ু করার দরকার কি?

আম্মা এবার নির্লিপ্ত গলায় বলে- আমাগো শান্তার চেহারা তো মাশাল্লাহ্‌, তোর চেহারাও সুন্দর।। বলে আমার গায়ে থু থু ছিটাচ্ছে।। আমি মুখ বাড়িয়ে দিলাম, কারণ এই থু থু ছিটানোর সময় মুখ সরিয়ে নিলেও দুই চার ঘা চড় থাপ্পড় মারতে পারে আম্মা।। থু থু ছিটানো শেষ করে আম্মা আবার বলছে- নজর না লাগুক মানুষের।। শুন, শান্তার এখন উড়তি বয়স, মন আকডুম বাকডুম করবো, আর চারপাশে সবার এইসব কান্ড দেইখ্যা মাইয়া আমার কতদিন ভালো থাকবো আল্লাহ্‌ই জানে।। তাই নাইড়া কইরা দিলে, কেউ ওর দিকে তাকাইবোও না, আর শান্তাও প্রেম পিরিতি ডাইনে বামে ভাবার সময় পাইবো না।।

আমি মুগ্ধ চোখে আম্মার দিকে তাকিয়ে আছি, মহিলার বুদ্ধি বটে।। নানাভাই কি খাইয়ে এই জননীকে বড় করেছে কে জানে, বুদ্ধির জাহাজ না, পুরাই বুদ্ধির স্যাটেলাইট।।
আমি আম্মাকে বললাম- কিন্তু আম্মাজান, বিড়ালের গলায় ঘন্টা পড়াবে কে?

আম্মা কুতকুত করে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো- বিড়াল, কিসের বিড়াল, তুই বিড়াল-টিড়াল বাসায় আনিস না।। খবরদার, থাপড়াইয়া দাঁত ফেলে দিবো।।

আমার মুখের হাসি হাসি ভাব মুহূর্তেই গায়েব, আম্মার প্রতি একটু আগে মুগ্ধতা ছিলো, তা এখন নিমেষেই শেষ, শুধু বললাম- বিড়াল না, বাদ দাও বুঝবা না।। কিন্তু আম্মা শুনো, শান্তা তো জীবনেও রাজী হবে না নাইড়া হইতে।। তাইলে কেম্নে কি করবা?

আম্মা আবার রাগান্বিত হয়ে তাকিয়ে বলে- কি বাদ দিমু বদ পোলা, যাই বলো খবরদার বিড়াল আনবি না বাসায়।।

আমি এবার মুখ দিয়ে বিরক্তিসূচক শব্দ বের করে বললাম- আচ্ছা মা আনমু না, কিন্তু তোমার মেয়ের চুল কাটার বুদ্ধি কি?

আম্মা কথা বলতে বলতে একটু পিছিয়ে গিয়েছিলো, আবার কাছে এসে বললো- সোজা বুদ্ধি, রাতে তুই গিয়ে কেচি দিয়ে ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং চুল কেটে দিয়ে আসবি।। সকালে আমি তোরে দুই একটা চড় থাপ্পড় দিমু শান্তার সামনে, তারপর ওকে বুঝ দিয়া নাইড়া কইরা দিমু ব্যাস।। তবে, শান্তার চুল গোঁড়া থেকে কাটবি, খুব খেয়াল কইরা।।

আমি তব্দা খেয়ে আছি, আম্মার প্ল্যান শুনে।। একটু থিতু হয়ে বললাম- কিন্তু এই কাজ তুমি করো, তোমরা তো একসাথেই ঘুমাও, হুদাই আমার করার দরকার কি?

আম্মা আবার আমার মাথার পিছনে চাটি মেরে বললো- ওরে বলদা শুন, আমি করতে গিয়ে ধরা খাইলে খবর আছে।। তুই করিস, শান্তা জিগাইলে বলবি গরমে বোনের উপকার করতে চুল কেটে দিছিস, আর আমি তো তোর সাথেই আছি, ঝামেলা হলে সামলে নিমু নে।। কেচি তোর রুমে রাইখ্যা যাই, রাতে খাবার পর ঘুমাইতে গেলে, তুই তালে থাকবি।। শান্তা ঘুমাইলেই তুই গিয়ে চুল কেটে দিবি, দেখিস জাগনা যেনো না পায়।। আর, আমি জেগেই থাকবো, সমস্যা নেই।।

