Tuesday, March 31, 2020

নারীরা চুল ছোট করলে যেসব কথা শুনতে হয়

মেয়ে মানেই যেন লম্বা চুল, কাজল টানা চোখ আর লাজুক হাসি। মেয়েদের এমন চেহারাই যেন ঠিক করে দিয়েছে সমাজ। ছোট চুলে আবার স্টাইল হয় নাকি? ওরা আবার মেয়ে নাকি? ছোট চুল মানেই তো টম বয়। ছোট চুলের মেয়েদের আজও শুনতে হয় নানা হাস্যকর মন্তব্য। জেনে নিন তেমনই কিছু।

১. একি! চুলের কী হল?

২. কী ছোট চুল তোমার!


৩. আমি এত ছোট করে কাটতেই পারবো না চুল।

৪. তোমাকে কিন্তু বড় চুলে খুব সুন্দর লাগবে।


৫. আমাকে এত ছোট করে কাটলে পুরো ছেলেদের মতো লাগবে।

৬. লম্বা চুলের যা ঝক্কি তুমি আর কী বুঝবে!


৭. একটু লম্বা চুল না হলে শাড়ি পরলে মানাবে কী করে?

৮. এই চুল নিয়েই বিয়ে করবে?


৯. তোমাকে ছেলেদের মতো দেখাচ্ছে!

১০. ছেলেদের মতো চুল কেটেছো কেন?

[সংগৃহীত]

Monday, March 30, 2020

ছোট চুল রাখার উপকারিতা

১. সময় সাশ্রয়
ছোট চুলে ঝামেলা কম। ছোট চুল রাখার উপকারিতা হল সময় সাশ্রয়। ব্যস্তময় জীবনে চুলের যত্ন নেওয়া একটু মুশকিল হয়ে ওঠে। বড় চুল ঠিকমতো খেয়াল রাখা হয় না যার ফলে চুল অকালে ঝরে পড়ে। তাই কর্মরত মহিলাদের জন্য ছোট চুল রাখা একটি সুবিধা সময় সাশ্রয়। ছোট চুল খুব সহজেই আঁচড়ানো যায় আর সময়ও কম লাগে।

২. অর্থ সাশ্রয়
লম্বা চুল পরিপাটি ও ভালো রাখার জন্য বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করতে হয়, যা খানিকটা ব্যয়বহুল। আপনি চুল ছোট করে ফেললে আপনার চুলের পিছনে খরচ হওয়া প্রসাধনী কেনার বাড়তি টাকা বাঁচাতে পারেন।

৩. গরমকালে ছোট চুলের উপকারিতা
গরম কালে ছোট চুল রাখার একটা সুবিধা আছে ভেবে দেখেছেন কখনো? গরমে ছোট চুল রাখলে গরম কম লাগে। এছাড়াও গরমে ধুলো বালি, দূষণের হাত থেকে চুল রক্ষা করা সম্ভব হয়। তাই বুঝতেই পারছেন গরমকালে চুল সুরক্ষিত রাখার সহজ বিকল্প ছোট চুল।

৪. ছোট চুলের রক্ষণাবেক্ষণ
ছোট চুল রক্ষণাবেক্ষণ করতে সুবিধাজনক। বিশেষ করে অফিসের কর্মরত মহিলাদের সময়ের অভাবে বড় চুল পরিষ্কার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই তাদের জন্য ছোট চুল রাখা ভালো বিকল্প। কারণ ছোট চুল রাখলে ওয়াশ করা সম্ভব এবং তাড়াতাড়ি শুকিয়ে নেওয়া যায়। তাই আপনি যদি অফিসে কাজ করেন এবং একইরকম সমস্যার মুখোমুখি হন, তাহলে চুল ছোট রাখতে পারেন।

৫. ধুলোবালির হাত থেকে রেহাই মেলে
বড় চুল রাখলে রাস্তার ধুলোবালিতে চুল নষ্ট হয়ে যায়। চুলের মারাত্মক ক্ষতি হয়, চুল পড়তে শুরু করে এবং খুব তাড়াতাড়ি ড্রাই হয়ে যায়। তাই এইসব ঝামেলা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ ছোট চুল। তাই চুল ভালো রাখতে হলে মাঝে মাঝে চুল কেটে ছোট করে নিন।

৬. রোগ মুক্ত থাকা
লম্বা চুলের যত্ন না নেওয়া হলে অনেক রোগ হতে পারে। বিশেষ করে মাথাব্যথা ও বিভিন্ন চর্ম রোগ হতে পারে। এ ছাড়া চুল শরীর থেকে অনেক পুষ্টি শোষণ করে। তার মানে এ নয় ছোট চুলে যত্ন নিতে হয় না। একটু কম লাগে আর কি!

[সংগৃহীত]

Sunday, March 29, 2020

ছোট ভাইয়ের দুষ্টামির ফল


রোশান ও রোশনি দুই ভাইবোন। রোশনি বড়, তার বয়স প্রায় ১৯ সে একটি গার্লস কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছে। তার ভাই রোশানের বয়স ৭ সে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ২য় শ্রেণিতে পড়ছে। তাদের বাবা-মা দু'জনেই চাকরিজীবী তাই তাদের তেমন সময় দিতে পারেন না। যাই হোক লোকে বলে পিঠাপিঠি ভাইবোনদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি ও মারামারি বেশি হয়। কিন্তু রোশান ও রোশনির বয়সে বিরাট ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও তাদের মধ্যেও প্রচুর ঝগড়াঝাটি, হাতাহাতি হয়। দুজন দুজনকে প্রায় সহ্যই করতে পারে না। অবশ্য এর পিছনে রোশানের দুষ্টুমির অবদানই বেশি। রোশান সবসময়ই সুযোগ খুঁজে তার বড় বোনকে বাবা-মায়ের হাতে মার খাওয়াতে। কিন্তু রোশনি তার বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে হওয়ায় এবং রোশানের দুষ্টুমির মাত্রা সম্বন্ধে অবগত থাকায় তারা রোশনিকে সামান্য বকাঝকা ছাড়া অন্য শাস্তি দেন না। 

একদিন রোশান তার বোন যখন বাড়িতে ছিল না তখন তার রুমে ঢুকে তার ড্রেসিং রুমে মেকআপের সামগ্রী বের করে তার রুমের দেয়ালে আঁকিবুকি করে। তারপর রোশনি কয়েকদিন আগে একটি কমিক্স বই এনে তার রুমে রাখে। রোশানের তখন পরীক্ষা থাকায় তাকে তার বোন সেটা পড়তে দেয়নি। রোশান সেটা খুঁজতে গিয়ে রোশনির পুরো রুম অগোছালো করে ফেলে। বাইরে থেকে এসে রোশনি তার রুমে ঢুকে এই অবস্থা দেখে ভীষণ খেপে যায় তাই সে তার বাবা-মায়ের রুমে গিয়ে রোশানকে খাট থেকে টেনেহিঁচড়ে তার রুমে নিয়ে এসে তার রুম গুছিয়ে দিতে বলে। রোশান রাজি হয় না তাই রোশনি তার পিঠে দুমদাম কয়েকটা কিল বসিয়ে দিলো। রোশানও পাল্টা তার বোনকে আঁচড়ে ও কামড়ে দেয় এবং সন্ধ্যানাগাদ তাদের মা ফিরে আসলে বোনের নামে মায়ের কাছে নালিশ করে। তাদের মা তাদের দুজনকেই বকুনি দিয়ে রোশানকে রোশনির রুম গুছাতে বলেন। রোশান এতে মনঃক্ষুণ্ণ হয় এবং রোশনির রুমে গিয়ে জিনিসপত্র ছোঁড়াছুঁড়ি করে। রোশনি তাদের মাকে ডেকে দেখালে তাদের মা ধৈর্য হারিয়ে রোশানের গালে চড় দেন। রোশান কাঁদতে কাঁদতে তাদের রুমে যায়। আর রোশনি নিজেই তার রুম গোছানো শুরু করে। 