আম্মার সাথে এই দূরভিসন্ধি শেষ করে, রাতের অপেক্ষায় রইলাম।।

……………...
বিকেলে শান্তা কোচিং থেকে বাসায় আসলো।। আমি আড়ালে আবডালে খালি মেয়েটার চুলের দিকে তাকিয়ে থাকি।। আর মনে মনে মিটি মিটি হাসি, আহা স্বাধের চুল, আজ রাতেই ঘ্যাচাং ফু করে দিবো।। শান্তা কিভাবে যেনো খেয়াল করলো, আমাকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করলো- ওই ভাইয়া!! কি দেখো বার বার এমনে তাকাইয়া??

আমি শান্তার মাথায় গাট্টা মেরে বললাম- কিছু না রে বুড়ি, তোর চুল দেখি!! তোর চুল দেখলে মনে হয়, চুল তার কবে কার বিদিশার নিশার, আমার শান্তার পান্তার জান্তার মান্তার………...

ঐ চুপ করো তো ভাইয়া, আমার চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে।। মাঝে মাঝে কি মন চায় জানো? আহ্লাদী কণ্ঠে বললো শান্তা।।

আমি বললাম- কি মন চায় তোর?

শান্তা নিজের মাথার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলে- মন চায় নাইড়া বেল্লু হয়ে যাই, আবার নতুন চুল গজাবে, তখন খুব সুন্দর চুল হবে।।

আমার হাসি হাসি মুখ থেমে গেলো, ঢোঁক গিললাম, মনে মনে ভাবলাম, যাক্‌ চুল কাটার পরে শান্তা তেমন উচ্চবাচ্য করবে না।। আমারও আর বাড়তি ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হবে না।। আম্মা এই অবেলায় রুমের মধ্যে ঘুমাচ্ছে, নইলে চুপি চুপি আম্মাকে বলে আসতাম, শান্তা নিজেই নাড়ু হতে চায়।। তাহলে আর রাতের মিশন করা লাগবে না।।

শান্তার চুলে আমি হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম- কি সিল্কি চুল তোর।।

শান্তা বলে- সিল্কি না ঘোড়ার ডিম, ওই ভাইয়া শুনো, আমারে দুই হাজার টাকা দিবা, আর আমার কিছু টাকা ভরে চুলগুলো রিবন্ডিং করমু।।

আমি আবার ঢোঁক গিললাম, তারপর বললাম- দুই হাজার তো দূরের কথা দুই টাকাও নাই।।

আমি মনে মনে বলছি, আইছে রিবন্ডিং!! বেটি তোর চুল তো আজকেই ঘ্যাচাং ফু, তুই আছিস রিবন্ডিং নিয়া।।

……………
রাত ১ টার মত বাজে।। আম্মু শান্তাকে নিয়ে ১২ টার দিকেই বিছানায় গেছে।। আমি আর এরমধ্যে ওই রুমে যাই নাই, নিজের রুমে বসে ফেসবুক চালাচ্ছিলাম।। ড্রয়ার থেকে আম্মুর রেখে দেয়া কেচি বের করলাম।। কি যে আছে কপালে কে জানে!!
এর আগে একবারের কথা মনে পড়লো, আমার মুখে এখনও অনেকগুলা খামচির দাগ আছে, সব শান্তার দেয়া।। এই জন্যে ক্লিন সেভ করলে আমাকে অদ্ভুত দেখায়, তাই খোঁচা খোঁচা দাড়ি রাখি সবসময়।।

মাস দুয়েক আগে, আমি দেখলাম শান্তা হাতের নখ বড় রাখা শুরু করছে।। কয়েকবার বললাম, নখ কেটে ফেল, আমি নিজে কেটে দিতে চাইলাম- না সে কিছুতেই নখ কাটতে দিবে না।। বরং সেই লম্বা লম্বা নখে বাহারি ডিস্কো নেইল পালিশ মেখে বেড়ায়।। আমি কি করলাম, রাতে গিয়ে ঘুমন্ত শান্তার নখগুলো কেচি দিয়ে মাঝখানে একটা করে ঘ্যাচাং দিয়ে আসলাম।।

কিন্তু সকালে দেখি আম্মু আর শান্তা দুইজন মিলে আমাকে পিটাচ্ছে।।

কারণ, হাতের নখ এভাবে ফেটে যাওয়াতে শান্তা ঘুমের মধ্যে শরীরের যে জায়গা চুলকিয়েছে, সে সব জায়গায় একদম লম্বা দাগ হয়ে গেছে, কিছু কিছু জায়গা বেশ কেটে রক্তও বেরিয়ে গেছে।। আমি আসলে কল্পনাও করি নাই এমন হতে পারে।। এই আকাম করে ঘুমিয়ে ছিলাম, দুইজন আমার রুমে এসে ইচ্ছামত ধুমাদ্ধুম মাইর।। তারপর শান্তা ওই কাটা কাটা নখ দিয়ে আমার মুখে আঁচড় কেটে দেয়।। সেই দাগগুলা এখনো জীবন্ত, আল্লাহ্‌ জানে আজ চুল কাটা নিয়ে আবার কি হয়।।

পা টিপে টিপে চোরের মত আম্মুর রুমের দিকে যাচ্ছি।। দরজা ভিড়ানো আছে, ধাক্কা না দিয়ে ওই ফাঁক দিয়েই শরীর গলিয়ে ভিতরে ঢুকলাম, লাইট নেভানো, বিছানার পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম।। অন্ধকারে চোখ সয়ে গেলে আস্তে আস্তে আম্মুকে ডাক দিলাম।। মর জ্বালা, আম্মুও দেখি ঘুমিয়ে গেছে।। ভাবলাম, থাক্‌ ঘুমেই থাকুক আমি আমার মিশন শেষ করে চলে যাই।।

আস্তে আস্তে বিছানার কাছে গেলাম, আমি যে পাশে গেলাম এই পাশে আম্মু শুয়ে আছে, আর তারপর বিছানার ভিতরের দিকে শান্তা।। সমস্যা হলো, শান্তার দিকের অংশের খাট দেয়ালের সাথে চাপানো, তাই আম্মুকে ডিঙ্গিয়ে গিয়ে শান্তার চুলে হামলা করতে হবে।। সমস্যা নাই, আম্মু জাগনা পেলেও তো কিছু হবে না।।

আমি খুব সন্তর্পণে আস্তে আস্তে আম্মুর মাথার উপর দিয়ে, শূন্যে শরীর সামনের দিকে বেঁকিয়ে নিয়ে এক হাত দিয়ে শান্তার চুল ধরলাম।। অন্য হাতে কেচি রেখে, আস্তে আস্তে কেটে দিচ্ছি।। ইস্‌ চুল কাটতে যে এত মজা লাগবে কে জানতো।। একদম ইচ্ছামত কেটে কুটে তামা তামা করে দিলাম।। কিছুক্ষণ কাটার পর আম্মু বা শান্তা কারো মধ্যে কোন নড়াচড়া নেই, তাই দেখে আমার সাহস আরো বেড়ে গেলো।। এবার আরামসে চুল কেটে, সুন্দর করে রুমে চলে আসলাম।।

ল্যাপটপে কিছুক্ষণ ইউটিউব ঘেঁটে, বিছানায় গা এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।।

……………
সকালে আচমকা কোন কিছুর আঘাতে ঘুম ভেঙে গেলো।। ঘুমের জড়তা কাটলো, আম্মু আর শান্তার অগ্নিমূর্তির সাথে অদ্ভুত চেহারা দেখে।। আমার দুই গাল মা মেয়ে মনে হয় কিনে নিয়েছে, শান্তা ডান গালে চড় মারে, আম্মু বাম গালে।। ঘটনা কি!! আমি ধরফর করে উঠে বসলাম।।
সর্বনাশ আম্মুর চুলের এই অবস্থা কেন, শান্তার চুলের অবস্থা তো আরও খারাপ!!