এর কিছুদিন পর তাদের বাবা অফিস থেকে ফেরার পথে কিছু চকলেট ও চাটনি এনে তা রোশনির হাতে দিয়ে বলেন দুই ভাইবোনে ভাগ করে খেতে। কিন্তু রোশান যেহেতু সেদিন রোশনির রুমে দুইবার গিয়ে সব তছনছ করেছিল তাই রোশানকে শাস্তি দিতে রোশনি ঠিক করে সে রোশানকে এসব চকলেট ও চাটনির ভাগ দেবে না। যাই হউক রোশান তার বাবার কাছে শুনে রোশনির কাছে তার নিজের চকলেট ও চাটনির ভাগ চায় কিন্তু রোশনি ততক্ষণে সব সাবাড় করে দিয়েছে। রোশান তার বাবার কাছে অভিযোগ দেয় কিন্তু তাদের বাবা তাকে এই বলে সান্ত্বনা দেয় যে তাকে পরে আলাদা করে চকলেট ও চাটনি কিনে এনে দিবেন। কিন্তু রোশান সন্তুষ্ট হয় না; সে রোশনির উপর বদলা নিতে চায়। সে একা তার পড়ার টেবিলে বসে আনমনে ড্রয়িং বুকে আঁকাআঁকি করতে করতে ভাবে কি করলে রোশনিকে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া হবে। অবশেষে তার ছোট মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল। সে দেখেছে রোশনি তার চুলের পিছনে বেশ সময় ব্যয় করে। সে ঠিক করে সে রোশনির চুল কেটে দিবে। দুষ্ট হাসি হেসে সে তার মায়ের ড্রেসিং রুমের ড্রয়ার থেকে বড় একটা কাঁচি বের করে। তারপর সে কাঁচিটা তার ও তার বাবা-মায়ের শোবার ঘরে খাটের তলায় লুকিয়ে রাখল। দিনের বেলায় কোনভাবেই রোশনির চুল কাটা সম্ভব নয় তাই সে রাতে যখন সবাই ঘুমাবে তখন চুপিচুপি রোশনির চুল কেটে আসবে ঠিক করে। যেই ভাবা সেই কাজ, রাতে সবাই খেয়ে যার যার ঘরে ঘুমোতে গেল। রোশনি আধাঘণ্টা পড়ার টেবিলে বসে বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়ল। 

রোশনির ঘুম হয় খুব গভীর। আরো আধাঘণ্টা পর যখন রোশান নিশ্চিত হয় যে তার বাবা-মাও ঘুমে আচ্ছন্ন তখন সে তাদের মাঝখানে থেকে উঠে সন্তর্পনে খাট থেকে নেমে খাটের তলা থেকে কাঁচিটা বের করে আস্তে করে দরজা খুলে রোশনির রুমের সামনে যায়। রোশনির রুমের দরজা খোলাই ছিল। সে যখন ঢুকতে যায় তখন রোশনি হঠাৎ পাশ ফিরে শোয়ায় রোশান ভয় পেয়ে দরজার সামনে থেকে সরে আসে। পরে উঁকি দিয়ে গুটিগুটি পায়ে রোশনির খাটে এসে বসে পড়ে। রোশনির চুল পাতলা, স্ট্রেইট করা ও বেশ সিল্কি এবং পিঠের মধ্যভাগের খানিকটা ওপর পর্যন্ত দীর্ঘ। রোশান ৫ মিনিট অপেক্ষা করে রোশনি ঘুমিয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করে তারপর রোশনির কিছু চুল আলগা করে মুঠি করল তারপর তাতে কাঁচি চালালো। সে কয়েকবার এরকম করে তারপর নিজেদের ঘরে গিয়ে দরজা আটকে কাঁচিটা লুকিয়ে বাবা-মায়ের মাঝে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। 

সকালবেলা তার ঘুম ভাঙ্গে রোশনির চিৎকারে। ঘুম থেকে উঠেই রোশনি এসে তার বাবা-মায়ের দরজায় জোরে কড়া নাড়ে আর চিৎকার করে বলে রোশানকে আজ আমি মেরেই ফেলব। তাদের বাবা-মা লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দেখে রোশনি তার হাতে একগাছি চুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে; রোশনির মাথার চুল এলোমেলো করে কাটা। সে ঢুকেই রোশানের দিকে তেড়ে যেতে লাগল কিন্তু তাদের বাবা-মা তাকে নিরস্ত করল। প্রত্যেকেই বুঝতে পারে যে কাজটা রোশানই করেছে কারণ তার পায়ে রোশনির চুল লেপ্টে ছিল। রোশানও ততক্ষণে ঘুম থেকে উঠে গেছে কিন্তু তার আনন্দের জায়গায় ভয় লাগছে। অতঃপর তাদের বাবা-মা রোশনিকে শান্ত করে হাত-মুখ ধুয়ে নাস্তা সেরে তৈরি হতে বললেন। 

সকলে হাত-মুখ ধুয়ে নাস্তা খেলেন তারপর রোশনিদের মা তাদের ২ ভাইবোনকে নিয়ে গাড়িতে করে পরিচিত পার্লার অভিমুখে যাত্রা করলেন। পার্লারের মালকিন রোশনির চুলের অবস্থা দেখে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তাদের মা সব খুলে বলেন। মালকিন হেসে রোশানের গাল টেনে দিয়ে তাদের ৫ মিনিট বসতে বলেন। ৫ মিনিট পর একটা চেয়ার খালি হলে রোশনি সেখানে বসে। রোশনির মা বিউটিশিয়ানকে বয়কাট দিতে বলেন কিন্তু বয়কাট রোশনির মুখের গড়ন আর চুলের পুরুত্বের সঙ্গে মানানসই হবে না বলে বিউটিশিয়ান চিনলেংথ ববকাট দিলে ভালো হবে বলে জানান। অতঃপর রোশনির গলায় কেপ বেঁধে প্রথমে তার চুল শ্যাম্পু করা হয়। এরপর মাথা ধুয়ে তার অসমান চুল কেটে সমান করে দেন। তারপর কপালের সামনে কিছু ঝুলানো চুল (Bangs) রেখে কাটা শেষ করেন। তারপর তার মা ও বসেন চুল কিছুটা ট্রিম করাতে। সবশেষে বিউটিশিয়ানদের পারিশ্রমিক দিয়ে রোশনি-রোশান ও তাদের মা গাড়ি করে বাড়ি ফিরে আসেন। রোশান অবশেষে বুঝল তার শোধ নেওয়াটা খুব বেশি কার্যকরী হয় নাই।

Saturday, March 28, 2020

অপমানের প্রতিবাদ

মিঃ শরীফ একজন চাকরিজীবী। স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়ে তাদের একটি ছোট সুখী পরিবার। তার ১২ বছর বয়স্ক মেয়ে একটি গার্লস স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। আর তিনি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে সহকারী ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত আছেন। তার বাসা তার অফিসের নিকটে হওয়ায় প্রতিদিন দুপুরে লাঞ্চ ব্রেকে তিনি তার নিজের বাসায় দুপুরের খাবার খেতে আসেন। একদিন তিনি বাসায় খেতে আসলেন তবে কিছুটা রুক্ষ মেজাজ নিয়ে কারণ তার সহকর্মীদের সঙ্গে সেদিন তার বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। সম্প্রতি তার অফিসে একজন সিনিয়র ব্যবস্থাপক অবসরে যাওয়ায় অফিসে ব্যবস্থাপকের একটি পদ খালি হয়। মিঃ শরীফসহ মোট ৮ জন সহকারী ব্যবস্থাপক সেই পদে পদোন্নতি পেতে প্রতিযোগিতা করছেন। প্রত্যেকেই চাইছেন তাকেই যেন পদোন্নয়ন করা হয়। সেদিন মিঃ শরীফের ডেস্ক থেকে একটি হিসাবের খাতা স্বাক্ষরিত হয়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কাছে দেবার কথা ছিল কিন্তু তা ঠিক সময়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার টেবিলে না পৌঁছানোয় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা একজন ব্যবস্থাপকের কাছে মিঃ শরীফের নামে নালিশ করেন। এই সুযোগে অন্য সব সহকারী ব্যবস্থাপক একযোগে মিঃ শরীফকে চেপে ধরে। মিঃ শরীফ সবার সঙ্গে তর্কাতর্কি করে মেজাজ গরম করে বাসায় আসেন।