মানে কি, আমি কি তবে রাতে অন্ধকারে দুইজনের চুলই কেটে তামা, লোহা, কাসা, পিতল, বোঞ্জ করে দিয়েছি।।

মাইর কারে কয়, আমি দুই হাত মাথার উপর তুলে শিল্ট তৈরি করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম মাইর ঠেকাতে।।

তখন দেখি ঘ্যাচাং একটা শব্দ হইলো।। শান্তা কই থেকে কেচি এনে আমার চুলের উপর চালিয়ে দিয়েছে।। হাত দিলাম দেখি একগাছা চুল আমার হাতে চলে এলো।।

এবার আমি মাথা তুলে তাকালাম।। শান্তা শক্ত করে ডাকিনী দলের সর্দানীর মত আমার দুই হাত চেপে ধরলো, কেচিটা আম্মু তার আগেই নিজের হাতে তুলে নিয়েছে।। আম্মু এবার নিজেই দিলো আমার চুলে ঘ্যাচাং।। বুঝতেছি, আমি সেই লেজ কাটা বানরের মত হয়ে গেছি, এরা আমাকেও বেল্লু করার ব্যবস্থা করবে।।

আমরা এখন মা, বোন সবাই মিলে বেল্লু ফ্যামেলি।। গরমে বেশ শান্তিতেই আছি।। আফসোস, আব্বা চট্টগ্রাম থাকে, যদিও বেচারার মাথায় আগেই তেল চকচকে টাক, শুধু চান্দির সাইড দিয়ে কয়েক গাছি চুল আছে।। এটা না থাকলে আমরা হয়ে যেতাম কমপ্লিট টাকলু ফ্যামেলি।।

আসলে শান্তা আর আম্মার চুল এমন ভাবে ঘুমের মধ্যে জড়িয়ে ছিলো, আমি কাটতে গিয়ে দুজনের চুলই কেটে ফেলেছি।। যদিও আম্মার চুলের গোড়ার দিকে ঠিকই ছিলো, বব কাট দিয়েই আপাতত সামলে নেয়া যেতো।। কিন্তু, শান্তার নাড়ু হওয়া ছাড়া উপায় ছিলো না।। তবে শান্তার অগ্নি চেহারা দেখে আম্মুও নাড়ু হয়ে গেছে।। আর আমি তো আমিই!! শান্তা আর আম্মু কি সুন্দর মাথায় কালো কাপড় বেঁধে, হিজাবে নিজের মাথা ঢেকে বের হয়।। আমি বেচারা ক্যাপ কিনে নিয়েছি, তাও ভালো এখন কেউ ক্ষেপায় না- নাইড়া মাথা চার আনা, চাবি দিলে ঘুরে না।।

…………
আব্বা একটু আগে চট্টগ্রাম থেকে বাসায় আসলো, এসে আমাদের দেখে বেচারার চেহারা দেখার মত হয়েছে।। উনি ব্যাগ থেকে একে একে জিনিস বের করছেন, সানসিল্ক শ্যাম্পুর বড় টিউব, ডাব কন্ডিশনার, একটা হেয়ার ড্রায়ার, হেয়ার স্ট্রেইটনার মানে এইগুলা সে এইবার চট্টগ্রাম থেকে আমাদের জন্যে নিয়ে এসেছে।। বুঝলাম না অন্যসময় জামা কাপড় বা অন্যকিছু আনে, এইবার এইগুলা আনার মানে কি।। উনাকে যদিও জানানো হয় নাই, উনার বউ, ছেলে, মেয়ে সব সিবাজির মত টাকলা বস সেজে বসে আছে।।
আম্মু চুলের যত্নের এইসব প্রসাধনী দেখে সোজা ক্ষুর নিয়ে এলো।। আমাদের নাড়ু হবার উদ্দেশ্যে এই ক্ষুর কেনা হয়েছিলো।। এসেই আব্বাকে বলে- এই যে শুভনের বাপ, বাথরুমে চলেন।। কি মনে করে এবার শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এইসব আনলেন।। আপনের টাক্কু মাথাটাই এখন চেঁচে দিবো।।

বাপজান মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন- চলো কি আর করার।।

উই আর নাউ, ফুল অফ টাক্কু ফ্যামেলি।। 


ফেসবুকে আমাদের চারজনের মাথা এক করে উপর থেকে তোলা একখানা ছবি পোস্ট করেছিলাম।। আর ক্যাপশনে লিখে দিয়েছিলাম-
আমরা কুত্তামারা গরমের চোটে অফিসিয়ালি পরিবারের সবাই নাড়ু হয়ে গেছি।। চাইলে আপনিও হতে পারেন, গরমের শান্তি।। আমাদের বাসায় যেই আসবে, তাকেই বাধ্যতামূলক নাড়ু করে দেয়া হবে।।

ছোট মামা এই মাসে টাংগাইল থেকে আমাদের বাসায় আসার কথা ব্যবসায়ের কাজে।। সে প্রতিমাসে এসে আমাদের বাসায় এক দুইদিন থাকেন।। এই মাসে কল করে মামা জানালো, আপাতত আসবে না।।

অথচ আম্মা গোপনে গোপনে খবর পাইছে, সে ঢাকা এসে কোন এক আবাসিক হোটেলে থাকতেছে।। আম্মার রাগ দেখে কে, ছোট ভাই নাড়ু হবার ভয়ে আবাসিক হোটেলে থাকতাছে, আম্মা ঘোষণা দিছে, এইবার পাথরাইল মানে আমার নানু বাড়ি সে ক্ষুর নিয়েই যাবে, ছোট ভাইকে পরিবারসহ নাড়ু করাই হবে তার একমাত্র লক্ষ্য।।

এদিকে আমার বিয়ে পিছিয়ে গেলো, এখন নাকি বউ ঘরে তুললে তাকেও নাড়ু করে দিবে আম্মা।। অথচ আগামী মাসে আমার বিয়ের পাকা কথা হবার কথা ছিলো।। কিন্তু ওই বাড়ি থেকে যেই আসবে তাকেই নাড়ু করে দেয়া হবে।।

ও হ্যাঁ, অনেকদিন ধরে বন্ধুদের এত্তগুলা মিস করতেছি, ওরা কতদিন আমার বাসায় আসে না।। কেউ আসবি নাকি রে- সোনার চান পিতলা ঘুঘুরা??

………...
সমাপ্ত!!

Wednesday, April 17, 2019

ভালবাসা নাকি অভিশাপ

ছােটো থেকেই রিয়ার বড় চুলের খুব শখ ছিল -ঠিক মায়ের মতাে। মা যখন কোমর ছাপানো চুলের বিনুনি বাঁধত, রিয়ার খুব ইচ্ছা হতাে তারও অমন চুল হবে। কিন্তু স্কুলে লম্বা চুল নিষেধ থাকায় প্রতি দু'মাস অন্তর মা ওর চুল কেটে দিত।
যেদিন চুল কাটা হতাে সেদিন রিয়া সারাদিন কান্নাকাটি করেই কাটাত। মা-বাবা অনেক বুঝিয়ে, আদর করে, গল্প বলে খাবার খাওয়াত। বাবা মেয়েদের মন ভােলাতে বেড়াতে নিয়ে যেত। এখন সেসব ছেলেমানুষির কথা মনে পড়লে রিয়ার হাসি পায়।
কলেজে ওঠার পর চুল লম্বা করার ছাড়প মিলেছিল। ঘন কালো এক আকাশ চুল নিয়ে রিয়া কলেজ যেত। সেই চুল যেমন অনেক মেয়ের মনে হিংসার উদ্রেক করত, তেমনি বহু ছেলের বুকে দোলাও লাগাত। 
বিকাশ একদিন আর থাকতে না পেরে প্রেম নিবেদন করে বসল রিয়াকে। কলেজে সেটা তাদের দ্বিতীয় বর্ষ। দিনটা আজও মনে আছে রিয়ার - পয়লা বৈশাখ ছিল সেদিন। মায়ের লাল পেড়ে ঢাকাই পরেছিল রিয়া, লম্বা চুল বিনুনি বেঁধে একটা গােলাপ লাগিয়েছিল।
বিকাশের কথায় রিয়া হেসে বলেছিল - "বিয়ের পর যদি চুল কেটে ফেলি, তখন কি করবি?”
বিকাশ একটুও না ভেবে ফাজলামো মিশিয়ে বলেছিল - তোকে ধরে রেখে দেব আর চুল বেড়ে ওঠার অপেক্ষা করব।
সেদিনের ফাজলামি গভীর অনুরাগে পরিণত হয়েছিল তৃতীয় বর্ষের শেষে এসে, যখন দুজনের রাস্তা আলাদা হয়ে গেল।
- "কখনো চুল কাটিসনা রিয়া। যখনই তুই চুল কাটবি, মনে করবি আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে যাচ্ছে। 
"আবার ফাজলামো করছিস! ভাল করে মন দিয়ে MBA করে আয়।”
"তুই কখনও আমাকে seriously নিলি না রিয়া। একদিন এর মর্ম বুঝবি।” ছদ্ম অভিমানে বলেছিল বিকাশ।
এতদিন বাদে রিয়া ভাবে, সত্যি কি সবটাই মিথ্যে ছিল!? কিছুই কি ছিল না বিকাশের মনে? আর রিয়ার মনে?
"ম্যাডাম, এরপর আপনি আসুন!” পার্লারের মহিলার গলার আওয়াজে বাস্তবে ফিরে আসে রিয়া।
ধীর পায়ে চেয়ারে গিয়ে বসল। সামনে বিশাল একটা আয়না, যেটা দিয়ে পিছনের আয়না দেখা যাচ্ছে - আর দেখা যাচ্ছে রিয়ার মেঘের মতাে চুল.… 
বিয়ের পর সন্দীপ বলতাে - প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস...তােমার চুলে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ
"যা:, রবিঠাকুরকে বিকৃত কোরাে না…!”
- বিকৃত কোথায় করলাম...এটাকে ধার করা বলে!" ফিচেল হাসি হেসেছিল সন্দীপ। 
ইতিহাসে মাস্টার্স করে একটা স্কুলে চাকরী নিয়েছিল রিয়া। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রিয়াকে পছন্দ করেন তার ভাইপাের জন্য। সন্দীপ software engineer, দেখতে-শুনতে ভালােই, বেশ মােটা অঙ্কের টাকা হাতে আসে মাস গেলে। উপরোন্ত সদ্য আমেরিকা থেকে ফিরেছে। রিয়া বা রিয়ার মা-বাবার আপত্তি করার কোনো কারণ তাে ছিলোই না, বরং মেয়ের জন্য এমন সােনার টুকরাে ছেলে পেয়ে তারা আর দ্বিতীয়বার ভাবেননি। এক মাসের মধ্যে বিয়ে হয়ে যায় রিয়া আর সন্দীপের।
নতুন সংসারে বেশ ভলােই মন বসছিল রিয়ার। বাড়িতে রিয়া, সন্দীপ, সন্দীপের মা আর কাজের মহিলা কমলা। রিয়া স্কুল সামলে টুকটাক রান্না শিখছিল শাশুড়ির কাছে। একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখল সন্দীপ ফিরে এসেছে, খুব টেনশনে। 
- কি হয়েছে সন্দীপ?
- এইতো তুমি এসে গেছ। ফোন ধরছিলে না কেন? কতবার ফোন করছি!