মিঃশরীফ বাসায় এসেই খাবারের জন্য চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন। তার স্ত্রী জলদি করতে গিয়ে থালাবাসন ফেলে দেন। মিঃ শরীফ তৈজসপত্র পড়বার আওয়াজ শুনে আরো ক্ষিপ্ত হন। তিনি তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল দেন। তার স্ত্রী কোনো উত্তর না দিয়ে মিঃ শরীফকে খাবার বেড়ে দেন। মিঃ শরীফ তরকারি দিয়ে ভাত মেখে গোগ্রাসে গলাধঃকরণ করছেন হঠাৎ তার গলায় কি যেন পেঁচিয়ে গেল আর তিনি গিলে ফেলা ভাত উগড়ে দিলেন। মিঃ শরীফ উগড়ে ফেলা ভাত থেকে আঙ্গুল দিয়ে একটা লম্বা চুল বের করেন। তারপর তিনি তার স্ত্রীর দিকে পুনশ্চ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। মিঃ শরীফের সঙ্গে তার একমাত্র মেয়েটিও খেতে বসেছিল। মেয়েটি মাথা নিচু করে সব শুনছিল। এদিকে মিঃ শরীফের মুখে গালাগাল শুনে তার স্ত্রী ভীষণ দু্ঃখ পেয়ে কেঁদে ফেললেন। মিঃ শরীফ একপর্যায়ে খাবার টেবিল ছেড়ে উঠে যান ও তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন “তোর ঐ চুল কাইটা ফেলাইস” এবং দরজা খুলে তা সজোরে টেনে বন্ধ করে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। মিঃ শরীফের স্ত্রী মিঃ শরীফের উগড়ে দেয়া খাবার ও খাবারের থালা টেবিল থেকে সরিয়ে টেবিল পরিষ্কার করেন। তার চোখে তখনও পানি টলমল করছে। মিঃ শরীফের মেয়েও কোনমতে খাবার শেষ করে উঠে হাতমুখ ধুয়ে নিজের রুমে গিয়ে ভাতঘুম দেয়। বিকালে তার মা তাকে ডেকে তুলে বলে চল তো আমার সঙ্গে। মিঃ শরীফের মেয়ে বলে- কেন মা? মিঃ শরীফের স্ত্রী বলেন: বাইরে বের হব, তুইও চল আমার সঙ্গে। মিঃ শরীফের মেয়ে কথা না বাড়িয়ে অন্য সেট থ্রিপিস পরে নেয়। তারপর মিঃ শরীফের স্ত্রী বাসায় তালা দিয়ে দুজনে একসাথে বের হয়ে হাঁটতে আরম্ভ করেন। কিছুদূর যাওয়ার পর মিঃ শরীফের মেয়ে তার মাকে প্রশ্ন করল:-
: আমরা কোথায় যাচ্ছি মা?
: পার্লারে
: কেন মা?
: গেলেই বুঝতে পারবি।
মিঃ শরীফের মেয়ে চুপ করে তার মায়ের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে থাকেন। ২০ মিনিট পর তারা এলাকার নাম করা পার্লারের দরজায় হাজির হয়। দরজা ঠেলে ঢুঁ মারতেই ৩টি মহিলা কণ্ঠস্বর একসঙ্গে তাদের ভিতরে এসে বসতে বলল। ভিতরে ঢুকে মিঃ শরীফের স্ত্রী ও তার মেয়ে দেখল ৪টি চেয়ারের মধ্যে ১টি খালি পড়ে আছে আর বাকি ৩টিতেই কেউ না কেউ সার্ভিস নিচ্ছে। একজন ভ্রু প্লাক করাচ্ছে, একজন মেকআপ করাচ্ছে আরেকজন পেডিকিউর ও ম্যানিকিউর করাচ্ছে। অল্প কিছুক্ষণ পর ভ্রু প্লাক করাতে আসা মেয়েটি উঠে গেলেই মিঃ শরীফের স্ত্রী তার মেয়েকে বেঞ্চিতে বসতে বলে নিজে সেই খালি চেয়ারে গিয়ে বসলেন।

বিউটিশিয়ান ভ্রু প্লাক করা মেয়েটির থেকে পেমেন্ট বুঝে নিয়ে মিঃ শরীফের স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করল কি করাবেন ভাবী? মিঃ শরীফের স্ত্রী জবাব দিলেন চুল ছোট করাবো। বিউটিশিয়ান জানতে চাইলো কতটুকু ছোট করাবেন? মিসেস শরীফ বললেন- একদম ছোট। ঐ ছেলেদের মত কি স্টাইল বলে যেন সেটাকে?
 বিউটিশিয়ান : পিক্সিকাট।
মিসেস  শরীফ: হ্যাঁ সেটাই
বিউটিশিয়ান : আপনি কি শিওর। আপনার চুল তো দেখছি বেশ হৃষ্টপুষ্ট। স্কাল্পে কোনো খুশকি বা চর্মরোগও দেখছি না। তবুও কেটে ফেলতে চান এতটা চুল?
মিসেস শরীফ : (গম্ভীর গলায়) হ্যাঁ।
বিউটিশিয়ান অগত্যা চুল কাটা শুরু করলো। গলায় কাপড় বাঁধল। মিসেস শরীফ দেখলেন কাপড়ে অল্পস্বল্প চুল দেখা যাচ্ছে যেগুলো প্রায় ২/২.৫ ইঞ্চি। বিউটিশিয়ান মিসেস শরীফের চুল ভালো করে আঁচড়ে নিয়ে মাথার দুপাশে দুটো ঢিলেঢালা পনিটেল বাঁধলেন। তারপর এক এক করে দুটো পনিটেল কেটে সেগুলো দোকানের কোণে একটা ঝুড়িতে ফেললেন। এরপর মিসেস শরীফের মাথার চুল পানির ছিটা দিয়ে ভিজিয়ে সামনে খানিকটা ঝুলপি রেখে মিডিয়াম বয়কাট দিলেন। ২০ মিনিটের মধ্যে চুল কাটা শেষ। মিসেস শরীফকে দেখলে এখন অল্পবয়সী কিশোর মনে হচ্ছে। মিসেস শরীফ তবুও বলেন আরেকটু ছোট করা যেত না? বিউটিশিয়ান বলেন আপনার চেহারার সঙ্গে বেমানান হবে। এবার মিসেস শরীফ দাম দিয়ে বেরিয়ে যাবেন এমন সময় মেয়ে বলে ওঠে মা আমিও চুল কাটাবো। মিসেস শরীফ না বলতে চাইলেন কিন্তু বললেন না। তিনি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললেন। মিসেস শরীফের মেয়েও চুল কাটাতে বসল। একই ভঙ্গিতে তার চুলের কুচিতেও কাপড় ভর্তি হলো। এভাবে চুল কাটানো শেষে মা-মেয়ে বাড়ি‌ ফিরল। রাতে মিঃ শরীফ যখন বাসার দরজায় টোকা দেবার পর মিসেস শরীফ দরজা খুলে মিঃ শরীফ তাজ্জব হয়ে গেলেন। তিনি প্রথমে ভাবলেন তিনি ভুল বাসায় ঢুকে পড়লেন কিনা কিন্তু কিছুক্ষণ মিসেস শরীফের দিকে তাকিয়ে তিনি বুঝলেন তিনি নিজের বাসাতেই ঢুকেছেন। মিঃ শরীফ এরপর ফ্রেশ হয়ে খেতে বসে মিসেস শরীফকে জিজ্ঞেস করেন “তুমি চুল কাটালে কেন?” মিসেস শরীফ বলেন, “তুমি বলেছিলে বলেই কাটিয়ে ফেললাম”। মিঃ শরীফ তার মেয়েকে আর জিজ্ঞাসা করতে সাহস করলেন না। মিঃ শরীফ এরপর খাবারে আর চুল পান না আর পেলেও বুঝতে পারেন না এটা আসলে কার চুল?

Thursday, March 26, 2020

সেলুনে গিয়ে মায়ের চুল কাটানো (শেষ পর্ব)

মুহিত দেখল তার বহুদিনের লালিত আকাঙ্ক্ষা পূরণ হতে গিয়েও হচ্ছে না। সে তড়িঘড়ি বলল চল মা আমার এক পরিচিত সেলুন আছে ওখান থেকে চুল কাটিয়ে নিয়ো।
মিসেস নওশিন : ধুর ওরা কি মেয়েদের চুল কাটতে পারবে নাকি? বাদ দে। ফিরে চল। মুহিত নাছোড়বান্দা; সে বলল ধ্যাৎ মা কি যে বল না। চুল কাটা নিয়ে কথা। যে কাটতে জানে সে সবারটাই কাটতে পারে। তুমি চল তো এই বলে মুহিত তার মায়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে চলল। হরতালের দরুণ রাস্তায় যানবাহন তেমন ছিল না তবুও সৌভাগ্যক্রমে তারা একটা রিক্সা পেয়ে তাতে চড়ে বসল এবং ১০ মিনিটের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছলো। মিসেস নওশিন ভাড়া চুকিয়ে মুহিতের পিছু পিছু রোড ক্রস করে ওপারে অর্ধেক শাটার নামানো দোকানের বারান্দায় পা রাখলেন।

মুহিত শাটারে দু-তিনবার টোকা দিতেই একজন খোঁচা খোঁচা দাড়িগোঁফওয়ালা পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ভদ্রলোক শাটার তুলে হাসিমুখে বললেন এসো মুহিত বাবা ভেতরে এসো। মুহিত তার মা'র দিকে তাকিয়ে ইশারা করে ভেতরে আসতে বলল। মুহিত ঐ লোকটিকে জিজ্ঞেস করল দোকান কি আজ বন্ধ চাচা? চাচা উত্তর দেন- না বাবা দোকান তো খোলাই তবে সকাল থেকে কাস্টমার নাই আর কর্মচারীরাও হরতাল মাথায় করে আসে নাই। তো বাবা বলো কি সার্ভিস নেবা? মুহিত বলে আমি না চাচা আমার মা। চাচা খেয়াল করলেন মুহিতের পিছনে একজন মহিলা দাঁড়ানো। চাচা বলেন বসেন আপা বসেন। আজকে কি দুর্দিনে আপনি আসলেন। মুহিত তো দোকানে আসলেই আপনার কথা বলে। আজকে দেখা হইলো অথচ মেহমানদারি করতে পারতেছি না। মিসেস নওশিন হেসে উত্তর দেন ব্যাপার না। চাচা মুহিতকে জিজ্ঞেস করেন কি করাবেন তোমার মা? মুহিত বলল মাথার চুল ছাঁটাতে এসেছেন। চাচা মিসেস নওশিনকে চেয়ারে বসতে বললেন। মিসেস নওশিন মুহিতের কাছে হ্যান্ডব্যাগ দিয়ে চেয়ারে বসলেন। মুহিত তার মায়ের পিছনে আড়াআড়ি একটা চেয়ারে বসল যাতে চুল কাটা দেখবার সময় নাপিতের আড়াল না পড়ে। 

আর চাচা একটা পরিষ্কার গোলাপী রঙের কাপড় বের করে মিসেস নওশিনের গলায় বাঁধলেন। তারপর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললেন কতটুকু কাটব চুল? মিসেস নওশিন প্রথমে অস্ফুট স্বরে বললেন কাঁধ পর্যন্ত পরে মুখ তুলে আয়নার দিকে তাকিয়ে মুহিতকে জিজ্ঞেস করলেন কতটুকু কাটলে ঠিক হবে রে মুহিত? মুহিত বলল তুমি কতটুকু কাটাবে বললে? মিসেস নওশিন বলেন- কাঁধ পর্যন্ত কাটলেই তো চলবে, তোর কি মত? মুহিত বলল- উঁহু কাঁধ পর্যন্ত কাটলে একমাস না পেরোতেই আবার ট্রিম করার দরকার পড়বে। মুহিত চাচার দিকে তাকিয়ে বলল ঘাড় পর্যন্ত কাটেন চাচা, মিডিয়াম বয়কাট দেন, ইলেক্ট্রিক ট্রিমার আর ক্ষুর ব্যবহার করবেন না। 

চাচা : মাথার চারপাশের চুল ১.৫ ইঞ্চি আর মাথার তালুতে ২ ইঞ্চি আর কপালের সামনে ২.৫ ইঞ্চি লম্বা রেখে কাটলাম তবে। মিসেস নওশিন মাথা নেড়ে সায় দিলেন। তারপর চাচা বাটি থেকে পানি নিয়ে মাথায় ছেটাতে লাগলেন আর মাথা ম্যাসেজ করতে লাগলেন। মাথার চুল ভালো মত ভিজে গেলে কোঁকড়া চুল আঁচড়ে সোজা করলেন। এরপর চুল একটু আলগা মুঠি করে ধরে রবার ব্যান্ড দিয়ে ঘাড়ের পিছনে হাল্কা ঢিলা দিয়ে পনিটেল বাঁধলেন। এরপর রবার ব্যান্ডের ঠিক উপরে কাঁচি দিয়ে পনিটেল কাটলেন। পনিটেল কাটা হলে সেটা নিয়ে মিসেস নওশিনের কোলে দিলেন। মিসেস নওশিন তার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া চুল হাত দিয়ে ধরে দেখলেন। তারপর ঘাড় ধরে নুইয়ে দিয়ে মাথার পিছনের চুল কাটতে লাগলেন। ৫ মিনিটের মধ্যে মাথার পিছনের চুল কাটা শেষ করলেন। তারপর ডানে-বাঁয়ে কাত করে মাথার দুপাশের চুল কাটলেন। সবশেষে মাথার তালু ও সামনে কপালের ওপরের চুল কাটলেন। তারপর ভালো করে একনজর দেখে নিয়ে বললেন উঠেন আপা চুল কাটা‌ ফিনিশ। মিসেস নওশিন আয়নার দিকে তাকিয়ে একবার দেখলেন। ১ ঘণ্টা আগের নিজের চেহারার সঙ্গে আয়নায় দৃশ্যমান চেহারার মিল খুঁজে পেলেন না। কেপ খোলার পর মিসেস নওশিন উঠে দাঁড়িয়ে শরীর থেকে গুড়ো চুল ঝাড়লেন। তারপর মুহিতকে ডেকে হ্যান্ডব্যাগে হাত ঢুকিয়ে বললেন কত দেবো? চাচা বললেন আরে রাখেন মুহিত বাবা আমার ছেলের মত। আজকে এই অবেলায় আপনি আমার এখানে আসলেন। একটু মেহমানদারিও করতে পারলাম না। টাকা লাগবে না আপনি বাড়িতে যান। মিসেস নওশিন আর মুহিত তবুও জোর করতে লাগলেন। শেষে মাত্র ৫০ টাকা নিতে রাজি হলেন চাচা। আর বললেন সময় পেলে আমার বাড়িতে আসবেন আপা। মিসেস নওশিন ও মুহিত সেলুন থেকে বেরিয়ে রিক্সা না দেখে হেঁটেই বাড়ি ফিরল। পরদিন মিসেস নওশিন কলেজে গেলে সবাই তার নতুন হেয়ারস্টাইল দেখে আশ্চর্য হলো। তার কলিগেরা বলল আপনার বয়স যেন ১০ বছর কমে গেছে। মিসেস নওশিন সবার এই প্রশংসা উপভোগ করলেন। তিনি ঠিক করলেন এখন থেকে তিনি আর চুল বাড়াবেন না। মিসেস নওশিন এখন ৩ মাস অন্তর তার চুল কাঁধ ছুঁই ছুঁই করলেই চুল কাটিয়ে ফেলেন।

সেলুনে গিয়ে মায়ের চুল কাটানো (১ম পর্ব)

৪৪ বছর বয়সী মিসেস নওশিন একটি সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা। তার ১ ছেলে ও ১ মেয়ে। বড় ছেলে মুহিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষের ছাত্র আর ছোট মেয়ে সায়রা ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী, বোর্ডিংয়ে থেকে পড়াশোনা করে। তার স্বামী জাহাজের ক্যাপ্টেন তাই তিনি ৬ মাস পর পর বাড়ি আসেন। এই বয়সেও তিনি বেশ সুশ্রী ও কমনীয় দেহের অধিকারী। তার মাথা ভর্তি পুষ্ট কোঁকড়ানো চুল যা প্রায় পিঠের মধ্যভাগ অতিক্রম করেছে।

এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে; তার ছেলে মুহিতের একটি অদ্ভুত বাসনা আছে। তা হলো তার মাকে ছোট চুলে দেখা। সে জানে না তার এই ইচ্ছা আদৌ পূরণ হবে কিনা। তবুও সে মনে মনে প্রার্থনা করে যেন তার মনোবাসনা পূর্ণ হয়। অবশেষে একদিন তার স্বপ্ন সত্যি হয়। সে গল্পই লিখছি আজ।