রিয়ার মনে পড়ল, ক্লাস নিতে যাওয়ার আগে ফোনটা silent করেছিল। তারপর বেরোনোর তাড়াহুড়ােতে আর ঠিক করা হয়নি।
- “যাকগে...আমার বস আসছেন। বিয়েতে আসতে পারেননি, তাই আজ সন্ধ্যায় তােমার সাথে দেখা করতে আসবেন।dinner করে যাবেন। উনি আবার বাঙালী রান্না খেতে ভালোবাসেন।” 
-"ও..আমি এখুনি মায়ের সাথে কথা বলছি...কি কি বানানাে যায় দেখি।”

সন্ধ্যা হতেই মি.শমিত গুপ্তা হাজির হলেন নিজের স্ত্রীকে নিয়ে। সন্ধ্যেটা ভালােই কাটল। মি. গুপ্তা রান্নার পাশাপাশি রিয়ার চুলের খুব প্রশংসা করলেন। এত সুন্দর চুল উনি নাকি কারোর দেখেননি। রিয়া সেদিন চুলটা খুলে রেখে একপাশে একগুচ্ছ রঙ্গন ফুল লাগিয়েছিল। একবার তাে মজা করে শমিত গুপ্তা বলেই ফেললেন, "সন্দীপ যদি রাজি থাকে তিনি বৌ পাল্টাপাল্টি করবেন।" রিয়া আরক্ত মুখে সন্দীপের দিকে তাকিয়েছিল - সন্দীপ খুব নির্বিকারভাবে বসের সাথে হাসছিল।

সেদিন রাতেই ঘটনাটা ঘটল। রিয়া কাজ সেরে আয়নার সামনে বসে চুল বাঁধছিল। সন্দীপ ঘরে ঢুকল - মদ্যপ অবস্থায়। বসকে সঙ্গ দিতে আজ একটু বেশী খেয়ে ফেলেছে। রিয়া কিছু বলেনি, কারণ ও জানে সন্দীপ খুব সংযত। এরকম আগেও এক-দুবার হয়েছে এবং সন্দীপ সােজা শুয়ে পড়েছে, রিয়াকে একটুও বিরক্ত না করে। কিন্তু যেদিন বিয়াকে অবাক করে দিয়ে অন্য এক সন্দীপ বেরিয়ে এসেছিল - “চুলের খুব বাহার হয়েছে না? দেখনদারি শুধু...আজ তােকে দেখাব ঐ চুল কি করে থাকে তোর!”

খুব নােংরা ভাষায় কথা বলছিল সন্দীপ আর তারপর রিয়ার চুল ধরে টেনে মাটিতে আছড়ে ফেলে দিয়েছিল ওকে। রিয়া চিৎকার করতে পারেনি - প্রচন্ড বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিল। এরপর থেকে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকে, যখনই কেউ রিয়ার চুলের সুখ্যাতি করে। অথচ অন্য সময় সন্দীপ একদম অন্য মানুষ। দুবার ক্ষমাও চেয়েছে। রিয়ার কাছে। রিয়া বাড়িতে জানাবে জানাবে করেও কিছু বলতে পারেনি। শাশুড়ি সব জেনে বুঝেও চুপ করে থাকতেন। একদিন রিয়াকে ডেকে কিছু পূজোর ফুল দিয়ে বলেন:

- ‘আমি দীপের জন্য পূজো দিয়েছি; এই ফুলটা ওর বালিশের তলায় রেখাে, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ একটু থেমে বললেন, 'আমি সবটা জানি...কিন্তু কি জানাে মা, সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে।' 
রিয়া শাশুড়ির কথার তাৎপর্য বুঝতে পারেনা, এটাও বুঝতে পারে না এখানে রিয়ার কি দোষ! এরমধ্যেই রিয়ার গর্ভে আসে সন্দীপের সন্তান। সবাই খুব খুশী হয় এই সংবাদে। সন্দীপ নিজের আনন্দ ধরে রাখতে পারে না - চলো, কোথাও ঘুরে আসি। এইসময় মন ভালো থাকা খুব দরকার।

রিয়া একটু হলেও আশ্বস্ত হয়, হয়তো সন্তানের আগমন সন্দীপকে বদলে দেবে। বেশ ভালোই কাটছিল পুরীতে দিনগুলো। এক সপ্তাহ ছুটি নিয়ে গেলেও রিয়ার অনুরােধে আরও দুদিন থেকে যায় ওরা। সেদিনও সূর্যোদয় দেখে ফিরছিল…সন্দীপের হাত রিয়ার কোমরে জড়ানাে... দুজনেই দুজনের শরীরের ওম দিচ্ছিল…হঠাৎ

"আরে রিয়া না!! হ্যাঁ রিয়াই তো....” 
বিকাশকে প্রথমে চিনতে পারেনি রিয়া। চাপদাড়ি আর রিমলেস চশমায় একদম অন্যরকম লাগছিল ওকে।

- '‘ম্যাডাম, চুলটা শ্যাম্পু করতে হবে। প্লিজ একটু wash basin-এ আসুন।’'

ঘাড়ে তােয়ালে জড়িয়ে মাথা নামিয়ে দেয় রিয়া। ঠান্ডা জলের স্রোত ভিজিয়ে দিতে থাকে রিয়ার মনের মেঘ।

"চলো সন্দীপদা, সমুদ্রে গা-টা ভিজিয়ে আসি।

দেখা হওয়ার পর থেকেই বিকাশ ওদের সঙ্গী। সন্দীপ শুধু জেনেছে ওরা একসাথে কলেজে পড়ত। এতদিন বাদে বিকাশকে দেখে রিয়াও কলেজের দিনে ফিরে গেছিল। 
- "আমিও যাব।" রিয়ার আদুরে আবদার সন্দীপ ফেলতে পারে না। রিয়া খোঁপা বাঁধা চুলটা খুলে দেয়। পুরাে জলে না নেমে বসে পড়ে...সমুদ্র এসে ভেজাতে থাকে রিয়ার চুল।