গ্রীষ্মকাল চলছে। মুহিতের ক্লাস শুরু হয় প্রত্যহ সকালে আর দুপুরের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার তাই মিসেস নওশিনের কলেজও অর্ধদিবস ক্লাস হয়ে ছুটি হয়ে যায়। বাসায় এসে গোসল সেরে মুহিতকে ডেকে খাবার দিয়ে নিজেও খেতে বসলেন। খেতে খেতে বললেন যা গরম পড়ছে এই কয় সপ্তাহ ধরে। উফ আর সহ্য করা যায় না।
মুহিত : হ্যাঁ মা ভীষণ গরম; মাঝেমধ্যে ক্লাসের সময় কারেন্ট চলে গেলে পুরো গোসল হয়ে যায়। মুহিতের মা বলে যান- হ্যাঁ রে গরমে ঘেমে চুল ভিজে যায় আর শুকালে পুরো আঠা আঠা। তার উপর বৃষ্টি হয় না কতদিন। রাস্তার সব ধুলাবালিছাই ঝাড়ুদারের ঝাঁটা আর গাড়ি ঘোড়ার চাকার সঙ্গে ঘুরে ঘুরে উপরে উঠে মাথা আর মুখ ভরিয়ে দেয়।
মুহিত খাবার খেতে খেতে বলল হ্যাঁ তোমার কলেজের রাস্তায় তো আবার কাজ হচ্ছে দেখেছি। ওদিকে ধুলাবালি আরো বেশি।
মিসেস নওশিন : আর বলিস না এই ধুলাবালির জন্য মাথায় খুশকি হয়ে গেছে। মাথায় ঘাম হলে তৎক্ষণাৎ মাথা ধুতে পারি না। কে জানে এর পর কোনো চর্মরোগ হয় কিনা চুলের মধ্যে।
মুহিত : তবে চুলে শ্যাম্পু করো না কেন মা?
মিসেস নওশিন : আরে এমনিতেই তো আমি সপ্তাহে তিনদিন শ্যাম্পু করি। সপ্তাহে ছয়দিন শ্যাম্পু করাটা আরো ঝামেলার। তারপর চুলের গোড়া পর্যন্ত শ্যাম্পু করতেও তো সময় লাগে। না চুলগাছির মায়া এবার ছেড়ে দিলেই ভালো। এই গরমে লম্বা চুল রাখা ব্যাপক ঝামেলার।
এ কথা শুনে মুহিতের চোখ চকচক করে ওঠে। তার মনে দীর্ঘদিনের লালিত ইচ্ছা পূরণ হবার সম্ভাবনায় তার মন উদ্বেলিত হয়। মুহিত বলে তুমি সত্যিই চুল কাটানোর কথা ভাবছ মা!
মিসেস নওশিন : হ্যাঁ কি আর হবে লম্বা চুল রেখে। অনেক দিন তো রাখলাম চুল। এবার বরং ছোট করেই দেখি। তুই কি বলিস মুহিত?
মুহিত মনের চাপা উল্লাস চেপে রেখেই বলল- হ্যাঁ মা কাটিয়ে ফেলো। এই গরমে এত লম্বা চুল কি সামলানো যায়। চারদিকে দেখছি অনেক মহিলাই গরমের জন্য চুল ছাঁটাচ্ছে। আমার কিছু ক্লাসমেট মেয়েও চুল ছাঁটিয়েছে দেখলাম।
মিসেস নওশিন : পরশু শনিবার তোরও ভার্সিটি ছুটি। তাহলে চল শপিং মলে গিয়ে হালকা কিছু শপিং করব। তারপর আমার দুইটা পরিচিত পার্লার আছে ওখান থেকে যেকোন একটায় চুল কাটিয়ে নেব।
মুহিত : আচ্ছা। 


সেদিন মুহিত রাতে ঘুমাতে পারল না। পরদিন শুক্রবার মুহিতের সময় যেন কাটতেই চায় না। জুম্মার নামাজ পড়ে বাড়িতে এসে খেয়েদেয়ে কিছুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করল। বিকালবেলা পার্কে গিয়ে হাঁটাহাঁটি করে সন্ধ্যায় হালকা নাস্তা করে পড়ার টেবিলে বসল। কিন্তু পড়ায় আর মন বসে না। রাতের খাবার খেয়ে সে নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল। ঘুম তো আসতেই চায় না। অবশেষে ঘুম এলো সাথে তার প্রিয় স্বপ্নও। স্বপ্নে দেখল তার মায়ের চুলের গোছা মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখে তার মায়ের গলায় জড়ানো সাদা কেপের সর্বত্র চুলের কণা, কোলে আরো কিছু চুল। স্বপ্নটা শেষ হবার আগেই তার ঘুম ভাঙল মায়ের ডাকে। বালিশের পাশ থেকে মোবাইল নিয়ে সে দেখল সকাল ৯টা বেজে গেছে। ইস দেরি করে ফেলেছি মনে মনে বলল মুহিত। টুথব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে সে ওয়াশরুমে ছুট দেয়। মাঝখানে ডাইনিং রুমে দেখে তার মা নাস্তা সাজিয়ে বসে আছে। সে তাড়াতাড়ি ব্রাশ করে চোখমুখ ধুয়ে নাস্তা সাবাড় করল। তারপর ঝটপট আলমারি থেকে একটা টি-শার্ট আর একটা প্যান্ট পরে তৈরি হয়ে নিলো। মিসেস নওশিন ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে আছেন। তারপর দুজনে বেরোলেন শপিং মলের উদ্দেশ্যে। গিয়ে দেখেন এ মা! শপিং মল বন্ধ। প্রধান দরজায় নোটিশ ঝুলছে "আগামী ২ দিন শপিং মল খুলবে না।” নিচতলায় কিছু দোকান খোলা আছে। মুহিতের মনে পড়ল আজ বিরোধী রাজনৈতিক দল হরতাল ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে। মুহিতের মা বললেন : শপিংই আজ হবে না, শপিং মলের পার্লারে চুল কাটানো তো দূর। চলত মুহিত দেখি পার্কের অপোজিটের পার্লার খোলা আছে কিনা। ৭/৮ মিনিট হেঁটে সেখানে গিয়ে দেখল ঐ পার্লারও তালাবদ্ধ। মুহিতের মা নিরাশ হয়ে বিড়বিড় করে বললেন : যা বাবা চুলটাও কাটানো যাবে না আর এই সপ্তাহে। কি আর করা। চল মুহিত বাড়ি ফিরে যাই।
(চলবে...)

Wednesday, March 25, 2020

দাদের জন্য মাথা–মুড়োনো

বর্ণিতা একাদশ শ্রেণিতে পড়াশুনা করত। তার কোমর পর্যন্ত দীর্ঘ চুল ছিল। তার মা-বাবা গ্রামে নিজ বাড়িতে বসবাস করত আর সেখানে ভালো স্কুল ছিল না তাই ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই বর্ণিতা শহরে তার মেসো-মাসির বাসায় থাকত।

বর্ণিতার চুল বেশ ঘন ছিল তবে বর্ণিতা ঠিকঠাক মত চুলের যত্ন নিতে পারত না। তার মাসিও দিনভর নিজের আপিসের ও গেরস্থালীর কাজে ব‍্যস্ত থাকায় তার পিছনে খুব একটা সময় দিতে পারত না। অপরিষ্কার থাকায়, গোসল করে চুল ঠিকঠাক না শুকানোয় ও ভিজা তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখায় বর্ণিতা একসময় ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ল। সেরে উঠলেও তার মাথায় শেষ পর্যন্ত দাদ হয়। দাদের কারণে তার মাথার চুল পড়তে শুরু করে। বর্ণিতার মাসি তাকে নিয়ে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যান। ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রে লিখেন যে এ থেকে মুক্তি পেতে প্রথমে মাথা ন্যাড়া করে সেলিসাইলিক এসিড ঘটিত মলম দিনে ২ বার লাগাতে হবে, যত দিন চুল গজিয়ে বড় না হয় এবং কিছু ট্যাবলেট খাওয়ার জন্য দিয়েছিলেন।

যেহেতু মাথার ত্বকে মলম লাগাতে হলে বর্ণিতার মাথা ন্যাড়া করতে হবে তার মাসি তাকে এজন্য কয়েক বার তাকে পার্লারে চুল কামাতে যেতে বলেছিলেন। তবে সে কখনই এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি কারণ সে প্রতিবেশী ও সহপাঠীদের ঠাট্টা-মস্করা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। তার মাসি হাল না ছেড়ে প্রতিদিন তাকে মাথা ন্যাড়া করতে বলতেন। দিনকে দিন তার চুলগুলি আরো বেশি পরিমাণে ঝরে পড়তে শুরু করে। এভাবে কয়েক সপ্তাহ পর শরৎকালে পুজোর ছুটিতে সে বাসায় ছিল। সকাল ১০টা আন্দাজ তার মাসির ফ্ল্যাটের কলিং বেলটি বেজে উঠল। তার মাসি দরজাটি খুলতেই একজন শ্যামবর্ণের মাঝারি উচ্চতার বছর তিরিশের এক ব্যক্তি একটি ছোট ব্যাগ কাঁধে প্রবেশ করলেন। তার মাসি লোকটিকে ফ্ল্যাটের পিছন দিকে ঝুলবারান্দার দিকে যেতে নির্দেশ দিলেন। বর্ণিতার মাসি তাকে এককাপ চা এবং কিছু নাশতা দিতে বললেন এবং সে ঐ আগন্তুকের হাতে তা দিয়ে ভিতরে আসে। বর্ণিতা গোলাপী চুড়িদার পড়া ছিল; তার মাসি তাকে কোন পুরানো পোশাক পরে আসতে বললেন এবং সে জিজ্ঞাসা করল কেন তিনি তাকে এই নির্দেশ করলেন। মাসি নিরুত্তর থাকলেন। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে উত্তর না পেয়ে বর্ণিতা তার মাসির কথামত একটা পুরাতন জামা পরে আসে।


ঠিক সেই মুহূর্তে সে সেই আগন্তুককে দেখল যে মাথা মুড়ানোর জন্য তার সরঞ্জাম প্রস্তুত করছিল। এ দেখে সে আঁতকে উঠল। এই সম্পর্কে সে তার মাসিকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তোমার মাথা দাদে ভরে গেছে; এখনই এর প্রতিকার করতে হবে; দাদ ছোঁয়াচে রোগ কে জানে কখন আমার শরীরেও সংক্রমণ হয়। তাই এই রোগ যাতে আর না ছড়ায় ও তোমার মাথার চুল যাতে আর না ঝরে সেজন্য তোমাকে ন্যাড়া হতে হবে। বর্ণিতা এ কথা শুনে কান্নাকাটি শুরু করে এবং এটি না করার জন্য তার মাসির কাছে মিনতি করে তবে তিনি ইতিমধ্যে ঠিক করে ফেলেছেন। বর্ণিতা কাঁদছিল কিন্তু তিনি তার হাতটি ধরে নাপিতের সামনের টুলে বসিয়ে দিলেন ও তাকে তার কাজ করতে বলে কাঁচাবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। নাপিত লোকটি বারবার তাকে তার চুলের কবরী খুলতে বলেন কিন্তু বর্ণিতা তাকে অনুরোধ করল যাতে তার চুলের সঙ্গে কিছু না করা হয়। তিনি বলেন- দিদি আমার কিছুই করার নেই; আমাকে যা করতে বলে গেছে আমি তাই করতে বাধ্য। নাপিত বর্ণিতার চুলের বিনুনি খুলতে লাগল কিন্তু সে কাঁদতেই থাকল। এরপর নাপিত পানিভর্তি মগ থেকে হাতের তালুতে পানি নিয়ে তার চুল ভেজাতে আরম্ভ করল। বর্ণিতার কপাল বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি মেঝেতে পড়তে শুরু করে তখন নাপিত লোকটি তার চুল পাট করে চুলের গোড়া পর্যন্ত ভেজাতে আরও কিছু পানি ছেটায়। এরপর তিনি তার সঙ্গে আনা ক্ষুরে একটি অর্ধেক ব্লেড ঢুকালেন। এবার তিনি বর্ণিতাকে তার মাথা নোয়াতে বললেন তবে বর্ণিতা তা না করে কেঁদেই চলছে তাই তিনি বর্ণিতার মাথাটি জোর করে নোয়ালেন এবং তার চিবুক তার বুক স্পর্শ করল। তখন তিনি বর্ণিতার মাঝের মাথায় ক্ষুর রেখে ঘাড়ের দিকে টানা শুরু করলেন আর বিপুল পরিমাণ চুল তার পিঠে গড়িয়ে পড়তে লাগল। ৫ মিনিটের মধ্যে তার মাথার পেছনটা সম্পূর্ণ চুলশূণ্য হয়ে গেল এবং তিনি বর্ণিতার মাথার সামনের অংশটি কামাতে শুরু করে আর তার চুল বৃষ্টির মতো তার কোলে পড়তে শুরু করে। অতঃপর তিনি বর্ণিতার মাথা ডানদিকে কাত করে তার মাথার বাম পাশ ২ মিনিটের মধ্যে কামিয়ে আবার মাথা বামদিকে কাত করে ডান পাশ কামিয়ে দেন। বর্ণিতার মাথা তখন পুরোপুরি টাক কেবল কিছু খোঁচা খোঁচা চুল ছাড়া। সবশেষে নাপিত তার মাথায় মিনিপ্যাক শ্যাম্পু প্রয়োগ করলেন এবং তার মাথার বিপরীত দিক থেকে ক্ষুর টানলেন যাতে তার মাথার ত্বক এক্সট্রা মসৃণ হয়।

এরই মধ্যে বর্ণিতার মাসি বাজার থেকে ফিরে এসে বর্ণিতার দিকে হাসিমুখে তাকালেন। বর্ণিতা মাথা উঠিয়ে তার দিকে একবার তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে কাঁদতে লাগল। তারপর বর্ণিতার মাসি নাপিতকে তার পারিশ্রমিক দিলেন এবং টানা ৪ মাস প্রতি সপ্তাহ অন্তর এসে বর্ণিতার মাথা মুড়িয়ে যেতে বললেন। এরপর চার মাস ধরে বর্ণিতার মাথায় চুলের অস্তিত্ব ছিল না বললেই চলে। ৪ মাস পুরোপুরি টাক থাকার পর অবশেষে বর্ণিতার মাথার দাদ দূর হলো। আর বর্ণিতাও কিছু স্বস্তি পেল। তারপর বর্ণিতা দ্বাদশ শ্রেণিতে যখন প্রমোশন পেল তখন তার চুল কাঁধ ছুঁয়েছে।

Friday, March 20, 2020

স্কুল হোস্টেলে উকুনের উপদ্রবে চুল ছাঁটানো

নূরবিলা বালিকা বিদ্যালয় নূরবিলা থানার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে মাধ্যমিক শাখার ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক হোস্টেল চালু করেছে। সেঁজুতি সেই স্কুলেরই নবম শ্রেণির ছাত্রী। সেঁজুতির মাথার চুল কোঁকড়ানো, বেশ ঘন আর পিঠের প্রায় শেষ অব্দি দীর্ঘ অবশ্য ভিজা অবস্থায় তা কোমর পর্যন্ত যায়। সেঁজুতি এতদিন বাড়িতে থেকে স্কুলে যাওয়া আসা করত। কিন্তু সম্প্রতি তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ দুই বান্ধবী রিদিমা ও শর্মি হোস্টেলে উঠবার প্ল্যান করছে তাই সেও তার বাবা-মায়ের কাছে বায়না করল সেও হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করবে। তার মা প্রথমত রাজি না হলেও পরে তার গোঁ এর কাছে হার মানলেন। সেঁজুতিকে কখনোই তার নিজের চুলের পরিচর্যা করতে হয়নি; তার মা-ই তার চুলের যত্ন নিত। সেঁজুতি তার নিজের চুল খুব ভালোবাসত। সেঁজুতির মা অবশ্য চাইতেন না সেঁজুতি এই ছোট বয়সেই দীর্ঘ চুল রাখুক তাই তিনি প্রায়ই সেঁজুতিকে তার চুলে মিডিয়াম বব কাট দিতে বলতেন। কিন্তু সেঁজুতি রাজি হতো না তাই তার মা তাকে চুলের আগা হাল্কা কেটে নিতে পার্লার নিয়ে যেতেন।