- “চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ’পর
হাল ভেঙে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, এতদিন কোথায় ছিলেন? 
পাখির নীড়ের মতাে চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।

বিকাশের মুখে জীবনানন্দ শুনে রিয়া এবং সন্দীপ দুজনেই অবাক। পরিস্থিতি হালকা করে রিয়া নিজেই বলে উঠলাে -

- "ফাজলামো করা এবার বন্ধ কর।” সবাই হেসে ওঠে একসাথে।

কিন্তু সন্দীপ যে এটা এত সহজে মেনে নেয়নি সেটা বাড়ি ফিরে বুঝতে পারে রিয়া। আকন্ঠ মদ্য পান করে এসেছিল সেদিন। রিয়ার লম্বা, মােটা বেণীটা গলায় পেঁচিয়ে ধরেছিল সর্বশক্তি দিয়ে ততক্ষণ, যতক্ষণ না রিয়া অজ্ঞান হয়ে নেতিয়ে পড়েছিল।

জ্ঞান এসেছিল হাসপাতালের ঠান্ডা ঘরে, আর তখনই অনুভব করে পেটে অসহ্য ব্যথা। পাশে মা আর শাশুড়ি দাঁড়িয়ে - দুজনের চোখেই জল। 
- "ম্যাডাম, শুধু ট্রিম করব? নাকি length একটু ছােট করবেন?
- “ছােটো করব...”
দুদিন বাদে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে রিয়া। সন্দীপ হাসপাতালে যায়নি। রিয়া যেদিন ফেরে, সেদিনও অনেক সকালে অফিস বেরিয়ে গেছিল। মাঝরাতে ফিরে ড্রয়িং রুমেই শুয়েছিল, রিয়ার ঘরে ঢােকেনি। সপ্তাহ খানেক পরে রিয়া কিছুটা সুস্থ বোধ করে...সন্দীপ ঘরে আসে - আমাকে ক্ষমা করাে রিয়া...আআআমি কিছু ভেবে...মানে.. আমি তাে বাচ্চা চেয়েছিলাম... কিন্তু ক্কি কি যে হলো...”
রিয়া মুখ ফিরিয়ে থাকে, জানলা দিয়ে রাস্তা দেখতে থাকে...
-"ম্যাডাম, আর কাটব?” 
-“হ‍্যাঁ" 
-"ম্যাম, এত সুন্দর চুল...সামনেটা layers কেটে নিতে পারেন
- "আপনাকে বললাম তো ছোট করে কাটতে
কাঁচি চলতে থাকে- রিয়ার চুলের সাথে মনেও। পার্লারের মেয়েটি অবিশ্বাস ভরা চোখ নিয়ে রিয়াকে দেখে "আরও ছােট করব ম্যাডাম?”
কোমর ছাপানাে চুল কাঁধে এসে দাঁড়িয়েছে।
- “আরও ছােট!” রিয়ার দৃষ্টি স্থির আয়নার দিকে।
আবার কাঁচি চলে। কাঁধের চুল ঘাড় অবধি। কাঁচি থামিয়ে রিয়ার দিকে তাকায় মেয়েটি “আরও ছােট!" রিয়ার দৃপ্ত কণ্ঠে পার্লারে থাকা বাকিরাও ঘুরে দেখে। মালিক ভদ্রমহিলা এগিয়ে আসেন “are you sure ma'am?” 
রিয়া মাথা ঝাঁকায়।
"ছােট করে দিন...যতটা ছােট করা যায়...ও যেন আর চুল ধরতে না পারে...আমার বাচ্চাকে কেড়ে নিতে না পারে…" ডুকরে কেঁদে ওঠে রিয়া....! 

কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
কবিতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জীবনানন্দ দাশ।
গল্প অনুপ্রেরণা- টেলিভিশনে দেখা বিজ্ঞাপন। 

[মমস্প্রেসোতে ২০১৯ সালের ১৭ই এপ্রিলে একই শিরোনামে পাবলিশ করা সংগৃহীত গল্প। লেখিকা রিতা সিনহা]

গ্রামীণ নাপিত~আনন্দ (শেষার্ধ)

"আহা…ঠিক আছে…" তিনি বললেন যখন আমি তার বাক্সের দিকে অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে তাকালাম তার কাছে কোন ধরনের রেজার আছে তা দেখতে। সৌভাগ্যবশত ...