বাবা-মাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে সেঁজুতি সদ্যনির্মিত হোস্টেলে উঠল। হোস্টেলের কেবল নিচতলা কম্প্লিট হয়েছে। নবম শ্রেণি মাধ্যমিকের সবচেয়ে জুনিয়র তাই তাদের আগে রুম বরাদ্দ দেয়া হলো। আর সেঁজুতিও তার ৩ বান্ধবী সহ একটি জুৎসই কক্ষ হোস্টেল সুপার ম্যাডামের অনুমতি নিয়ে দখল করে নিলো। এভাবে হোস্টেলে এক মাস গত হলো এর মধ্যে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শেষ হয় এবং গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হয়। এসময় সেঁজুতির বান্ধবী শর্মি গরমের ছুটিতে তার মাসির বাসায় বেড়াতে যায়। শর্মির মাসি তার চুলের যত্নে গাফিলতি করত ফলস্বরূপ তার মাথায় উকুন বাসা বাঁধে। শর্মি তার সঙ্গে কিছুদিন বেড শেয়ার করায় শর্মির মাথায়ও উকুনের উপদ্রব আরম্ভ হয়। শর্মি তখনও তা আমলে নেয়নি। এদিকে গরমের ছুটি শেষে সবাই হোস্টেলে ফিরে আসে। শর্মিও ফিরে আসে কিন্তু মাথাভর্তি উকুন ও উকুনের ডিম নিয়ে। ক্লাসে সেঁজুতি, শর্মি ও রিদিমা একসঙ্গে এক বেঞ্চে বসত; ডাইনিংয়ে একসঙ্গে খেতো, এছাড়াও তারা একে অপরের বিছানায়ও মাঝেমধ্যে শুতো। ফলে যখ হবার তাই হলো শর্মির মাথার উকুন তার সকল রুমমেটের মাথায় পৌঁছে গেল। সেঁজুতিসহ সবাই মাথা চুলকে চুলকে অস্থির। তেল দিলে খানিকটা আরাম পায় কিন্তু তেল না দিলেই উশখুশ, অশান্তি। প্রতিদিন বিকেলে উপরনিচ করে বসে বসে উকুন বাছা তাদের নিত্যক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে‌‌। ক্লাসেও তারা উকুনের কামড়ে পড়ায় মনোযোগ দিতে পারছে না। এদিকে সহপাঠীদের সাথে দুষ্টুমির ছলে তারা নিজের মাথা থেকে উকুন নিয়ে ক্লাসের অন্যান্য ছাত্রীদের মাথায়ও দুয়েকটা উকুন ছেড়ে দিয়েছে। ব্যস আর যায় কোথায়! সারা হলের মেয়েদের মাথায় উকুনের ছড়াছড়ি। মেয়েরা আগে বিকাল হলেই ব্যাডমিন্টন, ভলিবল খেলতে স্কুলের মাঠে নামত। নতুবা কমনরুমে গিয়ে পত্রিকা, ম্যাগাজিন পড়ত কিংবা দাবা, লুডু বা ক্যারম খেলত। এখন তার বদলে বিকালে তারা হোস্টেলের সিঁড়িতে বসে উকুন বাছতে। হোস্টেল সুপার ম্যাডাম এবং সহকারী আবাসিক শিক্ষিকারা তা লক্ষ্য করলেন। এছাড়াও উকুনের কারণে ছাত্রীরা মাথা পরিষ্কার করতে প্রচুর পরিমাণে জল ব্যয় করছে। 


তাই হোস্টেল সুপার ও সব শিক্ষয়িত্রীরা হেডমিস্ট্রেসের কথায় মিটিংয়ে বসলেন। কেউ কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না। কেউ বললেন হোস্টেলের মেয়েদের উকুন বিনাশী শ্যাম্পু সরবরাহ করা হোক তো কেউ বললেন নিমপাতা সরবরাহ করে তা বেটে স্নান করতে বলা হোক। এক শিক্ষিকা রাগের ভরে বলেই ফেললেন স্কুলে নাপিত ডেকে এনে ছাত্রীদের মাথার চুল কামিয়ে দেওয়া হোক। শেষমেশ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা প্রস্তাব করলেন মেয়েদের চুল না কামিয়ে ছোট করে ছাঁট দেওয়া যেতে পারে। এতে উপস্থিত সবাই সম্মতি দিলেন।

অতঃপর সেদিন রাতে রাতের খাবার শেষ করে হোস্টেলে থাকা সকল ছাত্রীদের হোস্টেলের অতিথি কক্ষে হাজির থাকতে নির্দেশ দিলেন হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্ট। তাই সেঁজুতিসহ সব মেয়েরা আগেভাগেই ভোজনপর্ব চুকিয়ে অতিথি কক্ষে প্রবেশ করল। তারপর সেখানে হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্ট ও আবাসিক শিক্ষিকারা এলেন। তারা সব মেয়েদের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার গুরুত্ব, ধর্মীয় তাৎপর্য ও না থাকার অপকারিতা নিয়ে ছোটখাটো বক্তব্য দেন। তারপর তাদের এই উকুনের সমস্যা নিয়ে কিছুক্ষণ ভর্ৎসনা করলেন। সব শেষে হোস্টেল সুপার বললেন কালকে ক্লাস বন্ধ থাকবে এবং কাল সকালে হোস্টেলে ২ জন নাপিত আসবে তাদের সবার চুল ছাঁটানোর জন্য। হোস্টেলের সব মেয়েরা যেন তৈরি থাকে। এ কথার পর হোস্টেলের মেয়েরা কিছু সময়ের জন্য বাক্য হারিয়ে ফেলল। কিছুক্ষণ পর হৈ হই রব উঠল, কিছু মেয়ে প্রতিবাদ করল এবং শিক্ষিকাদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিলো ও কিছু মেয়ে চিৎকার করে কেঁদে উঠল। যাই হোক হোস্টেল সুপার ও অন্যান্য শিক্ষিকারা কিছুতেই নমনীয় হলেন না। বাক-বিতন্ডা করা মেয়েরা কিছুতেই তাদের সঙ্গে পেরে উঠল না। উল্টে হোস্টেল সুপার ধমক দিলেন যে বা যারা কালকে তাদের চুল কাটানোর জন্য থাকবে না তারা যেন সকলে হোস্টেল ছেড়ে দেয়; তাদেরকে স্কুল থেকে রাসটিকেট করবেন। মেয়েরা সব দুঃখী মনে গেস্টরুম পরিত্যাগ করল। বাইরে বেরিয়ে তারা কেউ বিদ্রোহ ঘোষণা করল কোনোভাবেই নিজের চুল তো দূরে থাক একটা লোমও বাঁকা করতে দিবে না, কেউ বলল এই স্কুলেই আর পড়বে না, কেউ চুপচাপ হোস্টেল ছেড়ে দিবে ভাবল। তারপর হোস্টেলের সিঁড়ির গোড়ায় কিছুক্ষণ জটলা করে পরে যে যার যার রুমে চলে গেল। এদিকে সেঁজুতিরাও রুমে ফিরল। সেঁজুতির মন ভারাক্রান্ত। সে ভাবছে হোস্টেল সুপার ম্যাডাম কি কাল সত্যিই নাপিত ডেকে আনবেন তাদের চুল কাটানোর জন্য নাকি মজা করছেন। কিন্তু হোস্টেল সুপার ম্যাডাম মোটেও মজা করার পাত্রী নন। তিনি যা বলেন তাই করেন। এদিকে সেঁজুতির অপর দুই রুমমেট বান্ধবী শর্মিকে দুষছে আর শর্মি মাথা নিচু করে চুপচাপ খাটে বসে আছে তার চোখের কোণায় নোনতা জল শুকিয়ে আছে। তারপর সকাল হলো সব মেয়েরা ঘুম থেকে উঠে পরিপাটি হয়ে ব্রেকফাস্ট সারলো। সেঁজুতি দেখল কিছু মেয়ে ব্যাগ গুছিয়ে হোস্টেলের গেট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। সে তাদের একজনকে ডাকল ‘সোনিয়া, কোথায় যাচ্ছিস?’ সোনিয়া বলল: বাড়ি যাই রে। এই ম্যাডামগুলো একদম ডাইনি! এদের বিশ্বাস নেই। সেঁজুতি ভাবল সেও বাড়ি চলে যাবে কিনা কিন্তু পরশু যে পরীক্ষা আর সে হোস্টেলে চলে আসায় বাবার অফিসের সুবিধার্থে পরিবারের সবাই তার অফিসের কাছে নতুন বাসায় শিফট হয়েছে। সেখানকার পথ নেহাত কম নয়। এই বলে সে রিডিং রুমের দিকে যেতে লাগল। এমন সময় হঠাৎ হোস্টেলের ঝাড়ুদার মাসি ঘণ্টায় বাড়ি দিলেন মানে হোস্টেল প্রাঙ্গণে সবাইকে জমায়েত হবার নির্দেশ। সে হোস্টেলের উঠানেই দাঁড়িয়ে থাকল আর সব মেয়েরাও যে যেখানে ছিল বেরিয়ে এলো। তারপর হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্ট ম্যাম সেখানে হাজির হলেন। তারপর তারা কতজন আছে গুণে দেখলেন। ৪৪ জনের মধ্যে ১৩ জন নেই। তারা সকালে উঠেই বাড়ি রওনা দিয়েছে। হোস্টেল সুপার ম্যাম বললেন বেশ তবে এ কজনই থাক। যারা চলে গেছে তাদের বেডে অন্য ছাত্রীরা উঠবে। এরই মধ্যে তিনি একবার হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে পরক্ষণে হোস্টেলের গেটের দিকে তাকালেন। হোস্টেলের গেট দিয়ে একজন ডাইনিং বয়ের পিছু পিছু দুইজন লোক ঢুকল। তাদের কাঁধে ঝোলা আর তাতে চুল কাটবার সরঞ্জাম। তারপর স্কুলের মাঠে যেন কান্নার রোল পড়ে গেল। কিন্তু হোস্টেল সুপার ম্যামের হুঙ্কার ও অন্যান্য শিক্ষিকার ধমকে সব শান্ত নীরব হয়ে গেল। তারপর নাপিত দুইজন তাদের পিঁড়ি, চওড়া কাপড়ের টুকরা, চিরুনি, কাঁচি, ক্ষুর, ব্লেড ইত্যাদি বের করলেন। হোস্টেল সুপার ম্যাডাম আদেশ দিলেন দুজন দুজন করে গিয়ে নাপিতদের সামনে বসতে। ম্যাডামের কথা অমান্য করার সাহস আর কেউ দেখাতে পারল না। প্রথম জুটি গিয়ে নাপিতদ্বয়ের সামনে রাখা পিঁড়িতে বসল। অতঃপর নাপিতরা হোস্টেল সুপারের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল কেমন ধারা কাটব দিদিমণি? দিদিমণি বললেন সবার চুল কাঁধ পর্যন্ত কাটবেন। নাপিতরা বলল সবার মুখের গড়নের সাথে এমন স্টাইল মানাবে না। হোস্টেল সুপার ম্যাডাম তাদের যতটা সম্ভব মুখের গড়নের সঙ্গে মানানসই রেখে চুল কাটতে বললেন। নাপিতরা সম্মতি জানিয়ে তাদের কাজ শুরু করল।

মেয়েদের চুল ভালো করে আঁচড়ে পাট করে প্রথমে পনি বাঁধল, তারপর কাঁচি চলল ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ; মেয়েগুলো ফুঁপিয়ে কাঁদায় তাদের শরীর কাঁপছিল। হোস্টেল সুপার ম্যাম গর্জন করে বললেন "এই কাঁদলে কিন্তু মাথা কামিয়ে দিতে বলব।" ভয়ে সব ঠাণ্ডা। এক এক করে জুটি বসতে লাগল আর নাপিতদের সামনে চুলের পাহাড় উঁচু হতে লাগল। স্নিপ স্নিপ শব্দে কাঁচি চলতে লাগল। আর মেয়েরা চোখ মুছতে মুছতে গোসলখানায় গেল। সেঁজুতিকে ম্যাডামরা বললেন নাপিতদের সামনে জমে ওঠা চুলের গোছাগুলো একটি প্লাস্টিক ব্যাগে পুরতে। সেঁজুতি তা করতে লাগল। ২ জন মেয়ে বাকি থাকতে একজন নাপিত বিদায় নিলেন। অপর জন কাঁচি চালাতে থাকলেন। সবার শেষে এলো সেঁজুতি। সেঁজুতি এমনিতে ভালো ছাত্রী কিন্তু দুষ্টুমিতে তার জুড়ি মেলা ভার। হোস্টেল সুপার ম্যাডাম বললেন সেঁজুতির চুলের ছাঁট যেন একটু অন্য রকম হয়। সেঁজুতির বুক কেঁপে উঠল। তবে সে কোনো শব্দ করল না। শেষ মেয়েটি উঠতেই সে চুপচাপ নাপিতের সামনের পিঁড়িতে বসে পড়ে। গণিত শিক্ষিকা সেঁজুতিকে খুব ভালোবাসতেন; সেঁজুতিরও সবচেয়ে প্রিয় বিষয় ছিল গণিত। সেঁজুতি নাপিতের সামনে বসলে যেই না নাপিত বললেন এর চুল কতটুকু খাটো করবো? গণিত শিক্ষিকা অমনি বলে উঠল মেয়েটি খুব ভালো ছাত্রী, আগামী সপ্তাহেই ওর পরীক্ষা আছে। এ ক'দিন উকুনের জ্বালায় পড়াশোনা বিশেষ করেছে বলে মনে হয় না। চুলের পিছনেই সময় দিয়েছে। এইটুকু মেয়ে অতটা চুল কি করে সামলাবে? নাপিত হাসিমুখে বলল তাহলে ববকাটেই চলবে? গণিত ম্যাডাম বললেন ওভাবে না; আমি চাই একদম ছোট আর মিষ্টি দেখতে চুলের ছাঁট। যাতে চিরুনির এক আঁচড়ই ওর চুলের জন্য যথেষ্ট হয়। নাপিত ওনার ইঙ্গিত বুঝতে পারলেন; সে বলল, আপনি বলতে চাচ্ছেন পিক্সিকাট? ম্যাডাম বললেন হ্যাঁ সেটাই। সেঁজুতি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো; তার কান্না পাচ্ছিল এই ভেবে যে গণিত ম্যাম তার সঙ্গে এমনটা করতে পারেন। গণিত ম্যাম বললেন-- সেঁজুতি যাও গিয়ে নিজের চুল কাটিয়ে নাও। সেঁজুতি ডুকরে কেঁদে বলল, ম্যাম প্লিজ অত ছোট না। ম্যাম কিছু শুনলেন বলে মনে হলো না। তিনি বললেন ওর পিছনের চুল যতটা সম্ভব ছোট করে দিবেন আর চিপগুলোও ছোট করে দিবেন। নাপিত চুল কাটা আরম্ভ করলো। প্রথমেই সে সেঁজুতির চুলে টাইট করে পনি করল। আর তারপর তার ধারালো কাঁচি পনির গোড়ায় বসিয়ে দিলো। সেঁজুতি কেবল কাঁচির স্নিক স্নিক শুনতে পেলো। কিছু বল প্রয়োগের পরই সেঁজুতির পনি নাপিতের হাতে চলে এলো। সেঁজুতির চুল এখন তার চিবুক অবধি অগোছালোভাবে কাটা। তারপর নাপিত তাকে ডানে-বাঁয়ে কাত করে সমানে চুল কাটতে লাগল। নাপিত জিজ্ঞেস করল তার চিপ ও ঘাড় কামাবে কি না? চিপ ও ঘাড়ে খুব মিহি চুল ছিল। ম্যাডামরা বললেন কামানোর দরকার নেই সমান করে দাও। নাপিত তাই করল। চুল কাটা শেষ হবার পর সেঁজুতি মুখ ঢেকে কাঁদতে কাঁদতে বাথরুমের দিকে ছুটল। বাথরুম থেকে সদ্য স্নান সেরে বেরিয়ে আসা রিদিমা ও আরো জনাকয়েক মেয়ে তা চেয়ে দেখল। পরদিন ক্লাসে অনাবাসিক মেয়েরা আবাসিক মেয়েদের দিকে কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখতে লাগল। আবাসিক মেয়েরা চুপ; তারা তাদের চুলের ব্যাপারে মুখ খুলল না।

গ্রামীণ নাপিত~আনন্দ (শেষার্ধ)

"আহা…ঠিক আছে…" তিনি বললেন যখন আমি তার বাক্সের দিকে অনুসন্ধানের দৃষ্টিতে তাকালাম তার কাছে কোন ধরনের রেজার আছে তা দেখতে। সৌভাগ্যবশত ...